11-1 Kings 1:1 : রাজা দায়ূদ বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর এতো বয়স হয়েছিল য়ে কোনো মতেই আর তাঁর শরীর উষ্ণ হয় না। এমন কি ভৃত্যরা তাঁর শরীর কম্বল দিয়ে ঢাকা সত্ত্বেও তাঁর শীত আর কাটে না। |
11-1 Kings 1:2 : তখন ভৃত্যরা রাজাকে বলল, “আমরা তবে আপনার য়ত্ন করার জন্য একটি যুবতী মেয়েকে খুঁজে বের করি। সে আপনার পাশে শয়ন করবে এবং আপনাকে উষ্ণ রাখবে।” |
11-1 Kings 1:3 : তখন রাজকর্মচারীরা রাজাকে উষ্ণ রাখার জন্য ইস্রায়েলের সর্বত্র সুন্দরী যুবতী মেয়ে খুঁজে বেড়াতে লাগল। এমনি করে খুঁজতে খুঁজতে শূনেম শহরে সুন্দরী অবীশগের খোঁজ মিলল। তারা তখন ঐ মেয়েটিকে রাজার কাছে নিয়ে এলো। |
11-1 Kings 1:4 : অবীশগ সত্যি সত্যিই অপরূপ সুন্দরী ছিল। সে রাজার সব রকম য়ত্ন বা পরিচর্য়া করলেও তার সঙ্গে রাজা দায়ূদের কোনো শারীরিক সম্পর্ক ছিল না। |
11-1 Kings 1:5 : রাজা দায়ূদ ও রাণী হগীতের পুত্রের নাম আদোনিয়। এই আদোনীয খুবই সুপুরুষ ছিলেন। রাজা দায়ূদ কখনও তাঁকে শোধরাবার চেষ্টা করেন নি। তিনি তাঁকে কখনও জিজ্ঞেস করেন নি, “কেন তুমি এসব করছ?” যদিও অবশালোম নামে তাঁর এক ভাই ছিলেন, উচ্চাকাঙ্খী ও ক্ষমতাভিলাষী। আদোনিয় মনে মনে ঠিক করলেন য়ে এরপর তিনিই রাজা হবেন; আর একথা স্থির করে তিনি নিজের সুবিধের জন্য তাড়াতাড়ি একটা রথ, কিছু ঘোড়া ও তাঁর রথের সামনে দৌড়োনোর জন্য প্রায় 50 জন লোক জোগাড় করে ফেললেন। |
11-1 Kings 1:6 : - |
11-1 Kings 1:7 : রাজা হবার বিষযটা নিয়ে তিনি সরূযার পুত্র য়োয়াব ও যাজক অবিয়াথরের সঙ্গে পরামর্শও সেরে ফেললেন। তারা তাঁকে নতুন রাজা হতে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিল। |
11-1 Kings 1:8 : কিন্তু রাজা দায়ূদের প্রতি অনুগত কিছু ব্যক্তির আদোনিয়র এই উচ্চাভিলাষ পছন্দ হয় নি। এরা হল যাজক সাদোক, যিহোয়াদার পুত্র বনায, ভাববাদী নাথন, শিমিযি, রেযি ও রাজা দায়ূদের বিশেষ রক্ষীদল। এরা কেউই আদোনিয়র সঙ্গে য়োগ দেয় নি। |
11-1 Kings 1:9 : এক দিন আদোনিয় ঐন্ - রোগেলের কাছে সোহেলত্ পাথরে বেশ কিছু মেষ, ষাঁড় ও বাছুর মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে বলি দিয়ে তাঁর ভাইদের (রাজা দায়ূদের অন্যান্য পুত্রদের) ও যিহূদার সমস্ত আধিকারিকদের নিমন্ত্রণ করলেন। |
11-1 Kings 1:10 : কিন্তু আদোনিয় তাঁর পিতার বিশেষ রক্ষীদের, তাঁর ভাই শলোমন, বনায ও যাজক নাথনকে এদিন নিমন্ত্রণ করেন নি।” |
11-1 Kings 1:11 : নাথন একথা জানতে পেরে শলোমনের মা বত্শেবার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, “হগীতের পুত্র আদোনিয় কি করছে আপনি কি কিছু জানেন? তিনি রাজা হবার প্রস্তুতি করছেন। এদিকে রাজা দায়ূদ এসবের বিন্দু বিসর্গ জানেন না। |
11-1 Kings 1:12 : এক্ষেত্রে আপনার ও আপনার পুত্র শলোমনের প্রাণের আশঙ্কা থাকতে পারে বলেই আমরা ধারণা। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি আপনাকে আত্মরক্ষার একটা উপায় বলে দিচ্ছি। |
11-1 Kings 1:13 : রাজা দায়ূদের কাছে যান এবং তাঁকে বলুন, ‘হে রাজাধিরাজ, আপনি আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে আপনার পরে আমার পুত্র শলোমনই পরবর্তী রাজা হবে। তাহলে আদোনিয় কেন পরবর্তী রাজা হচ্ছে?’ |
11-1 Kings 1:14 : আপনি যখন রাজার সঙ্গে কথাবার্তা বলতে থাকবেন, আমি তখন সেখানে গিয়ে উপস্থিত হব এবং তখন আমি রাজাকে সমস্ত কিছু জানাব, তাতে আপনার কথার সত্যতাও প্রমাণ হবে।” |
11-1 Kings 1:15 : বত্শেবা তখন রাজার সঙ্গে দেখা করতে তাঁর শয়ন কক্ষে যেখানে শূনেমীযা অবীশগ বৃদ্ধ রাজার পরিচর্য়া করছিল, সেখানে গিয়ে উপস্থিত হল। |
11-1 Kings 1:16 : বত্শেবা রাজার সামনে আনত হবার পর রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “আমি তোমার জন্য কি করতে পারি বল?” |
11-1 Kings 1:17 : বত্শেবা বললেন, “মহাশয, আপনি আপনার প্রভু, ঈশ্বরের নামে শপথ করে আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে, ‘আপনার পর আমার পুত্র শলোমনই রাজা হবে। সে আপনার সিংহাসনে বসবে।’ |
11-1 Kings 1:18 : কিন্তু আপনি বোধ হয় জানেন না আদোনিয় ইতিমধ্যেই রাজা হবার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। |
11-1 Kings 1:19 : সে মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে বহু গরু ও মেষ বলি দিয়ে বড়সড় একটা ভোজসভার আয়োজন করে সেখানে আপনার অন্যান্য সমস্ত পুত্রদের নিমন্ত্রণ করেছিল। সে যাজক অবিয়াথর, য়োয়াব, আপনার সেনাবাহিনীর প্রধানকে এই ভোজসভায নিমন্ত্রণ করলেও আপনার অনুগত পুত্র শলোমনকে নিমন্ত্রণ করে নি। |
11-1 Kings 1:20 : রাজা, এখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা আপনার গতিবিধি লক্ষ্য করছে। আপনার পর কে রাজা হবে, সে বিষয়ে তারা আপনার সিদ্ধান্ত জানতে চায়। |
11-1 Kings 1:21 : আপনার মৃত্যুর আগেই এবিষয়ে আপনাকে অতি অবশ্যই কিছু একটা করতে হবে। তা না হলে, আপনার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে আপনাকে সমাধিস্থ করার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্ত লোকরা শলোমন ও আমাকে অপরাধী বলবে।” |
11-1 Kings 1:22 : বত্শেবা যখন রাজার সঙ্গে এ নিয়ে কথাবার্তা বলছেন, তখন ভাববাদী নাথন রাজার সঙ্গে দেখা করতে এলো। |
11-1 Kings 1:23 : রাজার ভৃত্যরা তাঁকে বলল, “ভাববাদী নাথন আপনার কাছে এসেছেন।” নাথন রাজার সামনে আনত হয়ে রাজাকে সম্মান দেখিয়ে বলল, |
11-1 Kings 1:24 : “মহারাজ আপনি কি আদোনিয়কে আপনার পরবর্তী রাজা হিসেবে ঘোষণা করেছেন? আপনি কি ঠিক করেছেন এখন থেকে সেই রাজ্য শাসন করবে? |
11-1 Kings 1:25 : আমি একথা বলছি কারণ আদোনিয় আজ উপত্যকায গিয়ে মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে বহু গরু ও মেষ বলি দিয়েছে। তারপর যাজক অবিয়াথর, আপনার অন্যান্য পুত্রদের ও সেনাপতিদের সবাইকে ভোজসভায নিমন্ত্রণ করেছে। ওরা সবাই মিলে এখন আদোনিয়র জয়ধ্বনি দিয়ে বলছে, “মহারাজ আদোনিয় দীর্ঘ জীবন লাভ করুন।’ |
11-1 Kings 1:26 : কিন্তু আদোনিয় ভোজসভায আপনার পুত্র শলোমন, যাজক সাদোক, যিহোয়াদার পুত্র বনায বা আমাকে নিমন্ত্রণ করে নি। |
11-1 Kings 1:27 : মহারাজ আপনি কি আমাদের কিছু না জানিয়েই সব ঠিক করে ফেললেন? দয়া করে বলুন, আপনার পর কে রাজা হবে।” |
11-1 Kings 1:28 : তখন রাজা দায়ূদ বললেন, “বত্শেবাকে ভেতরে আসতে বলো।” বত্শেবা এসে রাজার সামনে দাঁড়ালেন। |
11-1 Kings 1:29 : এরপর রাজা দায়ূদ ঈশ্বরকে সাক্ষী করে বললেন, “প্রভু আমাকে জীবনের সমস্ত বিপদ আপদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। আমি সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নামে য়ে কথা আগে শপথ করেছিলাম সে কথাই আবার বলছি। |
11-1 Kings 1:30 : আমি প্রতিশ্রুতি করেছিলাম য়ে আমার পর তোমরা পুত্র শলোমন রাজা হবে। আমি সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করব না। তাই আজও বলছি, আমার পরে শলোমনই আমার সিংহাসনে বসবে।” |
11-1 Kings 1:31 : তখন বত্শেবা রাজার সামনে ভূমিষ্ঠ হয়ে বললেন, “রাজা দায়ূদ দীর্ঘজীবী হোন।” |
11-1 Kings 1:32 : এরপর রাজা দায়ূদ যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন ও যিহোয়াদার পুত্র বনাযকে ডেকে পাঠালেন। তারা তিন জন রাজার সঙ্গে দেখা করতে এলো। |
11-1 Kings 1:33 : রাজা তাদের বললেন, “শলোমনকে আমার নিজের খচ্চরে চড়িয়ে, আমার সমস্ত আধিকারিকবর্গকে নিয়ে গীহোন ঝর্ণার কাছে যাও। |
11-1 Kings 1:34 : সেখানে পবিত্র তেল ছিটিয়ে যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন তাকে নতুন রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করবে। আর তারপর তোমরা শিঙা বাজিযে শলোমনের রাজপদে অভিষিক্ত হবার কথা ঘোষণা করে তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে। |
11-1 Kings 1:35 : এরপর শলোমনই আমার সিংহাসনে বসবে এবং আমার জায়গায় রাজা হবে। আমি শলোমনকে ইস্রায়েল ও যিহূদার শাসক হিসেবে নির্বাচন করলাম।” |
11-1 Kings 1:36 : যিহোয়াদার পুত্র বনায রাজার কথার উত্তরে বলল, “আমেন! ধন্য মহারাজ! প্রভু ঈশ্বর বয়ং য়েন আপনার মুখ দিয়ে একথা বললেন। |
11-1 Kings 1:37 : হে মহারাজ, মহান প্রভু ঈশ্বর বরাবর আপনার সহায় ছিলেন। আমরা আশা করব তিনি একই ভাবে শলোমনের পাশে থাকবেন এবং শলোমনের রাজ্য আপনার রাজ্য থেকে অনেক বড় ও শক্তিশালী হবে।” |
11-1 Kings 1:38 : সাদোক, নাথন, বনায় ও রাজার আধিকারিকবর্গ রাজা দায়ূদের কথা পালন করল এবং শলোমনকে রাজা দায়ূদের খচ্চরে চড়িয়ে গীহোন ঝর্ণায নিয়ে গেল। |
11-1 Kings 1:39 : যাজক সাদোক পবিত্র তাঁবুর থেকে তৈলাধারটি নিজে বহন করে নিয়ে গিয়ে শলোমনের মাথায় প্রথামতো খানিক তেল ছিটিয়ে তাকে রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করল। তখন চতুর্দিকে শিঙা বেজে উঠল এবং চারপাশ থেকে সমস্ত লোকরা চিত্কার করে উঠল, “মহারাজ শলোমন দীর্ঘজীবি হোন!” |
11-1 Kings 1:40 : আনন্দিত ও উত্তেজিত জনতা শলোমনের পেছনে পেছনে শহরে এল। খুশী হয়ে, বাঁশী বাজাতে বাজাতে তারা সকলে এতো শব্দ করছিল য়ে মাটিও কাঁপছিল। |
11-1 Kings 1:41 : এদিকে আদোনিয় ও তাঁর অতিথিরা তখন সবেমাত্র ভোজনপর্ব শেষ করেছে। হঠাত্ তারা সবাই শিঙার শব্দ শুনতে পেল। য়োয়াব বলল, “কিসের শব্দ হচ্ছে? শহরে এতো হৈ চৈ কিসের?” |
11-1 Kings 1:42 : য়োয়াব যখন কথা বলছে তখন যাজক অবিয়াথরের পুত্র য়োনাথন এসে উপস্থিত হল। আদোনিয় তাকে বলল, “এসো, এসো, এখানে এসো! তুমি একজন ভাল ও বিশ্বাসী মানুষ। তুমি নিশ্চয়ই আমার জন্য কোনো সুখবর এনেছো?” |
11-1 Kings 1:43 : য়োনাথন বলল, “আপনার পক্ষে সুখবর কিনা জানি না, তবে রাজা দায়ূদ শলোমনকে নতুন রাজা বলে ঘোষণা করেছেন। |
11-1 Kings 1:44 : রাজা নিজের খচ্চরে শলোমনকে চড়িয়ে যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন ও রাজ আধিকারিকবর্গকে দিয়ে তাঁকে গীহোন ঝর্ণায পাঠিয়েছিলেন। সেখানে যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন তাঁকে রাজপদে অভিষিক্ত করে। তারপর তারা সকলে এক সঙ্গে শহরে ফিরে যায়। লোকরাও সব তাদের পেছন পেছন যায়। এখানে সকলে দারুণ খুশি ও সবাই আনন্দ করছে। আপনারা সেই শব্দই শুনতে পাচ্ছেন। |
11-1 Kings 1:45 : - |
11-1 Kings 1:46 : এমনকি শলোমন রাজ সিংহাসনেও বসেছেন! রাজার সমস্ত আধিকারিকবর্গ রাজা দায়ূদকে এ কাজের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলছে, ‘মহারাজ দায়ূদ, আপনি এক জন মহান রাজা এবং আমরা প্রার্থনা করি ঈশ্বর শলোমনকে এক জন মহান রাজা করবেন। আমাদের বিশ্বাস প্রভু শলোমনকে আপনার চেয়েও খ্যাতিমান করবেন এবং তাঁর রাজ্য আপনার রাজ্যের থেকেও বড় হবে।’“রাজা দায়ূদও বয়ং সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিছানা থেকেই শলোমনের সামনে মাথা ঝুঁকিযে বলেছেন, |
11-1 Kings 1:47 : - |
11-1 Kings 1:48 : “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর ধন্য হলেন! মহিমাময প্রভু আমারই এক সন্তানকে আমার সিংহাসনে স্থাপন করলেন। এই শুভক্ষণ দেখার জন্য তিনি আমায় য়থেষ্ট দিন বাঁচতে দিয়েছেন।”‘ |
11-1 Kings 1:49 : তখন আদোনিয়র সমস্ত অতিথিরা ভয়ে পাংশু হয়ে তাড়াতাড়ি ভোজসভা ছেড়ে চলে গেল। |
11-1 Kings 1:50 : এমন কি আদোনিয় শলোমনের ভয়ে ভীত হয়ে বেদীর কাছে গিয়ে বেদীর কোণগুলিকে ধরলেন। |
11-1 Kings 1:51 : শলোমনকে গিয়ে এক জন খবর দিল, “মহারাজ, আপনার ভয়ে ভীত হয়ে আদোনিয় এখন পবিত্র তাঁবুতে য়জ্ঞবেদীর কোণগুলোকে ধরে আছে। আর সেখান থেকে কিছুতেই বেরোতে চাইছে না। সে বলছে, ‘আগে রাজা শলোমনকে প্রতিশ্রুতি করতে বলো য়ে তিনি আমাকে হত্যা করবেন না।”‘ |
11-1 Kings 1:52 : তখন শলোমন বললেন, “যদি আদোনিয়র আচার আচরণে প্রমাণ হয় য়ে সে একজন সত্ ব্যক্তি, আমি প্রতিশ্রুতি করছি আমি ওর মাথার একগাছি চুল পর্য়ন্ত ছোঁব না। কিন্তু ও যদি গোলমাল সৃষ্টি করে তাহলে ওকে মরতে হবে।” |
11-1 Kings 1:53 : তারপর রাজা শলোমন আদোনিয়কে নিয়ে আসার জন্য একজনকে পাঠালেন। সে আদোনিয়কে রাজা শলোমনের কাছে নিয়ে এলে, আদোনিয় রাজার সামনে অবনত হলেন। শলোমন তাঁকে বললেন, “যাও, বাড়ি যাও।” |
11-1 Kings 2:1 : ইতিমধ্যে দায়ূদের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এল। তিনি তখন শলোমনকে ডেকে বললেন, |
11-1 Kings 2:2 : “আমার আর বেশী দিন নেই, সব লোকের মতোই আমিও মারা যাব। কিন্তু তুমি এখন বলবান ও পূর্ণবযস্ক হয়ে উঠেছ। |
11-1 Kings 2:3 : এখন নিষ্ঠার সঙ্গে তোমার প্রভু ঈশ্বরের আজ্ঞা মেনে চল। মোশির বিধিপুস্তকে য়েমন লেখা আছে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর বিধি এবং আদেশ এবং সিদ্ধান্ত ও চুক্তি সতর্ক ভাবে মেনে চলবে। যদি তুমি মেনে চলো তাহলে তুমি তোমার সব কাজে প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হবে। |
11-1 Kings 2:4 : শলোমন, তুমি যদি ঈশ্বরের আজ্ঞাবহ হয়ে তাঁর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করো, তিনিও তাঁর এই প্রতিশ্রুতির কথা মনে রাখবেন। প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘যদি তোমার সন্তানসন্ততিরা সমস্ত হৃদয় দিয়ে এবং নিষ্ঠা সহকারে আমার নির্দেশ অনুযায়ীজীবনযাপন করে তাহলে সদাসর্বদা তোমারই বংশের কেউ না কেউ ইস্রায়েলের রাজ সিংহাসনে আসীন হবে।”‘ |
11-1 Kings 2:5 : দায়ূদ আরও বললেন, “তোমার নিশ্চয়ই মনে আছে, সরূযার পুত্র য়োয়াব আমার সঙ্গে কি করেছিল? সে ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীর দুই সেনাপতিকে হত্যা করেছিল। সে নেরের পুত্র অবনেরকে আর য়েথরের পুত্র অমাসাকে হত্যা করেছিল। মনে রেখো, শান্তির সময়ে সে এই দুজনকে হত্যা করেছিল এবং তাদের রক্তে তার পাযের জুতো রঞ্জিত করেছিল। তাকে শাস্তি দেওয়া আমার কর্তব্য। |
11-1 Kings 2:6 : কিন্তু এখন তুমি রাজা। তোমার যা বিবেচনায সঙ্গত বলে মনে হয়, সে ভাবেই ওকে শাস্তি দিও ও সে য়ে হত হয়েছে তা নিশ্চিত কর। বার্দ্ধক্যের সুস্থ স্বাভাবিক মৃত্যু য়েন ও ভোগ করতে না পারে। |
11-1 Kings 2:7 : গিলিয়দের বর্সিল্লযের সন্তানদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করো। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করো ও তাদের নিমন্ত্রণ করে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করো। কারণ আমি যখন তোমার ভাই অবশালোমের থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম, আমার সেই বিপদের দিনে ওরা আমায় সাহায্য করেছিল। |
11-1 Kings 2:8 : “আর মনে রেখো বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর বহুরীম নিবাসী গেরার পুত্র শিমিযি এখনও কাছে পিঠেই কোথাও আছে। আমি যখন মহনযিমে পালিয়ে যাই সে আমাকে নিদারুণ অভিশাপ দিয়ে অভিশপ্ত করেছিল। পরে যখন যর্দন নদীর তীরে সে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে আমি প্রভুর শপথ করে বলেছিলাম, আমি শিমিযিকে হত্যা করব না। |
11-1 Kings 2:9 : কিন্তু দেখো, ওকে য়েন শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দিও না। তুমি য়থেষ্টই বিচক্ষণ হয়েছ, কি করা দরকার তা তুমি নিজেই বুঝতে পারবে, কিন্তু দেখো ওকে বার্দ্ধক্যের শান্ত মৃত্যু ভোগ করতে দিও না।” |
11-1 Kings 2:10 : এরপর রাজা দায়ূদের মৃত্যু হলে, দায়ূদ শহরে তাঁকে সমাধিস্থ করা হল। |
11-1 Kings 2:11 : দায়ূদ |
11-1 Kings 2:40 : বছর ইস্রায়েলে শাসন করেছিলেন। তিনি হিব্রোণে |
11-1 Kings 2:7 : বছর ও জেরুশালেমে |
11-1 Kings 2:33 : বছর শাসন করেছিলেন। |
11-1 Kings 2:12 : অতঃপর শলোমন রাজা হয়ে তাঁর পিতার সিংহাসনে বসে রাজা দায়ূদের রাজ্য পুরোপুরি নিজের দখলে আনলেন। |
11-1 Kings 2:13 : হগীতের পুত্র আদোনিয় এসময়ে এক দিন শলোমনের মা বত্শেবার সঙ্গে দেখা করতে এলেন। বত্শেবা তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি বন্ধুত্ব ও প্রীতির সম্পর্ক বজায় রাখতে চাও?”আদোনিয় তাঁকে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে বললেন, “এ ব্যাপারে আপনার চিন্তার কোন কারণ নেই। |
11-1 Kings 2:14 : তবে আপনার কাছে আমার কিছু বক্তব্য আছে।”বত্শেবা বলল, “বলো কি ব্যাপার?” |
11-1 Kings 2:15 : আদোনিয় বলল, “আপনার মনে রাখা দরকার য়ে, এক সময়ে এ রাজ্য আমারই ছিল। ইস্রায়েলের লোকরা ভেবেছিল আমিই তাদের রাজা। কিন্তু ঈশ্বর এই অবস্থার পরিবর্তন করেছিলেন এবং শলোমনকে রাজা হিসেবে মনোনীত করেছিলেন। প্রভুর ইচ্ছায আমার ভাই এখন তাদের রাজা। |
11-1 Kings 2:16 : আমার আপনার কাছে একটি প্রার্থনা আছে, দয়া করে আমায় নিরাশ করবেন না।”বত্শেবা জানতে চাইলেন, “বলো কি তোমার ইচ্ছা?” |
11-1 Kings 2:17 : আদোনিয় বলল, “আমি জানি, রাজা শলোমন কখনও আপনার আদেশ অমান্য করবেন না। আপনি অনুগ্রহ করে তাঁকে আমায় শূনেমের অবীশগকে বিয়ে করার সম্মতি দিতে বলবেন।” |
11-1 Kings 2:18 : বত্শেবা বলল, “এ বিষয়ে আগে তাঁকে রাজার সঙ্গে কথা বলতে হবে।” |
11-1 Kings 2:19 : কথা মতো বত্শেবা বিষযটি নিয়ে রাজা শলোমনের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন। শলোমন তাঁকে আসতে দেখে তাড়াতাড়ি নিজের জায়গা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে মাথা ঝুঁকিযে সম্মান জানালেন। তারপর সিংহাসনে বসে ভৃত্যদের তাঁর মায়ের জন্য আরেকটি সিংহাসন আনতে হুকুম দিলেন। বত্শেবা গিয়ে তাঁর পুত্রের ডানপাশে বসলেন। |
11-1 Kings 2:20 : তারপর বললেন, “তোমার কাছে একটা ছোট জিনিস চাইতে এসেছি, আমাকে নিরাশ করো না।”রাজা বললেন, “মা, তুমি আমার কাছে যা খুশি তাই চাইতে পারো, আমি আপত্তি করবো না।” |
11-1 Kings 2:21 : বত্শেবা তখন বললেন, “তাহলে তোমার ভাই আদোনিয়কে শূনেমের অবীশগ বলে সেই মেয়েটিকে বিয়ে করতে অনুমতি দাও।” |
11-1 Kings 2:22 : একথা শুনে শলোমন তাঁর মাকে বললেন, “তুমি শুধু অবীশগকেই আদোনিয়র হাতে তুলে দিতে বলছ কেন? তার চেয়ে বলো না কেন, ওকেই এবার রাজা করে দিই। হাজার হোক ও আমার বড় ভাই, যাজক অবিয়াথর ও য়োয়াবও ওকে সমর্থন করবে।” |
11-1 Kings 2:23 : এরপর ক্রুদ্ধ শলোমন প্রভুর নামে প্রতিশ্রুতি করে বললেন, “আমি প্রতিশ্রুতি করছি, এর মূল্য আদোনিয়কে দিতে হবে। এজন্য ওকে প্রাণ দিতে হবে। |
11-1 Kings 2:24 : প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি মতো আমাকে ইস্রায়েলের রাজা করেছেন, আমার পিতা দায়ূদের রাজ সিংহাসনে আমাকে বসিযেছেন। তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীএ রাজ্য আমার ও আমার পরিবারের। এখন প্রভুর জীবিত থাকাটা য়েমন স্থির নিশ্চিত, তেমনি আমি শপথ নিয়ে বলছি য়ে আদোনিয় আজই মারা যাবে।” |
11-1 Kings 2:25 : এরপর শলোমন, য়েমন ভাবে যিহোয়াদার পুত্র বনাযকে নির্দেশ দিলেন, তেমনি বনায গেলেন এবং আদোনিয়কে হত্যা করলেন। |
11-1 Kings 2:26 : তারপর রাজা শলোমন যাজক অবিয়াথরকে ডেকে বললেন, “তোমাকে আমার হত্যা করা উচিত্, কিন্তু আমি এখন তোমাকে হত্যা করব না, সুতরাং তুমি তোমার বাড়ি অনাথোতে য়েতে পারো, কারণ তুমি আমার পিতা দায়ূদের সঙ্গে পদযাত্রার সময় প্রভুর পবিত্র সিন্দুকটি বয়ে নিয়ে গিয়েছিলে। আর আমি একথাও জানি, আমার পিতার দুঃসময়ে, তুমিও তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে কষ্ট ভোগ করেছিলে। |
11-1 Kings 2:27 : শলোমন অবিয়াথরকে একথাও বললেন য়ে সে আর যাজক হিসেবে প্রভুর সেবা কাজ করতে পারবে না। প্রভু যা বলেছিলেন সেই অনুযায়ীএই ঘটনাটি ঘটেছিল। যাজক এলি ও তার পরিবার সম্পর্কে ঈশ্বর একথা শীলোতে বলেছিলেন। এবং অবিয়াথর এলিরই উত্তরপুরুষ ছিলেন। |
11-1 Kings 2:28 : এখবর পেয়ে য়োয়াব খুব ভয পেয়ে গেলেন। য়োয়াব অবশালোমকে সমর্থন না করলেও আদোনিয়র পক্ষে ছিলেন। তাই য়োয়াব তাড়াতাড়ি প্রভুর তাঁবুতে গিয়ে প্রাণ বাঁচানোর জন্য বেদীর শরণ নিলেন। |
11-1 Kings 2:29 : পরে রাজা শলোমনের কাছে সংবাদ এল য়ে য়োয়াব প্রভুর তাঁবুর বেদীর কাছে আছেন, সুতরাং শলোমন বনাযকে য়োয়াবকে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। |
11-1 Kings 2:30 : বনায তখন প্রভুর তাঁবুর সামনে গিয়ে বললেন, “রাজার নির্দেশ মেনে তুমি ভালোয ভালোয বেরিয়ে এসো।”কিন্তু য়োয়াব বললেন, “না আমি এখানেই মরতে চাই।”বনায তখন ফিরে গিয়ে রাজাকে য়োয়াব যা বলেছেন তা জানাল। |
11-1 Kings 2:31 : অতঃপর রাজা নির্দেশ দিলো, “তাহলে ও যা বলেছে তাই হোক্। ওকে ওখানেই হত্যা করো আর তারপর ওকে কবর দাও। এক মাত্র তারপরই আমি ও আমার পরিবারের সকলে য়োয়াবের দোষ থেকে মুক্তি পাব, য়েটা সে নিরপরাধ লোকদের হত্যা করার ফলে হয়েছিল। |
11-1 Kings 2:32 : য়োয়াব, যারা ওর থেকে অনেক ভালো লোক ছিল দুই ব্যক্তি, ইস্রায়েলের সেনানায়ক নেরের পুত্র অবনের ও য়েথরের পুত্র যিহূদার সেনাবাহিনীর প্রধান অমাসাকে হত্যা করেছিল। আমার পিতা দায়ূদ সে সময় য়োয়াবের এই অপকর্মের কথা জানতেন না বলে ও রেহাই পেয়ে গিয়েছিল। তাই প্রভু ঐ লোকদের হত্যার জন্য য়োয়াবকে শাস্তি দেবেন। |
11-1 Kings 2:33 : তাকে এবং তার পরিবারের সকলকেই এই কর্মফল ভোগ করতে হবে। কিন্তু ঈশ্বর নিশ্চয়ই দায়ূদ ও তাঁর রাজ পরিবারের উত্তরপুরুষদের ও তাঁদের রাজত্বে শান্তি আনবেন।” |
11-1 Kings 2:34 : তখন যিহোয়াদার পুত্র বনায গিয়ে য়োয়াবকে হত্যা করল। য়োয়াবকে মরুভূমিতে তাঁর বাড়ির কাছে কবর দেওয়া হল। |
11-1 Kings 2:35 : এরপর শলোমন বনাযকে য়োয়াবের জায়গায় সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করলেন। এছাড়াও তিনি অবিয়াথরের জায়গায় সাদোককে নতুন প্রধান যাজক হিসেবে নিয়োগ করলেন। |
11-1 Kings 2:36 : তারপর রাজা শিমিযিকে ডেকে পাঠিয়ে তাকে জেরুশালেমে নিজের জন্য একটা বাড়ি বানিয়ে সেখানেই থাকতে নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেন শিমিযি য়েন কোন মতেই শহর ছেড়ে অন্য কোথাও না যায়। |
11-1 Kings 2:37 : রাজা শলোমন তাকে সাবধানও করে দিয়েছিলেন। “যদি তুমি জেরুশালেম ত্যাগ কর এবং কিদ্রোণের খালের ওপাশে পা বাড়াও তবে তোমাকে মরতে হবে এবং তার জন্য তুমি দাযী।” |
11-1 Kings 2:38 : শিমিযি একথায় সম্মতি জানিয়ে বলল, “ঠিক আছে মহারাজ, আমি আপনার নির্দেশ মেনেই চলবো।” তাঁর কথা মতো এরপর দীর্ঘদিন শিমিযি জেরুশালেমেই বাস করেছিল। |
11-1 Kings 2:39 : কিন্তু তিন বছর পরে শিমিযির দুই ক্রীতদাস পালিয়ে গিয়ে মাখার পুত্র গাতীয রাজা আখীশের রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিল। |
11-1 Kings 2:40 : একথা জানতে পেরে শিমিযি তার গাধায চড়ে গাতীয রাজা আখীশের কাছ থেকে তাদের ফিরিযে এনেছিল। |
11-1 Kings 2:41 : কিন্তু কেউ একজন গিয়ে একথা শলোমনের কানে তুললে, |
11-1 Kings 2:42 : শলোমন শিমিযিকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “আমি ঈশ্বরের নামে শপথ করে তোমায় বলেছিলাম য়ে তুমি জেরুশালেম শহরের বাইরে পা দিলে তোমার মৃত্যুদণ্ড হবে। আমি তোমাকে সাবধান করে দিয়েছিলাম য়ে তোমার নিজের ভুলের জন্য তোমার মৃত্যু হবে এবং তুমি আমার কথা মেনে চলতে রাজী হয়েছিলে। |
11-1 Kings 2:43 : তুমি আমার নির্দেশ মেনে চলবে বলেও কেন তা অমান্য করলে? কেন নিজের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে বলো? |
11-1 Kings 2:44 : তুমি ভালো করেই জানো বিভিন্ন সময়ে তুমি আমার পিতা দায়ূদেরও বিরুদ্ধাচরণ করেছ। এখন সেই সব পাপাচরণের জন্য প্রভু তোমায় শাস্তি দেবেন। |
11-1 Kings 2:45 : কিন্তু প্রভু আমায় আশীর্বাদ করবেন এবং রাজা দায়ূদের রাজ্য বাধামুক্ত হবে।” |
11-1 Kings 2:46 : একথা বলে রাজা শিমিযিকে হত্যার আদেশ দিলেন বনাযকে। বনায শিমিযিকে হত্যা করল। অবশেষে শলোমন তাঁর রাজ্যের পূর্ণ কর্ত্তৃত্ব লাভ করলেন। |
11-1 Kings 3:1 : শলোমন মিশরের ফরৌণের কন্যাকে বিয়ে করলেন এবং তাঁর কন্যাকে দায়ূদ শহরে নিয়ে এসে, মিশরের রাজা ফরৌণের সঙ্গে একটি চুক্তি স্থাপন করলেন। তখনও পর্য়ন্ত শলোমনের নিজের রাজপ্রাসাদ ও প্রভুর মন্দির বানানোর কাজ শেষ হয় নি। শলোমন সে সময়ে জেরুশালেমের চার পাশে একটি দেওয়াল নির্মাণ করাচ্ছিলেন। |
11-1 Kings 3:2 : য়েহেতু মন্দিরের কাজ তখনও শেষ হয়নি, লোকরা উচ্চস্থানের বেদীতে পশু বলি দিত। |
11-1 Kings 3:3 : শলোমন তাঁর পিতা দায়ূদের সমস্ত বিধি - নির্দেশ পালন করে প্রমাণ করেছিলেন য়ে সত্যি সত্যিই প্রভুর প্রতি তাঁর অটুট ভক্তি ও ভালোবাসা আছে। কিন্তু এছাড়া শলোমন একটি কাজ করতেন যা তাঁকে তাঁর পিতা রাজা দায়ূদ করতে বলেন নি। সেটি হল উচ্চস্থানে বলিদান ও ধূপধূনো দেওয়া। |
11-1 Kings 3:4 : রাজা শলোমন গিবিয়োনে বলি দিতে চাইছিলেন। সে সময় গিবিয়োন ছিল বলিদানের উচ্চস্থানগুলির মধ্যে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শলোমন গিবিয়োনের বেদীতে 1,000 হোমবলি উত্সর্গ করলেন। |
11-1 Kings 3:5 : যখন শলোমন গিবিয়োনে ছিলেন তখন রাতের বেলা প্রভু তাঁকে স্বপ্নে দর্শন দিলেন এবং তাকে একটি বর চাইতে বললেন। |
11-1 Kings 3:6 : তখন শলোমন তাঁকে বললেন, “হে প্রভু আমি আপনার সেবক, আমার পিতা দায়ূদের প্রতি আপনি অসীম করুণা প্রদর্শন করেছেন। তিনি সত্ ও সত্য পথে আপনার নির্দেশ মেনে চলেছিলেন, তাই আপনি তাঁর নিজের পুত্রকে তাঁরই সিংহাসনে বসে রাজ্য শাসন করতে দিয়ে, তাঁর প্রতি আপনার করুণা ও দয়া প্রদর্শন করেছেন। |
11-1 Kings 3:7 : হে প্রভু, আমার পিতার জায়গায় আপনি আমাকে রাজা করেছেন, কিন্তু আমি এখনও প্রায় শিশুর মতোই অজ্ঞ। এ ব্যাপারে আমার মধ্যে রয়োজনীয় অন্তর্দৃষ্টি ও বুদ্ধিমত্তার অভার রযেছে। |
11-1 Kings 3:8 : আমি আপনার দাস, আপনার নির্বাচিত লোকের অন্যতম সেবক। আর এই অংসখ্য় ভক্ত ও সেবকের শাসনভার আজ আমারই ওপর ন্যস্ত। |
11-1 Kings 3:9 : তাই আপনার কাছে আমার অনুনয় ও প্রার্থনা আমাকে আপনি প্রজ্ঞা দিন যাতে আমি রাজার কর্তব্য পালন করতে পারি ও লোকদের বিচার করতে পারি। যদি আমার এই মহত্ জ্ঞান থাকে তাহলে আমি ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করতে পারব। এই প্রজ্ঞা ব্যতীত আপনার এই অগণিত লোকদের শাসন করা আমার পক্ষে অসম্ভব।” |
11-1 Kings 3:10 : শলোমনের এই প্রার্থনা শুনে প্রভু তাঁর প্রতি খুবই সন্তুষ্ট হলেন। |
11-1 Kings 3:11 : তাই তিনি শলোমনকে বললেন, “তুমি নিজের জন্য দীর্ঘ জীবন বা ধনসম্পদ চাও নি। এমনকি তোমার শত্রুদের মৃত্যু কামনাও করো নি। তুমি শুধু সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার জন্য অন্তর্দৃষ্টি প্রার্থনা করেছ। |
11-1 Kings 3:12 : তাই আমি অতি অবশ্যই তুমি যা প্রার্থনা করেছ তা তোমায় দেব। আমি তোমাকে বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান করে তুলব। আমি তোমাকে এত বিচক্ষণতা দেব যা আজ পর্য়ন্ত কেউ কখনও পায নি এবং ভবিষ্যতেও পাবে না। |
11-1 Kings 3:13 : এছাড়াও তোমাকে পুরস্কৃত করার জন্য আমি তোমাকে সেসব জিনিসও দেব যা তুমি প্রার্থনা করো নি। সারা জীবন তুমি অসীম সম্পদ ও সম্মানের ভাগীদার হবে। তোমার মতো বড় রাজা আর পৃথিবীতে আর কেউ হবে না। |
11-1 Kings 3:14 : শুধু তুমি আমার প্রতি আস্থা রেখো আর তোমার পিতা দায়ূদের মতো আমার আদেশ ও বিধিগুলি মেনে চলো। আর তা যদি করো আমি তোমাকে দীর্ঘ জীবনও দেব।” |
11-1 Kings 3:15 : শলোমনের ঘুম ভেঙ্গে গেল। তিনি বুঝতে পারলেন, স্বপ্নের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বর বয়ং তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। তখন শলোমন জেরুশালেমে ফিরে গেলেন, ঈশ্বরের আদেশ সম্বলিত পবিত্র সিন্দুকটির সামনে দাঁড়ালেন এবং হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদন করলেন। এরপর য়ে সমস্ত নেতা ও রাজকর্মচারীরা রাজ্য শাসনের কাজে তাঁকে সহায়তা করেছিলেন তাঁদের সবাইকে নিয়ে একটি ভোজসভার আয়োজন করলেন। |
11-1 Kings 3:16 : একদিন দুটি গণিকা শলোমনের কাছে এসে উপস্থিত হল। |
11-1 Kings 3:17 : তাদের মধ্যে এক জন শলোমনকে বলল, “মহারাজ আমরা দুজনে একই ঘরে বাস করি। আমরা দুজনেই সন্তানসম্ভবা ছিলাম এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় উপস্থিত হয়। ঐ মেয়েটির উপস্থিতিতেই আমি আমার সন্তানের জন্ম দিই। |
11-1 Kings 3:18 : এর ঠিক তিনদিন পরে এই মেয়েটি তার শিশুর জন্ম দেয়। কিন্তু আমরা দুজন ছাড়া আমাদের বাড়ীতে অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তি ছিল না। |
11-1 Kings 3:19 : এক দিন রাতে ওর শিশুটি মারা যায় কারণ ও শিশুর ওপর শুয়েছিল। সে সময় ওর শিশুটি মারা যায়। |
11-1 Kings 3:20 : রাতের অন্ধকারে তখন ও আমার ঘুমন্ত অবস্থার সুয়োগ নিয়ে আমার শিশুটিকে ওর খাটে নিয়ে যায়। আর তারপর মৃত শিশুটিকে আমার পাশে শুইযে দেয়। |
11-1 Kings 3:21 : পরদিন সকালে আমি শিশুকে খাওয়াতে উঠে দেখি আমার পাশে একটি মৃত শিশু শোযানো আছে। তখন আমি খুঁটিযে লক্ষ্য করে দেখি য়ে সেটি মোটেই আমার শিশু নয়।” |
11-1 Kings 3:22 : অন্য মেয়েটি তত্ক্ষনাত্ এর প্রতিবাদ করে বলে, “মোটেই না! জীবন্ত শিশুটিই আমার। মৃতটা তোর!”প্রথম মেয়েটি এর উত্তরে বলল, “মিথ্যে কথা। মৃত শিশুটি তোর, এটা আমার!” এই ভাবে দুজনে রাজার সামনে ঝগড়া করতে থাকে। |
11-1 Kings 3:23 : তখন রাজা শলোমন বলল, “তোমরা দুজনেই বলছো জীবিত শিশুটি তোমার আর মৃত শিশুটি অন্য জনের।” |
11-1 Kings 3:24 : এখন আমি প্রহরীকে আদেশ দিচ্ছি গিয়ে একটা তরবারি নিয়ে আসতে। |
11-1 Kings 3:25 : রাজা শলোমন বললেন, “এবার ঐ শিশুটিকে কেটে দু - আধখানা করো এবং ওদের দুজনকে একটা করে আধখানা টুকরো দিয়ে দাও।” |
11-1 Kings 3:26 : একথা শুনে য়ে মহিলাটির শিশু মারা গিয়েছিল সে বলল, “ঠিক আছে তাই হোক্, তাহলে আমরা কেউই আর ওকে পাব না।” কিন্তু অন্য মহিলাটি, য়ে শিশুটির আসল মা, যার শিশুটির প্রতি পূর্ণ ভালবাসা ও সহানুভূতি ছিল, সে রাজাকে বলল, “মহারাজ দয়া করে শিশুটিকে মারবেন না। ওকেই শিশুটি দিয়ে দিন।” |
11-1 Kings 3:27 : তখন রাজা শলোমন বললেন, “থামো, শিশুটিকে কেটো না। প্রথম জনের হাতেই শিশুটিকে তুলে দাও, কারণ, ঐ হচ্ছে ওর আসল মা।” |
11-1 Kings 3:28 : ইস্রায়েলের সকলে শলোমনের এই বিচারের কথা শুনলো। তারা সকলেই শলোমনের অন্তর্দৃষ্টি ও বুদ্ধিমত্তার জন্য তাঁকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করত। তারা বুঝতে পেরেছিল সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার ব্যাপারে রাজা শলোমনের অন্তর্দৃষ্টি প্রায় ঈশ্বরের মতোই কাজ করে। |
11-1 Kings 4:1 : সমগ্র ইস্রায়েলের লোকের শাসনকর্তা ছিলেন রাজা শলোমন। |
11-1 Kings 4:2 : শাসনকার্য়্য় পরিচালনা করতে য়ে সমস্ত রাজকর্মচারী তাঁকে সাহায্য করতেন তারা হল:সাদোকের পুত্র যাজক অসরিয়। |
11-1 Kings 4:3 : শীশার দুই পুত্র ইলীহোরফ ও অহিয। এঁরা দুজনে রাজদরবারে সমস্ত ঘটনার বিবরণ নথিভুক্ত করতেন।অহীলূদের পুত্র যিহোশাফট লোকদের ইতিহাস বিষযক টীকা রচনা করতেন। |
11-1 Kings 4:4 : যিহোয়াদার পুত্র বনায ছিল সেনাবাহিনীর প্রধান।সাদোক ও অবিয়াথর যাজকের কাজ করতেন। |
11-1 Kings 4:5 : নাথনের পুত্র অসরিয় জেলা শাসকদের তত্ত্বাবধান করতেন।নাথনের আরেক পুত্র যাজক সাবুদ রাজা শলোমনের পরামর্শদাতা ছিলেন। |
11-1 Kings 4:6 : অহীশারের ওপর রাজপ্রাসাদের সব কিছুর তত্ত্বাবধান করবার দায়িত্ব ছিল।অব্দের পুত্র অদোনীরামের কাজ ছিল শ্রমিকদের খবরদারি করা। |
11-1 Kings 4:7 : সমগ্র ইস্রায়েলকে 12 টি জেলায ভাগ করা হয়েছিল। এই জেলাগুলির প্রত্যেকটির শাসন কাজ পরিচালনার জন্য শলোমন নিজে প্রাদেশিক শাসনকর্তা বা জেলা শাসকদের বেছে নিয়েছিলেন। এই সমস্ত প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের ওপর তাদের নিজেদের প্রদেশ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে রাজা ও তাঁর পরিবারকে সেই খাদ্য সরবরাহ করার নির্দেশ ছিল। বছরের 12 মাসের এক একটিতে এই 12 জন প্রদেশকর্তার এক এক জনের দায়িত্ব ছিল রাজাকে খাবার পাঠানো। |
11-1 Kings 4:8 : এই 12 জন প্রাদেশিক শাসনকর্তার নাম নীচে দেওয়া হল:ইফ্রয়িমের পার্বত্য প্রদেশের শাসক ছিলেন বিন্ - হূর। |
11-1 Kings 4:9 : মাকস, শালবীম, বৈত্ - শেমশ ও এলোন বৈত্ - হাননের শাসক ছিলেন বিন্ - দেকর। |
11-1 Kings 4:10 : বিন্ - হেষদ ছিলেন অরুব্বোত, সোখো ও হেফর প্রদেশের শাসনকর্তা। |
11-1 Kings 4:11 : দোর উপগিরি অঞ্চলের শাসনভার ছিল বিন্ - অবীনাদবের ওপর। তিনি রাজা শলোমনের কন্যা টাফত্কে বিয়ে করেছিলেন। |
11-1 Kings 4:12 : য়িষ্রিযেলের নিম্নবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত অঞ্চল অর্থাত্ বৈত্ - শান থেকে আবেল - মহোলা হয়ে য়ক্মিযাম পর্য়ন্ত বিস্তৃত তানক, মগিদ্দোর শাসক ছিলেন অহীলূদের পুত্র বানা। |
11-1 Kings 4:13 : বিন্ - গেবর ছিলেন রামোত্ - গিলিয়দের শাসক। গিলিয়দের মনঃশির পুত্র যাযীর সমস্ত শহর ও গ্রামগুলির শাসন কার্য়্য় পরিচালনা করতেন। তিনি অর্গোব জেলার বাশন অঞ্চলেরও শাসনকর্তা ছিলেন। এই অঞ্চলে বড় দেওয়ালে ঘেরা 60 টি শহর ছিল। শহরের দরজা বড় করার জন্য পিতলের কব্জা ব্যবহার হতো। |
11-1 Kings 4:14 : ইদ্দোরের পুত্র অহীনাদব ছিলেন মহনযিমের শাসক। |
11-1 Kings 4:15 : নপ্তালির প্রাদেশিক কর্তা অহীমাস বিয়ে করেছিলেন শলোমনের আরেক কন্যা বাসমত্কে। |
11-1 Kings 4:16 : হূশযের পুত্র বানা ছিলেন আশের ও বালোতের শাসক। |
11-1 Kings 4:17 : ইষাখরের প্রদেশকর্তা ছিলেন পারূহের পুত্র যিহোশাফট। |
11-1 Kings 4:18 : এলার পুত্র শিমিযির ওপর বিন্যামীন প্রদেশের দায়িত্ব ছিল। |
11-1 Kings 4:19 : ঊরির পুত্র গেবর গিলিয়দের রাজ্যপাল ছিল। গিলিয়দে যেখানে ইমোরীয়দের রাজা সীহোন ও বাশনের রাজা ওগ বাস করতেন। কিন্তু গেবর ছিল ঐ দেশের রাজ্যপাল। |
11-1 Kings 4:20 : সমুদ্রতীরে ছড়িয়ে থাকা রাশি রাশি বালির মতোই যিহূদা ও ইস্রায়েলে অসংখ্য় মানুষ বাস করত। খেযে পরে, মহাফূর্তিতে ও আনন্দে তারা সকলে দিন কাটাতো। |
11-1 Kings 4:21 : রাজা শলোমন ফরাত্ নদী থেকে পলেষ্টীয়দের দেশ ও মিশরের সীমা পর্য়ন্ত সমস্ত অঞ্চলে তাঁর রাজ্য বিস্তার করেছিলেন। শলোমন যতদিন বেঁচ্ছেিলেন ততদিন এই অঞ্চলের সমস্ত রাজ্যগুলি বশ্যতা স্বীকার করেছিল এবং তারা শলোমনের জন্য উপহার পাঠাত। |
11-1 Kings 4:22 : প্রতিদিন শলোমনের নিজের জন্য ও তাঁর সঙ্গে যারা এক সঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া করতো তাদের সকলের জন্য সব মিলিয়ে প্রায়।150 কে.জি ময়দা,300 কে.জি আটা,10 টি হৃষ্টপুষ্ট গরু,20 টি সাধারণ গরু,100 টি মেষ, হরিণ, খরগোশ, নানান পাখপাখালির মাংস প্রয়োজন হত। |
11-1 Kings 4:23 : - |
11-1 Kings 4:24 : ঘসা থেকে তিপ্সহ পর্য়ন্ত ফরাত্ নদীর পশ্চিমভাগের সমস্ত অঞ্চল শলোমনের অধীনস্থ ছিল। পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গেও রাজা শলোমনের মৈত্রী ও শান্তির সম্পর্ক বজায় ছিল। |
11-1 Kings 4:25 : শলোমনের রাজত্বকালে দান থেকে বের্ - শেবা পর্য়ন্ত যিহূদা ও ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা সুখে ও শান্তিতে জীবনযাপন করতো। তারা নিশ্চিন্ত মনে নিজেদের দ্রাক্ষাক্ষেত বা ডুমুর বাগানে বসে সময় কাটাতে পারত। |
11-1 Kings 4:26 : শলোমনের আস্তাবলে রথ টানার জন্য 4000 ঘোড়া রাখার ব্যবস্থা তো ছিলই, এছাড়াও তাঁর অধীনে ছিল 12,000 অশ্বারোহী সৈনিক। |
11-1 Kings 4:27 : বছরের প্রত্যেকটি মাসে 12 জন প্রাদেশিক শাসনকর্তার এক জন শলোমন এবং রাজার টেবিলে ভোজনকারী প্রত্যেকের জন্য নিত্য প্রযোজনীয খাবার সামগ্রী পাঠাতেন। তাদের সকলের জন্য তা প্রচুর পরিমাণ হত। |
11-1 Kings 4:28 : এই সমস্ত প্রাদেশিক শাসনকর্তারা রাজা শলোমনের ঘোড়াগুলির জন্য প্রচুর পরিমাণে খড় ও বার্লি পাঠাতেন। লোকরা এই সমস্ত খড় ও বার্লি আনত। |
11-1 Kings 4:29 : ঈশ্বর শলোমনকে প্রভূত জ্ঞানী করে তুলেছিলেন। শলোমনের বুদ্ধিমত্তা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা প্রায় অসম্ভব ছিল। তিনি বহু বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন ও অনেক কিছু গভীর ভাবে বুঝতে পারতেন। |
11-1 Kings 4:30 : প্রাচ্যের সমস্ত মানুষদের জ্ঞানের চেয়েও শলোমনের জ্ঞান বেশী ছিল। এমনকি তা মিশরের সমস্ত বাসিন্দাদের চেয়েও বেশী ছিল। |
11-1 Kings 4:31 : পৃথিবীর য়ে কোন ব্যক্তির চেয়েও তিনি বেশী জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান ছিলেন। ইষ্রাহীর এথন বা মাহোলের পুত্র হেমন, কল্কোল ও দর্দার চেয়েও তাঁর বুদ্ধি ও বিচক্ষণতা বেশী ছিল। ইস্রায়েল ও যিহূদার চারি দিকের সমস্ত দেশগুলিতে রাজা শলোমনের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। |
11-1 Kings 4:32 : তাঁর জীবদ্দশায় তিনি 1,005টি গান ও 3,000 প্রবাদ বাক্য লিপিবদ্ধ করেছিলেন। |
11-1 Kings 4:33 : প্রকৃতি সম্পর্কেও মহারাজ শলোমনের গভীর জ্ঞান ছিল। শলোমন বিভিন্ন গাছপালা থেকে শুরু করে লিবানোনের সুবিশাল মহীরূহ, দ্রাক্ষাকুঞ্জ, পশু, পাখী, সাপখোপ, সব বিষয়েই শিক্ষাদান করেন। |
11-1 Kings 4:34 : সমস্ত দেশের লোকরা রাজা শলোমনের জ্ঞানের কথা শুনতে আসত। সমস্ত দেশের রাজারা তাঁদের রাজ্যের জ্ঞানী ব্যক্তিদের শলোমনের কাছে তাঁর জ্ঞানগর্ভ কথা শোনবার জন্য পাঠাতেন। |
11-1 Kings 5:1 : সোরের রাজা হীরম ছিলেন রাজা শলোমনের পিতা দায়ূদের বন্ধু। হীরম যখন খবর পেলেন দায়ূদের পরে শলোমন নতুন রাজা হয়েছেন, তিনি তাঁর দাসদের শলোমনের কাছে পাঠালেন। |
11-1 Kings 5:2 : শলোমন রাজা হীরমকে জানালেন: |
11-1 Kings 5:3 : “আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, আমার পিতা রাজা দায়ূদকে তাঁর চারপাশে অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছিল যত দিন পর্য়ন্ত না প্রভু তাঁকে তাদের উপর বিজয়ী হতে দেন, য়ে কারণে প্রভু, তাঁর ঈশ্বরের সম্মানে কোনো মন্দির বানানোর সময় পাননি। |
11-1 Kings 5:4 : কিন্তু এখন প্রভু, আমার ঈশ্বরের ইচ্ছায আমার রাজ্যের সর্বত্র শান্তি বিরাজ করছে। আমার কোন শত্রু নেই। আমার প্রজাদেরও কোন বিপদের সম্ভাবনা নেই। |
11-1 Kings 5:5 : “প্রভু আমার পিতাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘তোমার পরে আমি তোমার পুত্রকেই রাজা করবো, আর সে আমার জন্য একটা মন্দির বানাবে। তাই আমার আন্তরিক ইচ্ছা প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমি এবার সেই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করব। |
11-1 Kings 5:6 : আর একাজে আমি আপনার সাহায্য চাই। এর জন্য আপনি দয়া করে লিবানোনে আপনার লোকজন পাঠান। তারা সেখানে এসে আমার এই কাজের জন্য এরস গাছ কাটবে। আমার নিজের ভৃত্যরাও আপনার লোকদের সঙ্গে হাত লাগাবে। একাজের জন্য আপনার ভৃত্যদের য়ে পারিশ্রমিক দেওয়া উচিত্ বলে আপনি মনে করবেন আমি তাই দেব, কিন্তু আপনার সাহায্য অবশ্যই চাই। আমাদের এখানকার ছুতোররা সীদোনের ছুতোরদের মতো দক্ষ নয়।” |
11-1 Kings 5:7 : হীরম শলোমনের এই অনুরোধ শুনে খুবই খুশি হলেন। তিনি আনন্দিত হয়ে বললেন, “প্রভুকে আমি আমার অশেষ ধন্যবাদ জানাই, কারণ এই মহান সাম্রাজ্য শাসনের জন্য তিনি রাজা দায়ূদকে এক জন বুদ্ধিমান পুত্র উপহার দিয়েছেন।” |
11-1 Kings 5:8 : এরপর হীরম শলোমনকে খবর পাঠালেন, “তোমার অনুরোধের কথা জানলাম। তোমার যতগুলি এরস গাছ ও দেবদারু গাছের প্রয়োজন আমি তোমায় দেব। |
11-1 Kings 5:9 : আমার ভৃত্যরা সেগুলো লিবানোন থেকে সমুদ্রের ধার পর্য়ন্ত আনার পর একসঙ্গে বেঁধে তুমি যেখানে চাও সেখানেই ভেলা করে সমুদ্রের কিনারা বেযে ভাসিযে দেব। তারপর আমি ভেলাগুলো সরিয়ে নেবার পর তুমি গাছগুলো নিয়ে নিতে পার। এবং আমার পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করাই হবে আমার প্রতি তোমার অনুগ্রহ।” |
11-1 Kings 5:10 : একাজের জন্য শলোমন প্রতি বছর হীরম ও তাঁর পরিবারবর্গের জন্য প্রায় 1,20,000 বুশেল গম, 1,20,000 গ্য়ালন খাঁটি তেল পাঠাতেন। |
11-1 Kings 5:11 : - |
11-1 Kings 5:12 : প্রতিশ্রুতি মতো প্রভু শলোমনকে অন্তর্দৃষ্টি ও জ্ঞান দিয়েছিলেন এবং রাজা হীরম ও শলোমনের মধ্যে শান্তি বজায় ছিল। তাঁরা দুজনে নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করেন। |
11-1 Kings 5:13 : রাজা শলোমন ইস্রায়েলের 30,000 ব্যক্তিকে তাঁর কাজে সহায়তার জন্য নিয়োগ করলেন। |
11-1 Kings 5:14 : তিনি এই সমস্ত লোকদের খবরদারি করার জন্য অদোনীরাম নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেন। শলোমন এই 30,000 লোককে দশ হাজার লোকের তিনটি দলে ভাগ করে দিয়েছিলেন। লিবানোনে এক মাস কাজ করবার পর প্রত্যেকটি দলের লোকরা বাড়ী য়েত এবং দু মাস বিশ্রাম নিত। |
11-1 Kings 5:15 : এছাড়াও শলোমন পার্বত্য অঞ্চলের 80,000 লোককে এই কাজে য়োগ দিতে বাধ্য করেন। এদের কাজ ছিল পাথর কাটা। আর আরো 70,000 লোক সেই পাথর বয়ে নিয়ে য়েত। |
11-1 Kings 5:16 : এদের সকলের তদারকির জন্য নিযুক্ত হয়েছিল আরো 3,300 জন। |
11-1 Kings 5:17 : রাজা শলোমন শ্রমিকদের মন্দিরের ভিত বানানোর জন্য বড় দামী পাথর কাটার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই সমস্ত পাথরগুলি খুব সাবধানে কাটা হত। |
11-1 Kings 5:18 : তারপর শলোমন ও হীরমের মিস্ত্রিরা আর বিব্লসের লোকরা এইসব পাথর খোদাই করত। তারা মন্দিরের জন্য রয়োজনীয় তক্তা ও পাথর বানাত। |
11-1 Kings 6:1 : ইস্রায়েলের লোকরা মিশর থেকে চলে আসার 480 বছরপরে এবং তাঁর রাজত্বের চার বছরের মাথায়, রাজা শলোমন ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এটি ছিল ঐ বছরের দ্বিতীয় মাস বা সিব মাস। |
11-1 Kings 6:2 : মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ছিল 60 হাত, প্রস্থে 20 হাত এবং উচ্চতায় 30 হাত। |
11-1 Kings 6:3 : মন্দিরের সামনেই 20 হাত দীর্ঘ ও 10 হাত চওড়া একটি বারান্দা ছিল। |
11-1 Kings 6:4 : মন্দিরের গায়ে কয়েকটা জানালা ছিল, য়েগুলোর ভেতরের অংশ বাইরের তুলনায় চওড়া। |
11-1 Kings 6:5 : অতঃপর শলোমন মূল মন্দিরের চারপাশ ঘিরে একটার ওপর আর একটা একসারি ঘর তৈরী করলেন। এগুলো প্রায় তিনতলা পর্য়ন্ত উঁচু ছিল। |
11-1 Kings 6:6 : ঘরগুলো মন্দিরের দেওয়াল সংলগ্ন হলেও ঘরের কড়ি - বরগাগুলো মন্দিরের দেওয়ালের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। মন্দিরের দেওয়ালটি ওপরের দিকে ক্রমশঃ সরু হয়ে উঠেছিল, অতএব এই ঘরগুলোর এক দিকের দেওয়াল ঠিক নীচের ঘরের দেওয়ালের থেকে সরু হয়ে গিয়েছিল। একদম নীচের তলার ঘরের প্রস্থ ছিল 5 হাত, মাঝের ঘরের প্রস্থ ছিল প্রায় 6 হাত এবং একেবারে ওপরের ঘরের প্রস্থ ছিল প্রায় 7 হাত। |
11-1 Kings 6:7 : দেওয়ালগুলো বানানোর জন্য মিস্ত্রিরা বড় পাথর ব্যবহার করেছিল। এই সব পাথর য়েখান থেকে আনা সেখানেই কেটে আনা হয়েছিল বলে মন্দির প্রাঙ্গণে হাতুড়ি, কুড়ুল বা কোন রকমের আওয়াজ পাওয়া য়েত না। |
11-1 Kings 6:8 : নীচের ঘরগুলোয় প্রবেশদ্বার ছিল মন্দিরের দক্ষিণ দিক থেকে। তারপর ভেতরে ঢোকার পর সিঁড়ি ওপরদিকে উঠে গিয়েছিল একতলা ও দোতলা পর্য়ন্ত এবং সেখান থেকে তিনতলা পর্য়ন্ত। |
11-1 Kings 6:9 : শলোমনের মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হল। মন্দিরের প্রতিটি অংশ এরস গাছের তক্তা দিয়ে ঢাকা ছিল। |
11-1 Kings 6:10 : মন্দিরের চার পাশের ঘর বানানোর কাজও শেষ হল। এই ঘরগুলো প্রায় 5হাত উঁচু ছিল। এই সব ঘরের এরস কাঠের কড়ি মন্দিরকে ছুঁযে থাকত। |
11-1 Kings 6:11 : প্রভু শলোমনকে বলেছিলেন, |
11-1 Kings 6:12 : “যদি তুমি আমার বিধি এবং নির্দেশগুলি মেনে চলো তাহলে আমি তোমার যা যা করব বলে তোমার পিতা দায়ূদকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা পালন করব। |
11-1 Kings 6:13 : এছাড়াও তুমি য়ে মন্দির তৈরী করছ সেখানে ইস্রায়েলের সন্তান সন্ততিদের মধ্যে বাস করব। ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের কখনও ছেড়ে যাব না।” |
11-1 Kings 6:14 : শলোমন মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ করলেন। |
11-1 Kings 6:15 : মন্দিরের ভেতরের পাথরের দেওয়াল ও ছাদ এরস কাঠে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। মন্দিরের মেঝে ঢাকা হয়েছিল দেবদারু গাছের তক্তা দিয়ে। |
11-1 Kings 6:16 : মন্দিরের পেছন দিকে 20 হাত দীর্ঘ একটি ঘর বানানো হয়েছিল। এই ঘরটি ছিল মন্দিরের পবিত্রতম স্থান। এই ঘরের দেওয়াল মেঝের থেকে ছাদ পর্য়ন্ত এরস কাঠে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। |
11-1 Kings 6:17 : পবিত্রতম স্থানের সামনে ছিল মন্দিরের মূল অংশ বা ঘরটি, যার দৈর্ঘ্য প্রায় পৌনে 40 হাত। |
11-1 Kings 6:18 : এখানকার দেওয়াল এবং ছাদও একই ভাবে এরসকাঠে ঢাকা ছিল। দেওয়ালের কোন পাথরই দেখা য়েত না। দেওয়ালে এরস কাঠের নানা ধরণের ফুল ও লতাপাতার ছবি খোদাই করা ছিল। |
11-1 Kings 6:19 : প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি রাখার জন্য শলোমন মন্দিরের একেবারে পেছনদিকে বিশেষ ভাবে ঘরটি নির্মাণ করেছিলেন। |
11-1 Kings 6:20 : এই ঘরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা ছিল 20 হাত। |
11-1 Kings 6:21 : শলোমন ঘরটি আগাগোড়া বিশুদ্ধ সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন। তিনি ঘরের সামনে ধূপধূনো দেবার জন্য একটি বেদী তৈরী করেছিলেন। তিনি বেদীটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন এবং তার চারপাশে সোনার হার জড়িয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়াও ঘরটিতে সোনায মোড়া দুই করূব দূতের মূর্ত্তি ছিল। |
11-1 Kings 6:22 : বস্তুত গোটা মন্দিরটাই সোনায় মোড়া ছিল। পবিত্রতম স্থানের সামনের বেদীটিও ছিল সোনায় ঢাকা। |
11-1 Kings 6:23 : মন্দির নির্মাতারা 10 হাত দীর্ঘ করূব দূতের ডানাওযালা মূর্ত্তি দুটো প্রথমে বিশেষ এক ধরণের গাছের কাঠে বানিয়ে তারপর সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিল। |
11-1 Kings 6:24 : মূর্ত্তি দুটোর প্রত্যেকটি ডানার দৈর্ঘ্য প্রায় 5 হাত করে অর্থাত্ ডানার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্য়ন্ত মূর্ত্তিদুটো ছিল প্রায় 10 হাত চওড়া। গর্ভগৃহের পাশাপাশি, সম দৈর্ঘ্যের এই মূর্ত্তি দুটো দাঁড় করানো থাকত। |
11-1 Kings 6:25 : - |
11-1 Kings 6:26 : - |
11-1 Kings 6:27 : - |
11-1 Kings 6:28 : দুটো করূব দূত সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিল। |
11-1 Kings 6:29 : মন্দিরের মূল ঘরটির দেওয়ালের ওপর এবং মন্দিরের অন্তবর্ত্তী ঘরটির দেওয়ালের তালগাছ বিভিন্ন ফুল, লতাপাতা ও করূব দূতের ছবি খোদাই করা ছিল। |
11-1 Kings 6:30 : দুটো ঘরের মেঝেই সোনায় ঢাকা ছিল। |
11-1 Kings 6:31 : কর্মীরা জিতগাছের কাঠ দিয়ে দুটো দরজা বানিয়েছিল এবং সে দুটি পবিত্রতম স্থানের প্রবেশ পথে বসিযে দিয়েছিল। দরজার পথে চারপাশের কাঠামো 1/5 হাত চওড়া ছিল। |
11-1 Kings 6:32 : তারা জৈতুন গাছের কাঠ থেকে দুটো দরজা তৈরী করল। মিস্ত্রির সোনার পাতে মোড়া দরজা দুটোয খোদাই করা ছিল তালগাছ বিভিন্ন লতাপাতা ও করূব দূতের ছবি। |
11-1 Kings 6:33 : মূল ঘরটিতে প্রবেশ করবার জন্যও তারা দরজা বানিয়েছিল। একটি চার কোণা দরজার কাঠামো বানানোর জন্য তারা জিতগাছের কাঠ ব্যবহার করেছিল। যা চওড়ায ছিল চার ভাগের এক ভাগ। |
11-1 Kings 6:34 : সেই কাঠামোয দেবদারু কাঠের দুটি দরজা বসানো হয়। এই প্রত্যেকটি দরজা আবার দুভাগে মুড়ে ভাঁজ হতো। এগুলোর ওপরেও একই রকম করূব দূতের ছবি খোদাই করে সোনায় মোড়া ছিল। |
11-1 Kings 6:35 : - |
11-1 Kings 6:36 : এরপর তিনসারি কাটা পাথরের দেওয়াল ও একসারি এরস কাঠের দেওয়াল দিয়ে ঘিরে মন্দিরের ভেতরের অংশ তৈরী করা হল। |
11-1 Kings 6:37 : সিব মাসে শলোমনের চতুর্থ বছরের রাজত্বের দ্বিতীয় মাসে শুরু করে বুল মাসে, |
11-1 Kings 6:38 : অর্থাত্ তাঁর একাদশ বছরের অষ্টম মাসের রাজত্বের সময় মন্দিরটির নির্মাণ কার্য়্য় শেষ হয়। য়ে ভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল সাত বছর সময় নিয়ে ঠিক সে ভাবে মন্দিরটি বানানো হয়েছিল। |
11-1 Kings 7:1 : রাজা শলোমন তাঁর নিজের জন্য একটি রাজপ্রাসাদও বানিয়েছিলেন। প্রাসাদটি বানাতে 13 বছর সময় লেগেছিল। |
11-1 Kings 7:2 : এছাড়াও তিনি “লিবানোনের বাগান” নামে একটি বাড়ি বানিয়েছিলেন। এই বাড়ীটির দৈর্ঘ্য ছিল 100 হাত, প্রস্থ 50 হাত ও উচ্চতা 30 হাত। বাড়ীটায এরস কাঠের চারসারি স্তম্ভ ছিল। স্তম্ভগুলির মাথায় কাঠের আচ্ছাদন ছিল। |
11-1 Kings 7:3 : স্তম্ভের শীর্ষভাগে ছিল সারি সারি কড়ি বর্গা। আর তার ওপর ছাদের জন্য এরস তক্তা বসানো হয়েছিল। একেকটি স্তম্ভের ওপর 15টি কড়ি মিলিয়ে মোট 45টি কড়ি বসানো ছিল। |
11-1 Kings 7:4 : প্রত্যেকটি ধারের দেওয়ালে তিন সারি করে মুখোমুখি জানালা বসানো ছিল। |
11-1 Kings 7:5 : প্রত্যেক সারির শেষে দরজা ছিল। দরজাগুলোর মুখ এবং কাঠামো ছিল চার কোণা। |
11-1 Kings 7:6 : এছাড়া শলোমন 50 হাত লম্বা ও 30 হাত চওড়া একটি “ঝুলন্ত বারান্দা” বানিয়েছিলেন। বারান্দার সামনে একটা ছাদ ছিল য়েটা অনেক থাম বা খিলানকে অবলম্বন করেছিল। |
11-1 Kings 7:7 : লোকের বিচার করার জন্য শলোমন একটি “বিচার কক্ষও” বানিয়েছিলেন। এই ঘরের আগাগোড়া এরস কাঠে মোড়া ছিল. |
11-1 Kings 7:8 : শলোমনের নিজের বাসগৃহটি এই বিচারকক্ষের ভেতরে ছিল। এই গৃহটি বিচারকক্ষের মতোই ছিল। তিনি তাঁর স্ত্রী, মিশরের রাজার মেয়ের জন্যও একই রকম একটা গৃহ বানিয়ে দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 7:9 : প্রত্যেকটি বাড়ী মূল্যবান পাথরে তৈরী হয়েছিল। বিশেষ এক ধরণের করাতের সাহায্যে প্রথমে পাথরগুলোকে সঠিক মাপে সামনে ও পেছনে কেটে নেওয়া হত। একেবারে বাড়ির ভিত থেকে দেওয়ালের মাথা পর্য়ন্ত এইসব দামী পাথর বসানো হত। এমনকি উঠোনের চারপাশের দেওয়ালগুলোও এই সমস্ত দামী পাথরে বানানো হয়েছিল। |
11-1 Kings 7:10 : বাড়ির ভিতগুলো য়ে সমস্ত বড় বড় দামী পাথরে বানানো হত সেগুলোর দৈর্ঘ্য ছিল 10 হাত এবং কয়েকটি ছিল 8 হাত। |
11-1 Kings 7:11 : ঐসব পাথরের ওপর ছিল অন্যান্য মূল্যবান পাথর এবং এরস গাছের তৈরী থাম। |
11-1 Kings 7:12 : রাজপ্রাসাদের আঙ্গিনা থেকে শুরু করে মন্দির প্রাঙ্গণ, মন্দিরের বারান্দা, ঘরের চারপাশে তিন সারি পাথর ও এক সারি এরস কাঠের দেওয়াল ছিল। |
11-1 Kings 7:13 : রাজা শলোমন খবর পাঠিয়ে সোর থেকে হীরম নামে এক ব্যক্তিকে জেরুশালেমে নিয়ে আসেন। |
11-1 Kings 7:14 : হীরমের মা ছিলেন নপ্তালির এক ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীর মহিলা। তাঁর মৃত পিতা ছিলেন সোরের বাসিন্দা। হীরম ছিল পিতলের জিনিসপত্রের দক্ষ কারিগর। এ কারণেই শলোমন হীরমকে ডেকে পাঠিয়ে পিতলের কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। যা কিছু পিতলের কাজ সে সবই হীরম করেছিল। |
11-1 Kings 7:15 : হীরম প্রায় 18 হাত দীর্ঘ, 12 হাত পরিধিযুক্ত এবং 3 ইঞ্চি পুরু পিতলের দুটো ফাঁপা স্তম্ভ বানিয়েছিল। |
11-1 Kings 7:16 : এছাড়া হীরম মন্দিরের জন্য 5 হাত উচ্চ খাঁটি পিতলের দুটি রাজস্তম্ভ বানিয়েছিল এবং তাদের স্তম্ভগুলির মাথায় বসিযেছিল। |
11-1 Kings 7:17 : এরপর হীরম এই স্তম্ভগুলি ঢাকার জন্য দুটো শিকলের জাল বানায়। |
11-1 Kings 7:18 : তারপর সে ডালিমের মত দেখতে পিতলের দুসারি ফুল বানায়। এগুলি প্রতিটি স্তম্ভের জালের ওপর এমন ভাবে রাখা হয় য়ে স্তম্ভগুলির চূড়া ঢাকা পড়ে যায়। |
11-1 Kings 7:19 : ফলতঃ স্তম্ভগুলির সওযা হাত থেকে 5 হাত পর্য়ন্ত লম্বা শিখরগুলি ফুলের মত দেখতে লাগল। স্তম্ভ চূড়াগুলো স্তম্ভের উপর বাটির মত দেখতে জালে বসানো হয়েছিল। ওখানে স্তম্ভ চূড়াগুলোর চার পাশে |
11-1 Kings 7:20 : টা ডালিম সারিবদ্ধভাবে বসানো ছি ল। |
11-1 Kings 7:21 : হীরম পিতল নির্মিত মন্দিরের বারান্দাতে দুটি স্তম্ভ স্থাপন করল। দক্ষিণ দিকের স্তম্ভটিকে বলা হত যাখীন। উত্তর দিকের স্তম্ভটিকে বলা হত বোযস। |
11-1 Kings 7:22 : পুষ্পাকৃতি স্তম্ভ চূড়া দুটোকে স্তম্ভের মাথায় বসিযে স্তম্ভের কাজ শেষ করা হয়। |
11-1 Kings 7:23 : অতঃপর হীরম পিতল দিয়ে গোলাকার একটা জলাধার বানালো, যার নাম দেওয়া হল “সমুদ্র।” এটির পরিধি ছিল 30 হাত, ব্যাস ছিল 10 হাত ও গভীরতা ছিল 5 হাত । |
11-1 Kings 7:24 : জলাধারটি ঘিরে পিতলের একটি ফালি বসানো ছিল। এই ফালিটির তলায় জলাধারের গায়ে দুসারি পিতলের লতাপাতার নকশা কাটা ছিল। |
11-1 Kings 7:25 : আর গোটা জলাধারটি বসানো ছিল 12টি পিতলের তৈরী ষাঁড়ের পিঠে 12টি ষাঁড়ের তিনটির মুখ ছিল উত্তরমুখী, তিনটির দক্ষিণমুখী, তিনটির পূর্বমুখী ও বাকী তিনটির পশ্চিমমুখী। |
11-1 Kings 7:26 : জলাধারটির চারিধার 3 ইঞ্চি পুরু। জলাধারের কাণা পানপাত্রের কাণার সদৃশ অথবা ফুলের পাপড়ির মতো ছিল। জলাধারটিতে প্রায় 11,000 গ্য়ালন জল ধরত। |
11-1 Kings 7:27 : এরপর হীরম 10টি পিতলের ঠেলা বানালো। প্রত্যেকটি ঠেলা ছিল 4 হাত লম্বা, 4 হাত চওড়া আর উচ্চতায় 3 হাত। |
11-1 Kings 7:28 : ঠেলাগুলি কাঠামোয বসানো চৌকোণা তক্তা দিয়ে বানানো হয়েছিল, |
11-1 Kings 7:29 : যার ওপর পিতলের সিংহ, ষাঁড় ও করূব দূতের প্রতিকৃতি খোদাই করা ছিল। এইসব প্রতিকৃতির ওপরে ও নীচে নানান ফুলের নকশা কাটা হয়েছিল। |
11-1 Kings 7:30 : প্রতিটি ঠেলায 4টি করে পিতলের চাকা ছিল। কোণায ছিল একটি বড় পাত্র রাখার মতো পিতলের কয়েকটি পাযা, য়েগুলোর গায়ে নানা ধরণের ফুল লাগানো হয়েছিল। |
11-1 Kings 7:31 : বাটিগুলির প্রায় 1 হাত ওপরে একটি নকশা খোদাই করা কাঠামো ছিল। বাটিগুলির মুখ ছিল গোল, ব্যাস 1.5 হাত। কাঠামোটি ছিল চৌকোণা, গোল নয়। |
11-1 Kings 7:32 : কাঠামোর নীচের দিকে চারটি চাকা ছিল। চাকাগুলির ব্যাস 1.5 হাত। চাকার মধ্যের দণ্ডগুলি ঠেলা গাড়ীর সঙ্গে একসঙ্গেই যুক্ত ছিল। |
11-1 Kings 7:33 : এই চাকাগুলো ছিল রথের চাকার মতো এবং চাকার সব কিছুই ছিল পিতলে বানানো। |
11-1 Kings 7:34 : পাত্র ধরে রাখার পাযা চারটি প্রত্যেকটা ঠেলার চারকোণায বসানো ছিল। এগুলোও ঠেলার সঙ্গে একই ছাঁচে বসানো হয়। |
11-1 Kings 7:35 : প্রত্যেকটা ঠেলার ওপরের দিকে পিতলের একটা করে ফালি বসানো ছিল। এই ফালিটাও ছিল একই ছাঁচে বানানো। |
11-1 Kings 7:36 : ঠেলার চারপাশে এবং কাঠামোর গায়ে সিংহ, তালগাছ, করূব দূত ইত্যাদির ছবি খোদাই করা ছিল। গোটা ঠেলার যেখানেই জায়গা ছিল সেখানেই এই সব খোদাই করে দেওয়া হয়। আর ঠেলার চতুর্দিকে ফুলের নকশা খোদাই করে দেওয়া হয়েছিল। |
11-1 Kings 7:37 : হীরম একই রকম দেখতে মোট 10টি ঠেলা বানিয়েছিল। এই প্রত্যেকটা ঠেলাই পিতল দিয়ে তৈরী একই ছাঁচে ফেলে বানানো হয়েছিল, য়ে কারণে এই সব কটাই এক রকম দেখতে ছিল। |
11-1 Kings 7:38 : এছাড়াও হীরম প্রত্যেকটা ঠেলার জন্য একটা করে মোট 10টি বড় বাটি বানিয়েছিল। য়েগুলো প্রায় 4 হাত করে চওড়া ছিল এবং এই পাত্রগুলোয 230 গ্য়ালন পর্য়ন্ত পানীয় ধরত। |
11-1 Kings 7:39 : হীরম ঠেলাগুলোর পাঁচটি রেখেছিল মন্দিরের উত্তর দিকে এবং পাঁচটি মন্দিরের দক্ষিণ দিকে। আর বড় পাত্রটিকে মন্দিরের দক্ষিণপূর্ব কোণায বসিযেছিল। |
11-1 Kings 7:40 : এছাড়াও শলোমনের নির্দেশ মতো অজস্র পাত্র, ছোট হাতা, ছোট বাটি যা কিছু তাকে বানাতে বলা হয়েছিল সে বানিয়েছিল। প্রভুর মন্দিরে হীরম যা কিছু বানিয়েছিল তার তালিকা দেওয়া হল:2টি স্তম্ভ, স্তম্ভের ওপরে বসানোর জন্য বাটির মতো দেখতে2টি স্তম্ভ চূড়া, গম্বুজগুলো ঘেরার জন্য2টি জাল, জালে লাগানোর জন্য400টি ডালিম। প্রতিটি জালের জন্য 2 সারি ডালিম ছিল যাতে স্তম্ভগুলির মাথার ওপরের গম্বুজ ঢাকা পড়ে, একটা বাটি সহ 10টি ঠেলা, একটি বড় চৌবাচ্চা যার নীচে ছিল 12টি ষাঁড়, ছোট হাতা, ছোটখাটো পাত্র ও প্রভুর মন্দিরের জন্য রয়োজনীয় অন্যান্য বাসনকোসন।শলোমন যা যা চেয়েছিলেন, হীরম তার সবই বানিয়ে দিয়েছিল চক্চকে পিতল দিয়ে। |
11-1 Kings 7:41 : - |
11-1 Kings 7:42 : - |
11-1 Kings 7:43 : - |
11-1 Kings 7:44 : - |
11-1 Kings 7:45 : - |
11-1 Kings 7:46 : পিতল দিয়ে এতো বেশী জিনিসপত্র বানানো হয়েছিল য়ে শলোমন কখনও এসব ওজন করার চেষ্টা করেন নি। শলোমন এসবই য়র্দ্দন নদীর সুক্কোত্ ও সর্ত্তনের মধ্যবর্তী অঞ্চলে বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই সব জিনিসই পিতল গলিযে ছাঁচে ঢেলে বসানো হয়। |
11-1 Kings 7:47 : - |
11-1 Kings 7:48 : শলোমন তাঁর মন্দিরের জন্য অনেক জিনিসই সোনা দিয়ে বানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। মন্দিরের য়েসব জিনিস শলোমন সোনা দিয়ে বানিয়েছিলেন সেগুলো হল:সোনার বেদী,একটি সোনার টেবিল (যার ওপরে সাজিযে ঈশ্বরকে রুটির নৈবেদ্য দেওয়া হত),পবিত্রতম স্থানের উত্তর ও দক্ষিণে পাঁচটি পাঁচটি করে মোট 10টি বাতিদান,পবিত্রতম স্থানের উত্তর ও দক্ষিণের জন্য 5টি করে চিমটে, সোনার বাটি,কব্জাসমূহ, ছোট বাটি, পবিত্রতম স্থান ও মূল ঘরটির দরজার জন্য সোনার কপাট। |
11-1 Kings 7:49 : - |
11-1 Kings 7:50 : - |
11-1 Kings 7:51 : এমনি করে শেষ পর্য়ন্ত শলোমন প্রভুর মন্দিরের জন্য যা যা করতে চেয়েছিলেন সেই কাজ শেষ হল। এরপর তাঁর পিতা রাজা দায়ূদ মন্দিরের জন্য য়ে সব জিনিস তাঁর কোষাগারে রেখে দিয়েছিলেন, শলোমন সেই সমস্ত জিনিস মন্দিরে নিয়ে এলেন। সোনা ও রূপো তিনি প্রভুর মন্দিরের কোষাগারে তুলে রাখলেন। |
11-1 Kings 8:1 : এরপর রাজা শলোমন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তি, পরিবারগোষ্ঠীর প্রধান ও নেতাদের তাঁর কাছে জেরুশালেমে ডেকে পাঠালেন। শলোমন দায়ূদ নগরী থেকে সাক্ষ্যসিন্দুকটি মন্দিরে আনার সময় তাঁর সঙ্গে য়োগ দেবার জন্য এই সব ব্যক্তিদের ডেকে পাঠিয়ে ছিলেন। |
11-1 Kings 8:2 : অতঃপর এথানীম মাসে অর্থাত্ সপ্তম মাসে ফসল সঞ্চয়ের উত্সবের সময় ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা এসে রাজা শলোমনের সঙ্গে য়োগদান করল। |
11-1 Kings 8:3 : সমস্ত প্রবীণরা এসে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানোর পর যাজকরা |
11-1 Kings 8:4 : সেই প্রভুর পবিত্র সিন্দুক, ঈশ্বরের উপাসনার জন্য ব্যবহৃত পবিত্র তাঁবুটি ও তাঁবুর জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে চলল। লেবীয়রা এই কাজে যাজকদের সাহায্য করেছিল। |
11-1 Kings 8:5 : রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দারা সেই পবিত্র সিন্দুকের সামনে একত্রিত হবার পর অগণিত পশু বলি দেওয়া হল। |
11-1 Kings 8:6 : তারপর যাজকরা প্রভুর এই পবিত্র সিন্দুকটিকে মন্দিরের পবিত্রতম স্থানে যেখানে সিন্দুক রাখার জায়গা সেখানে স্থাপন করল। |
11-1 Kings 8:7 : সিন্দুকটিকে করূব দূতদের মূর্ত্তির ডানার তলায় এমনভাবে রাখা হল, যাতে দেবদূতদের ছড়ানো ডানা সেই সিন্দুকটা ও সিন্দুকটার বহন - দণ্ডের ওপর মেলা থাকে। |
11-1 Kings 8:8 : বহন - দণ্ডগুলো খুবই লম্বা ছিল। পবিত্রতম স্থানের পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে যদিও বহনদণ্ডগুলি দেখা য়েত, বাইরে থেকে এই দণ্ডগুলি দেখা য়েত না। এমনকি দণ্ডগুলি এখনও সেই একই জায়গায় রাখা আছে। |
11-1 Kings 8:9 : সিন্দুকের মধ্যে কেবল দুটি পবিত্র প্রস্তর ফলক রাখা ছিল। প্রস্তর ফলক দুটোই মোশি, হোরেব বলে একটা জায়গায় এই সিন্দুকের মধ্যে ভরে রেখেছিলেন। মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পর ইস্রায়েলের বাসিন্দারা ঈশ্বরের সঙ্গে একটি চুক্তির ফলস্বরূপ হোরেব নামে জায়গাটিতে থাকতে বাধ্য হয়েছিল। |
11-1 Kings 8:10 : যাজকরা পবিত্র সিন্দুকটিকে পবিত্রতম স্থানের পবিত্র জায়গায় রেখে বেরিয়ে আসার পর, প্রভুর মন্দিরটি অলৌকিক মেঘেভরে গেল। |
11-1 Kings 8:11 : মন্দিরটি প্রভুর মহিমাযভরে যাওয়ায় যাজকরা তাঁদের কাজ শেষ করতে পারলেন না। |
11-1 Kings 8:12 : তখন শলোমন বললেন:“প্রভু আকাশের ঐ জাজ্বল্যমান সূর্য় নিজেই গড়েছেন, কিন্তু তিনি থাকবার জন্য ঘন মেঘকে বেছে নিয়েছেন। |
11-1 Kings 8:13 : হে প্রভু, চির দিন তোমার থাকার জন্য আমি এই সুন্দর মন্দিরটি বানিয়েছি।” |
11-1 Kings 8:14 : ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা তখন সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তাই রাজা শলোমন তাদের দিকে ফিরে, ঈশ্বরকে তাদের আশীর্বাদ করতে অনুরোধ করলেন। |
11-1 Kings 8:15 : তারপর শলোমন এক সুদীর্ঘ মন্ত্রোচ্চারণে প্রভুর প্রার্থনা করলেন। তিনি বললেন, “ধন্য প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর মহামহিম। আমার পিতা দায়ূদকে তিনি য়ে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সবই তিনি পালন করেছেন। প্রভু আমার পিতাকে বলেছিলেন, |
11-1 Kings 8:16 : “আমি আমার সমস্ত লোকদের, ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে নিয়ে এসেছি, কিন্তু এখনও পর্য়ন্ত আমি আমার মন্দির বানানোর জন্য ইস্রায়েলের কোন নগর বেছে নিই নি। আর আমার লোকদের ইস্রায়েলীয়দের পরিচালনার জন্য কোনো ব্যক্তিকে মনোনীত করি নি। এবার আমি আমার উপাসনার জন্য জেরুশালেম শহরকে বেছে নিলাম, আর দায়ূদকে বেছে নিলাম আমার লোকদের, ইস্রায়েলীয়দের শাসন করার জন্য।’ |
11-1 Kings 8:17 : “আমার পিতা দায়ূদ প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য একটি মন্দির বানাতে খুবই উত্সুক ছিলেন। |
11-1 Kings 8:18 : কিন্তু প্রভু, আমার পিতা দায়ূদকে বললেন, ‘আমি জানি, আমার প্রতি তোমার আনুগত্য প্রকাশের জন্য তুমি একটা মন্দির বানাতে চাও। খুবই ভালো কথা, |
11-1 Kings 8:19 : কিন্তু তোমাকে নয়, আমি এই মন্দির বানানোর জন্য তোমার পুত্রকে বেছে নিয়েছি। সে - ই এই মন্দির বানাবে।’ |
11-1 Kings 8:20 : “প্রভু য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আজ তিনি সেই কথা রাখলেন। আমার পিতা দায়ূদের জায়গায় এখন আমি রাজা হয়েছি। প্রভুর প্রতিশ্রুতি মতো আমি এখন ইস্রায়েল শাসন করি এবং প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য আমিই এই মন্দির বানিয়েছি। |
11-1 Kings 8:21 : পবিত্র এই সিন্দুকটি রাখার জন্য আমি মন্দিরের ভেতর একটা জায়গা রেখেছি। ঐ পবিত্র সিন্দুকের ভেতরে প্রভুর সঙ্গে আমাদের পূর্বপুরুষদের য়ে চুক্তি হয়, তা রাখা আছে। আমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে নিয়ে আসার সময়, প্রভু তাদের সঙ্গে এই চুক্তি করেছিলেন।” |
11-1 Kings 8:22 : তারপর শলোমন প্রভুর বেদীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন আর সবাই তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়াল। শলোমন তাঁর হাত প্রসারিত করলেন, আকাশের দিকে তাকালেন |
11-1 Kings 8:23 : এবং বললেন:“হে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, পৃথিবীর এই আকাশে এবং এই পৃথিবীতে আপনার মতো কোন ঈশ্বরই নেই। আপনি আপনার লোকদের সঙ্গে করুণাবশতঃ চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন এবং আপনি আপনার প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। য়ে সমস্ত লোক আপনাকে অনুসরণ করে আপনি তাদের সহায় হয়ে থাকেন। |
11-1 Kings 8:24 : আপনি আপনার সেবক আমার পিতা দায়ূদকে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রেখেছেন। নিজের মুখে আপনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আপনার অসীম ক্ষমতার বলে আজ তাকে সত্য করেছেন। |
11-1 Kings 8:25 : এখন প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এবার আপনি আমার পিতা দায়ূদকে দেওয়া অন্য প্রতিশ্রুতিগুলোও পূরণ করুন। আপনি বলেছিলেন, ‘দায়ূদ, তোমারই মতো য়েন তোমার ছেলেরাও সদাসতর্ক ভাবে আমাকে অনুসরণ করে, আর তা যদি করে তাহলে সব সময়ই তোমারই বংশের কেউ না কেউ ইস্রায়েলে রাজত্ব করবে।’ |
11-1 Kings 8:26 : আবার প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমি আপনাকে আমার পিতাকে দেওয়া এই প্রতিশ্রুতি অনুগ্রহ করে পালন করতে বলছি। |
11-1 Kings 8:27 : “কিন্তু হে প্রভু, আপনি কি সত্যিই আমাদের সঙ্গে এই পৃথিবীতে বাস করবেন? ঐ বিশাল আকাশ আর স্বর্গের উচ্চতম স্থান, এমন কি স্বর্গের শিখর স্থান আপনাকে ধরে রাখতে পারে না। স্বভাবতঃই আমার বানানো এই মন্দিরও আপনার পক্ষে য়থেষ্ট নয়। |
11-1 Kings 8:28 : কিন্তু দয়া করে আপনি আমার প্রার্থনা ও মিনতি মনে রাখবেন। আমি আপনার দাস, আর আপনি আমার প্রভু ঈশ্বর। আজ আমি আপনার কাছে য়ে প্রার্থনা করলাম তা আপনি স্মরণে রাখবেন। |
11-1 Kings 8:29 : অতীতে আপনিই বলেছিলেন, ‘আমি ওখানে সম্মানিত হবো।’ আপনি দিবারাত্র এই মন্দিরের প্রতি আপনার কৃপাদৃষ্টি রাখবেন। এই মন্দিরে দাঁড়িয়ে আমি আপনার উদ্দেশ্যে য়ে প্রার্থনা করব তা য়েন আপনার কানে পৌঁছায। |
11-1 Kings 8:30 : প্রভু আমি ও আপনার ইস্রায়েলের অনুচররা এখানে এসে আপনার কাছে যা প্রার্থনা করবো তার প্রতি আপনি সজাগ থাকবেন। আমরা জানি স্বর্গেই আপনার বাস। আমাদের বিনতি সেখান থেকে আপনি আমাদের প্রার্থনা শুনে আমাদের ক্ষমা করবেন। |
11-1 Kings 8:31 : “কোন ব্যক্তি যদি অপর কোন ব্যক্তির প্রতি অন্যায আচরণ করে তাহলে তাকে এই বেদীতে নিয়ে আসা হবে। যদি সে সত্যিই অপরাধী না হয় তাহলে তাকে শপথ করে বলতে হবে য়ে সে নির্দোষ। |
11-1 Kings 8:32 : আপনি স্বর্গ থেকে সেকথা শুনে তার যথায়থ বিচার করবেন। যদি সে ব্যক্তি অপরাধী হয় তবে আমাদের তার প্রমাণ দেবেন। যদি সে ব্যক্তি নির্দোষ হয় তাহলে তার প্রমাণও দেবেন। |
11-1 Kings 8:33 : “হয়তো কখনও কখনও আপনার ইস্রায়েলের ভক্তরা আপনার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করবে, শত্রুরা তাদের পরাজিত করবে। তখন তারা আপনার কাছেই ফিরে এসে এই মন্দিরে আপনার প্রশংসা করবে এবং আপনার সাহায্য চেয়ে আপনার কাছে প্রার্থনা করবে। |
11-1 Kings 8:34 : আপনি অনুগ্রহ করে স্বর্গ থেকে সেই প্রার্থনা শুনে আপনার ইস্রায়েলের ভক্তদের অপরাধ মার্জনা করে, তাদের হৃত বাসভূমিতে তাদের ফিরিযে আনবেন। এই ভূমি আপনিই তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 8:35 : “যদি তারা আপনার বিরুদ্ধে পাপাচার করে, আপনি তাদের জমিতে খরা আনবেন। তাহলে তারা এখানে এসে আপনার কাছে প্রার্থনা করবে এবং আপনার প্রশংসা করবে। আপনি তাদের কষ্ট দেবেন আর তারা তাদের পাপ থেকে সরে আসবে। |
11-1 Kings 8:36 : তখন আপনি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনায সাড়া দেবেন আর আমাদের পাপ ক্ষমা করবেন। মানুষকে সত্ পথে চলার শিক্ষা দিয়ে হে প্রভু, আবার আপনি তাদের রুক্ষ জমি বৃষ্টিতে ভিজিযে দেবেন। |
11-1 Kings 8:37 : “হয়তো এই জমি এতোই শুকিয়ে যাবে য়ে এখানে আর কোন ফসল জন্মাবে না। অথবা হয়তো লোকরা কোন মহামারীর দ্বারা আক্রান্ত হবে, অথবা হয়তো সমস্ত শস্য কীট পতঙ্গের দ্বারা ধ্বংস হবে, কিংবা আপনার ভক্তরা তাদের বাসস্থানে শত্রুদের দ্বারা আক্রান্ত হবে, অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়বে। |
11-1 Kings 8:38 : কখনও যদি এরকম কিছু ঘটে আর তখন যদি অন্তত একজনও তার পাপের কথা স্মরণ করে অনুতপ্ত চিত্তে এই মন্দিরের দিকে দুহাত বাড়িযে প্রার্থনা করে, |
11-1 Kings 8:39 : তাহলে আপনি আপনার স্বর্গের বাসভূমি থেকে তার সেই ডাকে সাড়া দেবেন। সমস্ত লোককে ক্ষমা করে তাদের সাহায্য করবেন। এক মাত্র আপনিই অন্তর্য়ামী তাই প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে নিরপেক্ষ ভাবে আপনি বিচার করেন, |
11-1 Kings 8:40 : যাতে যত দিন তারা এখানে তাদের পূর্বপুরুষদের, আপনার দেওয়া এই ভূখণ্ডে বাস করে তত দিন আপনাকে ভয ও ভক্তি করে চলে। |
11-1 Kings 8:41 : দূর দূরান্তরের লোক আপনার মহিমা ও ক্ষমতার কথা জানতে পেরে এখানে এই মন্দিরে এসে প্রার্থনা করবে। |
11-1 Kings 8:42 : - |
11-1 Kings 8:43 : আপনি আপনার স্বর্গের বাসভূমি থেকে তাদের প্রার্থনায সাড়া দিয়ে, তাদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করবেন। তাহলে এই সব ব্যক্তিরা আপনার ইস্রায়েলের লোকদের মতোই আপনাকে ভয ও ভক্তি করবে। আর সকলে সব জায়গায় জানবে আপনার প্রতি সম্মান প্রকাশ করে আমি এই মন্দির বানিয়ে ছিলাম। |
11-1 Kings 8:44 : “কখনও কখনও আপনাকে আপনার অনুচরদের শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিতে হবে। তখন আপনার লোকরা আপনার মনোনীত করা এই স্থানে আমার বানানো শহরে আসবে এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করবে। |
11-1 Kings 8:45 : স্বর্গ থেকে আপনি তাদেরও প্রার্থনায সাড়া দিয়ে তাদের সাহায্য করবেন। |
11-1 Kings 8:46 : আপনার লোকরা আপনার বিরুদ্ধে পাপাচরণ করবে। একথা আমি জানি কারণ মানুষ মাত্রেই পাপ করে। আর আপনি তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে তাদের শত্রুদের হাতে পরাজিত হতে দেবেন। শত্রুরা তাদের বন্দী করে কোনো দূর দেশে নিয়ে যাবে। |
11-1 Kings 8:47 : সেই দূরের দেশে বসে আপনার লোকরা কি হয়েছে ভেবে তাদের পাপ কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আবার আপনারই কাছে প্রার্থনা করে বলবে, ‘আমরা পাপ করেছি। আমরা ভুল করেছি।’ |
11-1 Kings 8:48 : সেই দূর দেশে থেকেও তারা এই দেশের দিকে ঘুরে দাঁড়াবে। য়ে দেশটি আপনি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন এবং এই শহর য়েটি আপনার মনোনীত এবং এই মন্দির য়েটি আপনার সম্মানে আমি নির্মাণ করেছি, সেটির দিকে ঘুরে দাঁড়াবে এবং তারা আপনার কাছে প্রার্থনা করবে। |
11-1 Kings 8:49 : তাহলে স্বর্গ থেকে আপনি তাদের ডাকে সাড়া দেবেন। |
11-1 Kings 8:50 : আপনার লোকদের তাদের পাপ থেকে মুক্তি দেবেন এবং আপনার প্রতি তাদের পাপাচরণকে ক্ষমা করবেন। তাদের শত্রুদের তখন তাদের প্রতি নরম মনোভাব করে তুলবেন। |
11-1 Kings 8:51 : মনে রাখবেন, ওরা আপনারই ভক্ত। আপনিই ওদের মিশর থেকে, গরমচুল্লী থেকে বের করার মতো করে বাঁচিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 8:52 : “প্রভু ঈশ্বর, দয়া করে যখনই আমি এবং আপনার ইস্রায়েলের লোকরা আপনার কাছে প্রার্থনা করবো, তখনই সেই প্রার্থনায সাড়া দেবেন। |
11-1 Kings 8:53 : পৃথিবীর সমস্ত লোকদের মধ্যে থেকে তাদের আপনি নিজে আপনার একান্ত ভক্ত হিসেবে বেছে নিয়েছেন। প্রভু, মোশির মাধ্যমে আমাদের মিশর থেকে বের করে আনার সময় আপনি পূর্বপুরুষদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন য়ে আমাদের জন্যও আপনি ওরকম করবেন।” |
11-1 Kings 8:54 : শলোমন বেদীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে দুহাত আকাশে তুলে ঈশ্বরের কাছে এই সুদীর্ঘ প্রার্থনা করবেন। প্রার্থনা শেষ হলে তিনি উঠে দাঁড়ালেন। |
11-1 Kings 8:55 : তারপর উচ্চ স্বরে ঈশ্বরকে ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষকে আশীর্বাদ করতে বললেন। শলোমন বললেন: |
11-1 Kings 8:56 : “প্রভুর প্রশংসা করো! তিনি তাঁর লোকদের, ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের বিশ্রাম দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কথা মতো তিনি আমাদের বিশ্রাম দিয়েছেন। প্রভু তাঁর অনুগত দাস মোশির মাধ্যমে ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের য়েসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সব কটিই তিনি পূর্ণ করেছেন। |
11-1 Kings 8:57 : আমি প্রার্থনা করি, প্রভু, আমাদের ঈশ্বর য়ে ভাবে আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন, ঠিক সে ভাবেই য়েন তিনি আমাদেরও পাশে থাকেন, কখনও আমাদের পরিত্যাগ না করেন। |
11-1 Kings 8:58 : আমি প্রার্থনা করছি য়ে আমরা সকলে তাঁকেই অনুসরণ করব। তাঁর বিধি নির্দেশ ও আদেশগুলি মেনে চলবো। য়েগুলো তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 8:59 : আমি আশা করছি আমাদের প্রভু ঈশ্বর সর্বদা এই প্রার্থনার কথা এবং আমার অনুরোধ মনে রাখবেন। আমি প্রার্থনা করছি, প্রভু য়েন প্রতিদিন রাজা, তাঁর ভৃত্য ও তাঁর সমস্ত ইস্রায়েলবাসীদের জন্য এগুলো করেন। |
11-1 Kings 8:60 : প্রভু যদি তা করেন তাহলে সমস্ত পৃথিবীবাসী জানতে পারবে য়ে প্রভুই একমাত্র সত্য ঈশ্বর। |
11-1 Kings 8:61 : তোমরা সকলে আমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রতি অনুগত এবং সত্যবদ্ধ থাকবে এবং তাঁর বিধি ও আদেশগুলি এখনকার মতোই ভবিষ্যতেও মেনে চলবে।” |
11-1 Kings 8:62 : তারপর রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের লোকরা এক সঙ্গে প্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করলেন। |
11-1 Kings 8:63 : সেদিন শলোমন মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে 22,000 গবাদি পশু ও 1,20,000 মেষ বলি দিয়েছিলেন। এভাবে রাজা ও ইস্রায়েলের লোকরা মিলে প্রভুর মন্দির উত্সর্গ করেছিল। |
11-1 Kings 8:64 : এছাড়া রাজা শলোমন হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য এবং বলিপ্রদত্ত পশুর চর্বি নৈবেদ্য দিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণটি উত্সর্গ করলেন। তিনি এরকম করলেন কারণ প্রভুর পিতলের বেদীটি খুব বেশী বড় ছিল না য়ে এত সব নৈবেদ্য ধারণ করতে পারে। |
11-1 Kings 8:65 : সেদিন মন্দিরে থেকে রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের লোকরা এই ভাবে ছুটিউদযাপন করেছিল। উত্তরে হমাতের প্রবেশ দ্বার থেকে দক্ষিণে মিশর পর্য়ন্ত ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দাই সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিল। তারা সাতদিন ধরে পানাহার, উত্সব ও স্ফূর্তির মধ্যে দিয়ে প্রভুর সঙ্গে সময় কাটাল। তারপর আরো সাতদিন সেখানে থাকল। অর্থাত্ একটানা 14 দিন ধরে তারা উত্সব করল। |
11-1 Kings 8:66 : পরের দিন শলোমন সকলকে বাড়ীতে ফিরে য়েতে বললেন। তারা সকলে রাজাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর কাছ থেকে বিদায নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল। তারা সকলেই প্রভু তাঁর দাস ও ইস্রায়েলের লোকদের জন্য য়েসব ভাল কাজ করেছিলেন সেই সব ভেবে খুবই উত্ফুল্ল ছিল |
11-1 Kings 9:1 : শলোমন প্রভুর মন্দির ও তাঁর রাজপ্রাসাদ বানানোর কাজ শেষ করলেন। তিনি যা যা বানাতে চেয়েছিলেন সবই বানিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 9:2 : এরপর প্রভু আবার শলোমনকে দেখা দিলেন, য়ে ভাবে তিনি গিবিয়োনে তাঁকে স্বপ্নদর্শন দিয়েছিলেন সে ভাবে। |
11-1 Kings 9:3 : প্রভু তাঁকে বললেন, “তোমার প্রার্থনা এবং তুমি যা যা আমার কাছে চেয়েছ সে সবই আমি শুনেছি। তুমি এই মন্দির বানিয়েছ এবং আমি এটিকে একটা পবিত্র স্থানে পরিণত করেছি যাতে আমি এখানে সর্বদাই পূজিত হই। আমি সব সময়ই এখানে দৃষ্টি রাখব এবং এখানকার কথা মনে রাখবো। |
11-1 Kings 9:4 : তোমার পিতা দায়ূদ য়ে ভাবে আমার সেবা করেছিলেন, তোমাকেও সে ভাবেই আমার সেবা করতে হবে। দায়ূদ ছিলেন সত্ ও পরিশ্রমী। তুমি অবশ্যই আমার বিধিগুলি এবং আর যা যা আমি তোমায় আদেশ দেব মেনে চলবে। |
11-1 Kings 9:5 : “আর তা যদি তুমি করো আমি অবশ্যই খেযাল রাখবো যাতে ইস্রায়েলের রাজ সিংহাসনে সদাসর্বদা তোমারই পরিবারের কেউ আসীন হয়। তোমার পিতা রাজা দায়ূদকেও আমি এই একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম ইস্রায়েল সর্বদা তারই কোনো না কোনো উত্তরপুরুষ দ্বারা শাসিত হবে। |
11-1 Kings 9:6 : “কিন্তু যদি কখনও তুমি ও তোমার সন্তান, সন্ততিরা আমাকে অনুসরণ করা বন্ধ করে দাও, আমার দেওয়া বিধি আদেশগুলি পালন না করো এবং অন্য কোনো মূর্ত্তির পূজা করো, তাহলে আমি আমার দেওয়া এই ভূমি ত্যাগ করতে তাদের বাধ্য করব এবং আমি এই পবিত্র মন্দির যেখানে আমার উপাসনা হয়, তা ধ্বংস করব। তখন ইস্রায়েলের ঘটনা সবার কাছে খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, সকলে ইস্রায়েলকে নিয়ে পরিহাস করবে। |
11-1 Kings 9:7 : - |
11-1 Kings 9:8 : এই মন্দির ধ্বংস হবে। য়ে দেখবে সেই অত্যাশ্চর্য়্য় হবে এবং শিস্ দিয়ে হৈচৈ করবে। তখন য়ে এই মন্দির দেখবে প্রশ্ন করবে, ‘প্রভু কেন এই মন্দির ও এই ভূখণ্ডের লোকদের প্রতি এমন সাংঘাতিক কাণ্ড করলেন।’ |
11-1 Kings 9:9 : অন্যরা তাদের উত্তর দিয়ে বলবে, ‘এরা তাদের প্রভুকে ত্যাগ করেছিল বলেই এই ঘটনা ঘটেছে। প্রভু তাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে আসা সত্ত্বেও তারা তাঁকে উপাসনা করেনি এবং অন্য মূর্ত্তির সেবা করেছিল, তাই প্রভু ক্রুদ্ধ হয়ে তাদের জীবনে দুর্য়োগ ঘনিয়ে তুলেছেন।”‘ |
11-1 Kings 9:10 : প্রভুর মন্দির ও নিজের রাজপ্রাসাদ নির্মাণের কাজ শেষ করতে রাজা শলোমনের 20 বছর লেগেছিল। |
11-1 Kings 9:11 : তারপর তিনি সোরের রাজা হীরমকে গালীল প্রদেশের 20 টি শহর উপহার দিয়েছিলেন। কারণ রাজা হীরম, শলোমনকে এরস গাছ ও দেবদারু গাছের কাঠ প্রয়োজন মতো সোনা দিয়ে প্রভুর মন্দির বানানোর কাজে সাহায্য করেছিলেন। |
11-1 Kings 9:12 : হীরম তখন সোর থেকে শলোমনের দেওয়া শহরগুলো দেখতে এলেন। কিন্তু এই শহরগুলো দেখে তিনি মোটেই খুশী হলেন না। |
11-1 Kings 9:13 : তিনি শলোমনকে বললেন, “ভাই আমার, এ শহরসমূহ কি এমন য়ে তুমি আমাকে উপহার দিলে?” হীরম এই সব ভূখণ্ডের নাম কাবুল দিয়েছিলেন এবং আজ পর্য়ন্ত ঐ অঞ্চল কাবুল নামেই পরিচিত। |
11-1 Kings 9:14 : হীরম রাজা শলোমনকে মন্দির তৈরীর কাজে ব্যবহারের জন্য প্রায় 9,000 পাউণ্ড সোনা পাঠিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 9:15 : মন্দির এবং প্রাসাদ নির্মাণের সময় রাজা শলোমন ক্রীতদাসদের কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন। রাজা শলোমন মিল্লো, জেরুশালেম শহরের দেওয়াল নির্মাণ করেছিলেন এবং তারপর হাত্সোর, মগিদ্দো ও গেষর নামে শহরগুলি বানিয়ে ছিলেন। |
11-1 Kings 9:16 : অতীতে মিশরের রাজা গেষরে কনানীযদের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের হত্যা করে শহরটি বালিয়ে দিয়েছিলেন। মিশরের ফরৌণের মেয়েকে বিয়ে করার সময়, ফরৌণ শলোমনকে গেষর শহরটি য়ৌতুক দেন। |
11-1 Kings 9:17 : শলোমন সেই শহরটাকে আবার নতুন করে গড়ে তুললেন। এছাড়াও শলোমন নিম্ন বৈত্ - হোরোণ, |
11-1 Kings 9:18 : বালত্ ও তামর মরু শহর দুটি বানিয়ে ছিলেন। |
11-1 Kings 9:19 : শস্য ও অন্যান্য সামগ্রী সুরক্ষিত রাখার জন্যও শলোমন কয়েকটি নগ়র নির্মাণ করেন। নিজের রথ ও ঘোড়া রাখার জায়গাও তিনি বানিয়েছিলেন। জেরুশালেম, লিবানোন ও অন্যান্য য়ে সব জায়গা শলোমন শাসন করেছিলেন সেই সব জায়গায় তিনি যা যা বানাতে চেয়েছিলেন তা বানিয়ে ছিলেন। |
11-1 Kings 9:20 : দেশে ইস্রায়েলীয় ছাড়াও ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয় প্রভৃতি অনেক বাসিন্দা বাস করত। |
11-1 Kings 9:21 : ইস্রায়েলীয়রা তাদের বিনষ্ট করতে পারে নি। কিন্তু শলোমন তাদের ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করান। তারা এখনও ক্রীতদাস হিসেবেই আছে। |
11-1 Kings 9:22 : তবে রাজা শলোমন কখনও কোন ইস্রায়েলীয়কে তাঁর দাসত্ব করতে দেন নি। ইস্রায়েলীয়রা সৈনিক, সেনাপতি, সেনাধিনায়ক, আধিকারিক, সারথী বা রথ পরিচালক হিসেবে কাজ করতো। |
11-1 Kings 9:23 : শলোমনের বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য সব মিলিয়ে 550 পরিদর্শক ছিল, তারা অন্যান্য যারা কাজ করত তাদের তত্ত্বাবধান করত। |
11-1 Kings 9:24 : ফরৌণের কন্যা দায়ূদ শহর থেকে শলোমন তাঁর জন্য য়ে বড় বাড়িটি বানিয়ে ছিলেন সেখানে চলে আসার পর শলোমন মিল্লো বানান। |
11-1 Kings 9:25 : প্রতি বছর তিন বার করে শলোমন তাঁর বানানো প্রভুর মন্দিরের বেদীতে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করতেন। এছাড়াও তিনি মন্দিরে ধূপধূনো দেবার ব্যবস্থা করেন ও মন্দিরের যা কিছু নিয়মিত প্রয়োজন তা য়োগাতেন। |
11-1 Kings 9:26 : রাজা শলোমন ইদোম দেশে সূফ সাগরের তীরে এলাতের কাছে ইত্সিযোন গেবরে কিছু জাহাজ বানিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 9:27 : রাজা হীরমের রাজ্যে কিছু নাবিক ছিলেন, যারা সমুদ্রের সব খবরাখবর রাখত। তিনি এই সব নাবিকদের শলোমনের নৌবাহিনীতে য়োগ দিয়ে, তাঁর লোকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য পাঠিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 9:28 : শলোমন তাঁর জাহাজ ওফীরে পাঠানোর পর তারা সেখান থেকে শলোমনের জন্য 31500 পাউণ্ড সোনা এনেছিল। |
11-1 Kings 10:1 : শিবার রাণী লোকমুখে শলোমনের খ্যাতি ও প্রজ্ঞার কথা শুনতে পেয়ে তাঁকে কঠিন প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা করতে এলেন। |
11-1 Kings 10:2 : তিনি বহু দাস দাসীদের নিয়ে জেরুশালেমে উপস্থিত হলেন। তিনি অজস্র উটে করে নানাধরণের মশলাপাতি, অলঙ্কার ও সোনা নিয়ে এলেন এবং শলোমনের সঙ্গে দেখা করলেন। তারপর শলোমনকে সম্ভাব্য বহুবিধ কঠিন প্রশ্ন করলেন। |
11-1 Kings 10:3 : শলোমনের কাছে সেই সব প্রশ্ন খুব একটা কঠিন ছিল না। তিনি তার সব প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন। |
11-1 Kings 10:4 : তখন শিবার রাণী উপলব্ধি করলেন য়ে সত্যিই শলোমন খুবই জ্ঞানী। |
11-1 Kings 10:5 : তিনি তাঁর সুন্দর রাজপ্রাসাদটিও দেখলেন, তাঁর ভোজসভার বিলাসবহুল আয়োজন, সেনাপতিদের বৈঠক, প্রাসাদের ভৃত্য ও তাদের বহুমূল্য পোশাক, মন্দিরের অনুষ্ঠান ও বলিদানের রকম সকম দেখে বিস্মযে বাকরহিত হয়ে গেলেন। |
11-1 Kings 10:6 : তিনি তখন রাজা শলোমনকে বললেন, “আমি আমার নিজের দেশে বসে আপনার বুদ্ধিমত্তা ও কীর্তিকলাপের বহু খ্যাতি শুনেছিলাম। এখন দেখছি তার এক কণাও মিথ্যা নয়। |
11-1 Kings 10:7 : আমি নিজের চোখে না দেখা পর্য়ন্ত এসব কথা বিশ্বাস করি নি কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি, লোক - মুখে যা শুনেছিলাম আপনার বুদ্ধিমত্তা ও সম্পদ তার চেয়েও অনেক বেশী। |
11-1 Kings 10:8 : সত্যিই আপনার লোকরা ও ভৃত্যরা খুবই ভাগ্যবান কারণ তারা প্রতিদিন আপনার সেবা করতে পায ও আপনার সান্নিধ্যে থেকে আপনার জ্ঞানগর্ভ কথা শুনতে পায। |
11-1 Kings 10:9 : প্রভু, আপনার ঈশ্বরকে প্রশংসা করুন। তিনি নিশ্চয়ই আপনার প্রতি সন্তুষ্ট, তাই আপনাকে ইস্রায়েলের রাজপদে অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রভু ঈশ্বর ইস্রায়েলকে ভালোবাসেন বলেই আপনাকে এদেশের রাজা করেছেন। আপনি বিধি মেনে নিরপেক্ষ ভাবে প্রজাদের শাসন করেন।” |
11-1 Kings 10:10 : এরপর শিবার রাণী রাজা শলোমনকে প্রায় 9,000 পাউণ্ড সোনা, বহু মশলাপাতি ও অলঙ্কার উপহার দিলেন। তিনি রাজাকে য়ে পরিমাণ মশলাপাতি দিয়েছিলেন তার পরিমাণ এতদিন পর্য়ন্ত ইস্রায়েলে য়ে মশলাপাতি প্রবেশ করেছিল তার চেয়েও বেশী। |
11-1 Kings 10:11 : এদিকে হীরমের নৌবহর ওফীর থেকে সোনা ছাড়াও বহু পরিমাণ কাঠ ও অলঙ্কার নিয়ে এসেছিল। |
11-1 Kings 10:12 : শলোমন সেই সব কাঠ দিয়ে রাজপ্রাসাদ ও মন্দিরের ঠেকা দেওয়া ছাড়াও মন্দিরের গায়কদের জন্য বীণা ও বাদ্যযন্ত্র বানিয়ে দিয়েছিলেন। তখনও পর্য়ন্ত ইস্রায়েলের কোনো লোকই সেই ধরণের কাঠ চোখে দেখেনি এবং সেই সময়ের পরও আর কেউ সে ধরণের কাঠ দেখেনি। |
11-1 Kings 10:13 : প্রথামতো রাজা শলোমন এক শাসক হিসেবে আরেক শাসক শিবার রাণীকে বহু উপহার দিলেন। এছাড়াও তিনি শিবার রাণীকে তিনি যা যা চেয়েছিলেন সবই দিয়েছিলেন। এরপর শিবার রাণী ও তাঁর দাসদাসীরা নিজের দেশে ফিরে গেলেন। |
11-1 Kings 10:14 : প্রতি বছর রাজা শলোমন প্রায় 79,920 পাউণ্ড সোনা পেতেন। |
11-1 Kings 10:15 : এছাড়াও তিনি তাঁর নৌ - বহরের ব্যবসাযী ও বণিকদের কাছ থেকে আরবের শাসক ও প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের কাছে থেকে বহু পরিমাণে সোনা পেতেন। |
11-1 Kings 10:16 : রাজা শলোমন পেটানো সোনা দিয়ে 200 টি বড় ঢাল বানিয়েছিলেন। প্রতি ঢালে প্রায় 15 পাউণ্ড করে সোনা ছিল। |
11-1 Kings 10:17 : তিনি পেটানো সোনা দিয়ে আরো 300 টি ঢাল বানিয়েছিলেন; তার প্রত্যেক ঢালে4 পাউণ্ড করে সোনা ছিল। এই ঢালগুলোকে তিনি “লিবানোনের জঙ্গল” নামের বাড়ীতে রেখেছিলেন। |
11-1 Kings 10:18 : রাজা শলোমন খাঁটি সোনায় মোড়া হাতির দাঁতের একটা বিশাল সিংহাসন বানিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 10:19 : সেই সিংহাসনটায় দুটো ধাপ বেয়ে উঠতে হতো। সিংহাসনের পেছনের দিকটা ওপরে গোলাকার ছিল। বসার জায়গার দুধারেই ছিল হাতল লাগানো। আর দুদিকের হাতলের তলায় আঁকা ছিল সিংহের ছবি। |
11-1 Kings 10:20 : ওঠার সিঁড়ির ছটি ধাপের প্রত্যেকটার শেষেও একটা করে সিংহের মূর্ত্তি ছিল। আর কোনো দেশেই এধরণের রাজসিংহাসন ছিল না। |
11-1 Kings 10:21 : রাজা শলোমনের ব্যবহার্য় সমস্ত পেয়ালা ও গ্লাস ছিল সোনায় বানানো। “লিবানোনের জঙ্গল” বাড়ির সমস্ত পাত্রও ছিল খাঁটি সোনার। রাজপ্রাসাদের কোন কিছুই রূপোর ছিল না। শলোমনের সময়ে চতুর্দিকে এতো বেশী সোনা ছিল য়ে লোকরা রূপোকে কোনো মূল্যবান ধাতু বলে মনেই করত না। |
11-1 Kings 10:22 : অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য রাজা শলোমনের বাণিজ্য তরী ছিল। এগুলো আসলে ছিল হীরমেরই জাহাজ। তিন বছর অন্তর এই সমস্ত জাহাজ সোনা, রূপা, হাতির দাঁত ও পশু পাখিতে ভর্তি হয়ে ফিরে আসত। |
11-1 Kings 10:23 : শলোমন ছিলেন পৃথিবীর সব চেয়ে বড় রাজা। তিনি ছিলেন সব চেয়ে বেশী ধনী ও পণ্ডিত। |
11-1 Kings 10:24 : সব জায়গার লোকরাই শলোমনের দর্শন পেতে চাইতো, তারা শলোমনের ঈশ্বর প্রদত্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয পেতে চাইতো এবং তাঁর কথা শুনতে চাইতো। |
11-1 Kings 10:25 : প্রতি বছর দূর দূরান্তের দেশ থেকে বহু লোক সোনা এবং রূপোর জিনিসপত্র, পোশাক পরিচ্ছদ, অস্ত্রশস্ত্র মশলাপাতি, ঘোড়া এবং খচ্চর উপহার নিয়ে রাজা শলোমনের সঙ্গে দেখা করতে আসতো। |
11-1 Kings 10:26 : সে জন্য শলোমনের অনেক রথ ও ঘোড়া ছিল। তাঁর কাছে 1400 রথ ও 12000 ঘোড়া ছিল। আলাদা শহর বানিয়ে সেই সব শহরে এই রথগুলো রাখা থাকত আর জেরুশালেমে তাঁর নিজের কাছে শলোমন অল্প কিছু রথ রেখে দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 10:27 : ইস্রায়েলকে তিনি সম্পদে ও ঐশ্বর্য়ে ভরে দিয়েছিলেন। জেরুশালেম শহরে রূপো ছিল পাথরের মতোই সাধারণ। এরস গাছও ছিল পাহাড়ি গাছগাছালির মতো সহজলভ্য়। |
11-1 Kings 10:28 : শলোমন মিশর ও কূ থেকে ঘোড়া এনেছিলেন। তাঁর বণিকরা কূ থেকে কিনে এই সমস্ত ঘোড়া ইস্রায়েলে নিয়ে আসতো। |
11-1 Kings 10:29 : মিশর থেকে আনা একটা রথের দাম পড়ত 15 পাউণ্ড রূপোর সমান। আর ঘোড়ার দাম পড়ত 3 - 3/4 পাউণ্ড রূপোর সমান। শলোমন হিত্তীয় ও অরামীয় রাজাদের কাছে ঘোড়া ও রথ বিক্রি করতেন। |
11-1 Kings 11:1 : রাজা শলোমন নারীদের সান্নিধ্য পছন্দ করতেন। তিনি এমন অনেক মহিলাকে ভালোবেসে ছিলেন যারা ইস্রায়েলের বাসিন্দা নয়। মিশরের ফরৌণের কন্যা ছাড়াও শলোমন হিত্তীয়, মোয়াবীয়া, অম্মোনীয়া, ইদোমীয়া, সীদোনীযা প্রভৃতি অনেক বিজাতীয রমণীকে ভালোবাসতেন। |
11-1 Kings 11:2 : অতীতে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, “তোমরা অন্য দেশের লোকদের বিয়ে করবে না, কারণ তাহলে ওরা তাদের মূর্ত্তিকে পূজা করতে তোমাদের প্রভাবিত করবে।” কিন্তু তা সত্ত্বেও শলোমন বিজাতীয রমনীদের প্রেমে পড়েন। |
11-1 Kings 11:3 : শলোমনের 700 জন স্ত্রী ছিল। (যারা সকলেই অন্যান্য দেশের নেতাদের কন্যা।) এছাড়াও তাঁর 300 জন ক্রীতদাসী উপপত্নী ছিল। শলোমনের পত্নীরা তাঁকে ঈশ্বর বিমুখ করে তুলেছিল। |
11-1 Kings 11:4 : শলোমনের তখন বয়স হয়েছিল, স্ত্রীদের পাল্লায় পড়ে তিনি অন্যান্য মূর্ত্তির পূজা করতে শুরু করেন। তাঁর পিতা রাজা দায়ূদের মতো একনিষ্ঠ ভাবে শলোমন শেষ পর্য়ন্ত প্রভুকে অনুসরণ করেন নি। |
11-1 Kings 11:5 : শলোমন সীদোনীয় দেবী অষ্টোরত এবং অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য পাষাণ মূর্ত্তি মিল্কমের অনুগত হন। |
11-1 Kings 11:6 : অতএব শলোমন প্রভুর সামনে ভুল কাজ করলেন। তিনি পুরোপুরি প্রভুর শরণাগত হননি য়ে ভাবে তাঁর পিতা দায়ূদ হয়েছিলেন। |
11-1 Kings 11:7 : এমনকি তিনি মোয়াবীয়দের ঘৃণ্য মূর্ত্তি কমোশের আরাধনার জন্য জেরুশালেমের পাশেই পাহাড়ে একটা জায়গা বানিয়ে দিয়েছিলেন। ঐ একই পাহাড়ে তিনি ঐ ভযংকর মূর্ত্তির আরাধনার জন্যও একটি জায়গা বানিয়ে ছিলেন। |
11-1 Kings 11:8 : এই ভাবে রাজা শলোমন তাঁর প্রত্যেকটি ভিন্দেশী স্ত্রীর আরাধ্য মূর্ত্তির জন্য একটি করে পূজোর জায়গা করে দেন, আর তাঁর স্ত্রীরা ধূপধূনো দিয়ে সেই সব জায়গায় তাদের মূর্ত্তিসমূহের কাছে বলিদান করত। |
11-1 Kings 11:9 : এই ভাবে রাজা শলোমন প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের, কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। সুতরাং প্রভু শলোমনের প্রতি খুব ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি দুবার শলোমনকে দেখা দিয়ে, |
11-1 Kings 11:10 : তাঁকে অন্য মূর্ত্তির পূজা করতে নিষেধ করা সত্ত্বেও শলোমন সেই নিষেধ মানেন নি। |
11-1 Kings 11:11 : তখন প্রভু শলোমনকে বললেন, “শলোমন, তুমি চুক্তি ভঙ্গ করেছ। তুমি আমার আদেশ মেনে চলো নি। আমিও কথা দিলাম তোমার রাজত্ব তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেব এবং আমি তা তোমার কোন একটি ভৃত্যের হাতে তুলে দেব। কিন্তু য়েহেতু আমি তোমার পিতা দায়ূদকে ভালোবাসতাম আমি তোমার জীবদ্দশায় তোমার রাজ্য তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেব না। তোমার সন্তান রাজা না হওয়া পর্য়ন্ত আমি অপেক্ষা করব। আর তারপর আমি তার কাছ থেকে এই রাজত্ব কেড়ে নেব। |
11-1 Kings 11:12 : - |
11-1 Kings 11:13 : তবে আমি তার কাছে থেকে গোটা রাজত্ব কেড়ে নেব না, তার শাসন করার জন্য একটি পরিবারগোষ্ঠী রেখে দেব। দায়ূদের কথা ও জেরুশালেমের কথা ভেবেই আমি এই অনুগ্রহ করব। কারণ দায়ূদ আমার পরম অনুগত সেবক ছিল। আর তাছাড়া এই জেরুশালেম শহরকে আমি নিজেই বেছে নিয়েছিলাম। |
11-1 Kings 11:14 : সে সময় প্রভু ইদোমীয় হদদকে শলোমনের শত্রু করে তুললেন। হদদ ছিলো ইদোমের রাজপরিবারের সন্তান। |
11-1 Kings 11:15 : এক সময় দায়ূদ ইদোমকে পরাজিত করেছিলেন। তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধান য়োয়াব তখন ইদোমে নিহতদের কবর দিতে যান। সে সময় ইদোমে অবশিষ্ট যারা জীবিত ছিল য়োয়াব তাদেরও হত্যা করেছিলেন। |
11-1 Kings 11:16 : য়োয়াব ও ইস্রায়েলের লোকরা সে সময়ে 6 মাস ইদোমে ছিলেন। এইসময়ে তারা সমস্ত ইদোমীয়দের হত্যা করেন. |
11-1 Kings 11:17 : সে সময়ে হদদ ছিল নেহাতই শিশু। সে মিশরে পালিয়ে যায়। তার পিতার কিছু ভৃত্যও তখন তার সঙ্গে গিয়েছিল। |
11-1 Kings 11:18 : মিদিয়ন পার হয়ে তারা পারণে গিয়ে পৌঁছলে আরো কিছু লোক তাদের সঙ্গে য়োগ দেয়। তারপর এই গোটা দলটি মিশরে গিয়ে ফারৌণের সাহায্য প্রার্থনা করল। ফরৌণ হদদকে একটা বাড়ি ও কিছু জমি ছাড়াও তার খাবার - দাবার দেখাশোনার ব্যবস্থা করেন। |
11-1 Kings 11:19 : ফরৌণ হদদকে খুবই পছন্দ করতেন। তিনি তাঁর শালীর সঙ্গে হদদের বিয়ে দিয়েছিলেন। (রাণী তহপনেষ ফরৌণের স্ত্রী ছিলেন।) |
11-1 Kings 11:20 : ফরৌণের স্ত্রী তহপনেষের বোনকে হদদ বিয়ে করার পর গনুবত্ নামে তার একটি পুত্র হয়। রাণী তহপনেষ গনুবত্কে ফরৌণের প্রাসাদে তাঁর নিজের সন্তানদের সঙ্গে মানুষ হতে দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 11:21 : এদিকে মিশরে থাকাকালীন হদদ দায়ূদের মৃত্যু সংবাদ পেল। সেনাপতি য়োয়াবের মৃত্যুর খবরও তার কানে পৌঁছাল। তখন হদদ ফরৌণকে বলল, “আমাকে আমার নিজের দেশের বাড়িতে ফিরে য়েতে দিন। |
11-1 Kings 11:22 : কিন্তু ফরৌণ তার উত্তরে বললেন, “আমি তোমাকে এখানে তোমার যা কিছু প্রয়োজন তা দিয়েছি। তবু কেন তুমি তোমার নিজের দেশে ফিরে য়েতে চাইছ?হদদ মিনতি করে বলল, “দয়া করে আমায় বাড়িতে ফিরতে দিন। |
11-1 Kings 11:23 : ইলিয়াদার পুত্র রষোণকেও ঈশ্বর শলোমনের শত্রু করে তুলেছিলেন। রষোণ তার মনিব সোবার রাজা হদদেষরের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছিল। |
11-1 Kings 11:24 : দায়ূদ সোবার সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে হারানোর পর রষোণ কিছু লোকদের জোগাড় করে একটা ছোট সেনাবাহিনীর প্রধান হয়ে বসেন। এরপর রষোণ দম্মেশকে গিয়ে সেখানকার রাজা হন। |
11-1 Kings 11:25 : রষোণ অরামে রাজত্ব করতেন ও ইস্রায়েলের প্রতি তাঁর তীব্র বিদ্বেষ ছিল। যে কারণে শলোমনের জীবদ্দশায় রষোণ ইস্রায়েলের সঙ্গে শত্রুতা করেছিলেন। রষোণ ও হদদ দুজনেই ইস্রায়েলে নানান ঝামেলা পাকিযেছিলেন। |
11-1 Kings 11:26 : নবাটের পুত্র যারবিয়াম ছিল শলোমনের জনৈক ভৃত্য। সরেদানিবাসী যারবিয়াম ছিল ইফ্রয়িমীয পরিবারগোষ্ঠীর লোক। তার বিধবা মায়ের নাম ছিল সরূযা। এই যারবিয়ামও রাজার বিপক্ষে য়োগ দিয়েছিল। |
11-1 Kings 11:27 : এই হল সেই গল্প, কেন যারবিয়াম রাজার বিরুদ্ধে গেল। শলোমন তখন মিল্লো নির্মাণ করছিলেন এবং দায়ূদ, তাঁর পিতার নামে শহরের দেওয়াল গাঁথছিলেন। |
11-1 Kings 11:28 : যারবিয়াম য়থেষ্ট শক্তসমর্থ ছিল এবং শলোমন দেখলেন, ‘এই তরুণটি একজন সুদক্ষ কর্মী।’ তখন তিনি যারবিয়ামকে য়োষেফ পরিবারগোষ্ঠীর কর্মীদের অধ্যক্ষ করে দিলেন। |
11-1 Kings 11:29 : এক দিন যখন যারবিয়াম জেরুশালেম থেকে বাইরে যাচ্ছিল তখন শীলোনীয ভাববাদী অহিযের সঙ্গে তার পথে দেখা হল। অহিয একটি নতুন জামা পরেছিলেন। |
11-1 Kings 11:30 : সেই জনশূন্য প্রান্তরে অহিয তাঁর নতুন জামাটিকে ছিঁড়ে বারোটি টুকরো করেন। |
11-1 Kings 11:31 : তারপর যারবিয়ামকে বললেন, “জামার 10 টি টুকরো তোমার নিজের জন্য নাও। প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমি শলোমনের কাছ থেকে রাজ্য কেড়ে নিয়ে তোমায় 10 টি পরিবারগোষ্ঠী দিয়ে দেব। |
11-1 Kings 11:32 : আমি দায়ূদের উত্তরপুরুষদের শুধুমাত্র একটি পরিবারগোষ্ঠীর ওপর শাসন করতে দেব। আমার পরমভক্ত দায়ূদ ও জেরুশালেমের মুখের দিকে তাকিযে আমি এটুকু করব। ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর থেকে আমিই বয়ং জেরুশালেমকে বেছে নিয়েছিলাম। |
11-1 Kings 11:33 : আমি শলোমনের কাছ থেকে রাজত্ব কেড়ে নেব কারণ শলোমন আমার উপাসনা বন্ধ করেছে। শলোমন সীদোনীয়দের মূর্ত্তি অষ্টোরত, মোয়াবীয়দের মূর্ত্তি কমোশ ও আম্মোনীযদের মিলকমের আরাধনা করছে। শলোমন ভালো ও সঠিক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। সে আর এখন আমার বিধি ও আদেশ মেনে চলে না। ওর পিতা দায়ূদ য়ে ভাবে জীবনযাপন করেছিল শলোমন আর সে ভাবে জীবনযাপন করে না। |
11-1 Kings 11:34 : একারণেই আমি শলোমনের পরিবারের হাত থেকে রাজ্য কেড়ে নেব। কিন্তু আমার একনিষ্ঠ ভক্ত শলোমনের পিতা দায়ূদের কথা মনে রেখে শলোমনকে তার বাকী জীবনটুকু শাসক থাকতে দেব। |
11-1 Kings 11:35 : তবে তার পুত্রের হাত থেকে আমি অবশ্যই রাজত্ব নিয়ে নেব। আর তারপর তার থেকে দশটি পরিবারগোষ্ঠী যারবিয়াম তোমাকে শাসন করতে দেব। |
11-1 Kings 11:36 : শলোমনের সন্তান একটি পরিবারগোষ্ঠীর ওপর শাসন করবে। কারণ জেরুশালেমে য়ে শহরটি আমার নিজের বলে আমি বেছে নিয়েছিলাম সব সময়ই দায়ূদের কোনো উত্তরপুরুষ তা শাসন করবে। |
11-1 Kings 11:37 : কিন্তু, তা বাদে, আমি তোমায় তোমার চাহিদা মত আর সমস্ত কিছুরই ওপর শাসন করতে দেব। তুমি ইস্রায়েলের উত্তর রাজ্যগুলি শাসন করবে। |
11-1 Kings 11:38 : যদি তুমি সত্ পথে থেকে আমার নির্দেশ মেনে চলো, তাহলেই আমি তোমার জন্য এই সব করব। তুমি যদি দায়ূদের মতো আমার বিধি ও আদেশ মেনে চলো তাহলে আমি তোমার পাশে থাকব এবং তোমার বংশকে রাজবংশে পরিণত করব, য়েমন আমি দায়ূদের জন্য করেছিলাম। ইস্রায়েল আমি তোমার হাতে তুলে দেব। |
11-1 Kings 11:39 : শলোমনের কৃতকার্য়ের জন্যই আমি দায়ূদের বংশধরদের শাস্তি দেব, তবে অবশ্যই তা বরাবরের জন্য নয়।”‘ |
11-1 Kings 11:40 : শলোমন যারবিয়ামকে হত্যা করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু যারবিয়াম তখন মিশরে পালিয়ে গেল এবং শলোমনের মৃত্যু পর্য়ন্ত যারবিয়াম মিশররাজ শীশকের আশ্রয়ে ছিল। |
11-1 Kings 11:41 : শলোমন তার শাসন কালে বহু বড় বড় কাজ করেছিলেন। সে সব কথা ‘শলোমনের ইতিহাস গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ আছে। |
11-1 Kings 11:42 : শলোমন জেরুশালেমের অন্তর্গত ইস্রায়েলে 40 বছর রাজত্ব করেছিলেন। |
11-1 Kings 11:43 : তারপর তিনি যখন মারা গেলেন তাঁকে দায়ূদ শহরে সমাধিস্থ করা হল। এরপর রাজা হলেন শলোমনের পুত্র রহবিয়াম। |
11-1 Kings 12:1 : নবাটের পুত্র যারবিয়াম তখনও মিশরে লুকিয়ে ছিল। যখন সে শলোমনের মৃত্যু সংবাদ পেল, তার জন্মভূমি ইফ্রয়িমে পার্বত্য অঞ্চলের সেরেদতে ফিরে এল।এদিকে রাজা শলোমনের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হলে নতুন রাজা হলেন তার পুত্র রহবিয়াম। |
11-1 Kings 12:2 : - |
11-1 Kings 12:3 : ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা রহবিয়ামকে রাজপদে অধিষ্ঠিত করতে শিখিমে গিয়েছিল। কারণ রহবিয়াম তখন সেখানেই ছিল। সকলে রহবিয়ামকে বলল, |
11-1 Kings 12:4 : “আপনার পিতা আমাদের খাটিযে খাটিযে জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছিলেন। আপনি দয়া করে আমাদের কাজের বোঝা একটু হাল্কা করে দিলেই আমরা আপনার হয়ে কাজ করব।” |
11-1 Kings 12:5 : রহবিয়াম তাদের উত্তর দিলেন, “তোমরা তিনদিন পরে আমার কাছে এস। তখন আমি আমার সিদ্ধান্ত তোমাদের জানাব।” একথা শুনে সবাই ফিরে গেল। |
11-1 Kings 12:6 : শলোমনের য়ে সমস্ত প্রবীণ পরামর্শদাতা তখনও জীবিত ছিলেন, রাজা রহবিয়াম তাদের তাঁর কর্তব্য কর্ম সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন, “আমার এক্ষেত্রে কি করা উচিত্? আমি এদের কি বলব? |
11-1 Kings 12:7 : প্রবীণরা তাঁকে বললেন, “তুমি যদি আজ ওদের কাছে দাসের মতো হও, ওরা সত্যি তোমার সেবা করবে। তুমি যদি ওদের সঙ্গে দয়াপরবশ হয়ে কথা বলো, তাহলে ওরা চির দিনই তোমার হয়ে কাজ করবে।” |
11-1 Kings 12:8 : কিন্তু রহবিয়াম এই পরামর্শে কর্ণপাত করলো না। তিনি তাঁর বন্ধু - বান্ধবদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন। |
11-1 Kings 12:9 : সে তাদের বলল, “লোকরা বলছে, ‘আপনার পিতা যা কাজ দিতেন তার চেয়েও আমাদের হাল্কা কাজ দিন।’ কি করা যায় বলো তো? আমি এখন ওদের কি বলি?” |
11-1 Kings 12:10 : রাজার বন্ধুরা রহবিয়ামকে বলল, “শোন কথা! ওরা নাকি বলছে তোমার পিতা ওদের বেশী খাটাতেন। তুমি কেবল মাত্র ওদের ডেকে বলে দাও, ‘দেখ হে, আমার কড়ে আঙ্গুল আমার পিতার পুরো দেহের চেয়েও শক্তিশালী। |
11-1 Kings 12:11 : আমার পিতার জন্য তোমরা য়ে কাজ করেছ তার চেয়েও অনেক কঠিন কাজ আমি তোমাদের দিয়ে করাব। কাজ আদায করার জন্য আমার পিতা তোমাদের শুধু চাবকাতেন, আমি ধারালো লোহা বসানো চাবুক দিয়ে চাবকাবো।”‘ |
11-1 Kings 12:12 : রহবিয়াম লোকদের তিন দিন পরে আসতে বলেছিলেন তাই ঠিক তিন দিন পরে ইস্রায়েলের লোকরা আবার রহবিয়ামের কাছে ফিরে এল। |
11-1 Kings 12:13 : রহবিয়াম তখন প্রবীণদের কথা না শুনে |
11-1 Kings 12:14 : তার বন্ধু - বান্ধবদের পরামর্শ অনুযায়ীবললেন, “আমার পিতা তোমাদের জোর করে বেশি খাটিযেছিল বলছো, এখন আমি আরো বেশী খাটাবো। আমার পিতা তোমাদের শুধু চাবকেছেন, আমি লোহা বসানো চাবুক দিয়ে চাবকাবো।” |
11-1 Kings 12:15 : অর্থাত্ রাজা লোকদের আবেদনে সাড়া দিলেন না। প্রভুর অভিপ্রায়েই এই ঘটনা ঘটল। প্রভু নবাটের পুত্র যারবিয়ামের কাছে তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখার জন্যই এই ঘটনা ঘটালেন। শীলোনীয ভাববাদী অহিযের মাধ্যমে প্রভু যারবিয়ামের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলেন। |
11-1 Kings 12:16 : ইস্রায়েলের সমস্ত লোক দেখল নতুন রাজা তাদের আবেদনে কর্ণপাত পর্য়ন্ত করল না। তখন তারা রাজাকে এসে বলল, “আমরা কি দায়ূদের পরিবারভুক্ত? মোটেই না। আমরা কি য়িশযের জমির কোনো ভাগ পাই ? না! তাহলে দেশবাসীরা চলো আমরা আমাদের নিজের বাড়িতে ফিরে যাই। দায়ূদের পুত্র তার নিজের লোকদের ওপর রাজত্ব করুক।” একথা বলে ইস্রায়েলের লোকরা য়ে যার বাড়িতে ফিরে গেল। |
11-1 Kings 12:17 : ইস্রায়েলের য়ে সমস্ত লোক যিহূদার শহরগুলিতে থাকত রহবিয়াম শুধুমাত্র তাদের ওপর রাজত্ব করেছিলেন। |
11-1 Kings 12:18 : অদোরাম নামে এক জন লোক কর্মচারীদের তত্ত্বাবধান করত। রাজা তাকে ডেকে পাঠিয়ে লোকদের সঙ্গে কথা বলতে বললেন। কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা পাথর ছুঁড়ে তাকে মেরে ফেলল। রহবিয়াম তখন কোন মতে তাঁর রথে চড়ে জেরুশালেমে পালিয়ে গেলেন। |
11-1 Kings 12:19 : অতএব ইস্রায়েলের লোকরা দায়ূদের পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল এবং এখনও পর্য়ন্ত তারা দায়ূদ পরিবার বিরোধী। |
11-1 Kings 12:20 : ইস্রায়েলের সমস্ত লোক যখন যারবিয়ামের ফিরে আসার কথা জানতে পারল, তারা একটি সমাবেশের আয়োজন করে তার সঙ্গে দেখা করে তাকেই সমগ্র ইস্রায়েলের রাজা হিসেবে ঘোষণা করল। এক মাত্র যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী দায়ূদের পরিবারের অনুসরণ করতে লাগল। |
11-1 Kings 12:21 : রহবিয়াম জেরুশালেমে ফিরে গেল এবং যিহূদা ও বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীকে একত্রে জড়ো করলেন। এই দুই গোষ্ঠী মিলিয়ে মোট 1,80,000 জনের একটি সেনাবাহিনী গঠিত হল। রহবিয়াম ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তার রাজত্ব উদ্ধার করতে চেয়েছিলেন। |
11-1 Kings 12:22 : কিন্তু প্রভু শময়িয় নামে এক ঈশ্বরের লোকের সঙ্গে কথা বললেন। তিনি বললেন, |
11-1 Kings 12:23 : “যাও যিহূদার রাজা শলোমনের পুত্র রহবিয়াম আর যিহূদার লোকরা ও বিন্যামীনকে গিয়ে ভাইযে ভাইযে যুদ্ধ করতে বারণ করো। |
11-1 Kings 12:24 : ওদের সকলকে ঘরে ফিরে য়েতে বলো কারণ আমিই এই সব ঘটিয়েছি।” রহবিয়ামের সেনাবাহিনী প্রভুর আদেশ মেনে বাড়ি চলে গেল। |
11-1 Kings 12:25 : শিখিম হল ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের একটি শহর। যারবিয়াম শিখিমকে সুরক্ষিত ও শক্তিশালী করে সেখানেই বসবাস করতে লাগল। পরে সে পনূযেল নামে একটি শহরে গিয়ে সেটিকে সুরক্ষিত ও শক্তিশালী করেছিলো। |
11-1 Kings 12:26 : যারবিয়াম মনে মনে ভাবলেন, “যদি লোকরা জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরে নিয়মিত যাতাযাত চালিযে য়েতে থাকে তাহলে তারা শেষ পর্য়ন্ত দায়ূদের উত্তরপুরুষদের দ্বারাই শাসিত হতে চাইবে। তারা আবার যিহূদার রাজা রহবিয়ামকে অনুসরণ করবে আর আমাকে হত্যা করবে।” |
11-1 Kings 12:27 : - |
11-1 Kings 12:28 : তাই রাজা তার পরামর্শদাতাদের কাছে তার করণীয কর্তব্য সম্পর্কে উপদেশ চাইলেন। তাঁরা রাজাকে তাঁদের পরামর্শ দিলেন। তখন যারবিয়াম দুটো সোনার বাছুর বানিয়ে লোকদের বললেন, “তোমরা কেউ আরাধনা করতে জেরুশালেমে যাবে না। ইস্রায়েলের অধিবাসীরা শোনো, এই দেবতারাই তোমাদের মিশর থেকে উদ্ধার করেছিলেন।” |
11-1 Kings 12:29 : একথা বলে যারবিয়াম একটা সোনার বাছুর বৈথেলে রাখলেন। অন্য বাছুরটাকে রাখলো দান শহরে। |
11-1 Kings 12:30 : ইস্রায়েলের লোকরা তখন বৈথেলে ও দানে বাছুর দুটোকে আরাধনা করতে গেল। কিন্তু এটি অত্যন্ত গর্হিত ও পাপের কাজ হল। |
11-1 Kings 12:31 : এছাড়াও যারবিয়াম উচ্চ স্থানে মন্দির বানিয়েছিল। শুধুমাত্র লেবীয়দের পরিবারগোষ্ঠী থেকে যাজক বেছে নেওয়ার পরিবর্তে সে ইস্রায়েলের বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠী থেকে যাজকদের বেছে নিয়েছিল। |
11-1 Kings 12:32 : এরপর রাজা যারবিয়াম ইস্রায়েল উত্সবের মতো একটি নতুন ছুটির দিনের প্রবর্তন করল। অষ্টম মাসের 15 দিনে এই ছুটি পালিত হত। এসময় রাজা বৈথেল শহরের বেদীতে বলিদান করত। সে তার বানানো বাছুর দুটোর সামনে বলি দিত। রাজা যারবিয়াম বৈথেলে ও উঁচু জায়গায় তার বানানো পূজোর জায়গাগুলোর জন্য যাজকদের বেছে নিয়েছিল। |
11-1 Kings 12:33 : অর্থাত্ রাজা যারবিয়াম তার সুবিধা মতো ইস্রায়েলীয়দের জন্য উত্সবের সময় বেছে নিয়েছিল। অষ্টম মাসের 15 দিনের মাথায় ঐ ছুটির দিনটিতে বৈথেল শহরে তার বানানো বেদীতে বলিদান ছাড়াও ধূপধূনো দেওয়া হতো। |
11-1 Kings 13:1 : ্রভু যিহূদার ঈশ্বরের প্রেরিত এক জনকে বৈথেলে যাবার জন্য এবং বেদীর ওপরে পূজো করবার বিরুদ্ধে কথা বলবার জন্য ডেকে পাঠালেন। যখন সেই ভাববাদী বৈথেলে পৌঁছলেন তখন রাজা যারবিয়াম বেদীর সামনে দাঁড়িয়ে ধূপধূনো দিচ্ছিলেন।তিনি গিয়ে ঐ য়জ্ঞবেদীকে সম্বোধন করে বললেন, “দায়ূদের পরিবারে য়োশিয নামে এক বালক জন্মাবে। যাজকরা এখন য়জ্ঞবেদীতে পূজো দিচ্ছ, কিন্তু য়োশিয একদিন এই সমস্ত যাজকদের য়জ্ঞবেদীর ওপরেই হত্যা করবে। এখন যাজকরা য়ে বেদীতে ধূপধূনো জ্বালাচ্ছে সেই বেদীতেই মানুষের হাড় পুড়িয়ে য়োশিয তা ব্যবহারের অয়োগ্য করে তুলবে।” |
11-1 Kings 13:2 : - |
11-1 Kings 13:3 : এসমস্ত ঘটনা য়ে সত্যি সত্যি ঘটতে চলেছে সে বিষয়ে ঈশ্বরের লোক উপস্থিত সবাইকে প্রমাণ দিলেন। তিনি বললেন, “আমি যা বললাম তা য়ে সত্যি সত্যি ঘটবে সে কথা প্রমাণের জন্য প্রভু আমাকে বলেছেন, ‘এই বেদী ভেঙ্গে দু টুকরো হয়ে সমস্ত ছাই মাটিতে ছড়িয়ে পড়বে।”‘ |
11-1 Kings 13:4 : রাজা যারবিয়াম ঈশ্বরের লোকের কাছ থেকে বৈথেলের বেদীর কথা শুনে বেদী থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে সেই লোককে দেখিয়ে বলল, “ওকে গ্রেপ্তার করো।” কিন্তু একথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই তার হাত পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গেল, সে আর হাত নাড়াতে পারল না। |
11-1 Kings 13:5 : একই সঙ্গে বেদীটি টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে সমস্ত ছাই মাটিতে ছড়িয়ে পড়ল। এর থেকেই ঈশ্বরের লোকরা কথার সত্যতা প্রমাণ হল। |
11-1 Kings 13:6 : তখন রাজা যারবিয়াম ঈশ্বরের লোককে বলল, “দয়া করে আপনার প্রভুর ঈশ্বরের কাছে আমার এই হাতটি আবার ঠিক করে দেবার জন্য প্রার্থনা করুন।”লোকটি তখন প্রভুর কাছে সেই প্রার্থনা করায রাজার হাত ঠিক হয়ে গেল। |
11-1 Kings 13:7 : তখন রাজা ঈশ্বর প্রেরিত সেই লোকটিকে বলল, “অনুগ্রহ করে আপনি আমার সঙ্গে বাড়িতে গিয়ে খাওয়া - দাওয়া করবেন চলুন। আমি আপনাকে একটি উপহার দিতে চাই।” |
11-1 Kings 13:8 : কিন্তু সেই লোকটি রাজাকে বলল, “তোমার অর্ধেক রাজত্ব আমাকে দিলেও আমি তোমার সঙ্গে যাবো না বা এখানে কোন পানাহার করব না। |
11-1 Kings 13:9 : প্রভু আমাকে এখানে কিছু খেতে বা পান করতে বারণ করেছেন। প্রভু আমাকে আরো নির্দেশ দিয়েছেন য়ে, য়ে রাস্তা দিয়ে আমি এখানে এসেছি, সেই রাস্তা দিয়ে য়েন না ফিরি।” |
11-1 Kings 13:10 : একথা বলে তিনি বৈথেলে আসার সময় য়ে রাস্তা দিয়ে এসেছিলেন, সেটাতে না গিয়ে অন্য একটা রাস্তা দিয়ে ফিরে গেলেন। |
11-1 Kings 13:11 : বৈথেল শহরে সে সময় একজন বৃদ্ধ ভাববাদী বাস করতেন। তাঁর ছেলেরা এসে তাঁকে বৈথেলের এই ঈশ্বর প্রেরিত ব্যক্তির কার্য়কলাপের কথা জানালো। |
11-1 Kings 13:12 : সেই বৃদ্ধ ভাববাদী সব শুনে জিজ্ঞেস করলেন, “তিনি কোন্ রাস্তা দিয়ে ফিরে গেলেন?” ছেলেরা তখন যিহূদা থেকে আসা সেই ভাববাদী য়ে পথে ফিরে গিয়েছেন পিতাকে দেখালো। |
11-1 Kings 13:13 : বৃদ্ধ ভাববাদী তাঁর পুত্রদের তাঁর গাধায লাগাম লাগিয়ে দিতে বললেন এবং সেই গাধায চড়ে বেরিয়ে পড়লেন। |
11-1 Kings 13:14 : বৃদ্ধ ভাববাদী ঈশ্বর প্রেরিত লোকটিকে খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে দেখলেন একটা মস্ত বড় গাছের তলায় একজন বসে আছেন। তিনি প্রশ্ন করলেন, “আপনি কি ঈশ্বরের লোক যিনি যিহূদা থেকে এসেছেন?”ভাববাদী উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ।” |
11-1 Kings 13:15 : তখন বৃদ্ধ ভাববাদী বললেন, “দয়া করে আমার সঙ্গে বাড়িতে চলুন, কিছু মুখে দেবেন।” |
11-1 Kings 13:16 : কিন্তু ঈশ্বরের লোকটি এতে রাজি হলেন না। তিনি বললেন, “আমি আপনার সঙ্গে বাড়িতে য়েতে বা এখানে কোনো পানাহার করতে পারব না। |
11-1 Kings 13:17 : কারণ প্রভু আমায় নিষেধ করেছেন এবং বলেছেন, ‘তুমি য়ে রাস্তা দিয়ে যাবে সেই রাস্তা দিয়ে ফিরবে না।”‘ |
11-1 Kings 13:18 : তখন বৃদ্ধ ভাববাদী বললেন, “আমিও আপনারই মতো এক জন ভাববাদী।” উপরন্তু তিনি বানিয়ে বললেন, “প্রভুর কাছ থেকে দূত এসে আমায় আপনাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আপনার পানাহারের ব্যবস্থা করতে বলেছেন।” |
11-1 Kings 13:19 : তখন ঈশ্বর প্রেরিত সেই লোকটি বৃদ্ধ ভাববাদীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে পানাহার করলেন। |
11-1 Kings 13:20 : যখন তাঁরা টেবিলে বসে খাওয়া - দাওয়া করছেন তখন প্রভু বৃদ্ধ ভাববাদীর সামনে আবির্ভূত হলেন। |
11-1 Kings 13:21 : বৃদ্ধ ভাববাদী যিহূদা থেকে আসা ঈশ্বরের লোকটিকে বললেন, “প্রভু বললেন আপনি প্রভুর নির্দেশ অমান্য করেছেন।” |
11-1 Kings 13:22 : আপনাকে প্রভু এখানে কিছু খেতে বা পান করতে বারণ করেছিলেন, কিন্তু আপনি সেই নির্দেশ লঙঘন করে এখানে পানাহার করলেন। শাস্তিস্বরূপ আপনার মৃত্যুর পর আপনার দেহ আপনার বংশের সমাধিস্থলে সমাধিস্থ হতে পারবে না।” |
11-1 Kings 13:23 : ইতিমধ্যে ঈশ্বরের লোকটির পানাহার শেষ হলে বৃদ্ধ ভাববাদী তাঁর জন্য গাধায লাগাম ও জিন চড়িয়ে দিলেন এবং সেই ব্যক্তি রওনা হল। |
11-1 Kings 13:24 : পথে এক সিংহের আক্রমণে ঈশ্বর প্রেরিত ব্যক্তির মৃত্যু হল। |
11-1 Kings 13:25 : কিছু পথচারী যাবার সময়ে পথে পড়ে থাকা সেই মৃতদেহটি আর তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাধা ও সিংহটাকে দেখতে পেল। তারা ফিরে এসে শহরে বৃদ্ধ ভাববাদীকে এই খবর দিল। |
11-1 Kings 13:26 : যদিও বৃদ্ধ ভাববাদীর পাল্লায় পড়েই ঈশ্বরের পাঠানো এই ব্যক্তি ফিরে এসে খাওয়া - দাওয়া করেছিলেন, বৃদ্ধ ভাববাদী তারা যা বলল সব শুনলেন এবং বললেন, “প্রভুর আদেশ অমান্য করায প্রভু সিংহ পাঠিয়ে তাঁর পাঠানো ব্যক্তির জীবন নিলেন। প্রভু বলেছিলেন য়ে তিনি এরকম করবেন।” |
11-1 Kings 13:27 : এই বলে তিনি তাঁর পুত্রদের গাধায জিন চাপাতে বলে |
11-1 Kings 13:28 : গাধা নিয়ে বেরিয়ে সেই মৃতদেহের কাছ পৌঁছে দেখতে পেলেন য়ে গাধা আর সিংহ দুটোই সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। সিংহটা সেই দেহে মুখ দেয় নি, এমনকি গাধাটাকেও কিছু করে নি। |
11-1 Kings 13:29 : বৃদ্ধ ভাববাদী শোকপ্রকাশ করবার জন্য ও কবর দেবার জন্য গাধায চাপিয়ে মৃতদেহটাকে শহরে নিয়ে চললেন। |
11-1 Kings 13:30 : তিনি সেই ব্যক্তিকে তাঁর নিজের পরিবারের সমাধিস্থলে কবর দিলেন। তারপর তিনি কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “ভাই আমার, তোমার জন্য আমি দু:খিত।” তিনি কবর দেওয়ার পর তাঁর পুত্রদের নির্দেশ দিলেন, “আমি মরলে আমাকেও এই কবরে ওঁর পাশে কবর দিস। আমার হাড় ক’খানাকে ওঁর পাশেই রাখিস। |
11-1 Kings 13:31 : - |
11-1 Kings 13:32 : প্রভু ওঁর মুখ দিয়ে য়ে কথা বলিযেছেন তা একদিন সত্যিই ঘটবে। বৈথেলের বেদী ও শমরিয়ায অন্যান্য উচ্চস্থানে পূজা করার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য প্রভু ওঁকে ব্যবহার করেছেন।” |
11-1 Kings 13:33 : রাজা যারবিয়ামের কোনোই পরিবর্তন হল না। সে আগের মতোই পাপাচরণ করে য়েতে লাগল। বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠী থেকে যাজক বেছে নিয়ে তাদের দিয়ে উচ্চস্থানে সেবা করাতে লাগল। য়ে কেউ ইচ্ছা হলেই যাজক হয়ে য়েতে পারত। |
11-1 Kings 13:34 : এই পাপের ফলেই তার সাম্রাজ্যের পতন হয় এবং তা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। |
11-1 Kings 14:1 : য়ে সময় যারবিয়ামের পুত্র অবিয খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, সেই সময় যারবিয়াম তার স্ত্রীকে বলল, “তুমি শীলোতে গিয়ে ভাববাদী অহিযর সঙ্গে দেখা কর। অহিযই সে - ই ভাববাদী যিনি বলেছিলেন, আমি ইস্রায়েলের রাজা হব। তুমি দশটা রুটি, কিছু কেক, এক ভাঁড় মধু নিয়ে তার কাছে গিয়ে আমাদের পুত্রের কি হবে জিজ্ঞেস করো। তিনি নিশ্চয়ই তোমাকে বলে দেবেন। তবে দেখো এমন ভাবে ছদ্মবেশে য়েও যাতে কেউ বুঝতে না পারে য়ে তুমি আমার স্ত্রী।” |
11-1 Kings 14:2 : - |
11-1 Kings 14:3 : - |
11-1 Kings 14:4 : কথা মতো যারবিয়ামের স্ত্রী শীলোতে ভাববাদী অহিযের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। যদিও অহিযর তখন অনেক বয়েস হয়েছে এবং দৃষ্টিশক্তি হারিযেছেন। |
11-1 Kings 14:5 : প্রভু তাঁকে বললেন, “যারবিয়ামের স্ত্রী তোমার সঙ্গে দেখা করে ওদের অসুস্থ ছেলে সম্পর্কে জানতে আসছে।” অহিয কি বলবে সেকথাও প্রভু বলে দিলেন।যারবিয়ামের স্ত্রী এসে অহিযর বাড়িতে উপস্থিত হল। সে আত্মগোপন করে এসেছিল। |
11-1 Kings 14:6 : কিন্তু অহিয দরজায তার পাযের শব্দ শুনতে পেয়ে বলল, “এসো গো যারবিয়ামের স্ত্রী। তুমি কেন লোকের কাছে নিজের প্রকৃত পরিচয গোপন করছো? তোমাকে আমি একটা দু:সংবাদ দেব। |
11-1 Kings 14:7 : যাও ফিরে গিয়ে যারবিয়ামকে বলো প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘যারবিয়াম আমি তোমাকে ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের মধ্যে থেকে বেছে নিয়ে আমার ভক্তদের অধীশ্বর বানিয়েছি। |
11-1 Kings 14:8 : দায়ূদের বংশধর ইস্রায়েল শাসন করত। কিন্তু আমি সেই রাজ্য তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে তোমাকে দিয়েছিলাম। কিন্তু তুমি আমার সেবক দায়ূদের মতো নও। দায়ূদ একনিষ্ঠ ভাবে আমাকে অনুসরণ করত, আমি যা চাইতাম ও তাই করত। |
11-1 Kings 14:9 : কিন্তু তুমি অনেক বড় বড় পাপ করেছ। তোমার আগে কোন শাসক এতো জঘন্য পাপ করে নি। তুমি আমাকে অনুসরণ করা বন্ধ করে দিয়েছ। তুমি মূর্ত্তি পূজা ও অন্যান্য দেবতাদের পূজা শুরু করেছ। এর ফলে আমি খুবই ক্রুদ্ধ হয়েছি। |
11-1 Kings 14:10 : তাই আমি তোমার পরিবারে বিপদ ঘনিয়ে আনব। তোমার পরিবারের সমস্ত পুরুষকে আমি হত্যা করব। আগুন য়ে ভাবে ঘুঁটে পোড়ায ঠিক সে ভাবে আমি তোমার পরিবার সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেব। |
11-1 Kings 14:11 : তোমার পরিবার থেকে য়ে কেউ শহরে মারা যাবে তাকে কুকুরে খাবে এবং তোমার পরিবারের য়ে লোক মাঠে মারা যাবে তাকে শকুনে খাবে। প্রভু বলেছেন।”‘ |
11-1 Kings 14:12 : ভাববাদী অহিয যারবিয়ামের স্ত্রীকে আরো বললেন, “এবার তুমি বাড়ি যাও। তুমি তোমার শহরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই তোমার পুত্র মারা যাবে। |
11-1 Kings 14:13 : ইস্রায়েলের সমস্ত লোক কাঁদতে কাঁদতে ওকে সমাধিস্থ করবে। যারবিয়ামের পরিবারে একমাত্র তোমার পুত্রকেই কবরে সমাধিস্থ করা হবে। কারণ যারবিয়ামের পরিবারে এক মাত্র প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর তুষ্ট ছিলেন। |
11-1 Kings 14:14 : প্রভু ইস্রায়েল শাসন করার জন্য এরপর য়ে নতুন রাজা বেছে নেবেন সে যারবিয়ামের বংশ ধ্বংস করবে। এসব ঘটতে আর বেশী দেরী নেই। তারপর প্রভু ঈস্রাযেলের ওপর আঘাত হানবেন। দেশের সমস্ত লোক ভয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকবে। |
11-1 Kings 14:15 : “তারপর প্রভু ইস্রায়েলের ওপর আঘাত হানবেন। ইস্রায়েলের লোকরা ভীত হবে তারা জলের মধ্যে ঘাসের মতন কাঁপবে। এই ভালো দেশ থেকে প্রভু ইস্রায়েলকে উপড়ে ফেলবেন। এটি সেই দেশ য়েটি তিনি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন। তিনি তাদের ফরাত্ নদীর অপর পারে ছড়িয়ে দেবেন। এসবই ঘটবে কারণ প্রভু লোকদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়েছেন। তিনি ক্রুদ্ধ হয়েছেন কারণ তারা বাঁশ দিয়ে আশেরার মূর্ত্তি বানিয়ে পূজা করেছিল। |
11-1 Kings 14:16 : যারবিয়াম নিজে পাপ করেছে, আর ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়েছে। তাই প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের পরাস্ত হতে দেবেন।” |
11-1 Kings 14:17 : যারবিয়ামের স্ত্রী তির্সাতে ফিরে গেল। বাড়িতে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তার পুত্রের মৃত্যু হল। |
11-1 Kings 14:18 : সমগ্র ইস্রায়েল প্রভুর কথা মতো চোখের জলে ভাসতে ভাসতে তাকে কবর দিল। প্রভু তাঁর সেবক ভাববাদী অহিযর মাধ্যমে এসবই জানিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 14:19 : রাজা যারবিয়াম আরো অনেক কিছু করেছিল। সে অনেক যুদ্ধ করেছিল এবং লোকদের ওপরে রাজত্ব চালিযে যাচ্ছিল। সে যা করেছিল সে সমস্ত বিবরণই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। |
11-1 Kings 14:20 : যারবিয়াম 22 বছর রাজত্ব করার পর তার মৃত্যু হলে তাকে তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল। যারবিয়ামের মৃত্যুর পরে তার পুত্র নাদব নতুন রাজা হলেন। |
11-1 Kings 14:21 : শলোমনের পুত্র রহবিয়াম যখন যিহূদার রাজপদে অধিষ্ঠিত হলেন তখন তাঁর বয়স 41 বছর ছিল। তিনি 17 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। ইস্রায়েলের অন্যান্য শহরের মধ্যে থেকে প্রভু এই শহরটিকে সম্মানিত করার জন্য বেছে নিয়েছিলেন। রহবিয়ামের মা নয়না ছিলেন জাতিতে অম্মোনীয়া। |
11-1 Kings 14:22 : যিহূদার লোকরা পাপ করেছিল এবং এমন সব কাজ করেছিল যা প্রভু অনুচিত বলে বিবেচনা করেছিলেন। উপরন্তু তারা এমন অনেক কাজ করেছিল যার ফলে প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। এই সমস্ত লোকরা ছিল তাদের পিতৃপুরুষদের চেয়েও খারাপ। |
11-1 Kings 14:23 : এরা উঁচু বেদী ছাড়াও পাথরের স্মৃতিসৌধ, বাঁশের পবিত্র মূর্ত্তি প্রভৃতি বানিয়েছিল। প্রত্যেকটি উচ্চস্থান, সবুজ গাছের তলায় তারা এই সব কদাকার জিনিস বানিয়েছিল। |
11-1 Kings 14:24 : তাদের মধ্যে এমন মানুষ ছিল যারা অন্য দেবতার পূজার জন্য রতিক্রিযার্থে দেহ বিক্রয় করেছিল। যিহূদার অনেক লোক অনেক মন্দ কাজ করেছিল। এই পবিত্র ভূভাগে আগে যারা বাস করত ঈশ্বর তাদের হাত থেকে জমি কেড়ে নিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 14:25 : রহবিয়ামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে মিশরের রাজা শীশক জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। |
11-1 Kings 14:26 : শীশক প্রভুর মন্দির ও রাজপ্রাসাদ থেকে সমস্ত সম্পদ, এমনকি দায়ূদের বানানো সোনার ঢালগুলো পর্য়ন্ত নিয়ে যান। |
11-1 Kings 14:27 : তখন রহবিয়াম এই জায়গায় রাখার জন্য পিতল দিয়ে নতুন ঢাল বানালেন। তিনি এই নতুন ঢালগুলো রাজপ্রাসাদের দরজায প্রহরীদের রাখতে দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 14:28 : এরপর যখনই রাজা মন্দিরে য়েতেন প্রহরীরা তাঁর সঙ্গে সঙ্গে ঐ ঢালগুলো নিয়ে য়েত। তারপর যখন প্রহরীরা ফিরে আসত, তারা ঐ ঢালগুলি প্রহরী কক্ষের দেওয়ালের ওপর আবার রেখে দিত। |
11-1 Kings 14:29 : রাজা রহবিয়াম য়ে সমস্ত কাজ করেছিলেন তা ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। |
11-1 Kings 14:30 : রহবিয়াম ও যারবিয়াম দুজনেই সব সময় একে অন্যের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকতেন। |
11-1 Kings 14:31 : রহবিয়াম মারা যাবার পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরে সমাধিস্থ করা হল। তাঁর মা ছিলেন নয়মা। তিনি ছিলেন অম্মোনীয় জাতীয। রহবিয়ামের পর তার পুত্র অবিয়াম নতুন রাজা হলেন। |
11-1 Kings 15:1 : নবাটের পুত্র ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের 18 বছরের মাথায় অবিয়াম যিহূদার নতুন রাজা হলেন। |
11-1 Kings 15:2 : অবিয়াম জেরুশালেমে তিন বছর রাজত্ব করেন। তাঁর মা মাখা ছিলেন অবীশালোমের কন্যা। |
11-1 Kings 15:3 : অবিয়ামও তাঁর পিতার মতো যাবতীয় পাপ করেছিলেন। তিনি মোটেই তাঁর পিতামহ দায়ূদের মতো প্রভুর একনিষ্ট ভক্ত ছিলেন না। |
11-1 Kings 15:4 : প্রভু দায়ূদকে ভালবাসতেন বলে অবিয়ামকে জেরুশালেমে রাজত্ব করতে দিয়েছিলেন। প্রভু দায়ূদকে পুত্রলাভ করতে দিয়েছিলেন এবং তিনি দায়ূদের জন্য জেরুশালেমকে নিরাপদে রেখেছিলেন। |
11-1 Kings 15:5 : একমাত্র হিত্তীয় ঊরিযর ঘটনা ছাড়া দায়ূদ জীবনের সব ক্ষেত্রেই কাযমনোবাক্যে প্রভুকে অনুসরণ করেছিলেন। |
11-1 Kings 15:6 : রহবিয়াম ও যারবিয়াম দুজনেই সব সময় পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গিয়েছেন। |
11-1 Kings 15:7 : অবিয়াম আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।অবিয়ামের রাজত্বের গোটা সময়টুকু কেটেছিল যারবিয়ামের সঙ্গে যুদ্ধ বিগ্রহ করে। |
11-1 Kings 15:8 : অবিয়ামের মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করা হল এবং তাঁর পুত্র আসা নতুন রাজা হলেন। |
11-1 Kings 15:9 : ইস্রায়েলে যারবিয়ামের রাজত্বের 20 বছরের মাথায় আসা যিহূদার রাজা হলেন। |
11-1 Kings 15:10 : আসা জেরুশালেমে 41 বছর রাজত্ব করেছিলেন। অবীশালোমের কন্যা মাখা ছিলেন আসার ঠাকুরমা। |
11-1 Kings 15:11 : আসা তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতো প্রভু নির্দেশিত সত্ পথে জীবনযাপন করেন। |
11-1 Kings 15:12 : তাঁর রাজত্বের সময় য়ে সমস্ত ব্যক্তি অন্য মূর্ত্তির সেবার জন্য রতিক্রিযার্থে নিজেদের দেহ বিক্রয় করেছিল তাদের তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন। তিনি সেই দেশ থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের তৈরী সমস্ত মূর্ত্তিও সরিয়ে ফেলেছিলেন। |
11-1 Kings 15:13 : আসা তার ঠাকুরমা মাখাকেও রাণীর পদ থেকে অপসারণ করেন। কারণ মাখা বিধর্মী দেবী আশেরার ঐ বীভত্স মূর্ত্তিসমূহ নির্মাণ করিযে ছিলেন। এই মূর্ত্তিটিকে ভেঙে আসা কিদ্রোণ নদীর ধারে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 15:14 : উচ্চ বেদীগুলিকে ধ্বংস না করলেও আসা আজীবন প্রভুর প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। |
11-1 Kings 15:15 : সমস্ত সোনা, রূপো এবং প্রভুর জন্য দেওয়া অন্যান্য উপহারসামগ্রী য়েগুলি তাঁর পিতা দায়ূদের দ্বারা সংরক্ষিত ছিল এবং য়েগুলি লোকে দান করেছিল, আসা সেগুলি প্রভুর মন্দিরে রেখে দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 15:16 : যিহূদায় রাজত্ব কালে গোটা সময়টাই আসার কেটেছিল ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে যুদ্ধ করে। |
11-1 Kings 15:17 : বাশা যিহূদার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন কারণ কোনো লোককে আসার রাজত্ব থেকে বাইরে য়েতে দিতে বা সেখানে য়েতে দেওয়া বন্ধ করতে চেয়েছিলেন। একারণে তিনি রামা শহরটিকে খুব সুরক্ষিত ভাবে বানিয়ে ছিলেন। |
11-1 Kings 15:18 : আসা তাই প্রভুর মন্দিরের কোষাগার থেকে এবং রাজপ্রাসাদ থেকে সমস্ত সোনা ও রূপো বের করে ভৃত্যদের হাত দিয়ে সে সব হিষিযোণের পৌত্র টব্রিম্মোণের পুত্র অরামের রাজা বিন্হদদকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। দম্মেশক ছিল বিন্হদদের রাজ্যের রাজধানী। |
11-1 Kings 15:19 : আসা বিন্হদদকে বলে পাঠান, “আমার পিতা ও আপনার পিতার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এখন আমি আপনার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করতে চাই। তাই আমি আপনাকে এই সমস্ত সোনা - রূপো উপহারস্বরূপ পাঠালাম। অনুগ্রহ করে আপনি ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে আপনার সন্ধি ভঙ্গ করুন, যাতে সে আপনাদের নিজেদের মতো থাকতে দিয়ে তার নিজের দেশে ফিরে যায়।” |
11-1 Kings 15:20 : বিন্হদদ আসার সঙ্গে চুক্তি করে তার সেনাবাহিনীকে ইযোন, দান, আবেল - বৈত্ - মাখা, নপ্তালি ও গালীলী হ্রদের আশেপাশের ইস্রায়েলীয় শহরগুলোতে যুদ্ধ করতে পাঠালেন। |
11-1 Kings 15:21 : এ খবর পেয়ে বাশা রামা শহর সুদৃঢ় করার কাজ বন্ধ করে তির্সাতে ফিরে এলেন। |
11-1 Kings 15:22 : তখন রাজা আসা যিহূদার সমস্ত লোকদের সাহায্য প্রার্থনা করে নির্দেশ দিলে সকলে মিলে রামাতে গেল। তারপর সেখান থেকে রামা শহরটাকে শক্ত করে বানানোর জন্য বাশা য়ে সব পাথর ও কাঠ এনেছিল সেই সব বিন্যামীনের দেশ গেবা ও মিস্পাতে বয়ে আনা হলো। এরপর আসা এই দুটো শহরকে সুদৃঢ় করে তুললেন। |
11-1 Kings 15:23 : আসা সম্পর্কিত অন্যান্য যাবতীয় তথ্য় উনি য়ে সমস্ত কাজ করেছিলেন বা য়ে সব শহর বানিয়ে ছিলেন সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। য়েহেতু আসা বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর পাযে একটা রোগ হয়। |
11-1 Kings 15:24 : আসার মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরীতে কবর দেওয়া হল। এরপর আসার পুত্র যিহোশাফট নতুন রাজা হলেন। |
11-1 Kings 15:25 : যিহূদায় আসার রাজত্বের দ্বিতীয় বছরের সময় যারবিয়ামের পুত্র নাদব ইস্রায়েলের রাজা হন। তিনি দু বছর রাজত্ব করেছিলেন। |
11-1 Kings 15:26 : নাদব তাঁর পিতা যারবিয়ামের মতোই যাবতীয় পাপ কর্মে লিপ্ত হলেন। যারবিয়াম রাজা থাকাকালীন তিনি ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়েছিলেন। |
11-1 Kings 15:27 : ইষাখর পরিবারগোষ্ঠীর অহিযের পুত্র বাশা, রাজা নাদবকে হত্যার একটি চক্রান্ত করেছিলেন। এসময় নাদব ও ইস্রায়েলের সবাই গিব্বথোন শহরের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল। গিব্বথোন শহরটি পলেষ্টীয় অধিকৃত ছিল। |
11-1 Kings 15:28 : এই শহরেই বাশা নাদবকে হত্যা করেছিলেন। আসার যিহূদার রাজত্বের তৃতীয় বছরে এ ঘটনা ঘটে। এরপর বাশা ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন। |
11-1 Kings 15:29 : ইস্রায়েলের রাজা হবার পর বাশা যারবিয়ামের পরিবারের সবাইকে একে একে হত্যা করলেন। প্রভু য়ে ভাবে সেই শীলোনীয অহিযের মাধ্যমে ভাববাণী করেছিলেন, ঠিক সে ভাবেই এই সমস্ত ঘটনা ঘটলো। |
11-1 Kings 15:30 : যারবিয়ামের পাপের ফলেই তার বংশের সবাইকে মরতে হলো। ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়ে যারবিয়াম প্রভুকে খুবই ক্রুদ্ধ করে তুলেছিল। |
11-1 Kings 15:31 : নাদব আর যা কিছু করেছিলেন সে সব ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। |
11-1 Kings 15:32 : বাশার ইস্রায়েলে রাজত্বের গোটা সময়টাই যিহূদার রাজা আসার সঙ্গে যুদ্ধ করে কেটেছিল। |
11-1 Kings 15:33 : আসার যিহূদার রাজত্বের তৃতীয় বছরের মাথায় অহিযর পুত্র বাশা ইস্রায়েলের রাজা হলেন। বাশা তির্সাতে 24 বছর রাজত্ব করেছিলেন। |
11-1 Kings 15:34 : কিন্তু বাশা তাঁর পিতা যারবিয়ামের মতোই পাপাচরণ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের এমনসব পাপাচরণের কারণ হয়েছিলেন যা প্রভুর মন:পুত ছিল না। |
11-1 Kings 16:1 : প্রভু তখন হনানির পুত্র য়েহূর সঙ্গে কথা বললেন এবং রাজা বাশার বিরুদ্ধে কথা বললেন। |
11-1 Kings 16:2 : তিনি বললেন, “আমি তোমাকে ধূলো থেকে উঠিযে এনে ইস্রায়েলে আমার লোকদের নেতা করেছিলাম। কিন্তু তুমি যারবিয়ামের আচরণ অনুসরণ করেছ। আমার ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়েছ এবং তারা তাদের পাপ দিয়ে আমাকে ক্রুদ্ধ করেছে। |
11-1 Kings 16:3 : তাই বাশা, আমি তোমাকে এবং তোমার পরিবারকে ধ্বংস করব। নবাটের পুত্র যারবিয়ামের পরিবারের য়ে দশা হয়েছিল তোমাদেরও তাই হবে। |
11-1 Kings 16:4 : তোমার পরিবারের সবাই শহরের পথেঘাটে মারা পড়বে, কুকুরে তাদের মৃতদেহ ছিঁড়ে খাবে। অন্যরা মাঠেঘাটে মরে পড়ে থাকবে। চিল শকুনী তাদের মৃতদেহ ঠোকরাবে।” |
11-1 Kings 16:5 : বাশা ও তাঁর উল্লেখয়োগ্য কীর্তির সব কিছুই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। |
11-1 Kings 16:6 : বাশার মৃত্যুর পর তাঁকে তির্সাতে সমাধিস্থ করা হল। এরপর তাঁর পুত্র এলা নতুন রাজা হলেন। |
11-1 Kings 16:7 : যারবিয়ামের পরিবারের মতোই বাশাও প্রভুর বিরুদ্ধে বহু পাপাচরণ করে, যার ফরে প্রভু তার প্রতি ক্রুদ্ধ হন এবং ভাববাদী য়েহূকে বাশার পরিণতির কথা জানিয়ে দেন। বাশা যারবিয়ামের পরিবারের সবাইকে হত্যা করার জন্যও প্রভু তাঁর প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। |
11-1 Kings 16:8 : আসার যিহূদার রাজত্বের 26 বছরের মাথায় বাশার পুত্র এলা ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন। এলা তির্সাতে দুবছর রাজত্ব করেছিলেন। |
11-1 Kings 16:9 : সিম্রি ছিলেন এলার অধীনস্থ একজন রাজকর্মচারী। সিম্রি এলার অর্ধেক রথ বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন। সিম্রি এলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিলেন।রাজা এলা তখন অর্সার বাড়িতে বসে দ্রাক্ষারস পান করছিলেন। অর্সা তির্সার প্রাসাদরক্ষক ছিল। |
11-1 Kings 16:10 : সিম্রি সে সময় ঐ বাড়িতে ঢুকে এলাকে হত্যা করেন। যিহূদাতে আসার রাজত্বের 27 বছরের মাথায় এই ঘটনা ঘটে। সিম্রি এলার পরে ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলো। |
11-1 Kings 16:11 : সিম্রি ইস্রায়েলের নতুন রাজা হবার পর তিনি একে একে বাশার পরিবারের সকলকে হত্যা করলেন, কাউকে রেহাই দিলেন না। সিম্রি বাশার বন্ধু - বান্ধবদেরও সবাইকে হত্যা করলেন। প্রভু য়েভাবে ভাববাদী য়েহূর কাছে বাশার মৃত্যু সম্পর্কে ভাববাণী করেছিলেন ঠিক সে ভাবেই বাশা ও তাঁর পরিবারের সকলের মৃত্যু হল। |
11-1 Kings 16:12 : - |
11-1 Kings 16:13 : বাশা ও তাঁর পুত্র এলার পাপাচরণের জন্যই এই ঘটনা ঘটলো। তাঁরা শুধু নিজেরাই পাপ করেন নি, ইস্রায়েলের লোকদেরও পাপাচরণে বাধ্য করেছিলেন। য়ে কারণে প্রভু তাদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। এছাড়াও তারা মূর্ত্তি পূজা করতেন বলে প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। |
11-1 Kings 16:14 : এলা আর যা কিছু করেছিলেন তা ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। |
11-1 Kings 16:15 : যিহূদাতে আসার রাজত্বের 27 তম বছরে সিম্রি ইস্রায়েলের রাজা হলেন। সিম্রি মাত্র 7 দিনের জন্য তির্সাতে রাজত্ব করেছিলেন। পলেষ্টীয় অধিকৃত গিব্বথোনের কাছে ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী তখন শিবির গেড়েছিল। তারা সে সময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। |
11-1 Kings 16:16 : তাদের কানে এলো সিম্রি ইস্রায়েলের রাজার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাঁকে হত্যা করেছেন। তখন ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দা সেই শিবিরেই সেনাপতি অম্রিকে ইস্রায়েলের রাজা হিসেবে ঠিক করলো। |
11-1 Kings 16:17 : তখন অম্রি ও ইস্রায়েলের সবাই গিব্বথোন থেকে এসে তির্সা আক্রমণ করলো। |
11-1 Kings 16:18 : সিম্রি যখন বুঝতে পারলেন তির্সা শত্রুপক্ষের দখলে চলে গেছে, তখন তিনি রাজপ্রাসাদে নিজেকে বন্ধ করে প্রাসাদে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন। |
11-1 Kings 16:19 : সিম্রিও যারবিয়ামের মতোই প্রভুর অনভিপ্রেত পাপাচরণ করেছিলেন ও ইস্রায়েলের লোকদের পারকার্য়্য়ের কারণ হয়েছিলেন। আর এই পাপের জন্যই সিম্রির মৃত্যু হল। |
11-1 Kings 16:20 : সিম্রির গল্প, তাঁর চক্রান্ত ও অন্যান্য যা কিছু তিনি করেছিলেন তা ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। সিম্রি রাজা এলার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পর কি হয়েছিল সেই কথাও এই গ্রন্থে লেখা আছে। |
11-1 Kings 16:21 : সে সময়ে ইস্রায়েলের বাসিন্দারা দুটি দলে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। অর্ধেক লোক চাইছিল গীনতের পুত্র তিব্নিকে রাজা করতে, বাকী অর্ধেক ছিল অম্রির অনুগামী। |
11-1 Kings 16:22 : অম্রির সমর্থকরা বেশী শক্তিশালী হওয়ায় তিব্নি নিহত হলেন এবং অম্রি নতুন রাজা হলেন। |
11-1 Kings 16:23 : আসা যিহূদায় রাজত্ব করার 31 বছরের মাথায় অম্রি ইস্রায়েলের রাজা হন। তিনি 12 বছর ইস্রায়েল শাসন করেন। তার মধ্যে 6 বছর তিনি তির্সা শহর থেকে রাজত্ব করেছিলেন। |
11-1 Kings 16:24 : অম্রি 150 পাউণ্ড রূপো দিয়ে শেমরের কাছ থেকে শমরিয়া পাহাড়টি কিনে সেখানে একটি শহর বানান। পাহাড়ের আগের মালিক শেমরের নামেই তিনি ঐ শহরটির নাম শমরিয়া দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 16:25 : প্রভু যা যা অনুচিত হলে ঘোষণা করেছিলেন, রাজা অম্রি ঠিক সেইগুলোই করেছিলেন। তাঁর আগে য়ে সব রাজারা রাজত্ব করেছিলেন তিনি তাঁদের চেয়েও খারাপ ছিলেন। নবাটের পুত্র যারবিয়াম য়ে সব পাপ করেছিলেন তিনিও ঠিক সেই পাপগুলো করেছিলেন এবং তিনি ইস্রায়েলের লোকদেরও পাপের কারণ হয়েছিলেন। অতএব তাঁরা ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভুকে ক্রুদ্ধ করে তুলেছিলেন কারণ তাঁরা অর্থহীন, মূল্যহীন মূর্ত্তিসমূহের পূজা করেছিলেন। |
11-1 Kings 16:26 : - |
11-1 Kings 16:27 : অম্রি সম্পর্কে আর সব কিছু তিনি যা যা উল্লেখয়োগ্য কাজ করেছিলেন ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। |
11-1 Kings 16:28 : অম্রির মৃত্যুর পর তাঁকে শমরিয়া শহরেই সমাধিস্থ করা হল। তাঁরপর তাঁর পুত্র আহাব নতুন রাজা হলেন। |
11-1 Kings 16:29 : আসার যিহূদার রাজত্ব কালের 38 বছরের সময়ে অম্রির পুত্র আহাব ইস্রায়েলের রাজা হন। আহাব শমরিয়া শহর থেকে 22 বছর ইস্রায়েল শাসন করেছিলেন। |
11-1 Kings 16:30 : আহাব তাঁর আগের রাজাদের তুলনায় আরো খারাপ ছিলেন। প্রভু যা কিছু অন্যায বলে ঘোষণা করেছিলেন তিনি সেগুলোই করেছিলেন। |
11-1 Kings 16:31 : নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতো পাপাচরণ করেও আহাব ক্ষান্ত হন নি, উপরন্তু তিনি সীদোনীয় রাজা ইত্বালের কন্যা ঈষেবলকে বিয়ে করেছিলেন। এরপর আহাব বাল মূর্ত্তির পূজা করতে শুরু করেন এবং |
11-1 Kings 16:32 : শমরিয়া শহরে বাল পূজার জন্য একটা মন্দির করে সেখানে বেদী বানিয়ে দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 16:33 : আশেরার আরাধনার জন্যও তিনি একটি খুঁটি পুঁতে দিয়েছিলেন। ইস্রায়েলে তাঁর আগে অন্য য়ে সব রাজা শাসন করেছিলেন তাঁদের তুলনায় প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে ক্রুদ্ধ করার মতো আহাব অনেক বেশী পাপকার্য়্য় করেছিলেন। |
11-1 Kings 16:34 : আহাবের শাসন কালে বৈথেলের হীযেল য়িরীহো শহরটি পুননির্মাণ করেছিলেন। এই কাজের ফলস্বরূপ হীযেল য়ে সময়ে শহরটি বানানোর কাজ শুরু করেন, সে সময় তাঁর বড় ছেলে অবীরাম মারা যায়। আর শহরের তোরণ বসানোর কাজ শেষ হলে হীযেলের ছোট ছেলে সগুবেরও মৃত্যু হল। নূনের পুত্র যিহোশূযের মাধ্যমে প্রভু য়ে ভাবে ভাববাণী করেছিলেন ঠিক সে ভাবেই এই সব ঘটেছিল। |
11-1 Kings 17:1 : গিলিয়দের তিশ্বী শহরে এলিয় নামে এক ভাববাদী বাস করতেন। তিনি রাজা আহাবকে বললেন, “আমি ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভুর সেবক। আমি সেই প্রভুর নামে অভিশাপ দিলাম আগামী কয়েক বছর বৃষ্টিপাত তো দূরের কথা, এদেশে এক ফোঁটা শিশির পর্য়ন্ত আর পড়বে না। এক মাত্র আমি নির্দেশ দিলেই আবার বৃষ্টিপাত হবে।” |
11-1 Kings 17:2 : প্রভু তখন এলিয়কে সে জায়গা ছেড়ে যর্দন নদীর পূর্ব দিকে করীত্ খাঁড়ির কাছে লুকিয়ে থাকতে বললেন। |
11-1 Kings 17:3 : - |
11-1 Kings 17:4 : তিনি এলিয়কে জানান য়ে তিনি কাক ও শকুনিদের রোজ তাঁর জন্য সেখানে খাবার এনে দেবার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তৃষ্ণা পেলে এলিয় করীতের জলধারা থেকে জলপানও করতে পারবেন। |
11-1 Kings 17:5 : প্রভুর নির্দেশ মতো এলিয় তখন য়র্দনের পূর্বদিকে করীত্ খাঁড়ির কাছে বাস করতে গেলেন। |
11-1 Kings 17:6 : প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে কাক ও শকুনিরা এলিয়কে খাবার এনে দিত আর তৃষ্ণা পেলে তিনি করীতের স্রোত থেকে জল পান করতেন। |
11-1 Kings 17:7 : কিন্তু অনাবৃষ্টির দরুণ করীতের জলধারা শুকিয়ে গেল। |
11-1 Kings 17:8 : তখন প্রভু এলিয়কে |
11-1 Kings 17:9 : সীদোনের সারিফতে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেন, “সেখানে এক বিধবা রমণী বাস করে। আমি তাঁকে তোমার খাবারের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছি।” |
11-1 Kings 17:10 : এলিয় তখন সারিফত নগরের দরজার কাছে গিয়ে এক বিধবা মহিলাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পেলেন। সে আগুন জ্বালানোর জন্য কাঠ জড়ো করছিল। এলিয় তাঁকে বললেন, “আমায় একটু খাবার জল এনে দিতে পারো?” |
11-1 Kings 17:11 : সেই মহিলা জল আনতে যাবার সময় এলিয় আবার তাকে অনুরোধ করলেন, “দয়া করে আমার খাবার জন্য এক টুকরো রুটি এনো।” |
11-1 Kings 17:12 : কিন্তু সেই মহিলা উত্তর দিলেন, “আমি তোমার প্রভু ঈশ্বরের সামনে দিব্য়ি খেযে বলছি, আমার ঘরে রুটি নেই। শুধু বযামে অল্প একটু মযদা আর শিশিতে অল্প খানিক তেল রাখা আছে। আমি এখানে কাঠ কুড়োতে এসেছিলাম। আমি এই কাঠ বাড়ীতে বয়ে নিয়ে যাবো এবং আগুন বালিয়ে রুটি সেঁকব এবং আমার পুত্র ও আমি আমাদের শেষ আহার করব এবং তারপর খিদের জ্বালায মরে যাবো।” |
11-1 Kings 17:13 : এলিয় সেই মহিলাকে বললেন, “কোনো চিন্তা কোরো না। কথা মতো বাড়ি গিয়ে রান্না চড়াও। কিন্তু তার আগে ঐ মযদা থেকে ছোট্ট একটা রুটি বানিয়ে আমার জন্য নিয়ে এসো। তারপর তুমি তোমার আর তোমার পুত্রের জন্য রান্না করো। |
11-1 Kings 17:14 : ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর বললেন, ‘ঐ মযদার কৌটো কখনও শূন্য হবে না। যত দিন না প্রভু এ দেশে বৃষ্টি পাঠাচ্ছেন তত দিন পর্য়ন্ত ঐ শিশির তেলও আর কমবে না।”‘ |
11-1 Kings 17:15 : তখন ঐ মহিলা বাড়ি ফিরে গিয়ে এলিয়র কথা মতো কাজ করল। এলিয়, ঐ মহিলাটি এবং তার পুত্র বহু দিনের জন্য য়থেষ্ট খাদ্য পেয়েছিল। |
11-1 Kings 17:16 : প্রভু এলিয়কে যা ভাববাণী করেছিলেন, সেই কথা মতোই ঐ মযদার বযাম ও তেলের শিশি কখনও শূন্য হয় নি। |
11-1 Kings 17:17 : কিছু দিন পরে মহিলার পুত্র খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। শেষে এক সময় তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে |
11-1 Kings 17:18 : মহিলা এলিয়কে এসে বলল, “আপনি ঈশ্বরের লোক, আপনি কি আমায় সাহায্য করতে পারবেন? নাকি আপনি এখানে এসে কেবল আমাকে আমার পাপের কথা মনে করিযে দিয়ে আমার পুত্রকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবেন?” |
11-1 Kings 17:19 : এলিয় তাকে বললেন, “তোমার পুত্রকে আমার কাছে এনে দাও।” তারপর এলিয় পুত্রটিকে ওপরে নিয়ে গিয়ে য়ে ঘরে তিনি থাকতেন তার নিজের খাটে শুইযে দিলেন। |
11-1 Kings 17:20 : তারপর এলিয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু, আমার ঈশ্বর, এই বিধবা রমণী আমাকে তার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছে। আপনি কি তার প্রতি এই অনাচার করবেন? আপনি কি তার পুত্রকে মারা য়েতে দেবেন?” |
11-1 Kings 17:21 : তারপর এলিয় পর পর তিন বার সেই ছেলেটার ওপর শুয়ে প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু, আমার ঈশ্বর, এই ছেলেটাকে পুনর্জীবিত করুন।” |
11-1 Kings 17:22 : প্রভু এলিয়র ডাকে সাড়া দিলেন। ছেলেটি বেঁচে উঠল এবং আবার স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস - প্রশ্বাস নিতে শুরু করল। |
11-1 Kings 17:23 : এলিয় তখন ছেলেটিকে নীচের তলায় নিয়ে গিয়ে তার মায়ের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, “দেখো, তোমার পুত্র বেঁচেই আছে!” |
11-1 Kings 17:24 : সেই মহিলা তখন বলল, “এবার আমার সত্যি সত্যি বিশ্বাস হল য়ে আপনি ঈশ্বরের লোক! প্রভু সত্যিই আপনার মুখ দিয়ে কথা বলেন!” |
11-1 Kings 18:1 : একটানা তিন বছর অনাবৃষ্টির পর প্রভু এলিয়কে বললেন, “আমি আবার শীগ্গিরই বৃষ্টি পাঠাবো। যাও গিয়ে রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করো।” |
11-1 Kings 18:2 : এলিয় তখন আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।সে সময়ে শমরিয় শহরে দুর্ভিক্ষ চলছিল। |
11-1 Kings 18:3 : রাজা আহাব তাই ওবদিয, য়ে প্রাসাদ রক্ষনাবেক্ষণ করত তাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। ওবদিয প্রকৃত অর্থেই প্রভুর অনুগামী ছিলেন। |
11-1 Kings 18:4 : এক সময়ে ঈষেবল প্রভুর সমস্ত ভাববাদীদের হত্যা করতে শুরু করেছিলেন। ওবদিয 100 জন ভাববাদীকে দুটি গুহার মধ্যে 50 ভাগের দুটি দলে লুকিয়ে রেখে ছিলেন এবং নিয়মিত তাদের খাবার ও জল এনে দিতেন। |
11-1 Kings 18:5 : রাজা আহাব ওবদিযকে বললেন, “চলো, আমরা বেরিয়ে সমস্ত ঝর্ণা আর নদীগুলোতে গিয়ে দেখি আমাদের ঘোড়া আর খচ্চরগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার মতো ঘাস পাওয়া যায় কি না।” |
11-1 Kings 18:6 : দুজনে দুটি অঞ্চল ভাগ করে নিয়ে সারা দেশে জলের খোঁজে বের হল। আহাব গেলেন এক দিকে আর ওবদিয গেল আরেক দিকে। |
11-1 Kings 18:7 : ওবদিযর সঙ্গে পথে এলিয়র দেখা হল। এলিয়কে দেখেই ওবদিয চিনতে পারল এবং তাঁর সামনে নতজানু হয়ে জিজ্ঞেস করল, “এলিয়! সত্যিই কি আপনি আমার সেই মনিব?” |
11-1 Kings 18:8 : এলিয় বললেন, “হ্যাঁ, আমি এসেছি। যাও তোমার রাজাকে এ খবর জানাও।” |
11-1 Kings 18:9 : তখন ওবদিয বলল, “আমি যদি আহাবকে বলি য়ে আপনি কোথায আছেন আমি জানি তাহলে আহাব আমাকে মেরে ফেলবেন। প্রভু আমি তো আপনার কাছে কোনো অপরাধ করি নি, তাহলে আপনি কেন আমাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন?” |
11-1 Kings 18:10 : রাজা পাগলের মতো উন্মত্ত হয়ে প্রভু, আপনার ঈশ্বরকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, চতুর্দিকে আপনার খোঁজে লোক পাঠিয়েছেন। প্রত্যেকটা দেশে তিনি আপনাকে খুঁজতে লোক পাঠিয়ে ছিলেন এবং সেখানে আপনাকে পাওয়া না গেলে আহাব সেখানকার শাসকদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায করেছেন, য়ে সত্যি সত্যিই আপনি সেই সব দেশে নেই। |
11-1 Kings 18:11 : আর এখন আপনি আমাকে বলছেন, রাজার কাছে গিয়ে আপনার এখানে থাকার খবর দিতে। |
11-1 Kings 18:12 : আমি গিয়ে রাজা আহাবকে একথা বলার পর, রাজা যখন আপনাকে খুঁজতে আসবেন তখন হয়তো প্রভু আপনাকে অন্য কোন জায়গায় নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখবেন আর আপনাকে খুঁজে না পেয়ে রাজা আমাকেই তখন হত্যা করবেন। আমি সেই ছোটবেলা থেকে প্রভুকে অনুসরণ করে চলেছি। |
11-1 Kings 18:13 : আপনি নিশ্চয়ই জানেন, আমি কি করেছিলাম। ঈষেবল যখন প্রভুর ভাববাদীদের হত্যা করছিলেন, আমি তখন তাদের 50 জন করে দুভাগে মোট 100 জন ভাববাদীকে দুটো গুহায লুকিয়ে রেখে নিয়মিত খাবার ও জল দিয়েছিলাম। |
11-1 Kings 18:14 : আর এখন আপনি আমাকে রাজার কাছে গিয়ে বলতে বলছেন, য়ে আপনি এখানে আছেন। রাজা সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে হত্যা করবেন।” |
11-1 Kings 18:15 : এলিয় তখন বললেন, “সর্বশক্তিমান প্রভুর উপস্থিতি য়েরকম সত্য, আমিও সেই রকমই প্রতিশ্রুতি করছি য়ে আমি রাজার সামনে আজ দাঁড়াব।” |
11-1 Kings 18:16 : ওবদিয তখন রাজা আহাবকে গিয়ে এলিয় কোথায আছে তা জানাল। রাজা আহাব এলিয়র সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। |
11-1 Kings 18:17 : আহাব এলিয়কে দেখে প্রশ্ন করল, “তুমিই কি সেই লোক যার জন্য ইস্রায়েলের এই দুরবস্থা?” |
11-1 Kings 18:18 : এলিয় উত্তর দিলেন, “আমার জন্য ইস্রায়েলের কোনো দুর্দশাই হয় নি। তুমি ও তোমার পিতৃপুরুষরাই এজন্য দাযী। তোমরা প্রভুর আদেশ অমান্য করে মূর্ত্তির পূজা শুরু করেছ। |
11-1 Kings 18:19 : এখন ইস্রায়েলের সবাইকে কর্ম্মিল পর্বতে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলো। বালদেবের 450 জন ভাববাদী ও রানী ইষেবল সমর্থক আশেরার মূর্ত্তির 400 জন ভাববাদীকেও য়েন ওখানে আনা হয়।” |
11-1 Kings 18:20 : আহাব তখন সমস্ত ইস্রায়েলীয় ও ঐসব ভাববাদীদের কর্ম্মিল পর্বতে ডাকলেন। |
11-1 Kings 18:21 : এলিয় তখন সবাইকে বললেন, “তোমরা কবে স্থির করবে কোন দেবতাকে তোমরা অনুসরণ করবে? শোনো, প্রভুই যদি সত্য ঈশ্বর হন তাহলে তাঁকে অনুসরণ করো। আর বাল মূর্ত্তিকে যদি তোমাদের প্রকৃত দেবতা বলে মনে হয় তাহলে তাঁকে অনুসরণ করো।”লোকরা কিছুই বলল না। |
11-1 Kings 18:22 : তখন এলিয় তাদের বললেন, “আমি এখানে প্রভুর এক মাত্র ভাববাদী হিসেবে উপস্থিত আছি। আর বালদেবের অনুগামী 450 জন ভাববাদী আছেন। |
11-1 Kings 18:23 : এবার দুটো ষাঁড় নিয়ে আসা হোক্। বাল মূর্ত্তির ভাববাদীরা তার একটি কেটে টুকরো টুকরো করে কাঠের ওপর রাখুন। আমি অন্যটাকে কেটে টুকরো করে কেটে কাঠের ওপর রাখছি। আমরা কেউই নিজে থেকে কাঠে আগুন ধরাবো না। আমি আমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করছি। বাল মূর্ত্তির অনুগামী ভাববাদীরাও তাঁদের দেবতার কাছে প্রার্থনা করুন। যার প্রার্থনায সাড়া দিয়ে কাঠে আগুন জ্বলে উঠবে, তার দেবতাই আসল প্রমাণিত হবেন। সমস্ত লোক এই পরিকল্পনায সায় দিল। |
11-1 Kings 18:24 : - |
11-1 Kings 18:25 : এলিয় তখন বাল মূর্ত্তির ভাববাদীদের ডেকে বললেন, “আপনারা সংখ্যায় অনেক। আপনারাই প্রথম যান। য়ে ভাবে বললাম ষাঁড়টাকে কেটে ঠিক করুন। তবে আগুন জ্বালাবেন না।” |
11-1 Kings 18:26 : তখন বাল মূর্ত্তির অনুগামী ভাববাদীরা তাঁদের য়ে ষাঁড়টি দেওয়া হয়েছিল সেটাকে কথা মতো কেটে সাজালেন। তারপর তাঁরা বেলা দুপুর পর্য়ন্ত বাল মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা করলেন, তাঁদের বানানো য়জ্ঞবেদী ঘিরে নাচানাচি করলেন কিন্তু কেউ তাঁদের প্রার্থনায সাড়া দিল না, আগুন জ্বললো না। |
11-1 Kings 18:27 : দুপুর গড়িযে গেলে এলিয় এই সব ভাববাদীদের নিয়ে রসিকতা শুরু করলেন। এলিয় বললেন, “বাল যদি সত্যি সত্যিই দেবতা হন, তাহলে একটু জোরে প্রার্থনা করা উচিত্! হয়তো উনি এখন ভাবনায ডুবে আছেন! কিম্বা হয়তো ঘুম লাগিয়েছেন। না না! আপনাদের আরেকটু জোরে হাঁকডাক করে ওঁকে ঘুম থেকে তোলা দরকার।” |
11-1 Kings 18:28 : একথা শুনে এই সব ভাববাদীরা তারস্বরে প্রার্থনা করতে লাগলেন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজেদের ক্ষতবিক্ষত করে রক্ত বের করে ফেললেন। (বালদেবের আরাধনার এটিও একটি বিশেষ প্রক্রিযা ছিল।) |
11-1 Kings 18:29 : কিন্তু দুপুর থেকে বিকেল গড়িযে গেল তখনও আগুন ধরার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না। ক্রমে বিকেলের বলিদানের সময় ঘনিয়ে এলো, ভাববাদীরা উন্মত্তের মতো ডাকাডাকি করতে লাগলেন কিন্তু বালদেবের দিক থেকে কোনো সাড়াই পাওয়া গেল না। |
11-1 Kings 18:30 : এলিয় তখন সমস্ত লোকদের বললেন, “এবার আমার কাছে এসো।” সকলে এলিয়কে ঘিরে দাঁড়ালে, এলিয় প্রথমে প্রভুর ভেঙ্গে যাওয়া বেদীটিকে ঠিক করলেন। |
11-1 Kings 18:31 : তারপর ইস্রায়েলের 12 টি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকের নামে একটা করে মোট 12 টি পাথর খুঁজে বের করলেন। যাকোবের 12 জন সন্তানের নামে এই 12 টি পরিবারগোষ্ঠীর নামকরণ হয়েছিল। যাকোবকেই প্রভু ইস্রায়েল বলে ডেকেছিলেন। |
11-1 Kings 18:32 : এলিয় প্রভুকে সম্মান জানাতে এই পাথরগুলো দিয়ে য়জ্ঞবেদীটি ঠিক করেছিলেন। তারপর তিনি বেদীর পাশে 7 গ্য়ালন জল ধরার মতো একটি ছোট ডোবা কাটলেন, |
11-1 Kings 18:33 : এবং সমস্ত জ্বালানি কাঠ বেদীতে রাখলেন। ষাঁড়টাকে টুকরো করে কাটার পর এলিয় সেইসব টুকরো কাঠের ওপর রাখলেন। |
11-1 Kings 18:34 : তারপর তিনি বললেন, “চারটে পাত্রে জল ভরে নিয়ে এসে সেই জল এই মাংসের টুকরো ও কাঠের ওপর ছড়িয়ে দাও।” |
11-1 Kings 18:35 : এলিয় এরপর তিন বার একাজ করলে, বেদী থেকে জল গড়িযে পড়ে ডোবাটা ভরিয়ে দিল। |
11-1 Kings 18:36 : তখন বৈকালিক বলিদানের সময়। ভাববাদী এলিয় বেদীর কাছে গিয়ে প্রার্থনা করলেন, “প্রভু অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের ঈশ্বর, আমি আপনাকে আহ্বান করছি। আপনি এসে প্রমাণ করুন য়ে আপনিই ইস্রায়েলের প্রকৃত ঈশ্বর। এই সব লোককে দেখান য়ে আপনিই আমাকে এসব করবার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 18:37 : হে প্রভু, আপনি এসে আমার ডাকে সাড়া দিলে তবেই এই সব লোকরা বুঝতে পারবে আপনিই তাদের আপনার কাছে ফিরিযে নিলেন।” |
11-1 Kings 18:38 : তখন প্রভু আগুন পাঠালেন। সেই আগুনে সমস্ত বলি, কাঠ, পাথর বেদীর পাশের মাটি পর্য়ন্ত পুড়ে গেল। আগুন ডোবায জমা জলকে ভক্ষণ করে নিল. |
11-1 Kings 18:39 : সমস্ত লোক এ ঘটনা দেখে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে বলতে শুরু করলো, “প্রভুই ঈশ্বর। প্রভুই ঈশ্বর।” |
11-1 Kings 18:40 : এলিয় তখন বললেন, “বাল মূর্ত্তির সমস্ত ভাববাদীদের ধরে নিয়ে এসো। একটাও য়েন পালাতে না পারে।” তখন সবাই মিলে ঐ সমস্ত ভাববাদীদের ধরে নিয়ে এল। এলিয় তাদের কীশোনের খাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করলেন. |
11-1 Kings 18:41 : এলিয় তখন রাজা আহাবকে বললেন, “যাও এবার গিয়ে পানাহার করো। প্রবল বৃষ্টি আসছে।” |
11-1 Kings 18:42 : রাজা আহাব তখন খেতে গেলেন আর এলিয় কর্ম্মিল পর্বতের চূড়ায় গিয়ে নতজানু হয়ে হাঁটুতে মাথা ঠেকিযে |
11-1 Kings 18:43 : তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “সমুদ্রের দিকে তাকাও।”সেই ভৃত্য তখন য়েখান থেকে সমুদ্র দেখা যায় সেখানে গেল। সে ফিরে এসে বলল, “কই কিছু তো দেখতে পেলাম না।” এলিয় তাকে আবার দেখতে পাঠালেন। |
11-1 Kings 18:44 : পরপর সাত বার একই ঘটনা ঘটার পর সাতবারের বার সেই ভৃত্য এসে বলল, “মানুষের হাতের মুঠোর মতো ছোট্ট এক টুকরো মেঘ দেখলাম সমুদ্রের দিক থেকে আসছে।”এলিয় তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “যাও রাজা আহাবকে তাঁর রথ প্রস্তুত করে বাড়িতে য়েতে বলো কারণ এক্ষুনি রওনা না হলে ও বৃষ্টিতে আটকে যাবে।” |
11-1 Kings 18:45 : অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যেই গোটা আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গিয়ে বাতাস বইতে শুরু করলো এবং প্রবল বৃষ্টি শুরু হল। আহাব তাঁর রথে চড়ে য়িষ্রিযেলের দিকে রওনা হলেন। |
11-1 Kings 18:46 : প্রভুর শক্তি তখন এলিয়কে ভর করলো। এলিয় আঁট করে পোশাক বেঁধে আহাবের আগেই দৌড়ে য়িষ্রিযেলে পৌঁছে গেলেন। |
11-1 Kings 19:1 : রাজা আহাব রাণী ঈষেবলকে এলিয় যা যা করেছেন, য়ে ভাবে সমস্ত ভাববাদীদের তরবারি দিয়ে হত্যা করেছেন সবই বললেন। |
11-1 Kings 19:2 : ঈষেবল তখন এলিয়র কাছে দূত মারফত্ খবর পাঠালেন, “আমি প্রতিজ্ঞা করছি আগামীকাল এসময়ের আগে তুমি য়ে ভাবে ঐ ভাববাদীদের হত্যা করেছ ঠিক সে ভাবেই তোমাকে হত্যা করব। আর যদি তা না পারি তাহলে য়েন দেবতারা আমায় হত্যা করেন।” |
11-1 Kings 19:3 : এলিয় যখন একথা শুনলেন তখন ভয়ে তিনি তাঁর প্রাণ বাঁচাতে ভৃত্যকে সঙ্গে নিয়ে যিহূদার বেরশেবাতে পালিয়ে গেলেন। তাঁর ভৃত্যকে বেরশেবাতে রেখে |
11-1 Kings 19:4 : এলিয় সারাদিন হেঁটে হেঁটে অবশেষে মরুভূমিতে গিয়ে পৌঁছলেন। সেখানে একটা কাঁটা ঝোপের তলায় বসে তিনি মৃত্যু প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু য়থেষ্ট হয়েছে। এবার আমাকে মরতে দাও। আমি আমার পূর্বপুরুষদের অপেক্ষা কোনো অংশেই ভালো নই।” |
11-1 Kings 19:5 : এরপর এলিয় সেই ঝোপের তলায় শুয়ে ঘুমিযে পড়লেন। এসময় এক দেবদূত এসে এলিয়কে স্পর্শ করে বলল, “ওঠো এলিয় খেযে নাও!” |
11-1 Kings 19:6 : এলিয় দেখতে পেলেন তাঁর পাশেই কযলার ওপরে এক খানা কেক বানানো আছে আর এক ঘড়া জল রাখা আছে। এলিয় তা খেযে জল পান করে আবার ঘুমিযে পড়লেন। |
11-1 Kings 19:7 : পরে আবার প্রভুর দূত ফিরে এসে তাঁকে বলল, “ওঠো এলিয়! কিছু খাও! সামনে লম্বা সফর, যদি তুমি খেযে গায়ে জোর না বাড়াও পাড়ি দিতে পারবে না।” |
11-1 Kings 19:8 : এলিয় তখন উঠে পানাহার করলেন। সেই খাবার এলিয়কে একটানা 4040 দিন 40 রাত্রি হাঁটার মতো শক্তি জোগালো। হাঁটতে হাঁটতে তিনি ঈশ্বরের পর্বত নামে পরিচিত হোরেব পর্বতে গিয়ে পৌঁছলেন। |
11-1 Kings 19:9 : সেখানে একটি গুহার ভেতরে এলিয় রাত্রি বাস করলেন।সে সময় প্রভু এলিয়র সঙ্গে কথা বললেন, “এলিয় তুমি এখানে কেন?” |
11-1 Kings 19:10 : এলিয় উত্তর দিলেন, “প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, আমি সব সময় সাধ্য মতো তোমার সেবা করেছি। কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তোমার সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ করে তোমার বেদী ধ্বংস করে ভাববাদীদের হত্যা করেছে। এখন আমিই একমাত্র জীবিত ভাববাদী আর তাই ওরা আমাকেও হত্যার চেষ্টা করছে।” |
11-1 Kings 19:11 : প্রভু তখন এলিয়কে বললেন, “যাও পর্বতে গিয়ে আমার সামনে দাঁড়াও। আমি ঐ জায়গা দিয়ে যাব।” তখন ঝোড়ো হাওযা এসে পর্বতটাকে ভেঙ্গে দ্বিখণ্ডিত করল, বড় বড় পাথরের চাঁই খসে পড়ল, কিন্তু সেই ঝড়ের মধ্যে প্রভু ছিলেন না। ঝড়ের পর হল ভূমিকম্প। কিন্তু সেই ভূমিকম্পও প্রভু বয়ং নন। |
11-1 Kings 19:12 : ভূমিকম্পের আগুন জ্বলে উঠল। কিন্তু আগুনের মধ্যেও প্রভু ছিলেন না। আগুন নিভিযে দেওয়া হল। একটি শান্ত, কোমল স্বর শোনা গেল। |
11-1 Kings 19:13 : এলিয় যখন স্বরটা শুনতে পেলেন তখন তিনি তাঁর শাল দিয়ে তাঁর মুখ ঢেকে দিলেন। তারপর তিনি গিয়ে গুহার প্রবেশ মুখে দাঁড়ালেন। একটি স্বর তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “এলিয়, তুমি এখানে কেন?” |
11-1 Kings 19:14 : এলিয় বললেন, “প্রভু, ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, আমি সব সময়ই আমার সাধ্য মতো তোমার সেবা করে এসেছি কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তোমার সঙ্গে তাদের চুক্তিভঙ্গ করেছে। তারা তোমার পূজোর বেদী ধ্বংস করে সমস্ত ভাববাদীদের হত্যা করেছে। এখন আমিই একমাত্র জীবিত আছি। আর ওরা আমাকে হত্যার চেষ্টা করছে।” |
11-1 Kings 19:15 : প্রভু বললেন, “যাও দম্মেশকের পাশের মরুভূমির দিকে য়ে রাস্তা যাচ্ছে সেটা ধরে দম্মেশকে গিয়ে হসায়েলকে অরামের রাজপদে অভিষিক্ত করো। |
11-1 Kings 19:16 : তারপর নিম্শির পুত্র য়েহূকে ইস্রায়েলের রাজপদে অভিষেক করো। আর আবেলমহোলার শাফটের পুত্র ইলীশায়কেও অভিষেক করো। সে ভাববাদী হিসেবে তোমার জায়গা নেবে। |
11-1 Kings 19:17 : হসায়েল বহু খারাপ লোককে হত্যা করবে। হসায়েলের হাত থেকে যারা বেঁচে যাবে তাদের য়েহূ হত্যা করবে। আর য়েহূর তরবারি থেকেও যদি কেউ নিস্তার পেয়ে যায় তাকে ইলীশায় হত্যা করবে। |
11-1 Kings 19:18 : এলিয় ইস্রায়েলে তুমিই একমাত্র একনিষ্ঠ ভাবে আমার সেবা করো নি। সেখানে আরো 7,000 লোক আছে যারা কখনও বাল মূর্ত্তির কাছে মাথা নত করে নি এবং এরা কখনও বাল মূর্ত্তি চুম্বন করে নি। |
11-1 Kings 19:19 : এলিয় তখন শাফটের পুত্র ইলীশায়কে খুঁজতে বেরোলেন। ইলীশায় তখন 12 বিঘা জমিতে হাল দিচ্ছিলেন। এলিয় যখন এলেন তখন ইলীশায় শেষ এক বিঘা জমিতে হাল দিচ্ছিলেন। এলিয় গিয়ে ইলীশায়ের গায়ে নিজের আনুষ্ঠানিক পোশাক পরিযে দিলেন। |
11-1 Kings 19:20 : ইলীশায় ষাঁড়কে ছেড়ে রেখে এলিয়র পেছনে ছুটে এসে বললেন, “আমাকে অনুমতি দিন, আমি একবার গিয়ে আমার মাকে আদর করে আসি এবং পিতার কাছ থেকে বিদায নিয়ে আসি। তারপর আমি আপনার সঙ্গে যাবো।”এলিয় উত্তর দিল, “বেশ, যাও! আমি তোমাকে বাধা দেব না।” |
11-1 Kings 19:21 : ইলীশায় তখন বাড়িতে গিয়ে আত্মীয স্বজনের সঙ্গে দারুণ খাওয়া - দাওয়া করলেন। তাঁর গরুগুলোকে মেরে য়োয়ালের কাঠ বালিয়ে মাংস সেদ্ধ করে লোকদের খাওয়ালেন এবং নিজেও খেলেন। তারপর ইলীশায় এলিয়কে অনুসরণ করলেন এবং তাঁর পরিচর্য়্য়া করতে লাগলেন। |
11-1 Kings 20:1 : বিন্হদদ ছিলেন অরামের রাজা। তিনি তাঁর সেনাবাহিনী এক জায়গায় জড়ো করলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে আরো 32 জন রাজা য়োগদান করলেন। তাঁদের সঙ্গে ঘোড়া ও রথ ছিল। তারপর তারা সকলে মিলে শমরিয় আক্রমণ করে শমরিয় শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। |
11-1 Kings 20:2 : রাজা বিন্হদদ ইস্রায়েলের রাজা আহাবের কাছে শহরে বার্তাবাহক পাঠালেন। |
11-1 Kings 20:3 : তিনি বললেন, “তুমি আমাকে তোমার সোনা, রূপো, স্ত্রী, পুত্রকন্যা সবকিছু সমর্পণ করো।” |
11-1 Kings 20:4 : ইস্রায়েলের রাজা উত্তর দিলেন, “মহারাজ আমি আপনার আনুগত্য স্বীকার করলাম। আমার যা কিছু আছে এখন সবই আপনার হল। |
11-1 Kings 20:5 : বার্তাবাহকরা ফিরে এসে আহাবকে জানালো বিন্হদদ বলেছেন, “আমি তোমাকে আগেই তোমার সোনা, রূপো, স্ত্রী পুত্রকন্যা সবাই আমায় দিয়ে দিতে বলেছিলাম। |
11-1 Kings 20:6 : আগামীকাল আমার লোকরা গিয়ে তোমার ও তোমার কর্মচারীদের বাড়ি তল্লাশি করবে। তারা আমার কাছে নিয়ে আসার জন্য যাবতীয় মূল্যবান সম্পদ নিয়ে নেবে।”‘ |
11-1 Kings 20:7 : আহাব তখন দেশের সমস্ত প্রবীণদের এক বৈঠক ডাকলেন। আহাব বললেন, “দেখুন, বিন্হদদ একটা গোলমাল করবার চেষ্টায আছে। প্রথমে ও আমার কাছে আমার স্ত্রী, পুত্রকন্যা, সোনা রূপো সবকিছু চেয়েছিল। আমি সে সবই ওকে দিতে রাজী হয়েছিলাম। কিন্তু এখন ও সব কিছুই নিয়ে য়েতে চাইছে।” |
11-1 Kings 20:8 : সমস্ত প্রবীণরা বললেন, “ওর কথা শোনার দরকার নেই। ও যা বলছে তা আপনি কোনো মতেই করবেন না।” |
11-1 Kings 20:9 : আহাব তখন বিন্হদদকে খবর পাঠালেন, “প্রথমে আপনি যা বলেছিলেন আমি তাতে সম্মত আছি, কিন্তু আপনার দ্বিতীয় নির্দেশ মানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”বিন্হদদের দূতরা এ খবর রাজার কাছে নিয়ে গেল। |
11-1 Kings 20:10 : তারপর তারা বিন্হদদের কাছ থেকে এসে জানালো, “আমি শমরিয় শহরকে ধ্বংস করে ধূলোয় মিশিয়ে দেব। আমি প্রতিজ্ঞা করছি য়ে এই শহর থেকে আমার লোকদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার মতো এক টুকরো স্মারক আমি অবশিষ্ট রাখবো না। যদি এ কাজ করতে না পারি আমার ঈশ্বর য়েন আমাকেই ধ্বংস করেন।” |
11-1 Kings 20:11 : রাজা আহাব জবাব দিলেন, “যাও বিন্হদদকে গিয়ে বলো, যুদ্ধে যাওয়ার আগে বর্ম য়ে পরে তার যুদ্ধ করে এসে য়ে বর্ম খোলে তার মতো গলাবাজি সাজে না।” |
11-1 Kings 20:12 : বিন্হদদ তখন তাঁবুতে বসে অন্যান্য রাজাদের সঙ্গে দ্রাক্ষারস পান করছিলেন। সে সময় বার্তাবাহকরা রাজা আহাবের কাছ থেকে ফিরে এসে তাঁকে এই খবর দিতে তিনি তাঁর সেনাবাহিনীকে শহর আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন। তখন তাঁর লোকরা যুদ্ধ করবার জন্য য়ে যার নিজের জায়গায় সরে গেল। |
11-1 Kings 20:13 : সে সময় এক ভাববাদী রাজা আহাবকে গিয়ে বলল, “প্রভু বলেছেন, ‘তুমি কি ঐ সুবিশাল সেনাবাহিনী দেখতে পাচ্ছো? আমি বয়ং আজ তোমায় ঐ বাহিনীকে যুদ্ধে হারাতে সাহায্য করবো। তাহলেই তুমি বুঝবে আমিই প্রভু।” |
11-1 Kings 20:14 : আহাব জিজ্ঞাসা করলেন, “ওদের যুদ্ধে হারানোর জন্য আপনি কাকে ব্যবহার করবেন?”সেই ভাববাদী উত্তর দিল, “প্রভু বলেছেন, ‘সরকারী রাজকর্মচারীদের তরুণ সহকারীদের আমি ব্যবহার করবো।”‘তখন রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “মূল সেনাবাহিনীর সেনাপতিত্ব কে করবে?”ভাববাদী উত্তর দিল, “আপনি।” |
11-1 Kings 20:15 : আহাব তখন সরকারী কর্মচারীদের তরুণ সহকারীদের জড়ো করলেন। সব মিলিয়ে এরা সংখ্যায় ছিল 232 জন। তারপর রাজা ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীকে ডেকে পাঠালেন। সব মিলিয়ে সেখানে 7,000 জন ছিল। |
11-1 Kings 20:16 : দুপুর বেলায় যখন বিন্হদদ ও অন্যান্য 32 জন রাজা দ্রাক্ষারস পান করে তাঁবুতে বেহুঁশ হয়ে পড়েছিলেন সে সময়ে রাজা আহাব আক্রমণ শুরু করলেন। |
11-1 Kings 20:17 : তরুণ সহকারীরাই প্রথম আক্রমণ করলো। রাজা বিন্হদদের লোকরা তাঁকে জানাল, শমরিয়া থেকে সেনারা যুদ্ধ করতে বেরিয়েছে। |
11-1 Kings 20:18 : বিন্হদদ বললেন, “হতে পারে ওরা যুদ্ধ করতে আসছে অথবা ওরা হয়তো শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আসছে। ওদের জীবন্ত ধরে ফেলো।” |
11-1 Kings 20:19 : রাজা আহাবের তরুণ য়োদ্ধারা আক্রমণের সামনের দিকে ছিল আর ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী ওদের অনুসরণ করছিল। |
11-1 Kings 20:20 : ইস্রায়েলের সমস্ত ব্যক্তি তাদের সামনে যাকে পেলো হত্যা করল। তখন অরামের লোকরা পালাতে শুরু করল। ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী তাদের ধাওযা করলো। রাজা বিন্হদদ কোনো মতে রথের একটা ঘোড়ায় চেপে পালালেন। |
11-1 Kings 20:21 : রাজা আহাব সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে অরামের সেনাবাহিনীর সমস্ত ঘোড়া ও রথ কেড়ে নিলেন। রাজা আহব এভাবেই অরামীয় সেনাবাহিনীকে চূড়ান্ত ভাবে পরাজিত করেছিলেন। |
11-1 Kings 20:22 : তারপর সেই ভাববাদী রাজা আহাবের কাছে গিয়ে বললেন, “আগামী বসন্তে অরামের রাজা বিন্হদদ আবার আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে ফিরে আসবে। এখন ফিরে গিয়ে আপনি আপনার সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করুন আর তার বিরুদ্ধে রাজ্য রক্ষা করার জন্য সতর্ক ভাবে পরিকল্পনা করুন।” |
11-1 Kings 20:23 : রাজা বিন্হদদের রাজকর্মচারীরা তাঁকে বললেন, “ইস্রায়েলের দেবতারা আসলে পর্বতের দেবতা। আর আমরা পর্বতে গিয়ে যুদ্ধ করেছি তাই ইস্রায়েলের লোকরা জিতে গিয়েছে। ওদের সঙ্গে এবার সমতল ভূমিতে যুদ্ধ করা যাক, তাহলে আমরা জিতে যাবো। |
11-1 Kings 20:24 : আপনি ঐ 32 জন রাজাকে সেনাবাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব করতে না দিয়ে সেনাপতিদের সেনাবাহিনী পরিচালনা করতে দিন। |
11-1 Kings 20:25 : “প্রথমে আপনি ধ্বংস হয়ে যাওয়া সেনাবাহিনীর মতো আরেকটা বাহিনী গড়ার জন্য সেনা জড়ো করুন। আগের সেনাবাহিনীর মতো ঘোড়া ও রথ জোগাড় করুন। তারপরে চলুন ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে সমতল ভূমিতে গিয়ে যুদ্ধ করি। তাহলেই আমরা জিতবো।” বিন্হদদ তাদের পরামর্শ অনুযায়ীকাজ করলেন। |
11-1 Kings 20:26 : বসন্তকাল এলে বিন্হদদ অরামের লোকদের জড়ো করে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অফেকে গেলেন। |
11-1 Kings 20:27 : ইস্রায়েলীয়রাও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। তারাও অরামের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেল এবং তাদের তাঁবূর ঠিক উল্টোদিকে নিজেদের তাঁবু গাড়ল। শত্রুপক্ষের তুলনায় ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনীকে দুটো ছোট ছোট ছাগলের পালের মতো দেখাচ্ছিল। এদিকে অরামীয় সেনারা গোটা মাঠ ছেযে ফেললো। |
11-1 Kings 20:28 : ঈশ্বরের এক জন লোক তখন এসে রাজা আহাবকে বলল, “প্রভু বলেছেন, ‘অরামীয়দের ধারণা আমি কেবলমাত্র পর্বতেরই প্রভু ও ঈশ্বর, সমতল ভূমির নয়। তাই আমি এবার তোমায় এই বিরাট সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করতে সাহায্য করব। তাহলে তুমি বুঝবে আমি সর্বশক্তিমান প্রভু।”‘ |
11-1 Kings 20:29 : দুই পক্ষের সেনাবাহিনী মুখোমুখি তাঁবু গেড়ে আরো সাতদিন বসে থাকল। সাত দিনের দিন যুদ্ধ শুরু হল। এক দিনেই ইস্রায়েলীয়রা অরামীয়দের 1,00,000 সৈন্যকে হত্যা করল। |
11-1 Kings 20:30 : যারা বেঁচে থাকল তারা পালিয়ে অফেক শহরে আশ্রয় নিল। কিন্তু শহরের দেওয়াল ভেঙ্গে পড়ায সেই সেনাবাহিনীর আরো 27,000 সৈন্যের মৃত্যু হল। বিন্হদদ ও অফেকে পালিয়ে গিয়ে একটি বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। |
11-1 Kings 20:31 : তাঁর ভৃত্যরা তাঁকে বলল, “আমরা শুনেছি ইস্রায়েলের রাজারা দয়ালু হন। চলুন আমরা চটের পোশাক পরে মাথায় দড়ি দিয়ে ইস্রায়েলের রাজার সামনে যাই। তাহলে হয়তো তিনি আমাদের প্রাণে মারবেন না।” |
11-1 Kings 20:32 : তারা তখন সকলে চটের পোশার পরে মাথায় দড়ি দিয়ে ইস্রায়েলের রাজার সামনে এসে বলল, “আপনার ভৃত্য বিন্হদদ প্রাণ ভিক্ষা চাইতে এসেছে।”আহাব বললেন, “বিন্হদদ এখনও বেঁচে আছে, সে তো আমার ভাইযের মত।” |
11-1 Kings 20:33 : বিন্হদদের লোকরা চেয়েছিল রাজা আহাব এমন কিছু প্রতিশ্রুতি দিন যাতে বোঝা যায় তিনি রাজা বিন্হদদকে হত্যা করবেন না। আহাবের মুখে ‘ভাই’ সম্বোধন শুনে বিন্হদদের পরামর্শদাতারা সঙ্গে সঙ্গে বলল, “হ্যাঁ, মহারাজ বিন্হদদ আপনার ভাই হলেন।”আহাব বললেন, “তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এসো।” বিন্হদদ রাজা আহাবের কাছে এলে আহাব তাঁকে তাঁর সঙ্গে রথে চড়তে বললেন। |
11-1 Kings 20:34 : বিন্হদদ তাঁকে বললেন, “আহাব, আমার পিতা তোমার পিতার কাছ থেকে য়ে সমস্ত শহর নিয়েছিলেন আমি সেই সমস্তই তোমাকে ফেরত্ দেব। আর তাছাড়া তুমি দম্মেশকে দোকান বসাতে পার য়েমন আমার পিতা শমরিয়ায বসিযে ছিলেন।”আহাব উত্তর দিলেন, “তুমি যদি এই প্রতিশ্রুতি দাও তাহলে আমি তোমাকে মুক্ত করে দিচ্ছি।” তারপর এই দুই রাজার মধ্যে শান্তি চুক্তি সাক্ষরিত হলে রাজা আহাব রাজা বিন্হদদকে মুক্তি দিলেন। |
11-1 Kings 20:35 : এক ভাববাদী আরেক ভাববাদীকে আঘাত করতে বললেন। তিনি এরকম বলেছিলেন কারণ প্রভু তাঁকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু অন্য ভাববাদী তাকে আঘাত করতে রাজী হলেন না। |
11-1 Kings 20:36 : তখন সেই প্রথম ভাববাদী বললেন, “তুমি প্রভুর আদেশ অমান্য করেছ, তাই এখান থেকে যাওয়ার পথে এক সিংহের হাতে তোমার মৃত্যু হবে।” দ্বিতীয় ভাববাদী সে জায়গা থেকে যাওয়ার সময় একটা সিংহ এসে তাকে হত্যা করল। |
11-1 Kings 20:37 : প্রথম ভাববাদী তখন আরেক ব্যক্তির কাছে গিয়ে তাকে আঘাত করতে লাগল।এই ব্যক্তি আঘাত করে ভাববাদীকে আহত করলে, |
11-1 Kings 20:38 : ভাববাদী একটি কাপড়ে মুখ ঢাকলেন। এর ফলে কেউ সেই ভাববাদীকে চিনতে পারছিল না। সেই ভাববাদী পথের ধারে রাজার যাওয়ার অপেক্ষায বসে থাকলেন। |
11-1 Kings 20:39 : রাজা এলে সেই ভাববাদী তাঁকে বললেন, “আমি যখন যুদ্ধে গিয়েছিলাম তখন আমাদের দলের একজন এক শত্রু সৈন্যকে নিয়ে এসে আমাকে তাকে পাহারা দিতে বলে। সে বলেছিল, ‘একে পাহারা দাও। যদি ও পালিয়ে যায় তাহলে তোমাকে ওর বদলে প্রাণ দিতে হবে, আর না হলে 75 পাউণ্ড রূপো জরিমানা দিতে হবে।’ |
11-1 Kings 20:40 : কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত: আমি তখন অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় শত্রু সেনাটি পালিয়ে যায়।”ইস্রায়েলের রাজা উত্তর দিলেন, “তুমি বলছো তুমি বিপক্ষ দলীয এক সেনাকে পালিয়ে য়েতে দেওয়ার দোষে দোষী। এবার কি হবে তা তো তুমি জানোই। ঐ সেনাটির কথা মতোই তোমায় কাজ করতে হবে।” |
11-1 Kings 20:41 : তখন সেই ভাববাদী তাঁর মুখ থেকে কাপড় সরালে ইস্রায়েলের রাজা দেখে বুঝতে পারলেন য়ে তিনি এক জন ভাববাদী। |
11-1 Kings 20:42 : সেই ভাববাদী রাজাকে বললেন, “প্রভু বলেছেন, ‘আমি যাকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলাম তুমি তাকে মুক্তি দিয়েছ। তাই তোমায় তার জায়গা নিতে হবে। তোমার মৃত্যু হবে। আর তোমার প্রজারা তোমার শত্রুর জায়গা নেবে এবং তারাও মারা যাবে।”‘ |
11-1 Kings 20:43 : রাজা তখন চিন্তিত ও দুঃখিত মনে শমরিয়ায তাঁর বাড়িতে ফিরে এলেন। |
11-1 Kings 21:1 : শমরিয়ায রাজা আহাবের রাজপ্রাসাদের কাছেই একটা দ্রাক্ষাক্ষেত ছিল। য়িষ্রিযেলে নাবোত নামে এক ব্যক্তি ছিল এই ক্ষেতের মালিক। |
11-1 Kings 21:2 : এক দিন রাজা আহাব নাবোতকে বললেন, “আমাকে তোমার ক্ষেতটা দিয়ে দাও, আমি সব্জির বাগান করবো। তোমার ক্ষেতটা আমার রাজপ্রাসাদের কাছে। আমি তোমাকে এর বদলে আরো ভাল দ্রাক্ষা ক্ষেত দেব। কিংবা তুমি যদি চাও আমি ক্ষেতটা কিনেও নিতে পারি।” |
11-1 Kings 21:3 : নাবোত বলল, “এ আমার বংশের জমি। আমি আপনাকে কোনো মতেই দিতে পারব না।” |
11-1 Kings 21:4 : নাবোতের কথায় ক্রুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ আহাব তখন বাড়ি ফিরে গেলেন। য়িষ্রিযেলের এই ব্যক্তির কথা তিনি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। নাবোত বলল য়ে সে তার পরিবারের জমি দেবে না। আহাব বিছানায শুয়ে পড়লেন, মুখ ঘুরিযে রাখলেন এবং খেতে অস্বীকার করলেন। |
11-1 Kings 21:5 : আহাবের স্ত্রী ঈষেবল গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কি হয়েছে? খেলে না কেন?” |
11-1 Kings 21:6 : আহাব বললেন, “আমি য়িষ্রিযেলের নাবোতকে ওর জমিটা আমায় দিয়ে দিতে বলেছিলাম। তার বদলে ওকে পুরো দাম দিতে বা আরেকটা জমি দিতে আমি রাজি আছি। কিন্তু নাবোত আমাকে ওর জমি দেবে না বলে দিয়েছে।” |
11-1 Kings 21:7 : ঈষেবল বলল, “তুমি ইস্রায়েলের রাজা। বিছানা ছেড়ে উঠে কিছু খাও, দেখবে তাহলেই অনেক ভাল লাগবে। নাবোতের জমি আমি তোমায় দেব।” |
11-1 Kings 21:8 : এরপর ঈষেবরল আহাবের সীলমোহর দিয়ে তাঁর বকলমে কয়েকটা চিঠি লিখে নাবোত য়ে শহরে বাস করত সেখানকার প্রবীণদের পাঠিয়ে দিলেন। |
11-1 Kings 21:9 : ঈষেবল লিখলেন:একটি উপবাসের দিন ঘোষণা করুন য়েদিন কেউ কোনো খাওয়া - দাওয়া করবে না। তারপর শহরের সমস্ত লোককে একটা বৈঠকে ডাকুন। সেখানে আমরা নাবোতের সম্পর্কে আলোচনা করব। |
11-1 Kings 21:10 : কিছু লোককে জোগাড় করুন যারা নাবোতের নামে মিথ্যা কথা বলবে। তারা বলবে তারা নাবোতকে রাজা ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুনেছে। এরপর নাবোতকে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলুন। |
11-1 Kings 21:11 : য়িষ্রিযেলের প্রবীণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এই নির্দেশ পালন করলেন। |
11-1 Kings 21:12 : তারা একটি উপবাসের দিনের কথা ঘোষণা করলেন য়েদিন কেউ কিছু খেতে পারবে না। সেদিন তাঁরা সমস্ত লোকদের নিয়ে এক বৈঠক ডাকলেন। তারা সমস্ত লোকের সামনে নাবোতকে একটি বিশেষ জায়গায় স্থাপিত করলেন। নাবোতকে সেখানে লোকদের সামনে কাঠগড়ায দাঁড় করানোর পর |
11-1 Kings 21:13 : দুজন লোক বলল, তারা নাবোতকে রাজা ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুনেছে। তখন লোকরা নাবোতকে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে মেরে ফেলল। |
11-1 Kings 21:14 : তারপর নেতারা ঈষেবলকে খবর পাঠালেন, “নাবোতকে হত্যা করা হয়েছে।” |
11-1 Kings 21:15 : ঈষেবল যখন এখবর পেলেন তিনি আহাবকে বললেন, “নাবোত মারা গিয়েছে। তুমি য়ে ক্ষেতটা চেয়েছিলে, তা এবার নিয়ে নিতে পার।” |
11-1 Kings 21:16 : আহাব তখন গিয়ে সেই দ্রাক্ষার ক্ষেত নিজের জন্য দখল করলেন। |
11-1 Kings 21:17 : এ সময় প্রভু তিশ্রের ভাববাদী এলিয়কে শমরিয়ায নাবোতের দ্রাক্ষার ক্ষেতে গিয়ে আহাবের সঙ্গে দেখা করতে নির্দেশ দিলেন। |
11-1 Kings 21:18 : তিনি বললেন, “আহাব ঐ ক্ষেত নিজের জন্য দখল করতে গিয়েছেন। ওকে গিয়ে বল, ‘আহাব তুমি নাবোতকে হত্যা করে এখন ওর জমি দখল করছ। তাই আমি তোমায় শাপ দিলাম য়ে জায়গায় নাবোতের মৃত্যু হয়েছে সেই একই জায়গায় তোমারও মৃত্যু হবে। য়েসব কুকুর নাবোতের রক্ত চেটে খেযেছে তারা ঐ একই জায়গায় তোমারও রক্ত চেটে খাবে।”‘ |
11-1 Kings 21:19 : - |
11-1 Kings 21:20 : এলিয় তখন আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। আহাব এলিয়কে দেখতে পেয়ে বললেন, “তুমি আবার আমার পিছু নিয়েছ। তুমি তো সব সময়ই আমার বিরোধিতা করো।”এলিয় উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, আমি আবার তোমাকে খুঁজে বের করেছি। তুমি আজীবন প্রভুর বিরুদ্ধে পাপাচরণ করে কাটালে। |
11-1 Kings 21:21 : তাই প্রভু তোমাকে জানিয়েছেন, ‘আমি তোমায় ধ্বংস করব। আমি তোমাকে ও তোমার পরিবারের সমস্ত পুরুষকে হত্যা করব। |
11-1 Kings 21:22 : তোমার পরিবারের দশাও নবাটের পুত্র যারবিয়ামের পরিবারের মতো হবে। কিংবা রাজা বাশার পরিবারের মতো। এই দুই পরিবারই পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি একাজ করব কারণ আমি তোমার ব্যবহারে ক্রুদ্ধ হয়েছি। তুমি ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ।’ |
11-1 Kings 21:23 : প্রভু আরো বললেন, ‘কুকুররা তোমার স্ত্রী ঈষেবলের দেহ য়িষ্রিযেল শহরের পথে ছিঁড়ে খাবে। |
11-1 Kings 21:24 : তোমার পরিবারের য়ে সমস্ত লোকের শহরে মৃত্যু হবে তাদের মৃতদেহ কুকুর খাবে আর মাঠেঘাটে যারা মারা যাবে তাদের মৃতদেহ চিল শকুনিতে ঠোকরাবে।”‘ |
11-1 Kings 21:25 : 5আহাবের মতো এতো বেশী অপরাধ বা পাপ আগে কেউ করেন নি। তাঁর স্ত্রী ঈষেবলই তাঁকে এসব করিযেছিলেন। |
11-1 Kings 21:26 : আহাব ইমোরীয়দের মতোই কাঠের মূর্ত্তি পূজা করার মতো জঘন্য পাপাচারণ করেছিলেন। এই অপরাধের জন্যই প্রভু ইমোরীয়দের ভূখণ্ড নিয়ে তা ইস্রায়েলীয়দের দিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 21:27 : এলিয়র কথা শেষ হলে আহাবের খুবই দুঃখ হল। তিনি তাঁর শোকপ্রকাশের জন্য পরিধেয বস্ত্র ছিঁড়ে ফেললেন। তারপর শোকপ্রকাশের পোশাক গায়ে দিলেন। খাওয়া - দাওয়া করে দুঃখিত ও শোকসন্তপ্ত আহাব ঐ পোশাকেই ঘুমোতে গেলেন। |
11-1 Kings 21:28 : প্রভু তখন ভাববাদী এলিয়কে বললেন, |
11-1 Kings 21:29 : ”আমি দেখতে পাচ্ছি আহাব আমার সামনে বিনীত হয়েছে। তাই আমি ওর জীবদ্দশায় কোনো সংকটের সৃষ্টি না করে ওর ছেলে রাজা না হওয়া পর্য়ন্ত অপেক্ষা করব। তারপর আমি আহাবের বংশের ওপর বিপদ ঘনিয়ে তুলব।” |
11-1 Kings 22:1 : পরবর্তী দু বছর ইস্রায়েল ও অরামের মধ্যে শান্তি বজায় ছিল। |
11-1 Kings 22:2 : তারপর তৃতীয় বছরের মাথায় যিহূদার রাজা যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। |
11-1 Kings 22:3 : এসময় আহাব তাঁর রাজকর্মচারীদের বললেন, “মনে আছে অরামের রাজা গিলিয়দের রামোত্ আমাদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন? রামোত্ ফিরিযে নেবার জন্য আমরা কিছু করিনি কেন? রামোত্ আমাদেরই থাকা উচিত্।” |
11-1 Kings 22:4 : আহাব তখন রাজা যিহোশাফটকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি অরামের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের সঙ্গে রামোতে য়োগ দেবেন?”যিহোশাফট বললেন, “অবশ্যই। আমার সেনাবাহিনী ও ঘোড়া আপনার সৈন্যদলের সঙ্গে য়োগ দেবার জন্য প্রস্তুত। |
11-1 Kings 22:5 : কিন্তু প্রথমে এ বিষয়ে আমরা প্রভুর পরামর্শ নেব।” |
11-1 Kings 22:6 : তখন আহাব ভাববাদীদের এক বৈঠক ডাকলেন। সেই বৈঠকে প্রায় |
11-1 Kings 22:40 : 0 ভাববাদী য়োগ দিলেন। আহাব তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “আমি কি রামোতে অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, নাকি আমি উপযুক্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করব?”ভাববাদীরা বললনে, “আপনি এখনই গিয়ে যুদ্ধ করুন। প্রভু আপনার সহায় হয়ে আপনাকে জিততে সাহায্য করবেন।” |
11-1 Kings 22:7 : কিন্তু যিহোশাফট তাদের বললেন, “এখানে কি প্রভুর অন্য কোন ভাববাদী উপস্থিত আছেন? তাহলে আমাদের তাঁকেও ঈশ্বরের মতামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা উচিত্।” |
11-1 Kings 22:8 : রাজা আহাব বললেন, “য়িম্লের পুত্র মীখায় নামে ভাববাদী এখানে আছেন। আমি তাকে পছন্দ করি না কারণ যখনই সে প্রভুর কথা বলে কখনও আমার সম্পর্কে ভালো কোনো কথা বলে না।”যিহোশাফট বললেন, “মহারাজ আহাব আপনার মুখে একথা শোভা পায না।” |
11-1 Kings 22:9 : তখন রাজা আহাব রাজকর্মচারীদের এক জনকে গিয়ে মীখায়কে খুঁজে বের করতে বললেন। |
11-1 Kings 22:10 : সে সময় দুজন রাজাই তাঁদের রাজকীয পরিচ্ছদ পরেছিলেন। তাঁরা শমরিয়ায ঢোকার দরজার কাছে বিচার কক্ষে রাজ সিংহাসনে বসেছিলেন। সমস্ত ভাববাদীরা তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে ভাববাণী করছিলেন। |
11-1 Kings 22:11 : সেখানে কনানীর পুত্র সিদিকিয় নামে এক ভাববাদী ছিলেন। সিদিকিয় কিছু লোহার শিং বানিয়ে আহাবকে বললেন, “প্রভু বলেছেন, ‘অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তুমি এই শিংগুলো ব্যবহার করলে ওদের যুদ্ধে হারাতে ও ধ্বংস করতে পারবে।”‘ |
11-1 Kings 22:12 : অন্য সমস্ত ভাববাদীরাও সিদিকিয়র কথার সঙ্গে একমত হলেন। ভাববাদীরা বললেন, “আপনার সেনাবাহিনীর এবার যাত্রা শুরু করা উচিত্। রামোতে প্রভুর সহায়তায আপনার সেনাবাহিনী অরামের সৈন্য দলের বিরুদ্ধে অবশ্যই জয়লাভ করবে।” |
11-1 Kings 22:13 : এসব যখন হচ্ছিল, য়ে রাজকর্মচারী মীখায়ের খোঁজে গিয়েছিল সে মীখায়কে খুঁজে বের করে বলল, “দেখ সমস্ত ভাববাদীরাই বলেছেন মহারাজ যুদ্ধে জয়লাভ করবেন। আমি তোমাকে আগেই বলে দিচ্ছি, সে কথায় সায় দেওয়াই কিন্তু সব চেয়ে নিরাপদ।” |
11-1 Kings 22:14 : কিন্তু মীখায় বলল, “না! আমি প্রতিজ্ঞা করেছি য়ে ঐশ্বরিক শক্তির বলে প্রভু আমায় দিয়ে যা বলাবেন আমি তাই বলব।” |
11-1 Kings 22:15 : মীখায় তখন গিয়ে রাজা আহাবের সামনে দাঁড়ালে রাজা তাঁকে প্রশ্ন করলেন, “মীখায় আমি ও রাজা যিহোশাফট কি সম্মিলিত সেনাবাহিনী নিয়ে এখন রামোতে অরামের সৈন্যদলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করতে পারি?”মীখায় বলল, “নিশ্চয়ই! আপনারা দুজনে গিয়ে এখন যুদ্ধ করলে, প্রভু আপনাদের জিততে সাহায্য করবেন।” |
11-1 Kings 22:16 : আহাব বললেন, “মীখায় আপনি মোটেই দৈববাণী করছেন না। আপনি নিজের কথা বলছেন। আমাকে সত্যি কথা বলুন। আপনাকে কত বার বলবো? আপনি আমাকে প্রভুর অভিমত জানান।” |
11-1 Kings 22:17 : অগত্যা মীখায় বলল, “আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, কি ঘটতে চলেছে। ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী পরিচালনার য়োগ্য লোকের অভাবে এক পাল মেষের মতো ছড়িয়ে পড়বে। প্রভু বলছেন, ‘এদের কোনো য়োগ্য সেনাপতি নেই। যুদ্ধ না করে এদের বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত্।”‘ |
11-1 Kings 22:18 : আহাব তখন যিহোশাফটকে বললেন, “দেখলেন! আপনাকে আগেই বলেছিলাম। এই ভাববাদী আমার সম্পর্কে কখনও ভাল কথা বলে না। এমন কথা বলে যা আমি শুনতে চাই না।” |
11-1 Kings 22:19 : কিন্তু মীখায় তখন প্রভুর অভিমত ব্যক্ত করে বলে চলেছে, “শোনো! আমি স্বচক্ষে প্রভুকে তাঁর সিংহাসনে বসে থাকতে দেখতে পাচ্ছি। দূতরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে। |
11-1 Kings 22:20 : প্রভু বলেছেন, ‘তোমাদের দূতদের মধ্যে কেউ কি রাজা আহাবকে প্রলোভিত করতে পারবে? আমি চাই আহাব রামোতে অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন। তাহলে ও নিহত হবে।’ দূতরা কি করবে সে বিষয়ে সহমত হতে পারলো না। |
11-1 Kings 22:21 : শেষ পর্য়ন্ত এক দূত বলল, ‘আমি পারব রাজা আহাবকে প্রভাবিত করতে।’ |
11-1 Kings 22:22 : প্রভু প্রশ্ন করলেন, ‘কিভাবে তুমি এই কাজ করবে?’ দূত উত্তর দিলেন, ‘আমি যাব ও সমস্ত ভাববাদীদের মুখে মিথ্যাবাদী আত্মা হব।’ তখন প্রভু বললনে, “উত্তম প্রস্তাব! যাও, গিয়ে রাজা আহাবের ওপর তোমার চাতুরী দেখাও। তুমি সফল হবে।”‘ |
11-1 Kings 22:23 : মীখায় তার গল্প শেষ করে বলল, “তার মানে এখানেও ঠিক একই কাণ্ডখানাই ঘটেছে। প্রভু আপনার ভাববাদীদের দিয়ে আপনার কাছে মিথ্যে কথা বলিযেছেন। প্রভু নিজেই আপনার ওপর দুর্য়োগ ঘনিয়ে তোলার ব্যবস্থা করেছেন।” |
11-1 Kings 22:24 : তখন ভাববাদী সিদিকিয় গিয়ে মীখায়ের মুখে আঘাত করে বলল, “তুমি কি সত্যিই বিশ্বাস করো য়ে ঈশ্বরের ক্ষমতা আমাকে ছেড়ে গেছে এবং প্রভু এখন তোমার মুখ দিয়ে কথা বলছেন?” |
11-1 Kings 22:25 : মীখায় উত্তর দিল, “শীঘ্রই বিপদ ঘনিয়ে আসছে। তুমি তখন গিয়ে একটা ছোট্ট ঘরে লুকিয়ে বুঝতে পারবে, আমিই সত্যি কথা বলেছি।” |
11-1 Kings 22:26 : তখন রাজা আহাব তাঁর এক কর্মচারীকে, মীখায়কে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়ে বললেন, “ওকে গ্রেপ্তার করে আমোনের শাসনকর্তা রাজপুত্র যোয়াশের কাছে নিয়ে যাও। |
11-1 Kings 22:27 : ওদের বললেন মীখায়কে কারাগারে বন্ধ করে রাখতে। জল আর রুটি ছাড়া য়েন ওকে আর কিছু খেতে না দেওয়া হয়। আমি যুদ্ধ থেকে বাড়ি ফিরে না আসা পর্য়ন্ত ওকে এভাবে আটকে রেখো।” |
11-1 Kings 22:28 : মীখায় তখন চিত্কার করে বলল, “আমি কি বলেছি তোমরা সকলেই শুনেছ। রাজা আহাব তুমি যদি যুদ্ধ থেকে বেঁচে ফিরে আস তাহলে সবাই জানবে য়ে ঈশ্বর কখনোই আমার মধ্যে দিয়ে কথা বলেন নি।” |
11-1 Kings 22:29 : তারপরে রাজা আহাব ও রাজা যিহোশাফট রামোতে অরামের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। |
11-1 Kings 22:30 : তারপর রাজা আহাব, রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমরা যুদ্ধের জন্য তৈরী হব। আমি এমন পোশাক পরবো যাতে বোঝা না যায় য়ে আমি রাজা। কিন্তু আপনি আপনার রাজকীয পোশাক পরুন, যাতে বোঝা যায় আপনি রাজা।” তারপর ইস্রায়েলের রাজা সাধারণ পোশাকে তিনি রাজা নন এভাবে যুদ্ধ শুরু করলেন। |
11-1 Kings 22:31 : অরামের রাজার রথবাহিনীর |
11-1 Kings 22:32 : জন সেনাপতি ছিল। রাজা এই |
11-1 Kings 22:32 : জন সেনাপতিদের ইস্রায়েলের রাজাকে খুঁজে বের করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি তাদের রাজাকে হত্যা করতে বললেন। |
11-1 Kings 22:32 : যুদ্ধের সময় এই সব সেনাপতিরা রাজা যিহোশাফটকে দেখে ভাবলেন তিনিই বুঝি ইস্রায়েলের রাজা। তারা তখন যিহোশাফটকে হত্যা করতে গেলে তিনি চেঁচাতে শুরু করলেন। |
11-1 Kings 22:33 : সেনাপতিরা দেখল তিনি রাজা আহাব নন, তাই তাঁরা তাঁকে হত্যা করল না। |
11-1 Kings 22:34 : কিন্তু এক জন সেনা কোনো কিছু লক্ষ্য না করেই বাতাসে একটা তীর ছুঁড়লো, সেই তীর গিয়ে ইস্রায়েলের রাজা আহাবের গায়ে লাগল। তীরটা একটা ছোট্ট জায়গায় বর্মের না ঢাকা অংশে গিয়ে লেগেছিল। রাজা আহাব তখন তাঁর রথের সারথীকে বললেন, “আমার গায়ে তীর লেগেছে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে রথ বের করে নিয়ে চল।” |
11-1 Kings 22:35 : এদিকে দুই সেনাবাহিনী যুদ্ধ করে য়েতে লাগল। রাজা আহাব তাঁর রথে কাত হয়ে পড়ে অরামের সেনাবাহিনীর দিকে দেখছিলেন। তাঁর রক্ত গড়িযে পড়ে রথের তলা ভিজে গিয়েছিল। বিকেলের দিকে তিনি মারা গেলেন। |
11-1 Kings 22:36 : সূর্য়াস্তের সময় ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীর সবাইকে তাদের নিজেদের শহরে ফিরে য়েতে বলা হল। |
11-1 Kings 22:37 : এই ভাবে রাজা আহাবের মৃত্যু হল। কিছু লোক তাঁর দেহ শমরিয়ায নিয়ে গেলেন, তাঁকে সেখানে কবর দেওয়া হল। |
11-1 Kings 22:38 : লোকরা শমরিয়ায একটা ডোবায রথ থেকে আহাবের রক্ত ধুয়ে পরিষ্কার করল। গণিকারা সেই জলে স্নান করল। কুকুররাও রথ থেকে আহাবের রক্ত চেটে চেটে খেল। প্রভু য়ে রকম বলেছিলেন সমস্ত ঘটনা ঠিক সেভাবেই ঘটল। |
11-1 Kings 22:39 : আহাব তাঁর শাসনকালে যা কিছু করেছিলেন সে সবই ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। এই গ্রন্থে আহাব কি ভাবে হাতির দাঁত দিয়ে তাঁর রাজপ্রাসাদ সাজিযে ছিলেন সে কথা ছাড়াও আহাবের বানানো শহরগুলির সম্পর্কেও লেখা আছে। |
11-1 Kings 22:40 : আহাবের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল। তাঁর পুত্র অহসিয় তাঁর পরে রাজা হলেন। |
11-1 Kings 22:41 : আহাবের ইস্রায়েলে রাজত্বের চতুর্থ বছরে যিহোশাফট যিহূদার রাজা হয়েছিলেন। যিহোশাফট ছিলেন আসার পুত্র। |
11-1 Kings 22:42 : পঁযত্রিশ বছর পরে যিহূদার রাজা হবার পর তিনি জেরুশালেমে |
11-1 Kings 22:25 : বছর রাজত্ব করেছিলেন। যিহোশাফটের মা ছিলেন শিল্হির কন্যা অসূবা। |
11-1 Kings 22:43 : যিহোশাফট তাঁর পিতার মতো সত্ পথে থেকে প্রভুর সমস্ত নির্দেশ মেনে চলেছিলেন। তবে তিনি বিধর্মী মূর্ত্তিগুলির উচ্চস্থানগুলো ভাঙ্গেন নি। লোকরা সে সব জায়গায় পশু বলি ছাড়াও ধূপধূনো দিত। |
11-1 Kings 22:44 : যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিলেন। |
11-1 Kings 22:45 : যিহোশাফট খুবই সাহসী ছিলেন এবং অনেক যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তিনি যা যা করেছিলেন, ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। |
11-1 Kings 22:46 : য়ে সমস্ত নর - নারী গণিকাবৃত্তি অবলম্বন করত যিহোশাফট তাদের ধর্মস্থান ছেড়ে চলে য়েতে বাধ্য করেছিলেন। এই সমস্ত নর - নারী তাঁর পিতা আসার রাজত্ব কালে ঐসব ধর্মস্থানে ছিল। |
11-1 Kings 22:47 : এসময়ে ইদোমে কোনো রাজা ছিল না। যিহূদার রাজা সেখানকার শাসন কাজ চালনার জন্য একজন প্রাদেশিক শাসনকর্তাকে বেছে নিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 22:48 : রাজা যিহোশাফট কিছু মালবাহী জাহাজ বানিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন এই সমস্ত জাহাজ ওফীরে গিয়ে সেখান থেকে সোনা নিয়ে আসবে। কিন্তু ওফীরে যাবার আগেই দেশেরই বন্দরে ইত্সিযোন - গেবরে এই সব জাহাজ ধ্বংস করে দেওয়া হয়। |
11-1 Kings 22:49 : ইস্রায়েলের রাজা অহসিয় তখন নিজের কিছু নাবিককে যিহোশাফটের জাহাজে তাঁর নাবিকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যিহোশাফট অহসিয়ের এই সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। |
11-1 Kings 22:50 : যিহোশাফটের মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চির নিদ্রায় সমাধিস্থ করা হল। এরপর রাজা হলেন তাঁর পুত্র যিহোরাম। |
11-1 Kings 22:51 : যিহূদার রাজা যিহোশাফটের রাজত্বের |
11-1 Kings 22:17 : বছরে আহাবের পুত্র অহসিয় ইস্রায়েলের রাজা হয়েছিলেন। অহসিয় |
11-1 Kings 22:2 : বছর শমরিয়ায রাজত্ব করেছিলেন। |
11-1 Kings 22:52 : অহসিয় তাঁর পিতা আহাব, মাতা ঈষেবল ও নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতোই প্রভুর বিরুদ্ধে যাবতীয় পাপাচরণ করেন। এই সমস্ত শাসকরাই ইস্রায়েলকে আরো পাপের দিকে ঠেলে নিয়ে গিয়েছিলেন। |
11-1 Kings 22:53 : অহসিয় তাঁর পিতার মতোই বাল মূর্ত্তির পূজা করতেন। ফলে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, খুবই ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। এর আগে তিনি তাঁর পিতার ওপর য়ে রকম ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন, অহসিয়ের প্রতিও তিনি ঠিক সে রকমই ক্রুদ্ধ হন। |