9-1 Samuel 1:1 : পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িমের রামা অঞ্চলে ইল্কানা নামে একজন লোক ছিল। ইল্কানা সূফ পরিবার থেকে এসেছিল; তার পিতার নাম ছিল য়িরোহম, য়িরোহমের পিতা হচ্ছে ইলীহূ, ইলীহূর পিতা তোহূ, তোহূর পিতা সূফ। সে ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিল। |
9-1 Samuel 1:2 : ইল্কানার দুই স্ত্রী ছিল। একজনের নাম হান্না, অন্য জনের নাম পনিন্না। পনিন্নার সন্তানাদি ছিল, কিন্তু হান্না ছিল নিঃসন্তান। |
9-1 Samuel 1:3 : প্রতি বছরই ইল্কানা রামা শহর থেকে শীলোতে চলে যেত। শীলোয গিয়ে সে সর্বশক্তিমান প্রভুর উপাসনা করত ও তাঁকে বলি নিবেদন করত। সেখানে হফ্নি এবং পীনহস যাজক হিসেবে প্রভুর সেবা করত। এরা দুই জন ছিল এলির পুত্র। |
9-1 Samuel 1:4 : প্রত্যেকবার ইল্কানা বলি দিয়ে এসে তার একটা ভাগ তার স্ত্রী পনিন্নাকে দিত এবং সে পনিন্নার সন্তানদেরও কিছুটা ভাগ দিত। |
9-1 Samuel 1:5 : ইল্কানা আর একটা সমান অংশ হান্নাকেও দিত। প্রভু হান্নার কোলে সন্তান না দিলেও ইল্কানা তাকে বলির ভাগ দিত, কারণ সে হান্নাকে সত্যিই ভালবাসত। |
9-1 Samuel 1:6 : পনিন্না সব সময় হান্নাকে বিরক্ত করত। এতে হান্নার খুব মন খারাপ হত। হান্নার সন্তান হয়নি বলে পনিন্না তাকে এই রকম করত। |
9-1 Samuel 1:7 : বছরের পর বছর এই ঘটনা ঘটত। যখনই ইল্কানা তার পরিবারের সঙ্গে শীলোয় প্রভুর গৃহে উপাসনা করতে যেত, পনিন্না হান্নাকে বিরক্ত করত। একদিন ইল্কানা সবাইকে যখন বলির ভাগ দিচ্ছিল, হান্না মনের দুঃখে কেঁদে ফেলল। সে কিছুই খেল না। |
9-1 Samuel 1:8 : ইল্কানা তাকে বলল, “হান্না, তুমি কাঁদছ কেন? কেন তুমি কিছু খাচ্ছ না? কিসের জন্য তোমায় এমন শুকনো দেখাচ্ছে? তোমার জন্য তো আমি আছি। আমি তোমার স্বামী। দশটি পুত্রের চেয়ে আমাকে তোমার বেশী ভাল বলে বিবেচনা করা উচিত্।” |
9-1 Samuel 1:9 : খাওয়া দাওযা এবং পান সেরে হান্না চুপচাপ উঠে পড়ল। সে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে গেল। প্রভুর পবিত্র মন্দিরের দরজার পাশে একটা চেযারে যাজক এলি বসেছিল। |
9-1 Samuel 1:10 : দুঃখিনী হান্না প্রভুর কাছে প্রার্থনার সময় খুবই কাঁদল। |
9-1 Samuel 1:11 : ঈশ্বরের কাছে সে এক বিশেষ ধরণের মানত করল। সে বলল, “হে সর্বশক্তিমান প্রভু, দেখো আমি বড় দুঃখী। আমাকে ভুলে যেও না। আমাকে মনে রেখ। তুমি যদি আমাকে একটি পুত্র দাও, আমি সেই পুত্রকে তোমাকেই উত্সর্গ করব। সে হবে নাসরতীয়। সে দ্রাক্ষারস বা কোন রকম কড়া পানীয় পান করবে না। কেউ কখনও তার চুল কাটবে না।” |
9-1 Samuel 1:12 : অনেকক্ষণ ধরে হান্না প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল। হান্না যখন প্রার্থনা করছিল তখন এলি তার মুখগহ্বরের দিকে দেখছিল। |
9-1 Samuel 1:13 : হান্না মনে মনে প্রার্থনা করছিল। সে শব্দ করে কিছু বলছিল না, শুধু তার ঠোঁট দুটো নড়ছিল। এলি মনে করল যে হান্না মাতাল হয়ে গেছে। |
9-1 Samuel 1:14 : তাই এলি হান্নাকে বলল, “তুমি খুব বেশী পান করেছ! এখন দ্রাক্ষারস সরিয়ে রাখার সময় হয়েছে।” |
9-1 Samuel 1:15 : হান্না বলল, “না মহাশয়, আমি দ্রাক্ষারস বা সুরা কিছুই পান করি নি। আমার হৃদয় তীব্র বেদনায় কাতর। আমি প্রভুর কাছে আমার সব কষ্টের কথা জানাচ্ছিলাম। |
9-1 Samuel 1:16 : ভাববেন না যে আমি খারপ মেয়ে। আমি সারাক্ষণ শুধু প্রার্থনাই করছিলাম। কারণ আমার অনেক দুঃখ এবং আমি খুবই বিচলিত।” |
9-1 Samuel 1:17 : এলি বলল, “নিশ্চিন্তে বাড়ি যাও। ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমার মনোবাঞ্ছা পূরণ করুন।” |
9-1 Samuel 1:18 : হান্না বলল, “আশা করি আমার ওপর আপনি সন্তুষ্ট হয়েছেন।” এই বলে হান্না চলে গেল এবং পরে কিছু মুখে দিল। তারপর থেকে সে আর দুঃখী ছিল না। |
9-1 Samuel 1:19 : পরদিন খুব সকালে ইল্কানার বাড়ির সকলে ঘুম থেকে উঠল। তারা সকলে প্রভুর উপাসনা করল। তারপর তারা রামায় ফিরে গেল।ইল্কানা হান্নার সঙ্গে মিলিত হল। প্রভু হান্নাকে মনে রেখেছিলেন। |
9-1 Samuel 1:20 : পরের বছর হান্না একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিল। হান্না পুত্রের নাম রাখল, শমূয়েল। সে বলল, “আমি প্রভুর কাছে এর জন্যে প্রার্থনা করেছিলাম, তাই এর নাম দিয়েছি শমূয়েল।” |
9-1 Samuel 1:21 : সেই বছর ইল্কানা শীলোতে গেল। ঈশ্বরের কাছে প্রতিশ্রুতি পালনের জন্যে এবং বলি দিতেই সে সেখানে সপরিবারে গিয়েছিল। |
9-1 Samuel 1:22 : কিন্তু হান্না যেতে চাইল না। সে ইল্কানাকে বলল, “যখন পুত্র বড় হবে, শক্ত খাবার - দাবার খেতে শিখবে তখন আমি শীলোতে যাব। শীলোয় গিয়ে প্রভুর কাছে পুত্রকে দান করব। পুত্র হবে নাসরতীয়। সে শীলোতেই থাকবে।” |
9-1 Samuel 1:23 : ইল্কানা তার স্ত্রী হান্নাকে বলল, “যা ভাল বোঝ তাই কর। পুত্র বড় না হওয়া পর্য়ন্ত, তার শক্ত খাবার খাওয়ার শক্তি না হওয়া পর্য়ন্ত বাড়িতেই থাকতে পারে। প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করুন।”সুতরাং পুত্র শক্ত খাবার খাওয়ার উপযুক্ত না হওয়া পর্য়ন্ত হান্না পুত্রের সেবা শুশ্রূষার জন্য বাড়িতে থেকে গেল। |
9-1 Samuel 1:24 : বালকটি যখন বেশ বড়সড় হল, খাবার চিবোতে শিখল, তখন হান্না তাকে নিয়ে শীলোয প্রভুর গৃহে গেল। সে তিন বছরের একটা ষাঁড়ও সঙ্গে নিল। এ ছাড়াও সে নিল |
9-1 Samuel 1:20 : পাউণ্ড ছাঁকা মযদা এবং এক বোতল দ্রাক্ষারস। |
9-1 Samuel 1:25 : তারা প্রভুর সামনে গেল। ইল্কানা ষাঁড়টিকে বলি দিল যেমন সে সাধারণতঃ করত। তারপর হান্না এলিকে তার পুত্র দিল। |
9-1 Samuel 1:26 : হান্না এলিকে বলল, “মার্জনা করবেন মহাশয়। আমিই সেই মহিলা যে একদিন আপনার কাছে দাঁড়িয়েছিলাম এবং প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম। বিশ্বাস করুন, আমি সত্যি কথাই বলছি। |
9-1 Samuel 1:27 : আমি এই ছেলের জন্যেই প্রার্থনা করেছিলাম এবং প্রভু আমার সেই প্রার্থনার উত্তর দিয়েছেন। প্রভু এম্প ছেলেকে আমায় দিয়েছেন। |
9-1 Samuel 1:28 : আমি এখন সেই ছেলেকে প্রভুর কাছে উত্সর্গ করছি। সে সারা জীবন তাঁর সেবা করবে।”এই কথা বলে, হান্না ছেলেটিকে সেখানে রাখল এবং প্রভুর উপাসনা করল। |
9-1 Samuel 2:1 : হান্না বলল, “প্রভুতেই আমার হৃদয় খুশী। আমি আমার ঈশ্বরে শক্তিশালী! তাই আমি আমার শত্রু দেখে হাসি। আমি তোমার প্রদত্ত পরিত্রাণে খুবই আনন্দিত। |
9-1 Samuel 2:2 : প্রভুর মত পবিত্র আর কোন ঈশ্বর নেই। তুমি ছাড়া আর কোন ঈশ্বর নেই। আমাদের ঈশ্বরের মত আর কোন শিলা নেই। |
9-1 Samuel 2:3 : আর দম্ভ করো না। গর্বের শব্দ যেন উচ্চারিত না হয় কারণ প্রভু ঈশ্বর সবই জানেন। ঈশ্বরই লোকদের চালনা ও বিচার করেন। |
9-1 Samuel 2:4 : বলবান সৈন্যর ধনু ভেঙ্গে যায় এবং দুর্বল লোক শক্তিশালী হয়। |
9-1 Samuel 2:5 : অতীতে যাদের প্রচুর খাদ্য ছিল এখন তাদের এক মুঠো খাদ্যের জন্য কঠিন সংগ্রাম করতে হবে। কিন্তু অতীতে যারা ক্ষুধার্ত ছিল তাদের এখন প্রচুর খাদ্য আছে। যে নারী ছিল বন্ধ্যা তার এখন সাতটি সন্তান। কিন্তু যে নারীর বহু সন্তান ছিল এখন সে দুঃখী। কারণ তার সন্তানরা চলে গেছে। |
9-1 Samuel 2:6 : প্রভুই মারেন ও বাঁচান, প্রভুই কবরে শাযিত করেন ও উর্দ্ধে তোলেন। |
9-1 Samuel 2:7 : প্রভুই কাউকে গরীব করেন, আবার কাউকে ধনে ভরে দেন। কাউকে নম্র করেন, আবার কাউকে সম্মান দেন। |
9-1 Samuel 2:8 : প্রভু ধুলি থেকে দরিদ্রদের তোলেন এবং তিনি দুঃখ হরণ করে নেন। তিনি তাদের গুরুত্বপূর্ণ করে তোলেন এবং তাদের রাজকুমারদের সঙ্গে বসান ও তাদের সম্মানীয আসন দেন। প্রভু হচ্ছেন সেই জন যিনি সমগ্র বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন এবং সমগ্র বিশ্ব য়াঁর অধিকারভুক্ত। |
9-1 Samuel 2:9 : প্রভু তাঁর পবিত্র লোকদের হোঁচট খাওয়া থেকে রক্ষা করেন। দুষ্ট লোকরা অন্ধকারে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাদের ক্ষমতা তাদের বিজয়ী করতে পারে না। |
9-1 Samuel 2:10 : প্রভু তাঁর শত্রুদের ধ্বংস করেন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে স্বর্গে বজ্র নির্ঘোষ ঘটাবেন। প্রভু দূরের দেশগুলিরও বিচার করবেন। তিনি তাঁর রাজাকে ক্ষমতা দেবেন এবং তাঁর অভিষিক্ত রাজাকে শক্তিশালী করবেন।” |
9-1 Samuel 2:11 : ইল্কানা সপরিবারে তার নিজের দেশ রামায় ফিরে এলো। কিন্তু ছেলেটি শীলোয় থেকে গেল। সেখানে সে যাজক এলির তত্ত্বাবধানে প্রভুর সেবা করেছিল। |
9-1 Samuel 2:12 : এলির পুত্ররা ছিল খুব মন্দ, তারা প্রভুকে মানতো না। |
9-1 Samuel 2:13 : এমনকি লোকদের সাথে যাজকদের কিরূপ আচার ব্যবহার করা উচিত্ সেই নিয়ে তারা বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাতো না। যাজকদের এইসব কাজ করণীয ছিল; লোক যখন কোন উত্সর্গ আনবে তখন যাজকদের সেই উত্সর্গের মাংস একটা গরম জলের পাত্রে রাখতে হবে। তারপর যাজকের ভৃত্য একটা বিশেষ ধরণের তিন মুখো কাঁটা চামচ আনবে। |
9-1 Samuel 2:14 : যাজকের ভৃত্যকে সেই পাত্র থেকে কিছুটা মাংস তুলে নেবার জন্য কাঁটাটা ব্যবহার করতে হবে। সেই কাঁটায যতটুকু মাংস উঠত যাজক শুধু সেই মাংসটুকুই পেত। যেসব ইস্রায়েলীয়রা শীলোতে বলি আনত তাদের সকলের প্রতি যাজকদের এই কাজটা করতে হত। |
9-1 Samuel 2:15 : কিন্তু এলির পুত্ররা তা করত না। বেদীর ওপর চর্বির পোড়ানোর আগেই তাদের ভৃত্য ভক্তদের বলত, “যাজককে কিছু মাংস দাও, সেটা ঝলসানো হবে। সে সেদ্ধ মাংস নেবে না।” |
9-1 Samuel 2:16 : যদি ভক্ত বলত, “আগে চর্বিটা পোড়াই, তারপর যা চাও দিচ্ছি।” তার উত্তরে ভৃত্য বলত, “না, এক্ষুনি মাংস দাও। না দিলে আমি তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেবো!” |
9-1 Samuel 2:17 : এভাবে হফ্নি ও পীনহস প্রভুর জন্য দেওয়া বলিকে অসম্মান করত। সন্দেহ নেই প্রভুর বিরুদ্ধে এটা ছিল খুবই মারাত্মক পাপ। |
9-1 Samuel 2:18 : কিন্তু শমূয়েল প্রভুর সেবা করত। সেই তরুণ সহকারী, যাজকের বিশেষ ধরণের জামা এফোদ পরত। |
9-1 Samuel 2:19 : প্রতি বছর শমূযেলের মা একটা ছোট পোশাক তৈরী করত এবং সেটা তার জন্য শীলোয় নিয়ে যেত। সে স্বামীর সাথে সেখানে প্রতি বছর বলি দিতে যেত। |
9-1 Samuel 2:20 : ইল্কানা আর তার স্ত্রীকে এলি আশীর্বাদ করে বলত, “প্রভু তোমাকে হান্নার মাধ্যমে আরও সন্তান দিক। এরাই হান্নার মানত করা ছেলের জায়গা নেবে।”ইল্কানা তার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ী ফিরে গেল। |
9-1 Samuel 2:21 : প্রভু হান্নার উপর সন্তুষ্ট হয়েছিলেন। হান্নার তিনটি ছেলে, দুটি মেয়ে হল। এদিকে শমূয়েল তো প্রভুর সেবা করতে করতেই পবিত্র স্থানে বড় হয়ে উঠছিল। |
9-1 Samuel 2:22 : এলি বেশ বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলো। শীলোতে সমস্ত ইস্রায়েলের প্রতি পুত্ররা কি করত সে সম্বন্ধে সে প্রাযই শুনতে পেত। এলি এও শুনেছিল যে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দ্বারে যে সব স্ত্রী লোকরা সেবা করত তাদের সঙ্গে তার পুত্ররা শুয়ে রাত কাাত। |
9-1 Samuel 2:23 : এলি তার পুত্রদের বলল, “লোকরা তোমাদের সম্বন্ধে নানা কথা আমায় বলছে। কেন তোমরা এত বাজে কাজ করছ? |
9-1 Samuel 2:24 : শোন বাছারা, এরকম অন্যায় কাজ কোরো না। প্রভুর লোকরা তোমাদের নিন্দে করছেন। |
9-1 Samuel 2:25 : মানুষ যদি মানুষের কাছে পাপ করে ঈশ্বর তাকে ক্ষমা করতে পারেন, কিন্তু প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করলে কে তাকে রক্ষা করবে?”কিন্তু পুত্ররা কেউ তাকে গ্রাহ্য করল না। তাই প্রভু তাদের শেষ করবেন বলে স্থির করলেন। |
9-1 Samuel 2:26 : অন্যদিকে শমূয়েল বড় হতে লাগল। সে ঈশ্বর এবং লোকদের কাছে আনন্দদাযক ছিল। |
9-1 Samuel 2:27 : ঈশ্বর একজন লোককে এলির কাছে পাঠালেন। লোকটি এলিকে বলল, “প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন, “তোমার পূর্বপুরুষরা ছিল ফরৌণ কূলের ক্রীতদাস, কিন্তু তাদের কাছে আমি দেখা দিয়েছিলাম। |
9-1 Samuel 2:28 : ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর ভেতর থেকে আমার যাজকসমূহ হবার জন্য আমি তোমার পরিবারকে নির্বাচিত করেছিলাম। আমার বেদীতে বলি উত্সর্গ দেবার জন্য তোমাদের মনোনীত করেছিলাম। তারাই ধূপ জ্বালাবে, তারাই পরবে এফোদ। আমি এই জন্যই তাদের নির্বাচন করেছিলাম। আমিই তোমাদের পরিবারগোষ্ঠীকে অধিকার দিয়েছি যেন তারাই ইস্রায়েলীয়দের দেওয়া বলির মাংস পায়। |
9-1 Samuel 2:29 : তাহলে কেন তোমরা এই সব বলি এবং নৈবেদ্যকে সম্মান করবে না? তুমি আমার চেয়েও তোমার পুত্রদের বেশী সম্মান দিয়ে থাক। আমার লোক, ইস্রায়েলীয়রা আমাকে উত্সর্গীকৃত করবার জন্য যে মাংস নিয়ে আসে তার থেকে সব চেয়ে ভালো অংশগুলি খেয়ে তোমরা মোটা হয়ে যাচ্ছো।’ |
9-1 Samuel 2:30 : “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তোমার পিতার পরিবারের লোকরা তাঁকে চিরকাল সেবা করবে। কিন্তু আজ প্রভু এই কথা বলছেন, ‘না, তা আর কখনও হবে না। আমি তাদেরই সম্মান করব যারা আমাকে সম্মান করবে। আর যারা আমায় সম্মান করতে অস্বীকার করবে, তাদের অমঙ্গল হবে। |
9-1 Samuel 2:31 : সেই সময় আসছে যেদিন আমি তোমাদের সমস্ত উত্তরপুরুষদের বিনাশ করব। তোমার ঘরে কেউই বৃদ্ধ বয়স পর্য়ন্ত বাঁচবে না। |
9-1 Samuel 2:32 : ইস্রায়েলে ভাল জিনিস ঘটবে, কিন্তু খারাপ জিনিসগুলি তোমরা তোমাদের বাড়ীতে ঘটতে দেখবে। তোমার ঘরে কেউ বৃদ্ধ বয়স পর্য়ন্ত বাঁচবে না। |
9-1 Samuel 2:33 : একজন মানুষকে আমি বাঁচাব। সেই আমার বেদীতে যাজকের কাজ করবে। সে দীর্ঘজীবী হবে। যতদিন পর্য়ন্ত তার দৃষ্টিশক্তি থাকবে, শরীরে শক্তি থাকবে ততদিন সে বেঁচে থাকবে। তোমার উত্তরপুরুষরা তরবারির কোপে মরবে। |
9-1 Samuel 2:34 : আমি তোমাকে এমন একটি চিহ্ন দেখাব যাতে বুঝতে পারবে যে এইসব কথা সত্য। একই দিনে তোমার দুই পুত্র হফ্নি আর পীনহস মারা যাবে। |
9-1 Samuel 2:35 : নিজের জন্য আমি একজন বিশ্বস্ত যাজক মনোনীত করব। সে আমার কথা শুনবে এবং আমি যা চাই তাই করবে। আমি তার পরিবারকে শক্তিশালী করব। আমার মনোনীত রাজার সামনে এই যাজক সর্বদা আমার সেবা করবে। |
9-1 Samuel 2:36 : তারপর তোমার পরিবারের যারা বেঁচে থাকবে তারা এই যাজকের কাছে এসে মাথা নীচু করে দাঁড়াবে। তারা কযেক টুকরো রূপো অথবা এক টুকরো রুটির জন্য ভিক্ষে চাইবে। তারা বলবে, “আমাকে দয়া করে একটা যাজকের কাজ দাও যাতে দু মুঠো খেতে পারি।”“ |
9-1 Samuel 3:1 : এলির অধীনে থেকে বালক শমূয়েল প্রভুর সেবা করতে লাগল। সেই সময় প্রভু প্রাযই লোকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতেন না। দর্শন ছিল বিরল। |
9-1 Samuel 3:2 : এলির দৃষ্টিশক্তি এত কমে গিয়েছিল যে এক রকম অন্ধই বলা চলে। এক রাত্রিতে সে শুয়ে ছিল, |
9-1 Samuel 3:3 : শমূয়েল প্রভুর পবিত্র মন্দিরে শুয়ে ছিল। সেখানেই ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ছিল। প্রভুর প্রদীপ তখনও জ্বলছিল। |
9-1 Samuel 3:4 : প্রভু শমূয়েলকে ডাকলেন; শমূয়েল সাড়া দিল, “এই যে, আমি এখানে।” |
9-1 Samuel 3:5 : শমূয়েল মনে করেছিল, এলি তাকে ডাকছে। তাই সে ছুটে এলির কাছে গেল। এলিকে বলল, “এই যে আমি। আপনি আমাকে ডাকছিলেন?”এলি বলল, “কই, আমি তো তোমাকে ডাকি নি, তুমি ঘুমোও।”শমূয়েল চলে গেল। |
9-1 Samuel 3:6 : আবার প্রভু ডাকলেন, “শমূয়েল!” শমূয়েল ছুটে গেল এলির কাছে। এলিকে বলল, “এই যে আমি। আপনি আমাকে ডাকছিলেন?”এলি বলল, “আমি তোমাকে ডাকি নি। তুমি ঘুমোও।” |
9-1 Samuel 3:7 : শমূয়েল তখনও পর্য়ন্ত প্রভুকে জানত না, চিনত না। কারণ প্রভু তখনও তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন নি। |
9-1 Samuel 3:8 : প্রভু তৃতীয়বার শমূয়েলকে ডাকলেন। আবার শমূয়েল উঠল, এলির কাছে আবার গেল। সে বলল, “এই যে আমি, আপনি আমাকে ডাকছিলেন?”তখন এলি বুঝতে পারল ছেলেটিকে আসলে বয়ং প্রভুই ডেকেছেন। |
9-1 Samuel 3:9 : এলি শমূয়েলকে বলল, “এখন তুমি শোও। এবার যদি কেউ তোমাকে ডাকে, তুমি তার কাছে গিয়ে বলবে, ‘বলুন প্রভু, আপনার দাস শুনছে।”‘শমূয়েল শুতে গেল। |
9-1 Samuel 3:10 : প্রভু সেখানে এসে দাঁড়ালেন। আবার তিনি আগের মতো ডাকলেন: “শমূয়েল, শমূয়েল!”এবার শমূয়েল সাড়া দিল: “বলুন প্রভু, আপনার দাস শুনছে।” |
9-1 Samuel 3:11 : প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “শোনো, আমি শীঘ্রই ইস্রায়েলে একটা কিছু ঘটাব। যারা এই সম্বন্ধে শুনবে তারা অতিশয বেদনাহত হবে। |
9-1 Samuel 3:12 : এলি আর তার পরিবারের বিরুদ্ধে আমি যা যা করবার করব। আমি একেবারে গোড়া থেকে শুরু করে শেষ পর্য়ন্ত সব কিছুই করব। |
9-1 Samuel 3:13 : আমি এলিকে বলেছিলাম, ওর পরিবারকে চিরকালের জন্যে আমি শাস্তি দেবই। আমি শাস্তি দেব, কারণ এলি জানত তার পুত্ররা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ করছে। কিন্তু এলি তাদের সামলায নি। |
9-1 Samuel 3:14 : তাই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যতই বলি আর শস্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করা হোক্ না কেন, তাতে এলির পুত্রদের পাপ ঘুচবে না।” |
9-1 Samuel 3:15 : ভোর পর্য়ন্ত শমূয়েল বিছানায শুয়ে রইল। ভোর হলে সে প্রভুর মন্দিরের দরজা খুলল। দর্শনে কি দেখেছ এবং কি শুনেছে তা এলিকে জানাতে শমূয়েল সাহস করল না। |
9-1 Samuel 3:16 : কিন্তু এলি শমূয়েলকে বলল, “শমূয়েল, আমার পুত্র!”শমূয়েল বলল, “আমি এইখানে।” |
9-1 Samuel 3:17 : এলি জিজ্ঞাসা করল, “প্রভু তোমায় কি বলেছেন? আমার কাছে কিছু লুকিও না। লুকোলে ঈশ্বর তোমাকে শাস্তি দেবেন।” |
9-1 Samuel 3:18 : অগত্যা শমূয়েল এলিকে সব খুলে বলল, কিছুই গোপন করল না।এলি বলল, “তিনি প্রভু, তিনি যা ভাল বুঝবেন তাই করুন। |
9-1 Samuel 3:19 : প্রভু শমূযেলের সঙ্গে ছিলেন আর শমূয়েল বড় হয়ে উঠতে লাগল। শমূযেলের একটি কথাকেও প্রভু মিথ্য়া প্রমাণিত হতে দিলেন না। |
9-1 Samuel 3:20 : দান থেকে বের্ - শেবা পর্য়ন্ত সমস্ত ইস্রায়েলের লোকরা জেনে গেল যে শমূয়েল প্রভুর একজন প্রকৃত ভাববাদী। |
9-1 Samuel 3:21 : শীলোতে শমূযেলের সামনে প্রভু প্রাযই দেখা দিতে লাগলেন। প্রভু নিজেকে শমূযেলের কাছে প্রভুর বাক্য় হিসেবে প্রকাশ করলেন। |
9-1 Samuel 4:1 : শমূযেলের খবর সমস্ত ইস্রায়েলে জানাজানি হয়ে গেল। এলি খুব বৃদ্ধ হয়ে গেল। তার পুত্ররা প্রভুর চোখের সামনে অন্যায় চালিযে যেতে থাকল।সেই সময় পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে পড়ল। ইস্রায়েলীয়দের তাঁবু পড়ল এবন্ এষরে। পলেষ্টীয়রা তাঁবু গাড়ল অফেকে। |
9-1 Samuel 4:2 : পলেষ্টীয়রা ইস্রাযেলকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হল। যুদ্ধ শুরু হল।পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলীয়দের হারিয়ে দিয়ে চার হাজার ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের হত্যা করল। |
9-1 Samuel 4:3 : ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা তাদের তাঁবুতে ফিরে এল। তাদের প্রবীণরা জানতে চাইল, “কেন প্রভু পলেষ্টীয়দের কাছে আমাদের হারিয়ে দিলেন? চলো আমরা শীলো থেকে প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুক আনি। তিনি যুদ্ধে আমাদের সহায় হবেন। তিনিই শত্রুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করবেন।” |
9-1 Samuel 4:4 : শীলোয লোক পাঠানো হল। তারা প্রভু সর্বশক্তিমানের সাক্ষ্যসিন্দুক নিয়ে ফিরে এল। সিন্দুকের ওপর দুটি করূব, যেন প্রভুর সিংহাসন। এলির দুই পুত্র হফ্নি আর পীনহস সেই পবিত্র সিন্দুক নিয়ে এসেছিল। |
9-1 Samuel 4:5 : শিবিরে প্রভুর সেই সাক্ষ্য সিন্দুক আসার সঙ্গে সঙ্গে ইস্রায়েলীয়রা জোরে চেঁচিয়ে উঠল। তাদের চিত্কারে মাটি কেঁপে উঠল। |
9-1 Samuel 4:6 : পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলীয়দের সেই চিত্কার শুনতে পেল। তারা বলাবলি করতে লাগল, “ইব্রীযদের শিবিরের লোকরা এত উত্তেজিত কেন?”তারপর পলেষ্টীয়রা জানতে পারল ইস্রায়েলীয় শিবিরে প্রভুর পবিত্র সিন্দুক আনা হয়েছে। |
9-1 Samuel 4:7 : পলেষ্টীয়রা ভয় পেয়ে গেল। তারা বলল, “ঈশ্বর ওদের শিবিরে এসেছেন। আমাদের এখন বেশ বিপদ। এরকম তো আগে কখনও হয় নি। |
9-1 Samuel 4:8 : আমরা বিপদে পড়েছি। কে আমাদের এই পরাক্রমী দেবতাদের হাত থেকে বাঁচাবে? এই সব দেবতারা মিশরীয়দের নানা ব্যাধি, ভয়ঙ্কর সব অসুখ দিয়েছিলেন। |
9-1 Samuel 4:9 : হে পলেষ্টীয়রা, সাহস রাখো। বীরের মতো লড়াই করো। অতীতে ইব্রীযরা ছিল আমাদের ক্রীতদাস। তাই বলছি, বীরের মতো লড়াই চালাও, নইলে তোমরাই তাদের ক্রীতদাস হবে!” |
9-1 Samuel 4:10 : তাই পলেষ্টীয়রা প্রবল বিক্রমে যুদ্ধ করে ইস্রায়েলীয়দের পরাজিত করল। ইস্রায়েলীয়দের প্রত্যেকটি সৈন্য তাঁবুতে পালিয়ে গেল। ইস্রায়েলীয়দের পক্ষে এটা একটা মারাত্মক পরাজয় ছিল। ত্রিশ হাজার ইস্রায়েলীয় সৈন্য নিহত হল। |
9-1 Samuel 4:11 : পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে এলির পুত্র হফ্নি আর পীনহসকে হত্যা করল। |
9-1 Samuel 4:12 : সেদিন বিন্যামীন গোষ্ঠীর একজন লোক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে এল। সে যে কত দুঃখী তা বোঝানোর জন্যে কাপড় চোপড় ছিঁড়ে ফেলল, মাথায় ধূলো মাখল। |
9-1 Samuel 4:13 : নগরের ফটকের কাছে এলি একটা চেযারে বসেছিল। এমন সময় ঐ লোকটা শীলোতে এল। ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে এলির খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। সেই জন্য সে বসে বসে প্রতীক্ষা করছিলো। তারপর ঐ বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকটি শীলোয় এসে দুঃসংবাদটা জানালে শহরের সবাই চেঁচিয়ে কাঁদতে শুরু করল। |
9-1 Samuel 4:14 : আটানব্বই বছরের বৃদ্ধ এলি চোখে কিছু দেখতে পেতো না। কিন্তু লোকদের চিত্কার করে কান্না তার কানে আসছিল। সে জিজ্ঞেস করল, “লোকরা কিসের জন্য এত চেঁচামেচি করছে?”বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকটি দৌড়ে গিয়ে এলিকে সব জানাল। |
9-1 Samuel 4:15 : - |
9-1 Samuel 4:16 : সেই লোকটা এলিকে বলল, “যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আমি এই মাত্র এসেছি। আমি আজ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে এসেছি।”এলি জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছিল বাছা?” |
9-1 Samuel 4:17 : বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকটি বলল, “ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের দেখে পালিয়ে গিয়েছিল। ইস্রায়েলের অনেক সৈন্য মারা গেছে। তোমার দুই পুত্রও মারা গেছে। আর পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে গেছে।” |
9-1 Samuel 4:18 : লোকটির মুখ থেকে ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুকের কথা শোনা মাত্র এলি চেযার থেকে দরজার কাছেই পড়ে গেল। তার ঘাড় ভেঙ্গে গেল। সে বৃদ্ধ এবং মোটা ছিল, তাই সে বাঁচল না। সে বিশ বছর ইস্রাযেলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। |
9-1 Samuel 4:19 : এলির পুত্রবধূ অর্থাত্ পীনহসের স্ত্রী গর্ভবতী ছিল। তার সন্তান প্রসবের সময় হয়ে এসেছিল। সে জানতে পারল ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দূক বেহাত হয়ে গেছে। আরও শুনলো তাঁর শ্বশুর এলি আর স্বামী পীনহসও বেঁচে নেই। খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হল, সন্তান ভূমিষ্ঠ হল। |
9-1 Samuel 4:20 : সে যখন প্রায মরনাপন্ন তখন যে সমস্ত স্ত্রীলোক তার দেখাশুনা করছিল তারা বলল, “দুঃখ করো না। তোমার পুত্র হয়েছে।”কিন্তু এলির পুত্রবধূ সে কথায় কান দিল না। |
9-1 Samuel 4:21 : সে বলল, “ইস্রায়েলের মহিমা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।” সে শিশুটির নাম দিল ঈখাবোদ যার অর্থ হল মহিমা নেই। সে এ কাজটি করল কারণ ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক শত্রুর হাতে গিয়েছিল এবং শ্বশুর ও স্বামী দুজনেই মারা গিয়েছিল। |
9-1 Samuel 4:22 : সে বলল, “ইস্রায়েলের মহিমা নিয়ে নেওয়া হয়েছিল” কারণ পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে গিয়েছিল। |
9-1 Samuel 5:1 : পলেষ্টীয়রা এবন্ - এষর থেকে অস্দোদে ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নিয়ে গেল। |
9-1 Samuel 5:2 : পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুকটি দাগোনের মন্দিরে এনে সেটা দাগোনের মূর্ত্তির পাশে রাখল। |
9-1 Samuel 5:3 : পরদিন সকালে অস্দোদের লোকরা দেখল দাগোনের মূর্ত্তিটা প্রভুর সিন্দুকের সামনেই মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে আছে।অস্দোদের লোকরা মূর্ত্তিটাকে তুলে তার জায়গায় ঠিক করে রাখল। |
9-1 Samuel 5:4 : কিন্তু তার পরের দিন ঘুম থেকে উঠে তারা আবার দেখল, দাগোন আবার মাটিতে পড়ে আছে। প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের সামনে দাগোন উপুড় হয়ে পড়ে রযেছে। এবার দাগোনের মাথা এবং দুটো হাত ভাঙ্গা ছিল এবং চৌকাঠের ওপর পড়ে ছিল। শুধু দেহটাই আস্ত রযেছে। |
9-1 Samuel 5:5 : এই কারণে এমনকি আজও দাগোনের মন্দিরের চৌকাঠে কি যাজক কি অন্যান্য লোকরা কেউই পা মাড়াতে চায না। |
9-1 Samuel 5:6 : প্রভু এবার অস্দোদের লোকদের এবং তাদের প্রতিবেশীদের জীবন দুর্বিষহ করে তুললেন। প্রভু তাদের য়থেষ্ট বিপদে ফেললেন। তাদের গায়ে জায়গায় জায়গায় টিউমার বা অর্বুদ দেখা দিল। সবই তাঁর আঘাত। তারপর তিনি ওদের দিকে অসংখ্য় ইঁদুর ছেড়ে দিলেন। তারা জাহাজে এবং মাটিতে ছোটাছুটি করতে লাগল। শহরের লোকরা বেশ ভয় পেয়ে গেল। |
9-1 Samuel 5:7 : এইসব দেখে অস্দোদের লোকরা বলাবলি করল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক এখানে যেন না থাকে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাদের আর দেবতা দাগোনকে শাস্তি দিচ্ছেন।” |
9-1 Samuel 5:8 : অস্দোদের লোকরা পাঁচজন পলেষ্টীয় শাসককে ডাকল। তাদের ওরা জিজ্ঞেস করল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের এই পবিত্র সিন্দুক নিয়ে আমাদের কি করা উচিত্?”শাসকরা বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক গাতে নিয়ে যাও।” সেই মতো পলেষ্টীয়রা পবিত্র সিন্দুক সেখান থেকে সরিয়ে দিল। |
9-1 Samuel 5:9 : কিন্তু তারা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক গাতে নিয়ে যাবার পর প্রভু সেখানকার শহরের লোকদের শাস্তি দিলেন। তারা বেশ ভয় পেয়ে গেল। তারা বিপদে পড়ল। বালক বৃদ্ধ সকলের গায়েই টিউমার বা অর্বুদ দেখা গেল। |
9-1 Samuel 5:10 : তাই পলেষ্টীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ইক্রোণে পাঠিয়ে দিল।কিন্তু সেটা ইক্রোণে এলে সেখানকার লোকরা ক্রন্দন কর, “কেন তোমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক আমাদের ইক্রোণে আনলে? তোমরা কি আমাদের ও আমাদের লোকদের মেরে ফেলতে চাও?” |
9-1 Samuel 5:11 : ইক্রোণের লোকরা পলেষ্টীয় শাসকদের ডেকে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুক যেখানে ছিল সেখানেই পাঠিয়ে দাও। এই সিন্দুক আমাদের এবং আমাদের লোকদের মেরে ফেলার আগেই কাজটা করে ফেল।”সারা শহরের যেখানেই ঈশ্বরের হাতের আঘাত পড়েছিল সেখানে ভয়ঙ্কর শাস্তি হয়েছিল। |
9-1 Samuel 5:12 : বহু লোক মারা গেল। আর যারা বেঁচে রইল তাদের গায়ে আব দেখা দিল। স্বর্গের দিকে তাকিযে তারা খুব কাঁদতে শুরু করল। |
9-1 Samuel 6:1 : সাত মাস পলেষ্টীয়রা তাদের দেশে পবিত্র সিন্দুকটিকে রেখে দিয়েছিল। |
9-1 Samuel 6:2 : তারা যাজক আর যাদুকরদের ডাকল। তাদের জিজ্ঞাসা করল, “প্রভুর এই সিন্দুক নিয়ে আমাদের কি করা উচিত্? কি করে আমরা সেটা যথাস্থানে ফিরিযে দিতে পারি?” |
9-1 Samuel 6:3 : যাজক আর যাদুকররা বলল, “যদি তোমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ফিরিযে দাও তাহলে কখনও তা খালি পাঠাবে না। অবশ্যই তোমরা নৈবেদ্য সাজিযে দেবে। তাহলেই ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাদের পাপ মুক্ত করবেন। তোমরা সুস্থ হবে। যা বললাম তাই করো, তাহলে ঈশ্বর তোমাদের আর শাস্তি দেবেন না।” |
9-1 Samuel 6:4 : পলেষ্টীয়রা জিজ্ঞেস করল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মার্জনা পেতে হলে কি ধরণের উপহার দিতে হবে?”যাজক আর যাদুকররা বলল, “পাঁচজন পলেষ্টীয় শাসক রযেছে। এরা প্রত্যেকে এক একটি শহরের নেতা। তোমাদের সমস্ত লোকের ও নেতাদের সমস্যা একই রকম। তাই এক কাজ করো, পাঁচটা সোনার ইঁদুর আর পাঁচটা টিউমার তৈরী করো। |
9-1 Samuel 6:5 : টিউমারগুলির এবং ইঁদুরের সোনার মূর্ত্তি তৈরী কর যা তোমাদের দেশকে ধ্বংস করছে এবং তাদের ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করো। তাহলে হয়তো তিনি তোমাদের আর তোমাদের দেবতাদের আর সেই সঙ্গে তোমাদের দেশের ওপর সমস্ত শাস্তি রদ করতে পারেন। |
9-1 Samuel 6:6 : ফরৌণ আর মিশরীয়দের মতো কখনও হৃদয় অনমনীয করো না। ঈশ্বর মিশরীয়দের শাস্তি দিয়েছিলেন, আর সেই জন্যই মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের মিশর ছেড়ে চলে যেতে দিয়েছিল। |
9-1 Samuel 6:7 : “তোমরা অবশ্যই একটা নতুন টানাগাড়ি তৈরী করো আর সদ্য বিযোনো দুটো গাভী জোগাড় করো। গাভী দুটো যেন মাঠে কখনও কাজ না করে থাকে। ওদের গাড়ীর সঙ্গে জুড়ে দাও। তারপর বাছুরগুলোকে গোযালে পুরে দাও। কিছুতেই যেন তারা মাযেদের পিছু না নেয। |
9-1 Samuel 6:8 : গাড়ীর মধ্যে এবার প্রভুর পবিত্র সিন্দুকটি রাখো। আর সিন্দুকের পাশে থলিতে সোনার ছাঁচগুলো রাখবে। সোনার ছাঁচগুলো ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের উপহার, যাতে তিনি তোমাদের ক্ষমা করেন। তারপর গাড়ীটা ছেড়ে দাও। |
9-1 Samuel 6:9 : গাড়ীটার দিকে লক্ষ্য রাখবে। যদি সেটা ইস্রায়েলের বৈত্ - শেমশের দিকে যায় তাহলেই বুঝবে প্রভু আমাদের এই ভযানক রোগ দিয়েছেন। আর যদি সোজাসুজি বৈত্ - শেমশের দিকে না যায় তবে জানবে যে ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাদের শাস্তি দেন নি। তাহলে আমরা জানব আমাদের এমন রোগ এমনিই হয়েছে।” |
9-1 Samuel 6:10 : পলেষ্টীয়রা যাজক ও যাদুকরদের কথামত কাজ করল। সদ্য বিযোনো গাভী তারা পেয়ে গেল। গাভী দুটো গাড়ীর সঙ্গে জুড়ে দিল আর বাছুরদের গোযালে ঢুকিয়ে দিল। |
9-1 Samuel 6:11 : তারপর পলেষ্টীয়রা ভেতরে রেখে দিল প্রভুর পবিত্র সিন্দুক। সোনার টিউমার আর ইঁদুরের ছাঁচগুলোর থলিটাও রেখে দিল। |
9-1 Samuel 6:12 : গাভীদুটো সোজা বৈত্ - শেমশের দিকে গেল, সমস্ত রাস্তা তারা হাম্বা হাম্বা শব্দ করে চলল। ডাইনে কি বাঁযে একবারও ঘুরল না। পলেষ্টীয় শাসকরা বৈত্ - শেমশের সীমানা পর্য়ন্ত গাভী দুটোর পেছনে পেছনে গেল। |
9-1 Samuel 6:13 : বৈত্ - শেমশের লোকরা উপত্যকার ক্ষেত্র থেকে গম তুলছিল। তারা পবিত্র সিন্দুকটা দেখে খুব খুশী হয়ে সিন্দুকটা পাবার জন্য ছুটে গেল। |
9-1 Samuel 6:14 : মাঠটা ছিল বৈত্ - শেমশের বাসিন্দা য়িহোশূযের। সেই মাঠের ওপর একটা বড় পাথরের কাছে এসে গাড়ীটা থামল। বৈত্ - শেমশের লোকরা গরুর গাড়ী থেকে গাড়ীটা আলাদা করে গাভী দুটোকে মেরে ফেলল এবং সেগুলো তারা প্রভুর কাছে নিবেদন করল।লেবীয়রা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক আর সোনার ছাঁচের থলেটা নামিযে আনল। তারা প্রভুর সিন্দুক আর থলেটা পাথরের ওপর রাখল। সেদিন বৈত্ - শেমশের লোকরা প্রভুকে হোমবলি নিবেদন করল। |
9-1 Samuel 6:15 : - |
9-1 Samuel 6:16 : পাঁচজন পলেষ্টীয় শাসক বৈত্ - শেমশে এই সমস্ত ক্রিযাকাণ্ড দেখে সেদিনই ইক্রোণে ফিরে গেল। |
9-1 Samuel 6:17 : এভাবেই পলেষ্টীয়রা প্রভুর কাছে যে পাপ করেছিল তা স্খালনের জন্য টিউমারের সোনার ছাঁচগুলো উপহার হিসেবে পাঠিয়ে দিয়েছিল। তারা প্রত্যেক পলেষ্টীয় শহরে একটি করে টিউমারের সোনার ছাঁচ পাঠিয়ে দিয়েছিল। পলেষ্টীয়দের এই শহরগুলি হচ্ছে: অস্দোদ, ঘসা, অস্কিলোন, গাত্ এবং ইক্রোণ। |
9-1 Samuel 6:18 : পলেষ্টীয়রা সোনার ইঁদুরের ছাঁচ পাঠিয়েছিল। পলেষ্টীয় শাসকদের যতগুলো শহর ছিল, সোনার তৈরী ইঁদুরও ছিল ততগুলো। শহরগুলো ছিল পাঁচিলে ঘেরা। আবার প্রত্যেক শহর ছিল গ্রাম দিয়ে ঘেরা।বৈত্ - শেমশের লোকরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক পাথর খণ্ডের ওপর রেখে দিল। বৈত্ - শেমশের য়িহোশূযের মাঠে আজও সেই পাথর দেখা যাবে। |
9-1 Samuel 6:19 : কিন্তু বৈত্ - শেমশের লোকরা যখন প্রভুর পবিত্র সিন্দুক দেখতে পেল তখন সেখানে কোন যাজক ছিল না। তাই ঈশ্বর বৈত্ - শেমশের উনিশ জন লোককে হত্যা করলেন। প্রভুর এই কঠোর শাস্তির জন্য বৈত্ - শেমশের লোকরা খুব কাঁদল। |
9-1 Samuel 6:20 : লোকরা বলল, “এই পবিত্র সিন্দুকটির দেখাশোনা করবার যাজক কোথায়? এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে আমরা এটাকে কোথায় পাঠাবো?” |
9-1 Samuel 6:21 : কিরিযত্ - য়িযারীমে একজন যাজক ছিল। বৈত্ - শেমশের লোকরা সেখানে দূত পাঠাল। দূতরা বলল, “পলেষ্টীয়রা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক ফিরিযে দিয়েছে। এবার তোমরা নেমে এসো। সিন্দুকটি তোমাদের শহরে নিয়ে যাও।” |
9-1 Samuel 7:1 : কিরিযত্ - য়িযারীমের লোকরা এসে সেই প্রভুর পবিত্র সিন্দুকটি গ্রহণ করল। তারা সেটা পর্বতের ওপর অবীনাদবের বাড়িতে নিয়ে গেল। অবীনাদবের পুত্র ইলিয়াসকে তৈরী করবার জন্য তারা একটি বিশেষ অনুষ্ঠান করল যাতে সে পবিত্র সিন্দুক পাহারা দিতে পারে। |
9-1 Samuel 7:2 : কিরিযত্ - য়িযারীমে সিন্দুকটি দীর্ঘ বিশ বছর ধরে ছিল।ইস্রায়েলীয়রা আবার প্রভুকে অনুসরণ করতে শুরু করল। |
9-1 Samuel 7:3 : শমূয়েল ইস্রায়েলীয়দের বলল, “যদি তোমরা সত্যিই মনে প্রাণে প্রভুর কাছে ফিরে আসো তাহলে ভিন্দেশী অন্যান্য মূর্ত্তিকে অবশ্যই তোমাদের ফেলে দিতে হবে। অষ্টারোতের সমস্ত মূর্ত্তিকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে। প্রভুর সেবায অবশ্যই তোমাদের সম্পূর্ণভাবে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে। তোমাদের শুধু মাত্র প্রভুরই সেবা করতে হবে। তাহলেই তিনি তোমাদের পলেষ্টীয়দের হাত থেকে রক্ষা করবেন।” |
9-1 Samuel 7:4 : একথা শুনে ইস্রায়েলীয়রা বাল এবং অষ্টারোতের মূর্ত্তি ফেলে দিয়ে কেবলমাত্র প্রভুরই সেবা করতে লাগল। |
9-1 Samuel 7:5 : শমূয়েল বলল, “সমস্ত ইস্রায়েলীয়কে মিস্পায জমায়েত হতে হবে। আমি তোমাদের জন্য প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করব।” |
9-1 Samuel 7:6 : ইস্রায়েলীয়রা মিস্পায সমবেত হল। তারা জল তুলল এবং সেটা প্রভুর সামনে ঢেলে দিল। এই ভাবে তারা উপবাস কাল শুরু করল। সেই দিন তারা কোন খাদ্য গ্রহণ না করে সমস্ত পাপ স্বীকার করল। তারা বলল, “আমরা প্রভুর কাছে পাপ করেছি।” এই ভাবে মিস্পায ইস্রায়েলীয়দের বিচারক হিসেবে শমূয়েল কাজ করতে লাগল। |
9-1 Samuel 7:7 : পলেষ্টীয়রা জানতে পারল ইস্রায়েলীয়দের মিস্পায সমবেত হবার খবর। ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে পলেষ্টীয় শাসকরা যুদ্ধ করতে গেল। পলেষ্টীয়দের আসার সংবাদে ইস্রায়েলীয়রা ভয় পেয়ে গেল। |
9-1 Samuel 7:8 : ইস্রায়েলীয়রা শমূয়েলকে বলল, “আমাদের জন্য, আমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করো, থেমো না! তাঁকে বলো, হে প্রভু পলেষ্টীয়দের হাত থেকে আমাদের বাঁচান!” |
9-1 Samuel 7:9 : শমূয়েল একটা মেষশাবক নিয়ে এল। প্রভুকে সে এই মেষটি একটি সম্পূর্ণ হোমবলি হিসাবে নিবেদন করল। ইস্রায়েলের জন্য শমূয়েল প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে লাগল। প্রভু সেই প্রার্থনায সাড়া দিলেন। |
9-1 Samuel 7:10 : শমূয়েল যখন মেষটি পোড়াচ্ছিল, সেই সময় পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এল। আর তখন প্রভু পলেষ্টীয়দের দিকে প্রচণ্ড শব্দে বজ্রপাত করলেন। এতে তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়ল। ভয় পেয়ে গেল। ওদের নেতারা ওদেরই সামলাতে পারল না। তাই যুদ্ধে ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিল। |
9-1 Samuel 7:11 : মিস্পা থেকে বেরিয়ে ইস্রাযেলীযা পলেষ্টীয়দের তাড়া করল। বৈত্ - কর পর্য়ন্ত সারাটা রাস্তা তাড়িয়ে নিয়ে গেল। আর সমস্ত পলেষ্টীয় সৈন্যদের ওরা পথে মেরে ফেলল। |
9-1 Samuel 7:12 : এরপর শমূয়েল একটা বিশেষ ধরণের প্রস্তর স্থাপন করল। উদ্দেশ্য, লোকরা যাতে প্রভুর কর্মকাণ্ড ভুলে না যায়। পাথরটা রইল মিস্পা এবং সেন এর মাঝখানে। শমূয়েল পাথরটির নাম দিল “সাহায্যের পাথর।” সে বলল, “প্রভু সমস্ত রাস্তা ঘুরে আমাদের এখানে আসতে সাহায্য করেছেন!” |
9-1 Samuel 7:13 : পলেষ্টীয়রা হেরে গেল। তারা আর ইস্রায়েলে ঢুকল না। শমূযেলের বাকি জীবনে প্রভু পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে ছিলেন। |
9-1 Samuel 7:14 : পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের কিছু শহর দখল করেছিল। তারা ইক্রোণ থেকে গাত্ পর্য়ন্ত সমস্ত শহর নিয়ে নিয়েছিল। সে সব ইস্রায়েলীয়রা আবার ফিরে পেল। এই শহরগুলোর চারপাশের ভূখণ্ডগুলিও তারা জিতে নিল। ইস্রাযেল এবং ইমোরীয়দের মধ্যে শান্তি স্থাপিত হল। |
9-1 Samuel 7:15 : শমূয়েল সারাজীবন ধরে ইস্রাযেলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। |
9-1 Samuel 7:16 : নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে সে ইস্রায়েলীয়দের বিচার করত। প্রত্যেক বছর সে সারা দেশ ঘুরত। বৈথেল, গিল্গাল, আর মিস্পা এই সব জায়গায় গিয়ে ইস্রায়েলের লোকের শাসন ও বিচার করত। |
9-1 Samuel 7:17 : শমূযেলের বাড়ী ছিল রামাতে। তাই প্রত্যেকবার তাকে রামায় ফিরে যেতে হত। ঐ শহর থেকেই সে ইস্রাযেল শাসন করত, বিচারের কাজকর্ম চালাত। রামায় শমূয়েল প্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করেছিল। |
9-1 Samuel 8:1 : শমূয়েল বৃদ্ধ হলে সে তার পুত্রদের ইস্রায়েলের বিচারক করল। |
9-1 Samuel 8:2 : শমূযেলের প্রথম পুত্রের নাম য়োয়েল। দ্বিতীয় পুত্রের নাম অবিয়। য়োয়েল ও অবিয় ছিল বের্ - শেবার বিচারক। |
9-1 Samuel 8:3 : পুত্ররা শমূযেলের মতো জীবনযাপন করত না। য়োয়েল ও অবিয় ঘুষ নিত, গোপনে টাকা নিয়ে বিচার সভায রায বদলে দিল। এমন কি বিচারালযে লোক ঠকাত। |
9-1 Samuel 8:4 : এই কারণে ইস্রায়েলের প্রবীণরা সবাই মিলে শমূযেলের সঙ্গে দেখআ করতে রামায় গেল। |
9-1 Samuel 8:5 : তারা শমূয়েলকে বলল, “আপনি বৃদ্ধ হয়েছেন, আর আপনার পুত্ররা ঠিকভাবে জীবন কাটাচ্ছে না। তারা আপনার মতো নয়। তাই বলছি, আপনি আমাদের একটা রাজার ব্যবস্থা করুন, অন্যান্য সব দেশে যেমন থাকে।” |
9-1 Samuel 8:6 : এই ভাবে প্রবীণরা তাদের নেতৃত্ব দিতে পারে এমন একজন রাজা চাইল। কিন্তু শমূযেলের মনে হল এটা একটা খারাপ চিন্তা। তাই তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। |
9-1 Samuel 8:7 : প্রভু বললেন, “লোকরা যা বলছে তাই করো। তারা তোমাকে প্রত্যাখ্যান করে নি। তারা আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, কারণ তারা রাজা হিসেবে আমাকে চায না। |
9-1 Samuel 8:8 : অতীতের মত বার বার সেই একই কাজ তারা করছে। আমি ওদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলাম; কিন্তু সেই ওরা আমাকেই ছেড়ে দিয়ে অন্য সব দেবতার পূজো করেছিল। তোমার ক্ষেত্রেও এরা সেই এক কাজ করছে। |
9-1 Samuel 8:9 : ঠিক আছে, ওদের কথা মতোই চলো; কিন্তু তাদের একবার সাবধান করো, ওদের বলে দিও একজন রাজা তাদের প্রতি কি ব্যবহার করবে এবং কিভাবে একজন রাজা তাদের শাসন করবে।” |
9-1 Samuel 8:10 : লোকরা একজন রাজা চাইছিল। তখন শমূয়েল তাদের কাছে প্রভুর কথিত সমস্ত কথাই শোনাল। |
9-1 Samuel 8:11 : শমূয়েল বলল, “যদি তোমরা রাজা চাও তাহলে সে কি কি করবে শোন। সে তোমাদের পুত্রদের তোমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবে এবং জোর করে তাদের দিয়ে নিজের সেবা করিযে নেবে। তাদের জোর করে সৈন্য করবে, রথ আর অশ্ববাহিনীতে ঢুকিয়ে তাদের দিয়ে লড়াই করাবে। রাজার রথকে সামলানোর জন্য সেই রথের সামনে ছুটে ছুটে তারা পাহারা দেবে। |
9-1 Samuel 8:12 : রাজা তোমাদের পুত্রদের জোর করে সৈন্যবাহিনীতে ঢোকাবে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এক হাজার জনের ওপর অধিকর্তা হবে। আবার কেউ কেউ পঞ্চাশ জনের ওপর অধিকর্তা হবে। তাছাড়া সে তোমাদের পুত্রদের দিয়ে জোর করে চাষ করাবে, ফসল তোলাবে। সে জোর করে যুদ্ধের জন্য অস্ত্র ও রথের জন্য জিনিসপত্র তৈরী করাবে। |
9-1 Samuel 8:13 : “একজন রাজা তোমাদের কন্যাদের ধরবে এবং তাদের নিয়ে যাবে। তাদের দিয়ে রাজা নিজের জন্য সুগন্ধি দ্রব্য তৈরী করাবে। এছাড়া তাদের দ্বারা রান্নাবান্না, রুটি বানানো এইসব কাজও করিযে নেবে। |
9-1 Samuel 8:14 : “রাজা তোমাদের ভাল ভাল জমি, দ্রাক্ষা আর জলপাইযের বাগান কেড়ে নিয়ে তা তার কর্মচারীদের বিলিযে দেবে। |
9-1 Samuel 8:15 : তোমাদের শস্য আর দ্রাক্ষার দশভাগের একভাগ নিয়ে তার কর্মচারী আর ভৃত্যদের দিয়ে দেবে। |
9-1 Samuel 8:16 : একজন রাজা তোমাদের দাস ও দাসীদের নিয়ে নেবে। সে তোমাদের সব চেয়ে সেরা গবাদি পশু ও গাধাদের নেবে। সে তার নিজের উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহার করবে। |
9-1 Samuel 8:17 : তোমাদের পালের পশুদের দশ ভাগের একভাগ রাজা নিয়ে নেবে।“আর তোমরা সবাই হবে রাজার ক্রীতদাস। |
9-1 Samuel 8:18 : এমন একটা সময় আসবে যখন তোমরা তোমাদের মনোনীত করা রাজার জন্য কাঁদবে। কিন্তু সেই সময় প্রভু তোমাদের ডাকে সাড়া দেবেন না।” |
9-1 Samuel 8:19 : কিন্তু শমূযেলের কথা লোকরা শুনল না। তারা বলল, “না, আমরা আমাদের শাসক হিসেবে একজন রাজাই চাইছি। |
9-1 Samuel 8:20 : রাজা থাকলে আমরা সবাই অন্যান্য দেশের লোকদের মতো থাকতে পারব। আমাদের রাজাই আমাদের চালাবেন। যুদ্ধের সময় তিনি আমাদের আগে যাবেন এবং আমাদের যুদ্ধে লড়াই করবেন।” |
9-1 Samuel 8:21 : এই শুনে শমূয়েল প্রভুর কাছে লোকের কথাগুলো সব শোনালেন। |
9-1 Samuel 8:22 : প্রভু বললেন, “ওদের কথা শোন! ওদের জন্য একজন রাজার ব্যবস্থা করে দাও।”তখন শমূয়েল ইস্রাযেলবাসীদের বলল, “বেশ তাই হবে। তোমরা একজন নতুন রাজা পাবে। এখন তোমরা সবাই বাড়ি যাও।” |
9-1 Samuel 9:1 : কীশ ছিলেন বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। কীশের পিতার নাম অবীযেল। অবীযেলের পিতা সরোর। সরোরের পিতা বখোরত, বখোরতের পিতা অফীহ, তিনি বিন্যামীনের লোক। |
9-1 Samuel 9:2 : কীশের একজন পুত্র ছিল, তার নাম শৌল। সুদর্শন যুবক শৌলের মতো এত সুন্দর আর কেউ ছিল না। ইস্রায়েলের সকলের চেয়ে সে ছিল মাথায় লম্বা। |
9-1 Samuel 9:3 : একদিন কীশের গাধা হারিয়ে গেলে তিনি তাঁর পুত্র শৌলকে বললেন, “একজন ভৃত্যকে নিয়ে গাধাগুলো খুঁজে আনো।” |
9-1 Samuel 9:4 : শৌল গাধাগুলো খুঁজতে বেরিয়ে গেল। সে ইফ্রয়িম পাহাড়ের মধ্যে এবং শালিশার আশেপাশের জায়গার মধ্যে দিয়ে গেল। কিন্তু শৌল আর তার ভৃত্য গাধাগুলো খুঁজে পেল না। এবার তারা শালীমের দিকে হাঁটা শুরু করল, সেদিকেও গাধাগুলোর খোঁজ পেল না। অগত্যা শৌল বিন্যামীনদের দেশের দিকে রওনা হল। এমনকি সেখানেও তারা গাধাগুলো খুঁজে পেল না। |
9-1 Samuel 9:5 : অবশেষে শৌল ও তার ভৃত্য সূফ শহরে এল। শৌল ভৃত্যটিকে বলল, “চল আমরা বাড়ী ফিরি। আমার পিতা গাধাগুলোর জন্য চিন্তা থামিয়ে তার পরিবর্তে আমাদের নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু করবেন।” |
9-1 Samuel 9:6 : ভৃত্যটি বলল, “এই শহরেই ঈশ্বরের একজন ভাববাদী রযেছেন যাকে লোকরা খুবই ভক্তি করে। তিনি যা বলেন তাই সত্য হয়। চলুন আমরা শহরের ভেতরে যাই। তিনি হয়তো আমাদের বলে দিতে পারেন, এরপর আমাদের কোথায় যেতে হবে।” |
9-1 Samuel 9:7 : শৌল তাকে বলল, “বেশ, আমরা নয় শহরের ভেতরে ঢুকলাম; কিন্তু তাকে আমরা কি দিতে পারি? তাকে দেবার মত কোন উপহার তো আমাদের হাতে নেই। এমন কি আমাদের ঝুলিতে খাদ্যদ্রব্যও শেষ। কি দেব তাকে?” |
9-1 Samuel 9:8 : ভৃত্যটি শৌলকে বলল, “শোন, আমার কাছে য়ত্সামান্য কিছু অর্থ আছে, সেটা আমি ঈশ্বরের লোককে দেব। তিনিই আমাদের রাস্তা বলে দেবেন।” |
9-1 Samuel 9:9 : শৌল বলল, “ভাল কথা, তাহলে চলো।” তাই তারা সেই শহরে গেল, যেখানে ঈশ্বরের ভাববাদী থাকত।শৌল ও তার ভৃত্যটি পর্বতের পথ দিয়ে শহরের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় য়ুবতীরা জল নেওয়ার জন্য বের হয়ে আসছে দেখে তারা জিজ্ঞাসা করল, “দর্শনকারী কি এই জায়গায় রযেছেন?” (অতীতে ইস্রায়েলের লোকরা ভাববাদীকে “দর্শনকারী” বলেও ডাকত। তাই ঈশ্বরের কাছে কিছু বিষযে প্রশ্ন করতে চাইলে তারা বলত, “চলো দর্শনকারীর কাছে যাই।”) |
9-1 Samuel 9:10 : - |
9-1 Samuel 9:11 : - |
9-1 Samuel 9:12 : য়ুবতীরা উত্তর দিলো, “হ্যাঁ, দর্শনকারী এখানেই আছেন। তিনি ওখানে আছেন, তোমাদের আগে। তিনি আজ এই শহরে এসেছেন। কিছু লোক মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করার জন্য আজ উপাসনা স্থানে সমবেত হচ্ছে। |
9-1 Samuel 9:13 : তাই শহরে গেলে তোমরা তাঁর দেখা পাবে। যদি তোমরা দ্রুত পথ চল তবে তিনি উপাসনার স্থানে খেতে বসার আগেই তোমরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে পারবে। দর্শনকারী নৈবেদ্য বলি আশীর্বাদ করেন। তাই তিনি সেখানে না পৌঁছানো পর্য়ন্ত লোকে খেতে বসবে না। তাড়াতাড়ি পথ চললে তোমরা দর্শনকারীর দেখা পাবে।” |
9-1 Samuel 9:14 : শৌল ও তার ভৃত্য শহরে যাবার জন্যে পাহাড়ে উঠলে, শহরে ঢোকার সময়ই তারা দেখল শমূয়েল তাদের দিকেই আসছে। শমূয়েল তখন সবে উপাসনার স্থানে যাবার জন্যে বের হয়েছে। |
9-1 Samuel 9:15 : এর আগের দিন প্রভু শমূয়েলকে বলেছিলেন, |
9-1 Samuel 9:16 : “আগামীকাল ঠিক এই সমযেই আমি তোমার কাছে একজনকে পাঠাবো। সে বিন্যামীন পরিবারের লোক। তুমি তার অভিষেক করে তাকে ইস্রায়েলের নতুন নেতা করবে। এই লোকটিই পলেষ্টীয়দের হাত থেকে আমার লোকদের রক্ষা করবে। আমি তাদের দুঃখ দুর্দশা দেখেছি, আমি তাদের কান্না শুনেছি।” |
9-1 Samuel 9:17 : শমূয়েল শৌলকে দেখতে পেল এবং প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “আমি এই লোকটার কথাই তোমাকে বলেছিলাম। সে আমার লোকদের ওপর শাসন করবে।” |
9-1 Samuel 9:18 : ফটকের কাছে শৌল একজন লোকের কাছে পথ নির্দেশ জিজ্ঞেস করতে গেল। ঘটনাচক্রে এই লোকটি ছিল শমূয়েল। শৌল তাকে জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় সেই দর্শনকারীর বাড়ি আমায় দয়া করে বলে দিন।” |
9-1 Samuel 9:19 : শমূয়েল বলল, “আমিই সেই দর্শক। আমার আগে আগে উপাসনার স্থানের দিকে এগিয়ে যাও। তুমি তোমার ভৃত্যকে নিয়ে আজ আমার সঙ্গে খাবে। কাল সকালে তোমার বাড়ি যেও। আমি তোমার সব প্রশ্নেরই উত্তর দেব। |
9-1 Samuel 9:20 : তিন দিন আগে যে গাধাগুলো তুমি হারিয়েছ, তাদের নিয়ে আর মন খারাপ করো না; তাদের পাওয়া গেছে। এখন ইস্রায়েলের প্রত্যেকে একজনকে খুঁজছে। তুমিই সেই ব্যক্তি। তারা তোমাকে এবং তোমার পিতার পরিবারের সকলকে চায।” |
9-1 Samuel 9:21 : শৌল বলল, “কিন্তু আমি তো বিন্যামীন পরিবারের একজন। ইস্রায়েলের এটাই সবচেয়ে ছোট পরিবারগোষ্ঠী এবং এই পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে ছোট হচ্ছে আমার পরিবার। তবে আপনি কেন বলছেন ইস্রায়েলের আমাকে প্রযোজন?” |
9-1 Samuel 9:22 : তারপর শমূয়েল, শৌল ও তার ভৃত্যকে নিয়ে খাবার জায়গায় গেল। বলির নৈবেদ্য ভাগ করে খাবার জন্যে প্রায ত্রিশ জন লোককে পংক্তি ভোজনে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। শৌল ও তার ভৃত্যটিকে শমূয়েল টেবিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসালো। |
9-1 Samuel 9:23 : শমূয়েল পাচককে বলল, “সরিয়ে রাখার জন্য যে মাংস আমি তোমাকে দিয়েছিলাম সেটা এবার আমায় দাও।” |
9-1 Samuel 9:24 : পাচক ঊরু দেশের মাংসটা শৌলের টৈবিলের সামনে রেখে দিলে শমূয়েল শৌলকে বলল, “তোমার সামনে রাখা মাংসটা খাও। আমি এটা তোমার জন্য রেখেছি। এই বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য আমি এটা রেখেছিলাম।” তাই সেদিন শৌল শমূযেলের সঙ্গে খাওয়া দাওযা করল। |
9-1 Samuel 9:25 : খাওয়ার পর তারা উপাসনার স্থান থেকে নেমে এসে শহরে ফিরে গেল। শমূয়েল শৌলের জন্য ছাদে বিছানা পেতেছিল। শৌল ঘুমোতে গেল। |
9-1 Samuel 9:26 : পরদিন ভোরে শমূয়েল চেঁচিয়ে শৌলকে ডাকলেন। সে বলল, “উঠে পড়ো। আমি তোমায় রাস্তায় পৌঁছে দেব।” শৌল উঠে শমূযেলের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ল। |
9-1 Samuel 9:27 : শমূয়েল, শৌল ও তার ভৃত্য সবাই মিলে শহরের সীমানা পর্য়ন্ত গেল। তখন শমূয়েল শৌলকে বলল, “তোমার ভৃত্যকে এগিয়ে যেতে বলো। তোমাকে একটা বাণী দেব। ঈশ্বরের কাছ থেকে এই বাণী এসেছে।” তাই ভৃত্যটি এগিয়ে গেল। |
9-1 Samuel 10:1 : শমূয়েল তার তেলের বোতল শৌলের মাথায় ঢেলে দিল। তারপর সে শৌলকে চুমু খেয়ে বলল, “প্রভু তোমাকেই তাঁর লোকদের নেতা হিসাবে মনোনীত করেছেন। তুমিই প্রভুর লোকদের নিয়ন্ত্রণ করবে। চতুর্দিকে যে সব শত্রু আছে তাদের হাত থেকে তুমি তাদের বাঁচাবে। এই চিহ্ন থেকে বুঝবে কথাটা সত্য। |
9-1 Samuel 10:2 : আমার কাছ থেকে চলে যাবার পর তুমি রাচেলের সমাধির কাছে বিন্যামীন সীমানার সেল্সহতে দুটি লোকের সাক্ষাত্ পাবে। ঐ লোক দুটো তোমাকে বলবে, “যে গাধাগুলো তোমরা খুঁজছ তা কোন একজন দেখতে পেয়েছে। তোমার পিতা আর গাধাগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না, বরং তোমাকে নিয়েই তাঁর যত ভাবনা। শুধু বলছেন, আমার পুত্রের ব্যাপারে আমি কি করব।”‘ |
9-1 Samuel 10:3 : শমূয়েল বলল, “তারপর যেতে যেতে তাবোরের কাছে একটা বড় ওক গাছ দেখতে পাবে। সেখানে তিনজন লোক তোমার সঙ্গে দেখা করবে। ঐ তিনজন বৈথেলে ঈশ্বরের উপাসনার জন্য যাচ্ছে। তুমি তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে তিনটে বাচ্চা ছাগল দেখতে পাবে। দ্বিতীয় জনের কাছে থাকবে তিন টুকরো রুটি। তৃতীয় জনের কাছে থাকবে এক বোতল দ্রাক্ষারস। |
9-1 Samuel 10:4 : এই তিনজন লোক তোমায় অভিবাদন করবে। তারা তোমায় দু - টুকরো রুটি দেবে। তুমি তাদের কাছ থেকে সেটা নেবে। |
9-1 Samuel 10:5 : তারপর তুমি যাবে গিবিয়াথ এলোহিম। সেখানে একটা পলেষ্টীয় দুর্গ আছে। এই শহরে তুমি যখন আসবে তখন একদল ভাববাদী বের হয়ে আসবে। তারা আসবে উপাসনার স্থান থেকে। তারা ভাববাণীকরতে থাকবে। তারা বীণা, তম্বুরা, বাঁশি ও অন্যান্য তন্ত্রবাদ্য বাজাবে। |
9-1 Samuel 10:6 : তারপর প্রভুর আত্মা তোমার ওপর সবলে ভর করবেন। তুমি বদলে যাবে। তুমি একজন আলাদা ব্যক্তির মত হবে। তুমি অন্য ভাববাদীদের সঙ্গে ভাববাণী করতে শুরু করবে। |
9-1 Samuel 10:7 : যখন এইসব চিহ্নগুলি পরিপূর্ণ হবে, তখন তুমি যা চাইবে তাই করতে পারবে। কারণ তখন ঈশ্বর তোমার সঙ্গেই বিরাজ করবেন। |
9-1 Samuel 10:8 : “এবার আমার আগে গিল্গলে যাও। আমি তোমাকে যেতে দেখব। তারপর আমি সেখানে তোমার সঙ্গে দেখা করব। তারপর হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করব; কিন্তু সাতদিন তোমায় অপেক্ষা করতে হবে। তারপর আমি এসে তোমায কি করতে হবে বলে দেব।” |
9-1 Samuel 10:9 : শমূযেলের কাছ থেকে বিদায নিয়ে যে মূহুর্তে শৌল ঘাড় ফেরালেন, ঈশ্বর শৌলের হৃদয়ের সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটালেন। সেই দিন ঐসব চিহ্নগুলি পরিপূর্ণ হয়েছিল। |
9-1 Samuel 10:10 : শৌল আর তার ভৃত্য গিবিয়াথ এলোহিমে চলে গেল। সেখানে একদল ভাববাদীর সঙ্গে শৌলের দেখা হল। সেই সময় শৌলের ওপর সবলে ঈশ্বরের আত্মা নেমে এল। অন্য ভাববাদীদের সঙ্গে তিনিও ভাববাণী করলেন। |
9-1 Samuel 10:11 : যারা শৌলকে আগেই জানত, তারা এখন শৌলকে অন্য ভাববাদীদের সঙ্গে ভাববাণী করতে দেখল। তারা বলাবলি করল, “কীশের পুত্রর এ কি হল? শৌলও কি একজন ভাববাদী হয়ে গেল?” |
9-1 Samuel 10:12 : একটি লোক যে গিবিয়াথ এলোহিমে থাকত, সে বলল, “ওদের পিতা কে?” সেই থেকে এই কথাটা একটা প্রসিদ্ধ প্রবাদে পরিণত হয়েছে: “শৌলও কি ভাববাদীদের মধ্যে একজন?” |
9-1 Samuel 10:13 : ভাববাণী করবার পর, সে তার বাড়ির কাছে উপাসনার জায়গায় পৌঁছল। |
9-1 Samuel 10:14 : শৌলের কাকা শৌলকে ও তার ভৃত্যকে জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা কোথায় ছিলে?”শৌল বলল, “আমরা গাধা খুঁজতে গিয়েছিলাম, কিন্তু গাধা খুঁজে না পেয়ে আমরা শমূযেলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম।” |
9-1 Samuel 10:15 : শৌলের কাকা বলল, “শমূয়েল তোমায় কি বলল দয়া করে বল।” |
9-1 Samuel 10:16 : শৌল বলল, “শমূয়েল বলছে গাধাগুলো পাওয়া গেছে।” শৌল তার কাকাকে সবটা বলল না। রাজত্ব সম্বন্ধে শমূয়েল তাকে যা বলেছিল সে বিষযে শৌল কিছুই বলল না। |
9-1 Samuel 10:17 : শমূয়েল ইস্রাযেলবাসীদের মিস্পায প্রভুর সঙ্গে মিলিত হবার জন্যে বলল। |
9-1 Samuel 10:18 : সে বলল, “ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর, আমাদের প্রভু বলেন, ‘আমি ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে বের করে এনেছি। আমি তোমাদের মিশরের ক্ষমতা থেকে এবং যে সমস্ত রাজ্যগুলি তোমাদের নিষ্পেষিত করে দুর্দশাগ্রস্ত করেছিল, তাদের থেকে বাঁচিয়েছি।’ |
9-1 Samuel 10:19 : কিন্তু আজ তোমরা সেই ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছ। ঈশ্বরই তোমাদের সব বিপদ ও বিপত্তি থেকে উদ্ধার করেছেন, কিন্তু তোমরা বলছ, ‘আমাদের শাসন করবার জন্য আমরা একজন রাজা চাই।’ বেশ তবে তাই হোক্। এখন তোমাদের পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে প্রভুর সামনে দাঁড়াও।” |
9-1 Samuel 10:20 : শমূয়েল ইস্রাযেলবাসীদের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীকে তার কাছে ডাকল। তারপর সে নতুন রাজা মনোনয়ন করতে শুরু করল। প্রথমে বাছা হল বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীকে। |
9-1 Samuel 10:21 : সেই পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক পরিবারকে শমূয়েল তার সামনে দিয়ে হেঁটে যেতে বলল। শমূয়েল এবার পছন্দ করল মট্রীযদের পরিবার। তারপর মট্রীযদের পরিবারের প্রত্যেককে শমূয়েল হেঁটে যেতে বলল। কীশের পুত্র শৌলকে সে এবার মনোনীত করল।কিন্তু লোকরা যখন শৌলকে খুঁজল, তারা তাকে পেল না। |
9-1 Samuel 10:22 : তখন তারা প্রভুকে জিজ্ঞাসা করল, “শৌল কি এখানে এসেছে?”প্রভু বললেন, “শৌল জিনিসপত্রের পেছনেই লুকিয়ে রযেছে।” |
9-1 Samuel 10:23 : লোকরা ছুটে গিয়ে সেখান থেকে শৌলকে বের করে আনলে শৌল সকলের মাঝখানে দাঁড়াল। সকলের মধ্যে শৌলই ছিল লম্বায এক মাথা উঁচু। |
9-1 Samuel 10:24 : শমূয়েল সকলকে বলল, “এর দিকে তাকিযে দেখ। প্রভু একেই মনোনীত করেছেন। শৌলের মতো এখানে তোমাদের মধ্যে আর কেউ নেই।”লোকরা বলে উঠল, “রাজা দীর্ঘাযু হোন্।” |
9-1 Samuel 10:25 : শমূয়েল তাদের সমস্ত রাজকীয নিয়ম ও বিধিগুলি বুঝিযে দিল। সে সেগুলো একটা বইয়ে লিখে রাখল। পরে প্রভুর সানে সেই বইখানি রেখে শমূয়েল সবাইকে বাড়ি চলে যেতে বলল। |
9-1 Samuel 10:26 : শৌলও গিবিয়ায় তার বাড়ি চলে গেল। ঈশ্বর সাহসীদের হৃদয় স্পর্শ করল। এই সাহসীরা শৌলকে অনুসরণ করল। |
9-1 Samuel 10:27 : কিন্তু কিছু অশান্তি সৃষ্টিকারী লোক বলল, “এই লোকটা কি করে আমাদের রক্ষা করবে?” শৌলকে নিয়ে তারা নিন্দামন্দ করতে লাগল। তারা শৌলকে কোন উপহার দিন না। কিন্তু শৌল এ নিয়ে কিছু বলল না।অম্মোনদের রাজা নাহশ গাদ আর রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর ওপর নির্য়াতন চালাত। এদের প্রত্যেকেরই ডান চোখ সে উপড়ে নিয়েছিল, কেউ তাদের সাহায্য করুক নাহশ তা চাইত না। যর্দন নদীর পূর্বদিকে যেসব ইস্রায়েলীয় বসবাস করত, তাদের ডান চোখ সে উপড়ে নিয়েছিল। কিন্তু সাত হাজার ইস্রায়েলীয় অম্মোনদের হাত থেকে পালিয়ে গিয়ে যাবেশ গিলিয়দে চলে গিয়েছিল। |
9-1 Samuel 11:1 : প্রায একমাস পর অম্মোনদের রাজা নাহশ তার সৈন্যসামন্ত নিয়ে যাবেশ গিলিয়দ ঘিরে ফেলল। যাবেশের লোকেরা নাহশকে বলল, “যদি আমাদের সঙ্গে তুমি একটি শান্তি চুক্তি কর তাহলে আমরা তোমার সেবা করব।” |
9-1 Samuel 11:2 : নাহশ বলল, “তোমাদের প্রত্যেকের ডান চোখ যদি উপড়ে নিয়ে নিতে পারি তাহলেই তোমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে পারি। তবেই সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা লজ্জা পাবে!” |
9-1 Samuel 11:3 : যাবেশের নেতারা বলল, “সাতদিন সময় দাও। সমস্ত ইস্রায়েলে আমরা দূত পাঠাব। যদি কেউ সাহায্য করতে না আসে তাহলে আমরা তোমার কাছে এসে আত্মসমর্পণ করব।” |
9-1 Samuel 11:4 : বার্তাবাহকরা গিবিয়ায় এল; সেখানেই শৌল থাকত। তারা লোকদের খবরটি জানালে লোকরা কেঁদে উঠল। |
9-1 Samuel 11:5 : শৌল তখন মাঠে গরু চরাতে গিয়েছিল। মাঠ থেকে ফিরে সে তাদের কান্না শুনতে পেল। সে জিজ্ঞেস করল, “তোমাদের কি হয়েছে? তোমরা কাঁদছ কেন?”তারা শৌলকে যাবেশের বার্তাবাহকরা কি বলেছিল তা বলল। |
9-1 Samuel 11:6 : শৌল সব শুনল। তারপর ঈশ্বরের আত্মা সবলে তার ওপর এল। সে খুব রেগে গেল। |
9-1 Samuel 11:7 : এক জোড়া বলদ নিয়ে সে তাদের কেটে টুকরো টুকরো করল। তারপর সে বার্তাবাহকদের হাতে সেই বলদের টুকরোগুলো দিয়ে তাদের সেই টুকরোগুলি নিয়ে সমস্ত ইস্রায়েলে ঘুরতে বলল। ইস্রাযেলবাসীদের কাছে বার্তাবাহকরা কি বলবে তাও সে বলে দিল। এই ছিল তার বাণী: “তোমরা সকলে শৌল এবং শমূয়েলকে অনুসরণ কর। যদি কেউ তাদের সাহায্য না করে তবে তাদের বলদের অবস্থা হবে এই টুকরোর মতো!”লোকদের মনে প্রভুর প্রতি মহা ভয় এলো এবং তারা সবাই মিলে একটি মানুষের একতা নিয়ে বের হয়ে এল। |
9-1 Samuel 11:8 : শৌল বেষকে সকলকে একত্র করল। ইস্রাযেল থেকে এসেছিল তিন লক্ষ লোক, যিহূদা থেকে ত্রিশ হাজার জন। |
9-1 Samuel 11:9 : শৌল এবং তার সৈন্যরা যাবেশের বার্তাবাহকদের বলল, “গিলিয়দে যাবেশের যত লোক আছে তাদের গিয়ে বল, কাল দুপুরের মধ্যেই তোমাদের রক্ষা করা হবে।”শৌলের বাণী বার্তাবাহকরা যাবেশের লোকদের শোনাল। শুনে তারা খুব খুশী হল। |
9-1 Samuel 11:10 : তারপর তারা অম্মোনের রাজা নাহশকে বলল, “আমরা কাল তোমার কাছে আসব। তখন তুমি আমাদের নিয়ে যা চাও তাই করবে।” |
9-1 Samuel 11:11 : পরদিন সকালে শৌল তাঁর সৈন্যদের তিনটে দলে ভাগ করলেন। সূর্য় উঠলে শৌল সসৈন্যে অম্মোনদের শিবির আক্রমণ করল। সেই সময় ওদের প্রহরীরা পালাবদল করছিল। দুপুরের আগেই শৌল অম্মোনদের পরাজিত করল। অম্মোন সৈন্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যে যেদিকে পারল পালিয়ে গেল। সবাই একা হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল। |
9-1 Samuel 11:12 : তারপর লোকরা শমূয়েলকে বলল, “কোথায় গেল সেইসব লোক যারা বলেছিল শৌলকে রাজা হিসেবে আমরা চাই না? তাদের ডেকে নিয়ে এসো, আমরা তাদের হত্যা করব!” |
9-1 Samuel 11:13 : কিন্তু শৌল বলল, “না আজ কাউকে হত্যা কোরো না। প্রভু আজ ইস্রাযেলকে রক্ষা করেছেন!” |
9-1 Samuel 11:14 : তারপর শমূয়েল লোকদের বলল, “চলো, আমরা গিল্গলে যাই। গিল্গলে গিয়ে আমরা আবার শৌলকে রাজা করব।” |
9-1 Samuel 11:15 : সকলে গিল্গলে গেল। সেখানে প্রভুর সামনে তারা শৌলকে রাজা হিসেবে ঘোষণা করল। তারা প্রভুকে মঙ্গল নৈবেদ্য উত্সর্গ করল। শৌল ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোক মহা আনন্দের সঙ্গে অনুষ্ঠান করল। |
9-1 Samuel 12:1 : শমূয়েল ইস্রায়েলীয়দের বলল, “তোমরা যা চেয়েছিলে আমি তার সবই করেছি। আমি তোমাদের জন্য একজন রাজা এনে দিয়েছি। |
9-1 Samuel 12:2 : তোমাদের নেতৃত্ব দেবার জন্য এখন তোমরা একজন রাজা পেয়ে গেছ। আমি বৃদ্ধ হয়েছি; কিন্তু আমার পুত্ররা তোমাদের সঙ্গে থাকবে। আমি সেই ছোটবেলা থেকে তোমাদের নেতা হয়ে আছি। |
9-1 Samuel 12:3 : আমাকে তো তোমরা জানো। যদি আমি কোন অন্যায় করে থাকি তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা সে কথা প্রভুর সামনে এবং মনোনীত রাজার সামনে বলবে। আমি কা কারো গাধা বা গরু চুরি করেছি? আমি কি কাউকে আঘাত করেছি বা ঠকিযেছি? আমি কি কারো দোষ ত্রুটি অবজ্ঞা করবার জন্য ঘুষ নিয়েছি? যদি তা করে থাকি তবে আমি নিশ্চয়ই সেই অন্যাযের প্রাযশ্চিত্ত করব।” |
9-1 Samuel 12:4 : ইস্রাযেলবাসীরা বলল, “না আপনি কখনোই কোন অন্যায় করেন নি। আপনি কখনই আমাদের ঠকান নি বা কোন কিছু নিয়ে যান নি!” |
9-1 Samuel 12:5 : শমূয়েল বলল, “আজ প্রভু আর তাঁর মনোনীত রাজা সাক্ষী। তোমরা যা বললে তাঁরা সবই শুনেছেন। তাঁরা জানলেন তোমরা আমার কোন দোষ পাও নি।” সকলে বলল, “হ্যাঁ, প্রভুই সাক্ষী!” |
9-1 Samuel 12:6 : শমূয়েল বলল, “যা যা হয়েছে প্রভু সবই দেখেছেন। তিনিই মোশি এবং হারোণকে মনোনীত করেছিলেন। তিনিই তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে এনেছিলেন। |
9-1 Samuel 12:7 : এবার এখানে দাঁড়াও এবং ঈশ্বর তোমাদের জন্যে ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের জন্য কি কি ভালো জিনিস করেছিলেন সে সম্বন্ধে শোন। |
9-1 Samuel 12:8 : যাকোব মিশরে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে মিশরীয়রা তার উত্তরপুরুষদের জীবন অতিষ্ঠ করে দিয়েছিল। তাই তারা প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেছিল। তখন প্রভু মোশি আর হারোণকে পাঠিয়েছিলেন। তারা তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছিল এবং এই জায়গায় বাস করবার জন্য নেতৃত্ব দিয়েছিল। |
9-1 Samuel 12:9 : “কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের প্রভু ঈশ্বরের কথা ভুলে গেল। ফলে ঈশ্বর তাদের সীষরার ক্রীতদাস করে দিলেন। সীষরা ছিল হাত্সোরের সৈন্যদের অধিনাযক। তারপর প্রভু তাদের পলেষ্টীয় আর মোয়াবের রাজার ক্রীতদাস করে দিলেন। তারা সবাই তোমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। |
9-1 Samuel 12:10 : তখন পূর্বপুরুষরা প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছিল। তারা বলেছিল, ‘আমরা পাপ করেছি। আমরা প্রভুকে ত্যাগ করে বাল এবং অষ্টারোতের মূর্ত্তির পূজা করেছি; কিন্তু আজ শত্রুদের হাত থেকে আমাদের বাঁচাও। আমরা তোমারই সেবা করব।’ |
9-1 Samuel 12:11 : “তখন প্রভু য়িরুব্বাল (গিদিযন), বরাক, য়িপ্তহ এবং শমূয়েলকে পাঠালেন। প্রভু, তোমাদের চারপাশের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করলেন। তোমরা নিরাপদে বাস করছিলে। |
9-1 Samuel 12:12 : কিন্তু তারপর তোমরা দেখলে অম্মোনদের রাজা নাহশ তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসছে। অমনি বলে উঠলে, ‘না, আমরা একজন রাজা চাই যে আমাদের শাসন করবে!’ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর ইতিমধ্যেই তোমাদের রাজা থাকা সত্ত্বেও তোমরা সেটা বলেছিলে। |
9-1 Samuel 12:13 : এখন তোমরা তোমাদের ইচ্ছে ও পছন্দ অনুযায়ীএকজন রাজা পেয়েছ। প্রভু তাকেই তোমাদের শাসন করার ভার দিয়েছেন। |
9-1 Samuel 12:14 : তোমাদের প্রভুকে ভয় ও সম্মান করে চলা উচিত্। তোমরা অবশ্যই তাঁর সেবা করবে ও তাঁর আজ্ঞা মেনে চলবে। তোমরা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করবে না। তোমরা সবাই আর তোমাদের রাজা অবশ্যই তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বরের অনুগত থাকবে। তাহলেই তিনি তোমাদের রক্ষ করবেন। |
9-1 Samuel 12:15 : কিন্তু তাঁর আদেশ অমান্য করলে অথবা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করলে তিনি তোমাদের বিরুদ্ধে যাবেন, যেমন তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন। |
9-1 Samuel 12:16 : “এখন স্থির হয়ে দাঁড়াও এবং প্রভু তোমাদের চোখের সামনে যে সব মহান জিনিসগুলি করবেন তা দেখো। |
9-1 Samuel 12:17 : এখন গম তোলবার সময়। প্রভুর কাছে আমি প্রার্থনা করব বজ্র আর বৃষ্টির জন্য। তখনই বুঝতে পারবে রাজা চাইতে গিয়ে প্রভুর বিরুদ্ধে তোমরা কি অন্যায় করেছ।” |
9-1 Samuel 12:18 : শমূয়েল তাই প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল। ঠিক সেদিনই প্রভু বজ্র আর বৃষ্টি দিলেন। লোকরা প্রভু আর শমূয়েলকে ভয় পেল। |
9-1 Samuel 12:19 : তারা সবাই শমূয়েলকে বলল, “তোমার প্রভু ঈশ্বরের কাছে তুমি আমাদের জন্য প্রার্থনা করো। আমরা তোমার ভৃত্য। আমরা যেন মারা না পড়ি। আমরা অনেকবার পাপ করেছি। এবার আবার আমরা রাজা চেয়ে পাপের বোঝা বাড়ালাম।” |
9-1 Samuel 12:20 : শমূয়েল উত্তরে বলল, “ভয় পেও না। এটা সত্যি, তোমরা এসব অন্যায় করেছিলে। কিন্তু প্রভুর অনুসরণ করে চলো, থেমো না। মনপ্রাণ দিয়ে তোমরা তাঁর সেবা করবে। |
9-1 Samuel 12:21 : মূর্ত্তি কখনও তোমাদের সাহায্য করতে পারে না। মূর্ত্তি মূর্ত্তিই, তাই ওগুলোর পূজো করো না। ওগুলো কোন কাজেরই নয়। মূর্ত্তিরা তোমাদের সাহায্য বা রক্ষা করতে পারে না। |
9-1 Samuel 12:22 : “কিন্তু প্রভু কখনও তাঁর লোকদের ছেড়ে যান না। তোমাদের তাঁর আপনজন করে নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট আছেন। তাই তাঁর মহানামের গুনে কখনই তিনি তোমাদের ছেড়ে যাবেন না। |
9-1 Samuel 12:23 : আমার দিক থেকে বলতে পারি, আমি সবসময় তোমাদের হয়ে প্রার্থনা করব। প্রার্থনা বন্ধ করলে আমি প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করব। আমি তোমাদের সত্য পথের বিষযে শিক্ষা দিয়ে যাব যেন তোমরা সত্ভাবে জীবনযাপন করতে পার। |
9-1 Samuel 12:24 : তবে তোমরা অবশ্যই প্রভুকে সম্মান করবে। তোমাদের জন্যে তিনি যে সব মহত্ কর্ম করেছেন সেগুলো মনে রাখবে। |
9-1 Samuel 12:25 : কিন্তু তোমরা যদি মন্দ কাজ করতে থাকো তাহলে ঈশ্বর তোমাদের আর তোমাদের রাজাকে ধ্বংস করবেন।” |
9-1 Samuel 13:1 : সেই সময় শৌল সবে এক বছর রাজা হয়েছেন। ইস্রায়েলের ওপর দু - বছর রাজত্ব করবার পর, |
9-1 Samuel 13:2 : তিনি ইস্রাযেল থেকে তিন হাজার পুরুষকে মনোনীত করলেন। বৈথেলের পাহাড়ে মিক্মস দেশে শৌলের সঙ্গে রইল দুই হাজার জন। এক হাজার জন রইল য়োনাথনের কাছে। তারা ছিল বিন্যামীনের গিবিয়া শহরে। সৈন্যদলের বাকি লোকদের তিনি বাড়ী পাঠিয়ে দিলেন। |
9-1 Samuel 13:3 : য়োনাথন গেবা শিবিরে পলেষ্টীয়দের প্রধান সেনাপতিকে হত্যা করল। এখবর শুনে পলেষ্টীয়রা বলল, “ইব্রীযেরা বিদ্রোহ করেছে।”শৌল বলল, “কি হয়েছে ইব্রীযেরা শুনুক।” শৌল তার লোকদের বলল সমস্ত ইস্রায়েলে তারা শিঙা বাজিযে দিক। |
9-1 Samuel 13:4 : ইস্রায়েলীয়রা খবরটা শুনল। তারা বলল, “শৌল পলেষ্টীয় নেতাকে হত্যা করেছে। এবার পলেষ্টীয়রা সত্যিই ইস্রায়েলীয়দের ঘৃণা করবে!”ইস্রায়েলীয়দের বলা হল, তারা যেন গিল্গলে শৌলের সঙ্গে য়োগ দেয। |
9-1 Samuel 13:5 : পলেষ্টীয়রা জড়ো হয়ে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেল। পলেষ্টীয়দের ছিল তিন হাজার রথ আর ছয় হাজার অশ্বারোহী সৈন্য। সমুদ্রের বালির মত পলেষ্টীয়দের অসংখ্য় সৈন্য ছিল। এদের শিবির পড়ল মিক্মসে। মিক্মস হচ্ছে বৈত্ - আবনের পূর্ব দিকে। |
9-1 Samuel 13:6 : ইস্রায়েলীয়রা দেখল তারা বিপদের মুখে। ফাঁদে পড়েছে বলে মনে হল তাদের। তারা পালিয়ে গিয়ে গুহায়, পাহাড়ের ফাঁকে ফোকরে লুকিয়ে রইল। লুকিয়ে রইল কুযোয, মাটির ভেতরে যে কোন গর্তের মধ্যে। |
9-1 Samuel 13:7 : কিছু ইব্রীয যর্দন নদী পেরিযে গাদ আর গিলিয়দের দিকেও চলে গেল। শৌল তখনও গিল্গলে। তার সৈন্যরা সবাই ভয়ে কাঁপছে। |
9-1 Samuel 13:8 : শমূয়েল বলল যে সে গিল্গলে শৌলের সঙ্গে দেখা করবে। শৌল তার জন্যে সাতদিন অপেক্ষা করে রইল। কিন্তু শমূয়েল তবুও গিল্গলে এল না। সৈন্যরা শৌলকে ছেড়ে চলে যেতে লাগল। |
9-1 Samuel 13:9 : তখন শৌল বলল, “আমার কাছে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্যগুলি এনে দাও।” তারপর শৌল সেই হোমবলি উত্সর্গ করল। |
9-1 Samuel 13:10 : শৌলের হোমবলি উত্সর্গ করা শেষ করতেই শমূয়েল এল। শৌল তার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। |
9-1 Samuel 13:11 : শমূয়েল বলল, “এ কি করেছ?”শৌল বললেন, “দেখলাম সৈন্যরা আমায় ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তুমিও সময় মতো আসো নি। ওদিকে পলেষ্টীয়রা মিক্মসে জড়ো হয়েছে। |
9-1 Samuel 13:12 : তখন আমি মনে মনে বললাম, ‘পলেষ্টীয়রা এখানে আসবে। ওরা গিল্গলে আমাকে আক্রমণ করবে। এখনও আমি প্রভুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি নি। তাই অবশেষে আমি নিজেই জোর করে হোমবলি উত্সর্গ করেছি।”‘ |
9-1 Samuel 13:13 : শমূয়েল বলল, “খুব বোকামি করেছ! তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরের কথা শোন নি। তাঁর আদেশ শুনলে তিনি তোমাদের পরিবারকে চিরকাল ইস্রাযেলকে শাসন করতে দিতেন। |
9-1 Samuel 13:14 : কিন্তু এখন আর তোমার রাজত্ব স্থির থাকবে না। প্রভু এমনই একজনকে খুজছিলেন যে তাঁর কথা শুনবে। তিনি সেই লোক পেয়ে গেছেন। তিনি তাঁর প্রজাদের উপর নতুন নেতা হিসেবে তাকেই মনোনীত করেছেন। তুমি প্রভুর কথার বাধ্য হও নি বলেই তিনি নতুন নেতা নির্বাচন করেছেন।” |
9-1 Samuel 13:15 : এই বলে শমূয়েল উঠে দাঁড়াল এবং গিল্গল থেকে চলে গেল।বাকি সৈন্যদের নিয়ে শৌল গিল্গল ছেড়ে বিন্যামীনের গিবিয়ায় চলে গেলেন। শৌল মাথা গুনে দেখলেন তাঁর সঙ্গে রযেছে প্রায 600 জন। |
9-1 Samuel 13:16 : শৌল, তাঁর পুত্র য়োনাথন এবং সৈন্যরা বিন্যামীনের গিবিয়াতে গেল।পলেষ্টীয়রা মিক্মসে তাঁবু গেড়েছিল। |
9-1 Samuel 13:17 : সেখানে যত ইস্রায়েলীয় ছিল তাদের পলেষ্টীয়রা শাযেস্তা করতে চাইল। তাদের সেরা সৈন্যরা আক্রমণের জন্য তৈরী হল। তারা তিনটি দলে ভাগ হয়ে গেল। একটা দল গেল উত্তরে, শূযালের কাছে অফ্রার রাস্তায়। |
9-1 Samuel 13:18 : দ্বিতীয় দল গেল দক্ষিণ পূর্ব দিকে, বৈত্ - হোরোণের রাস্তায়। তৃতীয় দল পূর্বদিকে, সীমান্তের পথে। সেই পথে মরুভূমির দিকে সিবোযিম উপত্যকা চোখে পড়ে। |
9-1 Samuel 13:19 : ইস্রায়েলের কেউই লোহার জিনিসপত্র তৈরী করতে পারত না। ইস্রায়েলে কোন কামার ছিল না। পলেষ্টীয়রা ওদের এসব বানাতে শেখায়নি। কারণ তাদের ভয় ছিল, ইস্রায়েলীয়রা তাহলে লোহার তরবারি আর বর্শা তৈরী করে ফেলবে। |
9-1 Samuel 13:20 : পলেষ্টীয়রাই শুধু লোহার জিনিসপত্র ধার দিতে পারত। সেই জন্য যদি ইস্রায়েলীয়দের লাঙল, নিড়ানি, কুড়ুল, কাস্তে শান দিতে হত, তাহলে তাদের পলেষ্টীয়দের কাছেই যেতে হত। |
9-1 Samuel 13:21 : একটা লাঙল আর নিড়ানির জন্যে পলেষ্টীয়রা মজুরি নিত 1়/3 আউন্স রূপো। গাঁইতি, কুড়ুল, আর ষাঁড় খোঁচানো শাবল ধার করার জন্য নিত 1/6 আউন্স রূপো। |
9-1 Samuel 13:22 : তাই যুদ্ধের দিন শৌলের কোন ইস্রায়েলীয় সৈন্যই লোহার তরবারি বা বর্শা নিয়ে যায় নি। শুধুমাত্র শৌল ও তাঁর পুত্র য়োনাথনের কাছেই লোহার অস্ত্র ছিল। |
9-1 Samuel 13:23 : একদল পলেষ্টীয় সৈন্য মিক্মসের গিরিপথ পাহারা দিচ্ছিল। |
9-1 Samuel 14:1 : সেদিন শৌলের পুত্র য়োনাথন তার অস্ত্রবাহকের সঙ্গে কথা বলছিল। য়োনাথন বলল, “উপত্যকার অন্যদিকে পলেষ্টীয়দের তাঁবু গেড়েছে। চলো সেদিকে যাওয়া যাক।” পিতাকে সে এ বিষযে কোন কথা বলল না। |
9-1 Samuel 14:2 : শৌল তখন পাহাড়ের ধারে মিগ্রোন নামে একটা জায়গায় একটা ডালিম গাছের নীচে বসেছিলেন। এটা ছিল যেখানে ফসল ঝাড়াই হয় তারই কাছে। শৌলের সঙ্গে ছিল প্রায ছয়শত জন লোক। |
9-1 Samuel 14:3 : একজনের নাম ছিল অহিয। এলি শীলোয় প্রভুর যাজক ছিল। তার জায়গায় এখন অহিয নামে এক ব্যক্তি যাজক হল। সে পরল যাজকের এফোদ নামক বিশেষ পোশাক। অহিয ছিল ঈখাবোদের ভাই অহীটুবের পুত্র। ঈখাবোদের পিতার নাম পীনহস। পীনহসের পিতা ছিল এলি।লোকরা জানত না যে য়োনাথন চলে গিয়েছিল। |
9-1 Samuel 14:4 : গিরিপথের উভয় পাশে একটা বড় শিলা ছিল। য়োনাথন ঠিক করল ঐ গিরিপথ দিয়ে সে পলেষ্টীয় শিবিরে পৌঁছবে, একটা শিলার নাম ছিল বোত্সেস; অন্য শিলাটির নাম ছিল সেনি। |
9-1 Samuel 14:5 : একটি শিলা উত্তরে মিক্মস অভিমুখে ছিল এবং অন্যটি ছিল দক্ষিণে গেবার দিকে মুখ করা। |
9-1 Samuel 14:6 : য়োনাথন তার অস্ত্রবাহক যুবক সহকারীকে বলল, “চলো আমরা ঐ বিদেশীদের তাঁবুর দিকে যাই। হয়তো ওদের হারিয়ে দিতে প্রভু আমাদের সাহায্য করতে পারেন। প্রভুকে কেউই থামাতে পারে না। আমাদের সৈন্য কম হোক্ বা বেশী এতে কিছু যায় আসে না।” |
9-1 Samuel 14:7 : অস্ত্রবাহক যুবকটি তাকে বলল, “যা ভাল বোঝ, করো। আমি তোমার সঙ্গে সমস্ত ব্যাপারে থাকব।” |
9-1 Samuel 14:8 : য়োনাথন বলল, “চলো এগোনো যাক! আমরা উপত্যকা পেরিযে পলেষ্টীয় প্রহরীদের দিকে যাব। এমন করব যেন তারা আমাদের দেখতে পায়। |
9-1 Samuel 14:9 : যদি তারা বলে, ‘আমরা না আসা পর্য়ন্ত ওখানে দাঁড়াও,’ তাহলে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকব। আমরা ওদের দিকে এগোব না। |
9-1 Samuel 14:10 : কিন্তু যদি পলেষ্টীয় লোকরা বলে, ‘এদিকে চলে এসো,’ তাহলে আমরা তাদের দিকে পাহাড় ডিঙিযে চলে যাব। কেন? কারণ সেটাই হবে ঈশ্বরের দেওয়া চিহ্ন বিশেষ। এর অর্থ হচ্ছে, প্রভু আমাদের সহায় হলেন যাতে ওদের হারিয়ে দিতে পারি।” |
9-1 Samuel 14:11 : সেই মতো য়োনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারী পলেষ্টীয়দের একটা সুয়োগ করে দিল ওরা যাতে তাদের দেখতে পায়। পলেষ্টীয় প্রহরীরা বলল, “দেখ, গর্ত থেকে ইব্রীযরা বেরিয়ে আসছে যেখানে তারা লুকিয়ে ছিল!” |
9-1 Samuel 14:12 : দুর্গের ভেতর থেকে পলেষ্টীয়রা য়োনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারীকে চিত্কার করে বলল, “এগিয়ে এসো। আমরা তোমাদের উচিত্ শিক্ষা দেব!”য়োনাথন তার অস্ত্রবহনকারীকে বলল, “আমি পাহাড়ে উঠছি। আমার পিছন পিছন এসো। প্রভু ইস্রায়েলীয়দের দিয়ে পলেষ্টীয়দের পরাজিত করতে দিচ্ছেন!” |
9-1 Samuel 14:13 : তাই য়োনাথন হামাগুড়ি দিয়ে পাহাড়ে উঠল। তার অস্ত্রবহনকারী ঠিক তার পিছনে। য়োনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারী সেখানে ছিল না। ওরা দুজনে পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করল। প্রথম চোটেই তারা আধ একর জুড়ে বিশ জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করল। সামনে থেকে যারা আক্রমণ করতে আসছিল য়োনাথন তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল। আর তার অস্ত্রবহনকারী পিছন পিছন এসে যারা শুধু আহত হয়েছিল তাদের মেরে ফেলল। |
9-1 Samuel 14:14 : - |
9-1 Samuel 14:15 : পলেষ্টীয় সৈন্যরা সকলেই বেশ ভয় পেয়ে গেল। মাঠে, শিবিরে, দুর্গে যে সব সৈন্য ছিল সকলেই ভয় পেয়ে গেল, এমনকি সবচেয়ে সাহসী যারা তারাও। মাটি কাঁপতে লাগল এবং তাতে পলেষ্টীয় বাহিনী সত্যিই বেশ ভয় পেয়ে গেল। |
9-1 Samuel 14:16 : শৌলের প্রহরীরা ছিল বিন্যামীনের গিবিয়ায়। তারা দেখল পলেষ্টীয়রা যেদিকে পারছে পালাচ্ছে। |
9-1 Samuel 14:17 : শৌল সৈন্যদের বললেন, “লোকগুলোকে গোন। ক’জন শিবির ছেড়ে গেছে দেখতে চাই।”ওরা লোক গুনতে শুরু করল। য়োনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারী সেখানে ছিল না। |
9-1 Samuel 14:18 : শৌল অহিযকে বললেন, “এবার ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক আনো।” (সেই সময় ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ছিল।) |
9-1 Samuel 14:19 : শৌল যাজক অহিযর সঙ্গে কথা বলছিলেন। ঈশ্বরের উপদেশের জন্য তিনি অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু পলেষ্টীয়দের শিবিরে গোলমাল আর চেঁচামেচি ক্রমশঃ বেড়েই চলেছিল। শৌল অধৈর্য়্য় হয়ে পড়লেন। অবশেষে তিনি যাজক অহিযকে বললেন, “আর নয়, এবার হাত নামাও। প্রার্থনা শেষ করো।” |
9-1 Samuel 14:20 : সৈন্যসামন্ত জড়ো করে নিয়ে শৌল যুদ্ধ করতে গেলেন। পলেষ্টীয় সৈন্যরা বিভ্রান্ত হয়ে গেল। এমনকি তারা তাদের তরবারি ব্যবহার করে একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছিল। |
9-1 Samuel 14:21 : কিছু ইব্রীয আগে পলেষ্টীয়দের সেবা করত এবং তাদের শিবিরেই থাকত। কিন্তু এখন তারা শৌল আর য়োনথনের সঙ্গে মিশে গেল। তারা এখন ইস্রায়েলীয়দের দলে ভিড়ে গেল। |
9-1 Samuel 14:22 : ইফ্রয়িমের পার্বত্য দেশে যেসব ইস্রায়েলীয় লুকিয়েছিল তারা পলেষ্টীয়দের পালিয়ে যাবার খবর শুনল। এখন এই ইস্রায়েলীয়রাও যুদ্ধে নেমে পলেষ্টীয়দের তাড়িয়ে দিতে শুরু করল। |
9-1 Samuel 14:23 : এই ভাবে প্রভু সেদিন ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করলেন। যুদ্ধ চললো বৈত্ - আবন ছাড়িযে। সমস্ত সৈন্য এখন শৌলের সঙ্গে। তারা সংখ্যায় প্রায দশ হাজার জন পুরুষ। পাহাড়ী অঞ্চলে ইফ্রয়িমের সমস্ত শহরগুলিতে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ল। |
9-1 Samuel 14:24 : কিন্তু সেদিন শৌল একটা মস্ত ভুল করেছিলেন। ইস্রায়েলীয়রা ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছিল। এর কারণ শৌল। তিনি তাদের দিয়ে এই প্রতিশ্রুতি করিযেছিলেন যে সন্ধ্যার আগে এবং আমি শত্রুদের হারিয়ে দেবার আগে যদি কেউ খায় তাহলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। তাই কোন ইস্রায়েলীয় সৈন্য কিছু খায় নি। |
9-1 Samuel 14:25 : যুদ্ধ করতে গিয়ে তারা বেশ কিছু জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল। তারপর তারা এক জায়গায় মাটির ওপরে একটি মৌচাক দেখল, কিন্তু মৌচাকের কাছে গিয়েও খেল না। প্রতিশ্রুতি ভাঙ্গতে তাদের ভয় করছিল। |
9-1 Samuel 14:26 : - |
9-1 Samuel 14:27 : কিন্তু য়োনাথন এই প্রতিশ্রুতির কথা জানত না। সে জানত না যে তার পিতা সৈন্যদের জোর করে এই প্রতিশ্রুতি করিযেছেন। য়োনাথনের হাতে ছিল একটি লাঠি। সে লাঠিটার একটা দিক মৌচাকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে কিছু মধু বের করে আনলো। মধু খেয়ে সে কিছুটা ভাল বোধ করল। |
9-1 Samuel 14:28 : সৈন্যদের একজন য়োনাথনকে বলল, “তোমার পিতা সৈন্যদের এই বিশেষ প্রতিশ্রুতি করতে বাধ্য করেছিলেন। তোমার পিতা বলেছিলেন কেউ আজ খেলে শাস্তি পাবে। তাই কেউ কিছু খায় নি। সেই জন্য সকলে দুর্বল হয়ে পড়েছে।” |
9-1 Samuel 14:29 : য়োনাথন বলল, “আমার পিতা এই দেশে অনেক অশান্তি নিয়ে এসেছে। এই দেখ সামান্য একটু মধু খেয়েই আমি কেমন সুস্থ বোধ করছি। |
9-1 Samuel 14:30 : শত্রুদের কাছ থেকে খাবার আদায করে যদি লোকরা খেয়ে নিত তাহলে অনেক ভাল হতো। তাহলে আমরা আরো অনেক পলেষ্টীয়দের হত্যা কতে পারতাম!” |
9-1 Samuel 14:31 : সেদিন ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিল। মিক্মস থেকে অযালোন পর্য়ন্ত সমস্ত জায়গায় ওরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই চালিযেছিল। ফলে তারা ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছিল। |
9-1 Samuel 14:32 : পলেষ্টীয়দের মেষ, গরু, বাছুর সব তারা নিয়ে নিয়েছিল। এখন ইস্রায়েলের লোকরা প্রবল ক্ষুধায সেগুলো মাটিতে ফেলে হত্যা করে রক্তশুদ্ধ খেতে লাগল। |
9-1 Samuel 14:33 : শৌলকে একজন বলল, “এই দেখ। লোকগুলো আবার প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করছে। রক্ত লেগে থাকা মাংস ওরা খাচ্ছে!”তখন শৌল বললেন, “তোমরা পাপ করেছ। এখানে একটা বড় পাথর গড়িযে দাও।” |
9-1 Samuel 14:34 : তারপর শৌল বললেন, “যাও ওদের কাছে গিয়ে বলো, প্রত্যেকেই তার ষাঁড় আর মেষ যেন আমার কাছে নিয়ে আসে। তারপর ওরা এখানে এসে সে সব জন্তুকে যেন মারে। তোমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কোরো না। কখনও রক্ত মাখানো মাংস খেও না।”সেই রাত্রে প্রত্যেকেই নিজেদের পশু সেখানে নিয়ে এসে বলি দিল। |
9-1 Samuel 14:35 : তারপর শৌল প্রভুর জন্য একটা বেদী তৈরী করলেন। শৌল নিজেই এই কাজটা করতে লাগলেন। |
9-1 Samuel 14:36 : শৌল বললেন, “আজ রাত্রে চলো আমরা পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করি। তাদের সবকিছু আমরা কেড়ে নিয়ে একেবারে শেষ করে দিই।”সৈন্যরা বলল, “যা ভাল বোঝ করো।”কিন্তু যাজক বলল, “ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করে দেখা যাক।” |
9-1 Samuel 14:37 : তখন শৌল ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করল, “আমি কি পলেষ্টীয়দের পিছু নিয়ে ওদের হটিযে দেব? আপনি কি ওদের পরাজয়ে আমাদের সাহায্য করবেন?” কিন্তু ঈশ্বর সেদিন কোন উত্তর দিলেন না। |
9-1 Samuel 14:38 : তখন শৌল বললেন, “সমস্ত নেতাকে আমার কাছে ডেকে আনো। খুঁজে বের করা যাক আজ কে পাপ করেছে। |
9-1 Samuel 14:39 : ইস্রাযেলকে যিনি রক্ষা করেন, সেই প্রভুর নামে আমি শপথ করে বলছি, পাপ যদি আমার পুত্র য়োনাথনও করে থাকে তবে তাকেও মরতে হবে।” কেউ কোন কথা বলল না। |
9-1 Samuel 14:40 : শৌল সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের বললেন, “তোমরা এদিকটায দাঁড়াও, আমি আর য়োনাথন ওদিকে দাঁড়াচ্ছি।”সৈন্যরা বলল, “যা বলবেন তাই হবে।” |
9-1 Samuel 14:41 : তারপর শৌল প্রার্থনা শুরু করলেন। তিনি বললেন, “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, কেন আজ তোমার ভৃত্যকে কোনো উত্তর দিলে না? যদি আমি বা আমার পুত্র কোন দোষ করে থাকি, তবে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাদের ‘উরীম’ দাও। যদি তোমার ইস্রায়েলীয়রা কোন পাপ করে থাকে, তুমি তবে ‘তুম্মীম’ দাও। ‘উরীম’ আর ‘তুম্মীম’ ছুঁড়ে দেওয়া হল।শৌল ও য়োনাথন ধরা পড়ল এবং লোকরা বাদ পড়ল। |
9-1 Samuel 14:42 : শৌল বললেন, “আবার ওগুলো ছুঁড়ে দেখো কে দোষী, আমি না আমার পুত্র য়োনাথন? এবার য়োনাথন ধরা পড়ল। |
9-1 Samuel 14:43 : শৌল য়োনাথনকে বললেন, “কি করেছ বলো?”য়োনাথন বলল, “লাঠির মাথায় শুধু একটু মধু নিয়ে খেয়েছি। এর জন্য কি আমাকে মরতে হবে?” |
9-1 Samuel 14:44 : শৌল বললেন, “আমি যে প্রতিশ্রুতি করেছি। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে ঈশ্বর আমাকে শাস্তি দেবেন। সুতরাং য়োনাথন মরবেই।” |
9-1 Samuel 14:45 : তখন সৈন্যরা শৌলকে বলল, “য়োনাথন আজ ইস্রায়েলের জয়ের নাযক। তাকে কি মরতেই হবে? কখনোই না। আমরা জীবন্ত ঈশ্বরের নামে দিব্য়ি করে বলছি, কেউ য়োনাথনের গায়ে হাত দেব না। তার একটি চুলও মাটিতে পড়বে না। বয়ং ঈশ্বর য়োনাথনকে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করেছেন।” এই ভাবে তারা য়োনাথনকে বাঁচাল। তাকে আর মরতে হল না। |
9-1 Samuel 14:46 : শৌল পলেষ্টীয়দের পিছু নিলেন না। পলেষ্টীয়রা নিজেদের জায়গায় ফিরে এলো। |
9-1 Samuel 14:47 : ইস্রায়েলের সম্পূর্ণ কর্ত্তৃত্ব শৌল নিজের হাতে নিলেন। ইস্রায়েলের চারিদিকে যত শত্রু ছিল, তাদের সঙ্গে তিনি যুদ্ধ চালালেন। তিনি মোযাব, অম্মোনীয়, সোবার রাজা ইদোম এবং পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন। শৌল যেখানে গেলেন সেখানেই ইস্রায়েলের শত্রুদের হারিয়ে দিলেন। |
9-1 Samuel 14:48 : শৌল খুব সাহসী ছিলেন। সমস্ত শত্রু, যারা ইস্রায়েলীয়দের লুঠ করতে চাইছিল, তাদের হাত থেকে শৌল ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করেছিলেন। এমনকি অমালেক গোষ্ঠীকেও তিনি হারিয়ে দিয়েছিলেন। |
9-1 Samuel 14:49 : শৌলের পুত্রদের নাম য়োনাথন, য়িশবি এবং মল্কীশূয। তাঁর বড় মেয়ের নাম মেরব, ছোট মেয়ে মীখল। |
9-1 Samuel 14:50 : শৌলের স্ত্রীর নাম অহীনোযম। অহীনোযমের পিতা হচ্ছে অহীমাস।শৌলের সেনাপতি অবনের, সে ছিল নেরের পুত্র। নের শৌলের কাকা। |
9-1 Samuel 14:51 : শৌলের পিতা কীশ এবং অব্নেরের পিতা নেব এঁরা দুজনে অবীযেলের পুত্র। |
9-1 Samuel 14:52 : শৌল আজীবন সাহসী ছিলেন। তিনি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে প্রবলভাবে যুদ্ধ করেছিলেন। যখনই তিনি একটি শক্ত সমর্থ বা সাহসী লোক দেখতে পেতেন, তাকে তাঁর সৈন্যদলে যুক্ত করে নিতেন। এরা তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে কাছাকাছি থাকত। |
9-1 Samuel 15:1 : একদিন শমূয়েল শৌলকে বলল, “প্রভু তোমায় ইস্রায়েলে তাঁর লোকদের রাজা হিসাবে অভিষেক করতে আমাকে পাঠিয়েছিলেন। তাই এখন প্রভুর বার্তা শোনো। |
9-1 Samuel 15:2 : সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন: ‘যখন ইস্রায়েলীয়রা মিশর থেকে বেরিয়ে আসছিল তখন অমালেকীয়রা তাদের কনানে যেতে বাধা দিয়েছিল। অমালেকীয়রা কি করেছে আমি সব দেখেছি। |
9-1 Samuel 15:3 : এখন যাও, অমালেকীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। ওদের তোমরা একেবারে শেষ করে দাও, ওদের সব কিছু ভেঙ্গে চুরে তছনছ করে দাও। কাউকে বাঁচতে দিও না। ছেলে মেয়ে কাউকে বাদ দেবে না। তাদের সমস্ত গরু, মেষ উটও তোমরা শেষ করে দেবে।” |
9-1 Samuel 15:4 : শৌল টলাযীমে সমস্ত সৈন্য জড়ো করলেন। পদাতিক সৈন্য দুই লক্ষ জন আর অন্যান্যরা দশ হাজার জন। এদের মধ্যে যিহূদার লোকরাও ছিল। |
9-1 Samuel 15:5 : তারপর শৌল চলে গেলেন অমালেকীয়দের শহরে। উপত্যকায গিয়ে তিনি অপেক্ষা করতে লাগলেন। |
9-1 Samuel 15:6 : কেনীয়দের শৌল বলল, ‘তোমরা সবাই অমালেকীয়দের ছেড়ে দিয়ে চলে যাও। তাহলে আমি ওদের সঙ্গে তোমাদের বিনষ্ট করব না। যখন ইস্রায়েলীয়রা মিশর ছেড়ে চলে আসছিল, তোমরা ইস্রায়েলীয়দের দয়াদাক্ষিণ্য দেখিয়েছিল।” একথা শুনে কেনীয়রা অমালেকীয়দের ছেড়ে চলে গেল। |
9-1 Samuel 15:7 : শৌল অমালেকীয়দের হারিয়ে দিলেন। তাদের তাড়িয়ে নিয়ে গেলেন সেই হবীলা থেকে শূর অবধি যেখানে মিশরের সীমানা। |
9-1 Samuel 15:8 : অমালেকীয়দের রাজা ছিল অগাগ। শৌল জীবিত অবস্থায় অগাগকে বন্দী করেছিলেন এবং বাকী অমালেকীয়দের হত্যা করেছিলেন। |
9-1 Samuel 15:9 : সব কিছু ধ্বংস করতে শৌলের এবং ইস্রায়েলীয়দের মন চাইল না। সেইজন্য তারা অগাগকে মেরে ফেলে নি। তাছাড়া পুষ্ট গাভী, সেরা মেষগুলোকেও তারা জীবিত রেখেছিল। সেই সঙ্গে আর যে সব জিনিস রেখে দেবার মতো, সেগুলোও রেখে দিয়েছিল। ঐগুলো তারা নষ্ট করতে চায নি। যেগুলো রাখার য়োগ্য় নয়, সেগুলোকে তারা নষ্ট করে দিয়েছিল। |
9-1 Samuel 15:10 : শমূয়েল প্রভুর কাছ থেকে একটি বার্তা পেল। |
9-1 Samuel 15:11 : প্রভু বললেন, “শৌল আমাকে মানছে না। ওকে রাজা করেছিলাম বলে আমার অনুশোচনা হচ্ছে। সে আমার কথামত কাজ করছে না।” শমূয়েল একথা শুনে ক্রুদ্ধ হল। সারারাত ধরে কেঁদে কেঁদে সে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল। |
9-1 Samuel 15:12 : পরদিন খুব ভোরে শমূয়েল শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গেল। কিন্তু লোকরা শমূয়েলকে বলল, “শৌল যিহূদার কর্মিল শহরে চলে গেছেন। সেখানে তিনি নিজের সম্মান বাড়াতে একটা পাথরের মূর্ত্তি তৈরী করেছেন। তিনি এখন নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সবশেষে তিনি গিল্গলে যাবেন।”তাদের কথা শুনে শমূয়েল শৌল যেখানে ছিলেন সেখানে গেল। তখন শৌল সবে অমালেকীয়দের কাছ থেকে নেওয়া জিনিসগুলোর প্রথম অংশ প্রভুকে নিবেদন করেছিল। এগুলো সবই শৌল হোমবলি রূপে প্রভুকে উত্সর্গ করেছিল। |
9-1 Samuel 15:13 : শমূয়েল শৌলের কাছে গেল। শৌল তাকে বললেন, “প্রভু তোমার মঙ্গল করুন। আমি প্রভুর নির্দেশ পালন করেছি।” |
9-1 Samuel 15:14 : তখন শমূয়েল বলল, “তাহলে আমি কিসের শব্দ শুনলাম? আমি কেন মেষ আর গরুর ডাক শুনতে পেলাম?” |
9-1 Samuel 15:15 : শৌল বললেন, “ওগুলো সৈন্যরা অমালেকীয়দের কাছ থেকে নিয়ে এসেছে। তারা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে হোমবলি হিসেবে উত্সর্গ করবার জন্য সবচেয়ে উত্কৃষ্ট মেষ আর গবাদি পশু প্রদান করেছিল। কিন্তু বাকি সবকিছুই আমরা শেষ করে দিয়েছি।” |
9-1 Samuel 15:16 : শমূয়েল বলল, “চুপ করো। গত রাত্রে প্রভু আমাকে যা বলেছিলেন শোনো।”শৌল বললেন, “বেশ, বলো তিনি কি বলেছিলেন।” |
9-1 Samuel 15:17 : শমূয়েল বলল, “অতীতে তুমি ভাবতে তুমি গুরুত্বহীন ছিলে। কিন্তু পরে তুমি হয়ে গেলে ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠীর নেতা। প্রভু ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে তোমাকে মনোনীত করেছিলেন। |
9-1 Samuel 15:18 : প্রভু তোমাকে একটা বিশেষ কাজে পাঠিয়েছিলেন। প্রভু বললেন, ‘যাও, সমস্ত অমালেকীয়দের হত্যা কর। কারণ তারা সবাই পাপী। সবাইকে শেষ করে দাও। তারা নিঃশেষে বিনষ্ট না হওয়া পর্য়ন্ত যুদ্ধ চালিযে যাও।’ |
9-1 Samuel 15:19 : কিন্তু তুমি প্রভুর সে কথা শোন নি। কারণ তুমি জিনিসপত্র নিজের কাছে রেখে দিতে চেয়েছিলে, তাই প্রভুর কথা অনুযায়ীকাজ করো নি। তাঁর মতে যা খারাপ, সেই কাজ তুমি করেছ!” |
9-1 Samuel 15:20 : শৌল বললেন, “কিন্তু আমি তো প্রভুর কথা পালন করেছি। তিনি আমায় যেখানে যেতে বলেছিলেন সেখানে গিয়েছিলাম। আমি অমালেকীয়দের সবাইকে হত্যা করেছি। কেবলমাত্র একজনকেই আমি এনে রেখেছি। তিনি হচ্ছেন তাদের রাজা, অগাগ। |
9-1 Samuel 15:21 : আর সৈন্যরা নিয়েছে সেরা মেষ এবং গরু। তাদের বলি দিতে হবে গিল্গলে তোমার প্রভু ঈশ্বরের কাছে।” |
9-1 Samuel 15:22 : শমূয়েল বলল, “কিন্তু প্রভু কিসে সবচেয়ে বেশী খুশী হন? হোমবলিতে না তাঁর আদেশ পালনে? বলির চেয়ে তাঁর আদেশ পালন করাই শ্রেয। ভেড়ার চর্বি উত্সর্গ করার চেয়ে ঈশ্বরের বাধ্য হওয়া অনেক ভালো। |
9-1 Samuel 15:23 : ঈশ্বরের অবাধ্যতা করা মাযাবিদ্য়ার পাপের মতোই খারাপ। একগুঁযেমি করা এবং তুমি যা চাও তা করা মূর্ত্তিপূজো করার পাপের মতোই ততটা খারাপ। প্রভুর আদেশ তুমি অমান্য করেছ। তাই তিনি তোমাকে রাজা হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করছেন।” |
9-1 Samuel 15:24 : এর উত্তরে শৌল শমূয়েলকে বললেন, “আমি পাপ করেছি। প্রভুর আদেশ আমি শুনি নি, তোমার কথাও আমি শুনি নি। লোকদের আমি ভয় পাই, তারা যা চায আমি তাই করেছি। |
9-1 Samuel 15:25 : আমার এই পাপের জন্য তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি। আমার সঙ্গে ফিরে চলো, যেন আমি প্রভুকে উপাসনা করতে পারি।” |
9-1 Samuel 15:26 : শমূয়েল বলল, “না তোমার সঙ্গে যাব না। তুমি প্রভুর আদেশ মানো নি। তাই প্রভুও ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে তোমাকে অস্বীকার করেছেন।” |
9-1 Samuel 15:27 : শমূয়েল যখন যাবার জন্য পা বাড়িযেছে, এমন সময় শৌল তাঁর পোশাকটি খপ করে ধরে ফেললেন এবং সেটি ছিঁড়ে গেল। |
9-1 Samuel 15:28 : শমূয়েল শৌলকে বলল, “তুমি যেভাবে আমার আলখাল্লা ছিঁড়ে নিয়েছ সেই ভাবেই প্রভু আজ ইস্রাযেল রাজ্য তোমার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছেন। তিনি এই রাজ্য দিয়েছেন তোমারই বন্ধুদের মধ্যে একজনকে। সে তোমার চেয়ে ভাল লোক। |
9-1 Samuel 15:29 : প্রভু হচ্ছেন ম্পস্রাযেলের ঈশ্বর। তিনি অমর। তিনি মিথ্য়া বলেন না, মত বদলান না। তিনি মানুষের মতো নন। মানুষই ঘন ঘন মত বদলায।” |
9-1 Samuel 15:30 : শৌল বললেন, “স্বীকার করছি, আমি পাপ করেছি। কিন্তু দয়া করে আমার সঙ্গে ফিরে আসুন। প্রবীণদের এবং ইস্রায়েলের লোকদের সামনে আমার সম্মান রাখুন যেন আমি আপনার প্রভু ও ঈশ্বরকে প্রণাম করতে পারি।” |
9-1 Samuel 15:31 : শমূয়েল শৌলের সঙ্গে ফিরে এলে শৌল প্রভুকে উপাসনা করলেন। |
9-1 Samuel 15:32 : শমূয়েল বলল, “অমালেকীয়দের রাজা অগাগকে আমার কাছে নিয়ে এসো।”অগাগ শমূযেলের কাছে এল। তাকে শিকল দিয়ে বাঁধা হয়েছিল। অগাগ মনে করল, “সে নিশ্চয়ই আমাকে মেরে ফেলবে না।” |
9-1 Samuel 15:33 : কিন্তু শমূয়েল অগাগকে বলল, “তোমার তরবারি কত মাযের কোল খালি করেছে। এবার তোমার মাযেরও সেই দশা হবে।” এই বলে শমূয়েল গিল্গলে প্রভুর সামনে অগাগকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলল। |
9-1 Samuel 15:34 : তারপর শমূয়েল রামাতে চলে গেল। শৌল গিবিয়ায় তাঁর বাড়িতে চলে গেলেন। |
9-1 Samuel 15:35 : এরপর শমূয়েল তার জীবনে আর কখনও শৌলকে দেখতে পায় নি। সে শৌলের জন্যে খুব দুঃখ বোধ করল। এমনকি প্রভুও শৌলকে ইস্রায়েলের রাজা করেছিলেন বলে খুব দুঃখ পেয়েছিলেন। |
9-1 Samuel 16:1 : প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “শৌলের জন্য আর কতদিন তুমি দুঃখ বোধ করবে? শৌলকে আমি ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে অস্বীকার করেছি একথা তোমাকে বলবার পরও তুমি ওর জন্য দুঃখ করছ। শিঙায তেল ভর্তি করে বৈত্লেহেমে যাও। তোমাকে আমি একজনের কাছে পাঠাচ্ছি। তার নাম যিশয় ও বৈত্লেহমেই থাকে। তারই একজন পুত্রকে আমি নতুন রাজা হিসাবে মনোনীত করেছি।” |
9-1 Samuel 16:2 : তখন শমূয়েল বলল, “আমি যদি যাই তবে শৌল জানতে পারবে। তখন সে আমায় হত্যা করতে চাইবে।”প্রভু বললেন, “তুমি বৈত্লেহমে যাও। সঙ্গে একটা বাছুরকে নিও। তুমি বলবে, ‘আমি প্রভুর কাছে একে বলি দিতে এসেছি।’ |
9-1 Samuel 16:3 : যিশয়কে এই বলি দেখতে আমন্ত্রণ জানাবে। তারপর কি করবে আমি বলে দেব। যাকে আমি দেখিয়ে দেব তার মাথায় জলপাই তেল ঢেলে দিও।” |
9-1 Samuel 16:4 : প্রভুর কথামতো শমূয়েল যা যা করার করল। সে বৈত্লেহমে চলে গেল। সেখানকার প্রবীণরা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে এল। শমূযেলের সঙ্গে দেখা করে তারা বলল, “আপনি কি শান্তির ভাব নিয়ে এসেছেন?” |
9-1 Samuel 16:5 : শমূয়েল জবাব দিল, “হ্যাঁ, আমি শান্তির ভাব নিয়েই এসেছি। আমি প্রভুর কাছে একটা বলি দিতে এসেছি। তোমরা তৈরী হও। আমার সঙ্গে বলিদানে এসো।” শমূয়েল যিশয় আর তার পুত্রদের প্রস্তুত করে বলিদানের অনুষ্ঠান দেখবার জন্য ডেকে আনল। |
9-1 Samuel 16:6 : যিশয় তার পুত্রদের নিয়ে পৌঁছলে শমূয়েল ইলিয়াবকে দেখতে পেল। শমূয়েল ভাবল, “এই সেই যাকে প্রভু বিশেষভাবে পছন্দ করেছেন।” |
9-1 Samuel 16:7 : কিন্তু প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “ইলীয়াব লম্বা আর সুন্দর দেখতে হলেও এভাবে ব্যাপারটা দেখো না। লোকে যেভাবে কোন জিনিস দেখে বিচার করে ঈশ্বর সেভাবে করেন না। লোকরা মানুষের বাইরের রূপটাই দেখে, কিন্তু ঈশ্বর দেখেন তার অন্তরের রূপ। সেদিক থেকে ইলীয়াব উপযুক্ত লোক নয়।” |
9-1 Samuel 16:8 : তখন যিশয় তার দ্বিতীয় পুত্র অবীনাদবকে ডাকলো। অবীনাদব শমূয়েলের পাশ দিয়ে হেঁটে গেল। শমূয়েল বলল, “না একেও প্রভু মনোনীত করেন নি।” |
9-1 Samuel 16:9 : একথা শুনে যিশয় শম্মকে শমূযেলের পাশে আসতে বলল। শমূয়েল বলল, “না এও চলবে না।” |
9-1 Samuel 16:10 : যিশয় শমূয়েলকে তার সাত পুত্রকে দেখাল। শমূয়েল বলল, “প্রভু এদের একজনকেও মনোনীত করেন নি।” |
9-1 Samuel 16:11 : শমূয়েল বলল, “তোমার পুত্র বলতে এরাই কি সব?”যিশয় বলল, “না আমার আরেকটা পুত্র আছে। সে সবচেয়ে ছোট, কিন্তু সে এখন মেষ চরাচ্ছে।”শমূয়েল বলল, “তাকে ডেকে নিয়ে এসো। সে না আসা পর্য়ন্ত আমরা কেউ খেতে বসব না।” |
9-1 Samuel 16:12 : যিশয় একজনকে পাঠালো তার ছোট ছেলেটিকে ডেকে আনতে। তার ছোট ছেলেটি দেখতে ভাল, রক্ত বর্ণের যুবক।প্রভু শমূয়েলকে বলল, “এই তো সেই ছেলে। ওঠো, একে অভিষেক করো।” |
9-1 Samuel 16:13 : শমূয়েল তেল ভর্তি শিঙাটা নিয়ে য়িশযের সব চেয়ে ছোট ছেলেটার মাথায় ঢেলে দিল। তার ভাই়রা এই ঘটনা দেখল। সেদিন থেকেই প্রভুর আত্মা মহাশক্তিতে দাযূদের ওপর এল। এরপর শমূয়েল রামায় ফিরে এল। |
9-1 Samuel 16:14 : প্রভুর আত্মা শৌলকে ছেড়ে চলে গেলেন। তখন শৌলের কাছে প্রভু এক দুষ্ট আত্মা পাঠালেন। এর ফলে তিনি বেশ মুশকিলে পড়লেন। |
9-1 Samuel 16:15 : শৌলের ভৃত্যরা তাঁকে বলল, “ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা এসে আপনাকে উদ্বিগ্ন করছে।” |
9-1 Samuel 16:16 : যদি আপনি আদেশ করেন তাহলে একজন বীণা বাজিযেকে খুঁজে আনি। প্রভুর কাছ থেকে দুষ্ট আত্মা এলে সে বীণা বাজাবে। তখন আপনি বেশ ভালো বোধ করবেন।” |
9-1 Samuel 16:17 : শৌল বললেন, “তাহলে একজন ভালো বাজিয়েকে আমার কাছে নিয়ে এসো।” |
9-1 Samuel 16:18 : একজন ভৃত্য বলল, “যিশয় নামে এক ব্যক্তি আছেন যিনি বৈত্লেহমে বাস করেন। আমি যিশয়ের পুত্রকে দেখেছি সে বীণা বাজাতে জানে। সে সাহসী এবং যুদ্ধ করতেও জানে। সে চতুর, দেখতেও সুন্দর। বয়ং প্রভু তার সহায়।” |
9-1 Samuel 16:19 : তাই শৌল য়িশযের কাছে কযেকজন দূত পাঠাল। তারা যিশয়কে বলল, “তোমার দায়ূদ নামে একজন পুত্র আছে, সে তোমার মেষদের দেখাশোনা করে। ওকে আমাদের কাছে ডেকে আনো।” |
9-1 Samuel 16:20 : যিশয় শৌলের জন্য কিছু উপহার জোগাড় করলো। যিশয় একটা গাধা, কিছু রুটি, এক বোতল দ্রাক্ষারস আর একটা কচি ছাগল দাযূদের হাতে করে শৌলের কাছে পাঠালো। |
9-1 Samuel 16:21 : দায়ূদ শৌলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে শৌল দায়ূদকে খুব ভালবেসে ফেললেন। দায়ূদ শৌলের সহকারী হয়ে শৌলের অস্ত্র বইতে লাগল। |
9-1 Samuel 16:22 : শৌল য়িশযের কাছে খবর পাঠিয়ে জানিয়ে দিলেন, “দায়ূদ এখানেই থাকুক, ামার কাজকর্ম করুক। আমার ওকে খুব ভাল লেগেছে। |
9-1 Samuel 16:23 : যখনই ঈশ্বর হতে শৌলের ওপর দুষ্ট আত্মা আসত, তখন দায়ূদ বীণা তুলে নিয়ে বাজাতেন। সঙ্গে সঙ্গে দুষ্ট আত্মা শৌলকে ছেড়ে যেত, আর তিনি আরাম বোধ করতেন।” |
9-1 Samuel 17:1 : পলেষ্টীয়রা যুদ্ধের জন্যে সৈন্য জড়ো করতে লাগল। যিহূদার সোখোতে তারা জড়ো হল। সোখোর আর অসেকার মাঝখানে তাদের তাঁবু পড়লো। জায়গাটা ছিল এফস্দম্মীম নামে একটা শহরে। |
9-1 Samuel 17:2 : শৌল এবং ইস্রায়েলের সৈন্যরা একত্র হল। এলা উপত্যকায তাদের তাঁবু পড়ল। শৌলের সৈন্যরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধের জন্যে তৈরী হল। |
9-1 Samuel 17:3 : পলেষ্টীয়রা একটা পাহাড়ে, ইস্রায়েলীয়রা আর একটাতে। উপত্যকাটা এই দুটো পাহাড়ের মাঝখানে। |
9-1 Samuel 17:4 : 4পলেষ্টীয়দের মধ্যে একজন বিজয়ী য়োদ্ধা ছিল। তার নাম গলিযাত্। সে গাত্ থেকে এসেছিল। তার দেহ বিশাল লম্বা ছিল |
9-1 Samuel 17:9 : ফুটেরও বেশী। পলেষ্টীয় শিবির থেকে সে বেরিয়ে এলো। |
9-1 Samuel 17:5 : তার মাথায় পিতলের শিরস্ত্রাণ। গায়ে মাছের আঁশের মতো দেখতে একটা বর্মা সেটা ছিল পিতলের তৈরী, ওজন প্রায এক |
9-1 Samuel 17:25 : পাউণ্ড। |
9-1 Samuel 17:6 : গলিযাতের পাযেও ছিল পিতলের বর্মা তার পিঠে ছিল পিতলের বর্শা। |
9-1 Samuel 17:7 : তার বর্শার কাঠের দণ্ডটা ছিল তাঁতির লাঠির মতো লম্বা। বর্শার ফলকের ওজন |
9-1 Samuel 17:15 : পাউণ্ড। গলিযাতের ঢাল নিয়ে তার সহকারী আগে আগে হাঁটত। |
9-1 Samuel 17:8 : প্রত্যেকদিন গলিযাত্ বেরিয়ে এসে ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের দিকে যুদ্ধের হুঙ্কার দিয়ে বলত, “কেন তোমরা যুদ্ধের জন্য সারবন্দি দাঁড়িয়ে? তোমরা শৌলের ভৃত্য। আমি একজন পলেষ্টীয়। একজনকে তোমরা বেছে নাও, তাকে আমার সঙ্গে লড়বার জন্য পাঠিয়ে দাও। |
9-1 Samuel 17:9 : যদি সে আমাকে হত্যা করে তাহলে আমরা পলেষ্টীয়রা সকলেই তোমাদের ক্রীতদাস হব। কিন্তু আমি যদি তাকে হত্যা করি, তাহলে তোমাদের সবাইকে আমাদের ক্রীতদাস হতে হবে এবং আমাদের সেবা করতে হবে।” |
9-1 Samuel 17:10 : পলেষ্টীয়রা আরো বলল, “এই আমি এখানে দাঁড়িয়ে ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করছি। সাহস থাকে তো একজনকে পাঠিয়ে দাও। আমার সঙ্গে হয়ে যাক এক হাত লড়াই।” |
9-1 Samuel 17:11 : শৌল এবং ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা গলিযাতের এই সব আস্ফালন শুনে বেশ ভয় পেয়ে গেল। |
9-1 Samuel 17:12 : দায়ূদ ছিলেন য়িশযের পুত্র। যিশয় যিহূদার বৈত্লেহমে ইফ্রাথা বংশের লোক। তার আট জন পুত্র ছিল। শৌলের আমলে যিশয় বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। |
9-1 Samuel 17:13 : য়িশযের প্রথম তিনটি পুত্র শৌলের সঙ্গে যুদ্ধে গিয়েছিল। প্রথম পুত্রের নাম ইলীয়াব। দ্বিতীয় জনের নাম অমীনাদব, তৃতীয় নাম শম্ম। |
9-1 Samuel 17:14 : সবচেয়ে যে ছোট তার নাম দায়ূদ। ওঁর তিন দাদা শৌলের সৈন্যদলে য়োগ দিয়েছিল। |
9-1 Samuel 17:15 : কিন্তু দায়ূদ মাঝে মধ্যেই শৌলকে ছেড়ে বৈত্লেহমে তাঁর পিতার কাছে চলে যেতেন। সেখানে তিনি মেষগুলোর দেখাশুনা করতেন। |
9-1 Samuel 17:16 : সেই পলেষ্টীয় (গলিযাত্) প্রতিদিন সকালে আর সন্ধ্যায বেরিয়ে এসে ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের সামনে দাঁড়িয়ে হাসি মস্করা করত। এইভাবে |
9-1 Samuel 17:40 : দিন কেটে গেল। |
9-1 Samuel 17:17 : একদিন যিশয় তাঁর পুত্র দায়ূদকে বললেন, “এক ঝুড়ি ভাজা শস্য আর দশটা গোটা পাঁউরুটি নিয়ে শিবিরে তোমার দাদাদের কাছে যাও। |
9-1 Samuel 17:18 : তাছাড়া দশ টুকরো পনিরও নিয়ে যেও। তোমাদের দাদারা যার অধীনে যুদ্ধ করছে সেই সেনাপতিকে এটা দেবে। সে এক হাজার জন সৈন্যের সেনাপতি। তোমার ভাম্পদের কুশল সংবাদ নাও। ওরা যে ভাল আছে সে রকম কিছু চিহ্ন নিয়ে এসো। |
9-1 Samuel 17:19 : তোমার ভাম্পরা এল। উপত্যকায শৌল আর ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের সঙ্গে রযেছে। তারা সেখানে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য রযেছে।” |
9-1 Samuel 17:20 : য়িশযের কথা মতো ভোরবেলায দায়ূদ একজন রাখালের ওপর মেষগুলো দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে খাবার দাবার নিয়ে চলে গেলেন। দায়ূদ শিবিরে ঠেলাগাড়ী চালিযে নিয়ে গেলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি দেখলেন সৈন্যরা যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে যাচ্ছে। ওরা সিংহনাদ দিতে থাকল। |
9-1 Samuel 17:21 : ইস্রায়েলীয়রা ও পলেষ্টীয়রা সারিবদ্ধ হয়েছিল এবং যুদ্ধের জন্য তৈরী হয়েছিল। |
9-1 Samuel 17:22 : যে খাবার - দাবার য়োগান দেয তার কাছে সব কিছু রেখে দিয়ে দায়ূদ বেরিয়ে পড়লেন। যেদিকে ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা দাঁড়িয়েছিল, সেদিকে তিনি দ্রুত চলে গেলেন। সেখানে গিয়ে তিনি দাদাদের খোঁজ খবর নিলেন। |
9-1 Samuel 17:23 : তারপর ওদের সঙ্গে দেখা করে দায়ূদ একথা বলতে লাগলেন। তারপর গাতের সেরা য়োদ্ধা গলিযাত্ তাঁবু থেকে বেরিয়ে এলো এবং যথারীতি ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে গর্জাতে লাগল। তার কথাগুলো দায়ূদ সবই শুনলেন। |
9-1 Samuel 17:24 : গলিযাতকে দেখে ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা ভয় পেয়ে পালিয়ে গেল। |
9-1 Samuel 17:25 : একজন ইস্রায়েলীয় বলল, “লোকটাকে দেখেছ? একবার ওর দিকে দেখ। গলিযাত্ বারবার বেরিয়ে আসছিল এবং ইস্রাযেলকে নিয়ে মজা করছিল। যে ওকে মেরে ফেলবে তাকে রাজা শৌল প্রচুর টাকা পয়সা দেবে। গলিযাতকে যে হত্যা করবে, তার সঙ্গে শৌল তার কন্যার বিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, শৌল তার পরিবারকে ইস্রায়েলে স্বাধীনথাকতে দেবে।” |
9-1 Samuel 17:26 : কাছে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “ও কি বলছে? পলেষ্টীয়কে হত্যা করলে, এবং ইস্রায়েলীয়দের লজ্জা মুছে দিতে পারলে কি পুরস্কার দেওয়া হবে? গলিযাত্ লোকটা কে? সে তো একজন বিদেশী ছাড়া কেউ নয়। সে একজন পলেষ্টীয় এই যা। সে কি করে ভাবতে পারল যে জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যদের বিরুদ্ধে গালমন্দ করতে পারে?” |
9-1 Samuel 17:27 : একথা শুনে ইস্রায়েলীয়রা গলিযাতকে মারলে কি পুরস্কার পাওয়া যাবে সেসব দায়ূদকে জানাল। |
9-1 Samuel 17:28 : দাযূদের বড়দা ইলীয়াব যখন শুনলো দায়ূদ সৈন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছে, তখন সে রেগে গেল। সে দায়ূদকে বলল, “তুমি এখানে কেন? কার হাতে তুমি মরুভূমি অঞ্চলে মেষগুলোর দেখাশুনার দায়িত্ব দিয়ে এলে? কেন এখানে এসেছ সেকি আমি জানি না ভেবেছ? তোমাকে যা বলা হয়েছিল সেগুলো তুমি করতে চাও না। তুমি শুধু যুদ্ধ দেখবার জন্যই এখানে আসতে চেয়েছ।” |
9-1 Samuel 17:29 : দায়ূদ বললেন, “আমি কি করেছি? আমি তো কোন অন্যায় করি নি, শুধু কথা বলছিলাম মাত্র।” |
9-1 Samuel 17:30 : এই কথা বলে দায়ূদ অন্যান্য লোকের দিকে ফিরে সেই একই কথা জিজ্ঞেস করলেন। তারা তাঁকে আগের মত ঐ একই উত্তর দিল। |
9-1 Samuel 17:31 : কযেক জন লোক দায়ূদকে কথা বলতে দেখল। তারা দায়ূদকে শৌলের কাছে নিয়ে গেলো। শৌলকে তারা বলল, দায়ূদ কি বলেছিল। |
9-1 Samuel 17:32 : দায়ূদ শৌলকে বললেন, “লোকরা যেন গলিযাতকে নিরুত্সাহিত করে না দেয। আমি তোমার ভৃত্য। আমি এই পলেষ্টীয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই।” |
9-1 Samuel 17:33 : শৌল বললেন, “তুমি তা করতে পারো না। তুমি তো একজন সৈনিকও নও।আর গলিযাত্ তো ছোটবেলা থেকেই যুদ্ধ করছে।” |
9-1 Samuel 17:34 : তখন দায়ূদ শৌলকে বললেন, “আমি তোমার ভৃত্য, পিতার মেষগুলোর দেখাশুনা করছিলাম। একটা সিংহ আর একটা ভাল্লুক পাল থেকে একটা মেষ নিয়ে গেল। |
9-1 Samuel 17:35 : আমি ঐ জন্তুটার পেছনে ধাওযা করে ওটার মুখ থেকে মেষটাকে টেনে বের করে নিয়ে এলাম। জন্তুটা আমার ওপর ঝাঁপিযে পড়ল। তখন আমি ওর দাড়ি ধরে টেনে জোরে এমন আঘাত করলাম যে সেটা মরে গেল। |
9-1 Samuel 17:36 : একটা সিংহ আর একটা ভাল্লুককে আমি শেষ করে দিয়েছি। এরপর আমি এই বিদেশী গলিযাতকে ওদের মতোই হত্যা করব। গলিযাত্ মরবেই কারণ সে জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যবাহিনীকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করেছে। |
9-1 Samuel 17:37 : প্রভু আমাকে সিংহ আর ভাল্লুকের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। এই পলেষ্টীয়দের হাত থেকে তিনি আমার রক্ষা করবেন।”শৌল দায়ূদকে বললেন, “তবে যাও। প্রভু তোমার সহায় হোন।” |
9-1 Samuel 17:38 : এই বলে শৌল তাঁর পোশাক দায়ূদকে পরিযে দিলেন। ওর মাথায় চড়িযে দিলেন পিতলের শিরস্ত্রাণ আর দেহে দিলেন পিতলের বর্ম। |
9-1 Samuel 17:39 : দায়ূদ কোমরে তরবারি নিলেন। একটু ঘুরে ফিরে বেড়িযে দেখলেন সব ঠিক আছে কি না। তিনি শৌলের পোশাকটা পরার চেষ্টা করলেন কিন্তু তিনি এমন ভারী জিনিস পরতে অভ্য়স্ত ছিলেন না।তাই তিনি শৌলকে বললেন, “আমি এইসব জিনিস নিয়ে লড়াই করতে পারব না। আমি ওগুলোতে অভ্য়স্ত নই।” তারপর তিনি ওগুলো সব খুলে ফেললেন। |
9-1 Samuel 17:40 : তারপর তিনি তাঁর বেড়ানোর ছড়িটা হাতে নিয়ে নদীর ধারে গিয়ে পাঁচটা নিটোল নুড়ি পাথর তুলে নিলেন। সেগুলো তিনি মেষপালকের থলেতে রাখলেন। হাতে গুলতি নিয়ে গেলেন গলিযাতের মুখোমুখি হতে। |
9-1 Samuel 17:41 : পলেষ্টীয় ধীরে ধীরে দাযূদের দিকে এগিয়ে এলো। গলিযাতের অস্ত্রবাহক ঢাল নিয়ে ওর আগে - আগে চললো। |
9-1 Samuel 17:42 : দায়ূদকে দেখে গলিযাত্ হাসলো। সে দেখল দায়ূদ ঠিক সৈন্য নয়, কিন্তু লাল মুখো একজন সুদর্শন বালক। |
9-1 Samuel 17:43 : গলিযাত্ দায়ূদকে জিজ্ঞাসা করল, “এই লাঠিটা কিসের জন্য? তুমি কি এটা দিয়ে কুকুরের মতো আমায় তাড়াবে?” এই বলে সে তার দেবতাদের নাম নিয়ে দায়ূদকে গালমন্দ করতে লাগল। |
9-1 Samuel 17:44 : গলিযাত্ বলল, “আয তোর দেহটাকে নিয়ে পাখি আর জানোযারদের খাওয়াই।” |
9-1 Samuel 17:45 : দায়ূদ পলেষ্টীয়কে বললেন, “তুমি তো তরবারি, বর্শা, বল্লম নিয়ে আমার কাছে এসেছ। কিন্তু আমি এসেছি সর্বশক্তিমান প্রভুর নাম নিয়ে। এই প্রভুই ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের ঈশ্বর। তুমি তাঁকে নিয়ে অনেক অকথা কুকথা বলেছ। |
9-1 Samuel 17:46 : আজ প্রভুর দয়ায় আমি তোমাকে পরাজিত করব। তোমাকে আজ আমি হত্যা করব। তোমার মুণ্ড কেটে নিয়ে জন্তু জানোযারদের আর পাখীদের খাওয়াব। শুধু তুমি নয়, সব পলেষ্টীয়দের ঐ একই অবস্থা করব। তখন পৃথিবীর সমস্ত মানুষ জানবে, ইস্রায়েলে একজন ঈশ্বর আছেন। |
9-1 Samuel 17:47 : এখানে যারা এসেছে তারা সবাই জানবে যে মানুষকে বাঁচাতে প্রভুর কোন তরবারি বা বল্লমের দরকার হয় না। এতো প্রভুরই যুদ্ধ। পলেষ্টীয়দের হারাতে প্রভুই আমাদের সহায়ক।” |
9-1 Samuel 17:48 : গলিযাত্ দায়ূদকে আক্রমণ করতে উদ্যত হল। সে একটু একটু করে দাযূদের কাছে ঘেঁষে এল। তখন দায়ূদ ওর দিকে ছুটে গেলেন। |
9-1 Samuel 17:49 : দায়ূদ থলে থেকে একটা পাথর বের করলেন। সেটাকে তাঁর গুলতির মধ্যে রেখে তিনি ছুঁড়লেন। গুলতি থেকে পাথরটি ছিটকে গিয়ে একেবারে গলিযাতের দু চোখের মাঝখানে পড়ে ওর মাথার ভেতর অনেকখানি ঢুকে গেল। গলিযাত্ মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে গেল। |
9-1 Samuel 17:50 : এইভাবে শুধু একটা গুলতি আর একটি পাথর দিয়েই দায়ূদ এই পলেষ্টীয়কে হারিয়ে দিলেন এবং আঘাত করে মেরে ফেললেন। দাযূদের হাতে কোন তরবারি ছিল না। |
9-1 Samuel 17:51 : তাই দায়ূদ গলিযাতের শরীরের কাছে দৌড়ে গেলেন। তিনি গলিযাতের তরবারির খাপ থেকে তরবারি বের করে গলিযাতের মুণ্ড কেটে ফেললেন। এই ভাবেই তিনি গলিযাতকে হত্যা করলেন।তাদের নাযককে মৃত দেখে অন্যান্য পলেষ্টীয়রা দৌড় লাগাল। |
9-1 Samuel 17:52 : ইস্রায়েলীয়রা আর যিহূদার সৈন্যরা হৈ - হৈ করতে করতে পলেষ্টীয়দের তাড়া করল। এই ভাবে তারা ধাওযা করল গাত্ শহরের সীমানা আর ইক্রোণের ফটক পর্য়ন্ত। তারা অনেক পলেষ্টীয়কে হত্যা করল। শারাইমের রাস্তা ধরে গাত্ আর ইক্রোণ পর্য়ন্ত তাদের মৃতদেহ ছড়িয়ে পড়েছিল। |
9-1 Samuel 17:53 : পলেষ্টীয়দের তাড়িয়ে নিয়ে যাবার পর ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের শিবিরে ফিরে এসে অনেক জিনিসপত্র লুঠ করল। |
9-1 Samuel 17:54 : গলিযাতের মুণ্ড নিয়ে দায়ূদ জেরুশালেমে চলে এলেন। তিনি গলিযাতের অস্ত্রশস্ত্রগুলো নিজের তাঁবুতে রেখে দিলেন। |
9-1 Samuel 17:55 : শৌল দায়ূদকে গলিযাতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেতে দেখলেন। সেনাপতি অবনেরকে শৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “অব্নের, এ বালকটির পিতা কে বলো তো?”অব্নের বলল, “দিব্য করে বলছি, আমি জানি না.” |
9-1 Samuel 17:56 : রাজা শৌল বললেন, “ওর পিতাকে খুঁজে বের করো।” |
9-1 Samuel 17:57 : গলিযাতকে হত্যা করে দায়ূদ যখন ফিরে এলেন তখন অবনের তাকে শৌলের কাছে নিয়ে এলো। দাযূদের হাতে তখন গলিযাতের কাটা মুণ্ড। |
9-1 Samuel 17:58 : শৌল দায়ূদকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যুবক তোমার পিতা কে?”দায়ূদ উত্তর দিলেন, “আমি আপনার ভৃত্য বৈত্লেহমের য়িশযের পুত্র।” |
9-1 Samuel 18:1 : শৌলের সঙ্গে দাযূদের কথাবার্তার পর শৌল দাযূদের বেশ অন্তরঙ্গ হয়ে উঠলেন। তিনি নিজেকে যতটা ভালবাসতেন, দায়ূদকেও ততটা ভালবেসেছিলেন। |
9-1 Samuel 18:2 : সে দিন থেকে, শৌল দায়ূদকে তাঁর কাছে রেখে দিলেন। তিনি দায়ূদকে তাঁর পিতার কাছে ফিরে যেতে দিলেন না। |
9-1 Samuel 18:3 : য়োনাথন দায়ূদকে খুব ভালবাসত। সে দাযূদের সঙ্গে একটা চুক্তি করল। |
9-1 Samuel 18:4 : য়োনাথন নিজের গা থেকে কোট খুলে দায়ূদকে দিল। তার পোশাকও সে দায়ূদকে দিয়ে দিল। এমন কি সে তার ধনুক, তরবারি ও কোমরবন্ধও ওঁকে দিয়ে দিল। |
9-1 Samuel 18:5 : শৌল দায়ূদকে নানা জায়গায় যুদ্ধ করতে পাঠালেন। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দায়ূদ ভালভাবেই সফল হলেন। তারপর শৌল তাঁকে সৈন্যদের অধিনাযক করে দিলেন। এতে সকলেই খুশী হল, এমনকি শৌলের সৈন্যবাহিনীর পদস্থ কর্মীরাও। |
9-1 Samuel 18:6 : দায়ূদ পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে ইস্রায়েলের প্রতিটি শহর থেকে মেয়েরা তাঁকে দেখবার জন্য বেরিয়ে এল। তারা তবলা ও বীণা বাজিযে আনন্দ উল্লাস করল এবং নাচল। তারা এসব শৌলের সামনেই করল। |
9-1 Samuel 18:7 : স্ত্রীলোকরা গাইল, “শৌল বধিলেন শত্রু হাজারে হাজারে, আর দায়ূদ বধিলেন অয়ুতে অয়ুতে।” |
9-1 Samuel 18:8 : তাদের এই গান শুনে শৌলের মন খারাপ হয়ে গেল। তিনি খুব রেগে গেলেন। তিনি ভাবলেন, “স্ত্রীলোকরা ভাবছে যে দায়ূদ লাখে লাখে শত্রু বধ করছে আর আমি মেরেছি কেবল হাজারে হাজারে। রাজত্ব ছাড়া আর কি সে পেতে পারে?” |
9-1 Samuel 18:9 : এরপর সেই দিন থেকে শৌল দায়ূদকে খুব সতর্কভাবে লক্ষ্য করতে লাগলেন। |
9-1 Samuel 18:10 : ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা এসে পরদিন শৌলের ওপর ভর করল। শৌল বাড়িতে প্রলাপ বকতে লাগলেন। দায়ূদ রোজকার মত বীণা বাজালেন। |
9-1 Samuel 18:11 : কিন্তু শৌলের হাতে বর্শা ছিল। তিনি মনে মনে ভাবলেন, “আমি দায়ূদকে দেওয়ালের সঙ্গে গেঁথে দেব।” তিনি দু - দুবার দাযূদের দিকে বর্শা ছুঁড়েও দিলেন। কিন্তু দুবারই দায়ূদ নিজেকে বাঁচিয়েছিলেন। |
9-1 Samuel 18:12 : প্রভু দাযূদের সহায় ছিলেন। তিনি শৌলকে ত্যাগ করেছিলেন। শৌল তাই দায়ূদকে ভয় করতেন। |
9-1 Samuel 18:13 : তিনি দায়ূদকে তাঁর কাছ থেকে দূর করে দিলেন। শৌল তাঁকে এক হাজার সৈন্যের অধিনাযক করেছিলেন। দায়ূদ যুদ্ধে তাঁদের নেতৃত্ব দিলেন। |
9-1 Samuel 18:14 : প্রভু ছিলেন দাযূদের সহায়। তাই দায়ূদ সব কাজেই সফল হতেন। |
9-1 Samuel 18:15 : শৌল দাযূদের সাফল্য দেখতে দেখতে দায়ূদকে আরও বেশী ভয় করতে লাগলেন। |
9-1 Samuel 18:16 : কিন্তু ইস্রাযেল ও যিহূদার সমস্ত লোক দায়ূদকে ভালোবাসত। কারণ দায়ূদ তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যেতেন এবং তাদের হয়ে যুদ্ধ করতেন। |
9-1 Samuel 18:17 : এদিকে শৌল দায়ূদকে মারতে চান। তিনি একটা মতলব আঁটলেন। তিনি দায়ূদকে বললেন, “আমার বড় মেয়ের নাম মেরব। তুমি তাকে বিয়ে কর। তাহলে তুমি আরও শক্তিশালী সৈন্য হতে পারবে। তুমি আমার পুত্রের মতো হবে। প্রভুর জন্য সব যুদ্ধক্ষেত্রে তুমি যুদ্ধ করবে!এসব ছিল শৌলের ছল চাতুরি। আসলে তিনি ভেবেছিলেন, “আমাকে আর দায়ূদকে মারতে হবে না। পলেষ্টীয়দেরই এগিয়ে দেব আমার হয়ে ওকে মারবার জন্য।” |
9-1 Samuel 18:18 : দায়ূদ বললেন, “আমি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ পরিবার থেকে আসি নি। আমি কোন গণ্যমান্য ব্যক্তি নই। আমি রাজকন্যাকে বিয়ে করার য়োগ্য নই।” |
9-1 Samuel 18:19 : তাই দাযূদের সঙ্গে শৌলের কন্যা মেরবের বিয়ের সময় হলে শৌল মহোলা দেশের অদ্রীযেলের সঙ্গে তার বিয়ে দিলেন। |
9-1 Samuel 18:20 : শৌলের আরেকটি কন্যা মীখল দায়ূদকে ভালবাসত। লোকরা শৌলকে জানাল, মীখল দায়ূদকে ভালবাসে। শৌল শুনে খুশী হলেন। |
9-1 Samuel 18:21 : শৌল চিন্তা করলেন, “আমি এবার মীখলকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করব। আমি দাযূদের সঙ্গে ওর বিয়ে দেব। তারপর পলেষ্টীয়রা ওকে মেরে ফেলবে।” এই ভেবে তিনি দায়ূদকে দ্বিতীয় বার বললেন, “আমার কন্যাকে তুমি আজই বিয়ে করো।” |
9-1 Samuel 18:22 : শৌল তাঁর পদস্থ কর্মচারীদের আদেশ দিলেন, “দাযূদের সঙ্গে আলাদা করে গোপনভাবে কথা বলবে। তাকে বলবে, ‘রাজার তোমাকে খুব পছন্দ হয়েছে। তাঁর উচ্চপদস্থ কর্মচারীরাও তোমাকে পছন্দ করে। রাজার কন্যাকে তুমি বিয়ে করো।”‘ |
9-1 Samuel 18:23 : আধিকারিকরা দায়ূদকে সেইমত সব কিছু বলল। দায়ূদ বললেন, “তুমি কি মনে কর রাজার জামাতা হওয়া সোজা কথা? রাজকন্যার উপযুক্ত টাকাপয়সা খরচ করার সাধ্য আমার নেই। আমি নেহাত একজন সামান্য গরীব ছেলে।” |
9-1 Samuel 18:24 : তারা শৌলকে দাযূদের উত্তর জানাল। |
9-1 Samuel 18:25 : শৌল তাদের বললেন, “তোমরা দায়ূদকে বলবে, ‘দায়ূদ, রাজকন্যার বিয়েতে কোন টাকপয়সা নেবেন না। শৌল তাঁর শত্রুদের শাযেস্তা করতে চান। তাই কনের দাম হবে |
9-1 Samuel 18:10 : 0 পলেষ্টীয়ের লিঙ্গত্বক,”‘ এটাই ছিল শৌলের গোপন মতলব। সে ভেবেছিল এর ফলে পলেষ্টীয়রা তাকে হত্যা করবে। |
9-1 Samuel 18:26 : শৌলের আধিকারিকরা দায়ূদকে এ সম্বন্ধে জানাল। দায়ূদ রাজার জামাতা হবার সুয়োগ পেয়ে খুশী হলেন। সেই জন্যেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে কিছু করতে চাইলেন। |
9-1 Samuel 18:27 : দায়ূদ তাঁর লোকদের নিয়ে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলেন। তিনি |
9-1 Samuel 18:20 : 0 জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করলেন। আর তাদের লিঙ্গত্বক শৌলকে উপহার দিলেন। তাঁকে রাজার জামাতা হবার জন্য, এই মূল্য দিতে হল।শৌলের কন্যা মীখলের সঙ্গে দাযূদের বিয়ে হয়ে গেল। |
9-1 Samuel 18:28 : শৌল বুঝতে পারলেন, প্রভু দাযূদের সহায়। তিনি বুঝতে পারলেন মীখল দায়ূদকে ভালবাসে। |
9-1 Samuel 18:29 : তাই শৌল দায়ূদকে আরও বেশী ভয় পেয়ে গেলেন এবং সারাজীবন তাঁর শত্রু হিসেবে রযে গেলেন। |
9-1 Samuel 18:30 : পলেষ্টীয় সেনাপতিরা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতেই থাকল। কিন্তু প্রতিবারই দায়ূদ তাদের যুদ্ধে হারিয়ে দিলেন। এই ভাবে তিনি শৌলের সবচেয়ে সেরা অধিকর্তা হয়ে উঠলেন। দায়ূদ বেশ বিখ্যাত হয়ে গেলেন। |
9-1 Samuel 19:1 : শৌল তাঁর পুত্র য়োনাথনকে এবং আধিকারিকদের দায়ূদকে হত্যা করবার আদেশ দিলেন। কিন্তু য়োনাথন দায়ূদকে ভালবাসত। |
9-1 Samuel 19:2 : য়োনাথন দায়ূদকে সাবধান করে বলল, “সাবধান! শৌল তোমাকে মারবার সুয়োগ খুঁজছে। সকাল বেলা মাঠে গিয়ে লুকিয়ে থেকো। আমি পিতাকে নিয়ে সেই মাঠে আসব এবং তুমি যেখানে লুকিয়ে থাকবে তার কাছে গিয়ে দাঁড়াব। আমি তোমার ব্যাপারে পিতার সঙ্গে কথা বলব। তারপর আমি কি জানলাম তা তোমাকে জানাব।” |
9-1 Samuel 19:3 : - |
9-1 Samuel 19:4 : পিতার সঙ্গে য়োনাথন কথা বলতে লাগল। সে দাযূদের গুণগান করল। সে পিতাকে বলল, “তুমি হচ্ছ রাজা। দায়ূদ তোমার দাস। সে তোমার কোন ক্ষতি করে নি, সুতরাং তার প্রতি তুমি অন্যায় ব্যবহার করো না। সে তো সর্বদা তোমার ভালই করেছে। |
9-1 Samuel 19:5 : পলেষ্টীয়কে হত্যা করতে গিয়ে সে তার জীবন বিপন্ন করেছিল। আর প্রভু ইস্রায়েলীয়দের জন্য মহাবিজয় এনেছিলেন। তুমি স্বচক্ষে এসব দেখেছিলে, তুমি খুশিও হয়েছিলে। তাহলে কেন তুমি দায়ূদকে মারতে চাও? সে নির্দোষ। তাকে মেরে ফেলার কোন কারণই দেখছি না।” |
9-1 Samuel 19:6 : শৌল য়োনাথনের কথা শুনলেন। শুনে তিনি প্রতিজ্ঞা করে বললেন, “যেমন প্রভুর অস্তিত্ব নিশ্চিত তেমনই নিশ্চিত হও যে দায়ূদকে হত্যা করা হবে না।” |
9-1 Samuel 19:7 : য়োনাথন দায়ূদকে ডেকে সব বলল। সে দায়ূদকে শৌলের কাছে ডেকে আনল। তাই দায়ূদ আগের মতই শৌলের কাছে থেকে গেলেন। |
9-1 Samuel 19:8 : আবার যুদ্ধ শুরু হল। দায়ূদ পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়তে গেলেন। তিনি তাদের হারিয়ে দিলেন। তারা পালিয়ে গেল। |
9-1 Samuel 19:9 : কিন্তু প্রভুর কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা শৌলের উপর এল। তিনি ঘরে বসেছিলেন। তাঁর হাতে ছিল বল্লম। দায়ূদ বীণা বাজাচ্ছিলেন। |
9-1 Samuel 19:10 : শৌল বল্লম ছুঁড়ে দায়ূদকে দেওয়ালে গেঁথে দিতে গেলেন, কিন্তু দায়ূদ লাফ দিয়ে সরে গেলেন। বল্লম ফসকে গিয়ে দেওয়ালে বিঁধে গেল। সেই রাত্রে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন। |
9-1 Samuel 19:11 : দাযূদের বাড়িতে শৌল লোক পাঠালেন। তারা সারারাত দাযূদের বাড়ির কাছাকাছি পাহারা দিল। তারা সকালে দায়ূদকে হত্যা করবে বলে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু দাযূদের স্ত্রী মীখল দায়ূদকে সাবধান করে দিয়েছিল। সে বলল, “আজ রাত্রেই তুমি পালিয়ে গিয়ে নিজেকে বাঁচাও না হলে ওরা কালই তোমাকে মেরে ফেলবে।” |
9-1 Samuel 19:12 : মীখল দায়ূদকে জানালা দিয়ে নীচে নামতে সাহায্য করল। দায়ূদ পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পেলেন। |
9-1 Samuel 19:13 : মীখল গৃহদেবতাকে নিয়ে তাকে কাপড় পরাল। তারপর বিছানার ওপর মূর্ত্তিটাকে রাখল। মূর্ত্তির মাথায় কিছু ছাগলের চুলও ছড়িয়ে দিল। |
9-1 Samuel 19:14 : শৌল দায়ূদকে ধরে আনার জন্য লোক পাঠালেন। কিন্তু মীখল বলল, “দাযূদের অসুখ করেছে।” |
9-1 Samuel 19:15 : লোকরা শৌলকে একথা বলতে শৌল আবার তাদের দায়ূদকে আনার জন্য পাঠালেন। শৌল তাদের বলে দিলেন, “দায়ূদকে শুয়ে থাকা অবস্থাতেই নিয়ে আসবে। আমি তাকে হত্যা করব।” |
9-1 Samuel 19:16 : আবার তারা দাযূদের বাড়ি গেল। বাড়ির ভেতর ঢুকে ঘরে গিয়ে দেখল বিছানার ওপর দেবতার মূর্ত্তি, মূর্ত্তির মাথায় ছাগলের চুল। |
9-1 Samuel 19:17 : শৌল মীখলকে বললেন, “তুমি কেন আমার সঙ্গে এইভাবে চালাকি করলে? কেন তুমি আমার শত্রুকে পালাতে দিলে? দায়ূদ তো পালিয়ে গেছে!”মীখল বলল, “দায়ূদ বলেছিলেন, আমি যদি ওকে পালাতে সাহায্য না করি তাহলে তিনি আমাকে হত্যা করবেন।” |
9-1 Samuel 19:18 : দায়ূদ পালিয়ে গিয়ে রামায় শমূযেলের কাছে এলেন। শৌল তাঁর প্রতি কি করেছেন সে সব দায়ূদ শমূয়েলকে বললেন। তারপর তারা দুজন তাঁবুগুলোর দিকে গেলেন। সেখানে ভাববাদীরা থাকত। সেখানেই দায়ূদ থেকে গেলেন। |
9-1 Samuel 19:19 : শৌল জেনেছিলেন দায়ূদ রামার কাছাকাছি তাঁবুগুলোর মধ্যেই আছেন। |
9-1 Samuel 19:20 : শৌল দায়ূদকে বন্দী করে আনার জন্য লোক পাঠালেন। কিন্তু তারা যখন সেখানে এলো, তখন একদল ভাববাদী ভাববাণী করছিল। তাদের নেতা শমূয়েল সেখানে দাঁড়িয়ে। শৌলের লোকদের ওপরও ঈশ্বরের আত্মা এলেন, তাই তারাও ভাববাণী করতে শুরু করল। |
9-1 Samuel 19:21 : শৌলের কানে এ খবর পৌঁছল। তিনি তখন অন্য একদল লোক পাঠালেন। তারাও সেখানে গিয়ে ভাববাণী করতে শুরু করল। তারপর শৌল তৃতীয় একদল প্রতিনিধি পাঠালেন। তারাও ভাববাণী করতে শুরু করল। |
9-1 Samuel 19:22 : অবশেষে শৌল নিজেই রামায় গেলেন। যেখানে ফসল ঝাড়াই হয় তার পাশে একটি বড় কুযোর দিকে শৌল চলে এলেন। কুযোটা ছিল সেখু নামের একটা জায়গায়। শৌল সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “শমূয়েল আর দায়ূদ কোথায়?”লোকরা বলল, “তারা রামার কাছে তাঁবুগুলোতে রযেছে।” |
9-1 Samuel 19:23 : শৌল তখন রামার কাছে তাঁবুগুলোর দিকে গেলেন। এবার শৌলের উপরও ঈশ্বরের আত্মা নেমে এলো। শৌল ভাববাণী করতে শুরু করলেন। রামার তাঁবুগুলোর দিকে রাস্তায় যতই এগোলেন ততই তিনি আরো বেশী করে ভাববাণী করতে লাগলেন। |
9-1 Samuel 19:24 : তারপর শৌল তাঁর পোশাক খুলে ফেললেন এবং শমূযেলের সামনেই ভাববাণী করতে লাগলেন। সমস্ত দিন সমস্ত রাত তিনি নগ্ন হয়ে পড়ে রইলেন।সেই জন্য লোকে বলে, “শৌল কি তবে ভাববাদীদের মধ্যে একজন?” |
9-1 Samuel 20:1 : রামার তাঁবুগুলো থেকে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন। য়োনথনের কাছে গিয়ে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি কি অন্যায় করেছি? কি আমার অপরাধ? কেন তোমার পিতা আমায় হত্যা করতে চাইছে?” |
9-1 Samuel 20:2 : য়োনাথন বলল, “এ হতেই পারে না। আমার পিতা তোমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছে না। আমাকে কিছু না বলে সে কোন কাজই করে না। সে কাজ যতই সামান্য হোক, কি জরুরীই হোক, আমাকে সে সবই বলে। তাহলে তোমাকে মারার কথাই বা আমাকে সে বলবে না কেন? না, তোমার কথা ঠিক নয়।” |
9-1 Samuel 20:3 : কিন্তু দায়ূদ বললেন, “তোমার পিতা ভালভাবেই জানে যে আমি তোমার বন্ধু। তোমার পিতা মনে মনে ভেবেছে, য়োনাথন যেন আমার মতলব জানতে না পারে। যদি সে এর সম্পর্কে জানতে পারে, তার হৃদয় দুঃখে ভরে যাবে এবং সে দায়ূদকে জানিয়ে দেবে। কিন্তু তুমি এবং প্রভু যেমন নিশ্চিতভাবে জীবিত সেই রকম নিশ্চিতভাবেই আমার মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে।” |
9-1 Samuel 20:4 : য়োনাথন বলল, “তুমি যা বলবে আমি তাই করব।” |
9-1 Samuel 20:5 : দায়ূদ বললেন, “শোন, কাল অমাবস্যার উত্সব। আমার রাজার সঙ্গে খাবার কথা আছে। কিন্তু সন্ধ্য়ে অবধি আমায় মাঠে লুকিয়ে থাকতে হবে। |
9-1 Samuel 20:6 : যদি তোমার পিতার চোখে পড়ে যে আমি নেই তবে তাঁকে বোলো, ‘দায়ূদ বৈত্লেহমে বাড়িতে যেতে চাইছিল, কারণ এই উপলক্ষ্যে ওর বাড়িতে খাওয়া দাওযা আছে। সে আমার কাছে বৈত্লেহমে তার পরিবারের কাছে যাবার অনুমতি চেয়েছিল।’ |
9-1 Samuel 20:7 : যদি তোমার পিতা বলেন, ‘ভালই তো’ তবেই বুঝব আমার বিপদ কেটে গেছে। আর যদি রেগে যান তাহলে জেনে রেখো তিনি আমায় মারবেনই। |
9-1 Samuel 20:8 : য়োনাথন আমায় দয়া করো। আমি তোমার ভৃত্য। প্রভুর সামনে তুমি আমার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলে। যদি আমি দোষী হই, তুমি তোমার নিজের হাতে আমাকে হত্যা কোরো, কিন্তু তোমার পিতার কাছে আমাকে নিয়ে যেও না।” |
9-1 Samuel 20:9 : য়োনাথন বলল, “না না, এ হতেই পারে না। যদি পিতার তোমাকে মারার মতলব আমি জানতে পারি তাহলে তোমায় সাবধান করে দেব।” |
9-1 Samuel 20:10 : দায়ূদ বললেন, “তোমার পিতা যদি তোমাকে কর্কশভাবে উত্তর দেন তাহলে কে আমায় সাবধান করবে?” |
9-1 Samuel 20:11 : য়োনাথন বলল, “চলো, মাঠে যাওয়া যাক।” য়োনাথন আর দায়ূদ মাঠে গেল। |
9-1 Samuel 20:12 : য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভুর সামনে আমি দিব্য দিয়ে বলছি, পিতা তোমাকে নিয়ে কি ভাবেন সব আমি জেনে নেব; তোমার ভাল চাইলেও জানতে পারব, মন্দ চাইলেও জানতে পারব। তারপর তিন দিনের মধ্যে তোমার কাছে মাঠে খবর পাঠাব। |
9-1 Samuel 20:13 : পিতা তোমাকে মারতে চাইলে তোমায জানাব। তুমি তখন বিনা বাধায পালাতে পারবে। আমার কথা রাখতে না পারলে প্রভু আমায় শাস্তি দেবেন। প্রভু তোমার সহায় হোন, যেমন তিনি আমার পিতার সহায়। |
9-1 Samuel 20:14 : যতদিন বেঁচে থাকবে আমার প্রতি দয়াশীল থেকো। |
9-1 Samuel 20:15 : আমার মৃত্যুর পর আমার পরিবারকে তোমার দয়া দেখাতে ভুলো না। প্রভু তোমার সমস্ত শত্রুকে পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন করবেন। |
9-1 Samuel 20:16 : তখন য়োনাথন দাযূদের পরিবারের সঙ্গে এই মর্মে এক চুক্তি করল: দাযূদের শত্রুদের প্রভু যেন শাস্তি দেন।” |
9-1 Samuel 20:17 : এই বলে য়োনাথন দাযূদের কাছ থেকে আবার শুনতে চাইল ভালবাসার সেই অঙ্গীকার। য়োনাথন দায়ূদকে ভালবাসে, যেমন সে নিজেকে ভালবাসে। |
9-1 Samuel 20:18 : য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “কাল অমাবস্যার উত্সব। তোমার আসন ফাঁকা থাকবে। তাহলেই আমার পিতা বুঝবে যে তুমি চলে গেছ। |
9-1 Samuel 20:19 : তৃতীয় দিনে ঐ একই জায়গায় তুমি লুকিয়ে থাকবে। সেদিন ঝামেলা হতে পারে। পাহাড়ের ধারে অপেক্ষা করবে। |
9-1 Samuel 20:20 : ঐ দিন আমি পাহাড়ে উঠবো। দেখাব যে আমি তীর ছুঁড়ে লক্ষ্যভেদ করছি। আমি কযেকটি তীর ছুঁড়বো। |
9-1 Samuel 20:21 : তারপর ঠিক্ঠাক্ চললে আমি ওকে বলব, ‘তুই বহু দূরে চলে গেছিস, তীরগুলো তো আমার অনেক কাছেই রযেছে। যা আবার ফিরে এসে ওগুলো নিয়ে আয।’ যদি তা বলি তবে তুমি আর লুকিয়ে থেকো না। প্রভুর দিব্য সেক্ষেত্রে তোমার কোন বিপদ হবে না। |
9-1 Samuel 20:22 : কিন্তু বিপদ যদি থাকে তাহলে ছেলেটিকে বলবো, ‘তীরগুলো আরো দূরে পড়ে আছে। যা ওগুলো নিয়ে আয।’ তখন তুমি অবশ্যই চলে যাবে। কারণ প্রভুই তোমাকে দূরে পাঠাচ্ছেন। |
9-1 Samuel 20:23 : তোমার ও আমার মধ্যে এই চুক্তি হল, তা মনে রেখো। প্রভু চিরজীবন আমাদের মধ্যে সাক্ষী রইলেন।” |
9-1 Samuel 20:24 : দায়ূদ মাঠে লুকিয়ে পড়লেন।অমাবস্যার উত্সবের দিন এলে রাজা খেতে বসলেন। |
9-1 Samuel 20:25 : দেওয়ালের পাশেই সচরাচর যে আসনেতে বসতেন রাজা সেই আসনেই বসলেন। য়োনাথন শৌলের মুখোমুখি বসেছিল। শৌলের পাশে বসেছিল অব্নের। কিন্তু দাযূদের জায়গাটা খালি ছিল। |
9-1 Samuel 20:26 : সেদিন শৌল কিছুই বললেন না। ভাবলেন, “নিশ্চয়ই দাযূদের কিছু হয়েছে। তাই সে শুচি হতে পারে নি।” |
9-1 Samuel 20:27 : পরদিন মাসের দোসরা। সেদিনও আবার দাযূদের জায়গা খালি রইল। শৌল তাঁর পুত্র য়োনাথনকে বললেন, “য়িশযের পুত্রকে কাল দেখি নি, আজও দেখছি না কেন? অমাবস্যার উত্সবে সে আসছে না কেন?” |
9-1 Samuel 20:28 : য়োনাথন বলল, “দায়ূদ আমাকে বলেছিল ও বৈত্লেহমে যাবে। |
9-1 Samuel 20:29 : সে বলেছিল, ‘আমি যাব, তুমি অনুমতি দাও। বৈত্লেহেমে আমার বাড়ির সকলে য়জ্ঞে বলি দেবে। আমার ভাই যেতে বলেছে। আমি যদি তোমার বন্ধু হই তাহলে আমাকে তুমি যেতে দাও, ভাইদের সঙ্গে দেখা হবে।’ তাই ও রাজার টেবিলে খেতে আসে নি।” |
9-1 Samuel 20:30 : শৌল য়োনাথনের উপর খুব রেগে গেলেন। তিনি তাকে বললেন, “নির্বোধ, হতভাগা ক্রীতদাসীর পুত্র। আমি জানি তুমি দাযূদের পক্ষে। তুমি, তোমার নিজের কলঙ্ক, তোমার মাযেরও কলঙ্ক। |
9-1 Samuel 20:31 : যতদিন য়িশযের পুত্র বেঁচে থাকবে, ততদিন তুমি না হবে রাজা, না পাবে রাজ্য। যাও, এক্ষুনি দায়ূদকে ধরে নিয়ে এসো কারণ সে মৃত্যুর সন্তান।” |
9-1 Samuel 20:32 : য়োনাথন বলল, “কেন দায়ূদকে মারতে হবে? সে কি করেছে?” |
9-1 Samuel 20:33 : এই কথা শুনে শৌল য়োনাথনের দিকে বল্লমটা ছুঁড়ে মারলেন। উদ্দেশ্য তাকেই মেরে ফেলা। এই থেকে য়োনাথন বুঝতে পারল, তার পিতা দায়ূদকে সত্যি মেরে ফেলতে চান। |
9-1 Samuel 20:34 : য়োনাথন রেগে গেল। সে টেবিল ছেড়ে উঠে পড়ল। পিতার ব্যাপারে সে এত মুষড়ে পড়ল আর এত রেগে গেল যে দ্বিতীয় দিনের ভোজ সভায সে কিছু খেল না। তার রাগের কারণ, পিতা তাকে অপমান করেছিল এবং দায়ূদকে হত্যা করতে চায। |
9-1 Samuel 20:35 : পরদিন সকালে দাযূদের সঙ্গে যেমন ব্যবস্থা হয়েছিল সেভাবে য়োনাথন মাঠে গেল। য়োনাথন, একটা বালককে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল। |
9-1 Samuel 20:36 : সে বালকটিকে বলল, “যা, যে তীরগুলো আমি ছুঁড়ছি সেগুলো কুড়িযে নিয়ে আয।” বালকটি ছুটতে লাগল, আর য়োনাথন তার মাথার উপর দিয়ে তীর ছুঁড়ল। |
9-1 Samuel 20:37 : তীরগুলো যেখানে পড়েছে সে দিকে বালকটি ছুটে গেল। কিন্তু য়োনাথন বলল, “তীর তো আরও দূরে।” |
9-1 Samuel 20:38 : য়োনাথন চেঁচিয়ে বলল, “তাড়াতাড়ি কর। তীরগুলো নিয়ে আয। ওখানে দাঁড়িয়ে থাকিস না।” বালকটি তীরগুলো কুড়িযে মনিবের কাছে এনে দিল। |
9-1 Samuel 20:39 : কি হচ্ছে তার সে কিছুই বুঝল না। জানত শুধু য়োনাথন আর দায়ূদ। |
9-1 Samuel 20:40 : য়োনাথন তীরধনুক বালকটির হাতে দিল। তারপর ওকে বলল, “যা! শহরে ফিরে যা।” |
9-1 Samuel 20:41 : বালকটি চলে গেলে দায়ূদ পাহাড়ের ওপাশে লুকোনো জায়গা থেকে বেরিয়ে এলো। য়োনাথনের কাছে এসে দায়ূদ মাটিতে মাথা নোযালেন। এরকম তিনবার তিনি মাথা নোযালেন। তারপর দুজন দুজনকে চুম্বন করল। দুজনেই খুব কান্নাকাটি করল। তবে দায়ূদই কাঁদলেন বেশী। |
9-1 Samuel 20:42 : য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “যাও শান্তিতে যাও। প্রভুর নাম নিয়ে আমরা বন্ধু হয়েছিলাম। বলেছিলাম, তিনিই হবেন আমাদের দুজন ও পরবর্তী উত্তরপুরুষদের মধ্যে বন্ধুদের চিরকালের সাক্ষী।” |
9-1 Samuel 21:1 : দায়ূদ চলে গেলেন। য়োনাথন শহরে ফিরে এলো। |
9-1 Samuel 21:2 : দায়ূদ নোব শহরে যাজক অহীমেলকের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।অহীমেলক দাযূদের সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়ে এলেন। তিনি তো ভয়ে কাঁপছিলেন। তিনি দায়ূদকে জিজ্ঞেস করলেন, “কি ব্যাপার, তুমি একা কেন? তোমার সঙ্গে কাউকে দেখছি না কেন?” |
9-1 Samuel 21:3 : দায়ূদ বললেন, “রাজা আমাকে একটি বিশেষ আদেশ দিয়েছেন। তিনি আমাকে বলেছেন, ‘এই আসার উদ্দেশ্য নিয়ে তুমি কাউকে কিছু জানাবে না। আমি তোমাকে কি বলছি কেউ যেন জানতে না পারে।’ আমার লোকদের বলছি কোথায় ওরা আমার সঙ্গে দেখা করবে। |
9-1 Samuel 21:4 : এখন বলো, তোমার সঙ্গে কি খাবার আছে? তোমার কাছে থাকলে পাঁচটি গোটা রুটি আমাকে দাও, না হলে অন্য কিছু খেতে দাও।” |
9-1 Samuel 21:5 : যাজক বললেন, “আমার কাছে তো সাধারণ কোন রুটি নেই, কিন্তু পবিত্র রুটি আছে। তোমার লোকরা তা খেতে পারে, অবশ্য যদি কোন নারীর সঙ্গে তাদের য়ৌন সম্পর্ক না থেকে থাকে।” |
9-1 Samuel 21:6 : দায়ূদ যাজককে বললেন, “না, এরকম কোন ব্যাপার নেই।” যুদ্ধে যাবার সময় এবং সাধারণ কাজের সময়ও তারা তাদের দেহগুলিকে শুদ্ধ রাখে। তাছাড়া এখন আমরা একটি বিশেষ কাজে এসেছি, সুতরাং অশুদ্ধ থাকার প্রশ্নই ওঠে না।” |
9-1 Samuel 21:7 : পবিত্র রুটি ছাড়া সেখানে অন্য কোন রুটি ছিল না। যাজক দায়ূদকে তা - ই দিলেন। এই রুটিই তারা প্রভুর সামনে পবিত্র টেবিলে রেখে দিত। প্রতিদিন তারা এগুলো বদলে টাটকা রুটি রেখে দিত। |
9-1 Samuel 21:8 : সেদিন সেখানে শৌলের একজন অনুচর উপস্থিত ছিল। সে ছিল ইদোম বংশীয়, তার নাম দোযেগ। সে ছিল শৌলের প্রধান মেষপালক। দোযেগকে সেখানে প্রভুর সামনে রাখা হয়েছিল। |
9-1 Samuel 21:9 : দায়ূদ অহীমেলককে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কাছে কি বল্লম বা তরবারি কিছু একটা আছে। রাজার কাজটা জরুরি তাই তাড়াতাড়িতে আমি সঙ্গে কোনো তরবারি বা অস্ত্রশস্ত্র আনি নি।” |
9-1 Samuel 21:10 : যাজক বললেন, “এখানে তো মাত্র একটাই তরবারি আছে, সেটা পলেষ্টীয় গলিযাতের তরবারি। তুমি এলা উপত্যকায তাকে হত্যা করার সময় ওর হাত থেকেই এটা কেড়ে নিয়েছিলে। ওটা কাপড়ে মুড়ে এফোদের পেছনে রাখা আছে। ইচ্ছা হলে এটা তুমি নিয়ে যেতে পারো।”দায়ূদ বললেন, “ওটাই তুমি আমাকে দাও। গলিযাতের তরবারির মতো তরবারি আর কোথাও পাওয়া যাবে না।” |
9-1 Samuel 21:11 : সেদিন শৌলের কাছ থেকে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন। তিনি গাতের রাজা আখীশের কাছে গেলেন। |
9-1 Samuel 21:12 : আখীশের অনুচররা এটা ভাল মনে করলো না। তারা বলল, “ইনি হচ্ছেন দায়ূদ, ইস্রায়েলের রাজা। এঁকে নিয়েই ওদের লোকেরা গান গায। ওরা নেচে নেচে এই গানটা করে: “দায়ূদ মেরেছে শত্রু অয়ুতে অয়ুতে শৌল তো কেবল হাজারে হাজারে।” |
9-1 Samuel 21:13 : তাদের কথাগুলো দায়ূদ বেশ মন দিয়ে শুনলেন। গাতের রাজা আখীশকে তিনি ভয় করতে লাগলেন। |
9-1 Samuel 21:14 : শেষে আখীশ ও তার অনুচরদের সামনে দায়ূদ পাগলের ভান করলেন। ওদের কাছে তিনি ইচ্ছে করে পাগলামি করতে লাগলেন। তিনি দরজায থুতু ছিটাতে লাগলেন। তাঁর দাড়ি দিয়ে থুতু গড়াতে দিলেন। |
9-1 Samuel 21:15 : আখীশ তার অনুচরদের বলল, “আরে লোকটাকে দেখো, সত্যি মাথা খারাপ। একে আমার কাছে এনেছ কেন? [ 16 ] আমার আশপাশে য়থেষ্ট পাগল রযেছে। আমার কাছে ঐ জাতীয লোক আর বেশী আনার দরকার নেই। এটাকে আবার আমার বাড়িতে ঢুকিও না। |
9-1 Samuel 22:1 : দায়ূদ গাত্ থেকে চলে গেলেন। তিনি পালিয়ে অদুল্লমের গুহায় গেলেন। দাযূদের ভাই আর আত্মীযস্বজনরা এই সংবাদ জানতে পারল। তারা সেখানে দাযূদের সঙ্গে দেখা করতে গেল। |
9-1 Samuel 22:2 : অনেক লোক দাযূদের সঙ্গে যুক্ত হল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ কোন বিপদে পড়েছিল, কেউ অনেক টাকা ধার করেছিল, আবার কেউ জীবনে সুখ শান্তি পাচ্ছিল না। এরা সকলেই দাযূদের সঙ্গে য়োগ দিল। দায়ূদ হলেন তাদের নেতা। তাঁর সঙ্গে ছিল এরকম চারশত জন পুরুষ। |
9-1 Samuel 22:3 : অদুল্লম থেকে দায়ূদ গেলেন মিস্পাতে। মিস্পা মোয়াবের একটা জায়গা। মোয়াবের রাজাকে দায়ূদ বললেন, “যতদিন না আমি জানতে পারছি ঈশ্বর আমার জন্য কি করবেন, ততদিন দয়া করে আপনি আমার পিতা - মাতাকে আপনার কাছে থাকতে দিন।” |
9-1 Samuel 22:4 : তারপর দায়ূদ মোয়াবের রাজার কাছে তাঁর পিতামাতাকে রেখে চলে গেলেন। যতদিন দায়ূদ দুর্গে থেকেছিলেন ততদিন তাঁর পিতামাতা মোয়াবের রাজার কাছে রইলেন। |
9-1 Samuel 22:5 : কিন্তু ভাববাদী গাদ দায়ূদকে বললেন, “দুর্গে থেকো না। যিহূদা দেশে চলে যাও।” দায়ূদ সেইমত দুর্গ ছেড়ে হেরত্ অরণ্যে চলে গেলেন। |
9-1 Samuel 22:6 : শৌল শুনতে পেলেন যে দায়ূদ আর তাঁর সঙ্গীদের সম্বন্ধে লোকরা খবর পেয়েছে। গিবিয়ার পাহাড়ে একটা গাছের নীচে শৌল বল্লম হাতে নিয়ে বসেছিলেন। তাঁর চারপাশে অনুচররা তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল। |
9-1 Samuel 22:7 : শৌল তাদের বললেন, “বিন্যামীনের লোকরা শোন, তোমরা কি মনে করো য়িশযের পুত্র (দায়ূদ) তোমাদের ক্ষেত এবং দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি দেবে? তোমরা কি মনে করো দায়ূদ তোমাদের চাকরির উন্নতি করে দেবে এবং এক হাজার লোকের উপর বা একশত লোকের উপরে তোমাদের নিযুক্ত করবে?” |
9-1 Samuel 22:8 : তোমরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছো। তোমরা চুপিচুপি আমার বিরুদ্ধে গোপনে মতলব আঁটছ। তোমাদের মধ্যে একজনও আমাকে বলনি যে আমার পুত্র য়োনাথন দায়ূদকে উত্সাহিত করেছে। তোমরা কেউ আমাকে গ্রাহ্য করো না। তোমরা কেউ বলনি আমার পুত্র য়োনাথন দায়ূদকে উত্সাহ দিয়েছে। য়োনাথন আমার ভৃত্য দায়ূদকে গা ঢাকা দিতে বলেছিল, যাতে সে আমাকে আক্রমণ করতে পারে। আর দায়ূদ এখন ঠিক এটাই করে যাচ্ছে।” |
9-1 Samuel 22:9 : ইদোম পরিবারের দোযেগ সেখানে শৌলের আধিকারিকদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিল। দোযেগ বললেন, “আমি য়িশযের পুত্রকে নোবে দেখেছিলাম। সে অহীটুবের পুত্র অহীমেলকের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। |
9-1 Samuel 22:10 : অহীমেলক দাযূদের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিল। সে দায়ূদকে খাবারও দিয়েছিল। তাছাড়া পলেষ্টীয় গলিযাতের তরবারিও দিয়েছিল।” |
9-1 Samuel 22:11 : অতঃপর রাজা শৌল যাজককে ডেকে আনতে কযেকজনকে পাঠালেন। তিনি অহীটুবের পুত্র অহীমেলক এবং তার সকল আত্মীযদের ডেকে পাঠালেন। তাঁরা সকলেই নোবের যাজক ছিলেন। তাঁরা সকলেই রাজা শৌলের কাছে এলেন। |
9-1 Samuel 22:12 : শৌল অহীমেলককে বললেন, “শোনো অহীটুবের পুত্র।”অহীমেলক বললেন, “বলুন।” |
9-1 Samuel 22:13 : শৌল বললেন, “কেন তুমি আর য়িশযের পুত্র আমার বিরুদ্ধে গোপনে চক্রান্ত করছ? তুমি দায়ূদকে রুটি দিয়েছিলে। শুধু তাম্প নয়, একা তরবারিও দিয়েছিলে। তুমি তার হয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলে। আর এখন দায়ূদ আমাকে আক্রমণ করার জন্যে সময় গুনছে!” |
9-1 Samuel 22:14 : অহীমেলক বললেন, “দায়ূদ আপনার খুবই অনুগত। আপনার কোনো অনুচরই দাযূদের মতো প্রভু ভক্ত নয়, সে আপনার জামাতা। আপনার রক্ষীদের দলপতি। আপনাদের বাড়ীর সকলেই দায়ূদকে সম্মান করে। |
9-1 Samuel 22:15 : দাযূদের জন্যে আমি ঈশ্বরের কাছে এই প্রথমবারই যে প্রার্থনা করেছি তা নয়। এর জন্যে, আমায় অথবা আমার কোন আত্মীযকে আপনি দোষী করবেন না। আমরা আপনার ভৃত্য। কি হচ্ছে আমি তার কিছুই জানি না।” |
9-1 Samuel 22:16 : তবু রাজা বললেন, “অহীমেলক, তুমি আর তোমার আত্মীযস্বজন সকলকেই মরতে হবে।” |
9-1 Samuel 22:17 : রাজা প্রহরীদের কাছে ডেকে বললেন, “যাও প্রভুর সমস্ত যাজকদের হত্যা করে এসো। তাদের হত্যা করো, কারণ তারা দাযূদের দলে। তারা জানত দায়ূদ পালিয়ে যাচ্ছে, তবুও তারা আমাকে কিছু বলেনি।”কিন্তু কেউই প্রভুর যাজকদের আঘাত করতে রাজি হল না। |
9-1 Samuel 22:18 : তখন রাজা দোযেগকে আদেশ দিলেন। শৌল বললেন, “দোযেগ, তুমি যাজকদের হত্যা করো।” দোযেগ গিয়ে যাজকদের হত্যা করলো। সেই দিন সে 85 জন যাজককে হত্যা করল। |
9-1 Samuel 22:19 : নোব ছিল যাজকদের শহর। শহরের সকলকেই দোযেগ হত্যা করল। পুরুষ, নারী, শিশু সকলকেই সে তরবারির কোপে শেষ করে দিল। সেই সঙ্গে মেরে ফেলল তাদের গরু, গাধা আর মেষগুলোকেও। |
9-1 Samuel 22:20 : শুধু বেঁচে গেলেন অবিয়াথর। তার পিতা অহীমেলক। অহীমেলকের পিতা অহীটুব। অবিয়াথর পালিয়ে গিয়ে দাযূদের সঙ্গে য়োগ দিলেন। |
9-1 Samuel 22:21 : তিনি দায়ূদকে বললেন শৌল সমস্ত যাজকদের হত্যা করেছে। |
9-1 Samuel 22:22 : দায়ূদ বললেন, “আমি সেদিন নোবে ইদোমীয় দোযেগকে দেখেছিলাম। আমি জানতাম শৌলকে সে সব বলবে। তোমার পিতার পরিবারের সকলের মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী।” |
9-1 Samuel 22:23 : যে লোকটা তোমাকে হত্যা করতে চায, সে আমাকেও হত্যা করতে চায। আমার সঙ্গে থাকো, ভয় পেও না। তুমি নিরাপদেই থাকবে।” |
9-1 Samuel 23:1 : লোকরা দায়ূদকে বলল, “দেখুন, পলেষ্টীয়রা কিযীলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। তারা ফসল ঝাড়াইযের জায়গা থেকে সব ফসল লুঠপাট করে নিচ্ছে।” |
9-1 Samuel 23:2 : দায়ূদ প্রভুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই করব?”প্রভু উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, কিযীলাকে বাঁচাও। পলেষ্টীয়দের আক্রমণ কর।” |
9-1 Samuel 23:3 : এদিকে দাযূদের লোকরা দায়ূদকে বলল, “শুনুন, আমরা যিহূদায় থাকতেই বেশ ভয় পাচ্ছি। তাহলে চিন্তা করুন পলেষ্টীয় সৈন্যদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইতে আমরা আরও কতখানি ভয় পেতে পারি।” |
9-1 Samuel 23:4 : দায়ূদ আবার প্রভুকে জিজ্ঞেস করলো। প্রভু বললেন, “কিযীলায চলে যাও। আমি তোমাকে পলেষ্টীয়দের হারাতে সাহায্য করব।” |
9-1 Samuel 23:5 : তাই সঙ্গীদের নিয়ে দায়ূদ কিযীলায গেলেন। তাঁর সঙ্গীরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করল। যুদ্ধে তারা পলেষ্টীয়দের হারিয়ে তাদের গরু, মোষ সব দখল করে নিল। এভাবেই দায়ূদ কিযীলার লোকদের বাঁচালেন। |
9-1 Samuel 23:6 : (যখন অবিয়াথর দাযূদের কাছে গিয়েছিলেন, তখন তিনি তাঁর সঙ্গে একটা এফোদ নিয়েছিলেন।) |
9-1 Samuel 23:7 : লোকরা শৌলকে বলল, “দায়ূদ এখন কিযীলায আছে।” শৌল বললেন, “ঈশ্বর দায়ূদকে আমার হাতেই দিয়েছেন। দায়ূদ নিজের জালেই নিজেকে জড়িয়েছে। সে এমন একটা শহরে গেল যেখানে অনেক ফটক এবং ফটক বন্ধ করার অনেক খিল আছে।” |
9-1 Samuel 23:8 : শৌল তাঁর সব সৈন্যদের যুদ্ধ করার জন্য ডাকলেন। তারা দায়ূদ ও তাঁর লোকদের আক্রমণ করার জন্য কিযীলায যাবার জন্য প্রস্তুত হলো। |
9-1 Samuel 23:9 : শৌলের এই মতলব দায়ূদ জানতে পারলেন। তিনি যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “এই খানে সেই এফোদ আনো।” |
9-1 Samuel 23:10 : দায়ূদ প্রার্থনা করলো, “হে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমি শুনেছি শৌল আমার জন্য কিযীলায এসে শহর ধ্বংস করার মতলব করেছে। |
9-1 Samuel 23:11 : শৌল কি কিযীলায আসবে? কিযীলায লোকরা কি ওর হাতে আমায় তুলে দেবে? হে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমি আপনার সেবক। দয়া করে আমায় বলুন!”প্রভু বললেন, “শৌল আসবে।” |
9-1 Samuel 23:12 : আবার দায়ূদ জিজ্ঞেস করলো, “কিযীলার লোকরা কি আমায় এবং আমার লোকদের শৌলের হাতে ধরিয়ে দেবে?”প্রভু বললেন, “হ্যাঁ, ধরিয়ে দেবে।” |
9-1 Samuel 23:13 : তখন দায়ূদ সঙ্গীদের নিয়ে কিযীলা ছেড়ে চলে গেলেন। দাযূদের সঙ্গে ছিল ছয়শত জন পুরুষ। ষাট তারা বিভিন্ন জায়গায় চলে গেল। শৌল জানতে পারলেন দায়ূদ কিযীলা থেকে চলে গেছেন। তাই তিনি আর ওখানে গেলেন না। |
9-1 Samuel 23:14 : দায়ূদ মরুভূমিতে গিয়ে সেখানকার উঁচু পাঁচিল ঘেরা দুর্গ নগরে কিছুকাল থেকে গেলেন। তিনি সীফ মরুভূমির পাহাড়ি দেশেও থাকলেন। প্রতিদিন শৌল দায়ূদদের খোঁজ করতেন; কিন্তু প্রভু শৌলের হাতে দায়ূদকে সঁপে দিলেন না। |
9-1 Samuel 23:15 : সীফ মরুভূমির হোরেশে দায়ূদ গেলেন। শৌল তাকে হত্যা করতে আসছেন বলে তিনি বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। |
9-1 Samuel 23:16 : কিন্তু শৌলের পুত্র য়োনাথন হোরেশে দাযূদের সঙ্গে দেখা করতে গেল। য়োনাথন দায়ূদকে ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখতে সাহায্য করেছিলো। |
9-1 Samuel 23:17 : য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “ভয় পেও না। আমার পিতা শৌল তোমাকে মারবে না। তুমি হবে ইস্রায়েলের রাজা। আমি হব তোমার দ্বিতীয় জন। এমনকি আমার পিতাও সেটা জানে।” |
9-1 Samuel 23:18 : য়োনাথন এবং দায়ূদ দুজনে প্রভুর সামনে এক চুক্তি করলো। তারপর য়োনাথন ঘরে ফিরে গেলো। দায়ূদ হোরেশে থেকে গেলেন। |
9-1 Samuel 23:19 : সীফের বাসিন্দারা শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গিবাযায় এল। তারা শৌলকে বলল, “দায়ূদ আমাদের দেশেই লুকিয়ে আছে। দায়ূদ যেশিমোনের দক্ষিণে হখীলা পাহাড়ের ওপর হোরেশের দুর্গে রযেছেন। |
9-1 Samuel 23:20 : সুতরাং হে রাজন, যে কোন দিন আপনি আমাদের এখানে চলে আসুন। দায়ূদকে আপনার হাতে ধরিয়ে দেওয়া আমাদের কর্তব্য।” |
9-1 Samuel 23:21 : শৌল বললেন, “তোমরা আমাকে সাহায্য করেছ। প্রভু তোমাদের মঙ্গল করুন। |
9-1 Samuel 23:22 : যাও, দায়ূদ সম্বন্ধে আরও খোঁজখবর করো। দেখ, কোথায় সে রযেছে, কে কে দায়ূদকে সেখানে দেখেছে। শৌল ভাবলেন, ‘দায়ূদ চালাক ও চতুর তাই হয়তো আমার সঙ্গে চালাকি করতে চাইছে।’ |
9-1 Samuel 23:23 : শৌল বললেন, “দাযূদের লুকোনোর সমস্ত জায়গা খুঁজে বের করো। তারপর ফিরে এসে আমাকে সমস্ত জানাও। জানার পর আমি তোমাদের সঙ্গে যাব। দায়ূদ এখানে থাকলে আমি তোমাদের সঙ্গে যাব। দায়ূদ এখানে থাকলে আমি তাকে খুঁজে বের করবই। যিহূদায় বাড়ী বাড়ী খোঁজ করলেও ওকে আমি পেয়ে যাব।” |
9-1 Samuel 23:24 : সীফের বাসিন্দারা সীফে ফিরে গেল। পরে শৌল সেখানে গেলেন। দায়ূদ আর তাঁর লোকরা থাকতেন মাযোন মরুভূমিতে। জায়গাটা ছিল যেশিমোনের দক্ষিণে। |
9-1 Samuel 23:25 : শৌল তাঁর লোকদের নিয়ে দাযূদের খোঁজ করতে লাগলেন। কিন্তু এখানে লোকরা দায়ূদকে সাবধান করে দিল যে শৌল তাঁকে খুঁজছে। দায়ূদ যখন এটা শুনলেন তিনি মাযোন মরুভূমির ‘রক’ অঞ্চলে চলে গেলেন। এ খবর শৌলের কাছে পৌঁছে গেল। সেখানে দায়ূদকে ধরতে ছুটলেন। |
9-1 Samuel 23:26 : একই পাহাড়ের একদিকে শৌল আর উল্টোদিকে দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীরা। দায়ূদ শৌলের কাছে থেকে পালিয়ে যাবার জন্য তীব্রবেগে ছুটছিলেন। শৌলও দায়ূদকে ধরবার জন্য সৈন্যদের নিয়ে পাহাড়ের চারিদিক ঘিরে ফেললেন। |
9-1 Samuel 23:27 : সেই সময় শৌলের কাছে একজন দূত এসে বলল, “শিগ্গির এসো, পলেষ্টীয়রা আমাদের আক্রমণ করতে আসছে।” |
9-1 Samuel 23:28 : তখন শৌল দাযূদের পিছু নেওয়া বন্ধ করলেন। তিনি পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই করতে গেলেন। সেই কারণে লোকরা ঐ জায়গার নাম দিয়েছিল ‘পিছল শিলা।’ |
9-1 Samuel 23:29 : দায়ূদ মাযোন মরুভূমি থেকে চলে গেলেন সুরক্ষিত দুর্গ নগরগুলোয। সেগুলি ঐন - গদীর কাছাকাছি অবস্থিত। |
9-1 Samuel 24:1 : শৌল পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিলেন। এরপর লোকরা তাঁকে জানাল, “দায়ূদ ঐন্ - গদীর কাছাকাছি একটা মরুভূমি অঞ্চলে রযেছে।” |
9-1 Samuel 24:2 : তখন শৌল ইস্রাযেল থেক তিন হাজার জন পুরুষ বেছে নিলেন। শৌল তাদের সঙ্গে ‘বুনো ছাগলের শিলার’ কাছে দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের খোঁজ করতে লাগলেন। |
9-1 Samuel 24:3 : শৌল রাস্তার ধারে একটা মেষের গোযালে এসে পড়লেন। কাছাকাছি একটা গুহা ছিল। শৌল হাল্কা হতে গুহাটির ভিতর গেলেন। দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা গুহার ভিতরে অনেক দূরে লুকিয়ে ছিল। |
9-1 Samuel 24:4 : সঙ্গীরা দায়ূদকে বলল, “প্রভু আজকের দিনটার কথাই বলেছিলেন। তিনি আপনাকে বলেছিলেন, ‘আমি আপনার কাছে আপনার শত্রুকে এনে দেব। তারপর আপনি একে নিয়ে যা খুশি তাই করুন।”দায়ূদ হামাগুড়ি দিয়ে এসে ক্রমে শৌলের বেশ কাছে এসে পড়লেন। তারপর তিনি শৌলের জামার একটা কোণ কেটে ফেললেন। শৌল দায়ূদকে দেখতে পান নি। |
9-1 Samuel 24:5 : পরে এর জন্য দাযূদের মন খারাপ হয়ে গেল। |
9-1 Samuel 24:6 : দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের বললেন, “আমি আশা করি আমার মনিবের বিরুদ্ধে এই ধরণের কাজ প্রভু আর আমায় করতে দেবেন না। শৌল হচ্ছেন প্রভুর মনোনীত রাজা। আমি তাঁর বিরুদ্ধে কিছু করব না।” |
9-1 Samuel 24:7 : এই কথা বলে দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের থামিয়ে দিলেন। তাদের শৌলকে আঘাত করতে তাদের নিষেধ করে দিলেন।শৌল গুহা ছেড়ে নিজ রাস্তায় চললেন। |
9-1 Samuel 24:8 : দায়ূদ গুহা থেকে বেরিয়ে এসে চেঁচিয়ে শৌলকে ডাকলেন, “হে রাজা, হে মনিব।”শৌল পেছন ফিরে তাকালেন। দায়ূদ আভূমি মাথা নোযালেন। |
9-1 Samuel 24:9 : তিনি শৌলকে বললেন, “লোকরা যখন বলে, ‘দায়ূদ আপনাকে হত্যা করতে চায, তখন সে কথায় আপনি কান দেন কেন?’ |
9-1 Samuel 24:10 : আমি আপনাকে মারতে চাই না। আপনি নিজের চোখেই দেখে নিন। এই গুহাতে আজ প্রভু আপনাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি আপনাকে হত্যা করতে চাই না। আমি আপনার ওপর সদয ছিলাম। আমি বললাম, ‘আমি আমার মনিবকে হত্যা করতে চাই না। শৌল হচ্ছেন প্রভুর অভিষিক্ত রাজা।’ |
9-1 Samuel 24:11 : আমার হাতের এই টুকরো কাপড়টার দিকে চেয়ে দেখুন। আপনার পোশাক থেকে আমি এটা কেটে নিয়েছিলাম। আমি আপনাকে হত্যা করতে পারতাম, কিন্তু করিনি। একটা ব্যাপার আমি আপনাকে বোঝাতে চাই। আপনার বিরুদ্ধে আমি কোন ষড়যন্ত্র করি নি। আপনার প্রতি আমি কোন অন্যায় করি নি বরং আপনিই আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, আমায় হত্যা করার জন্য। |
9-1 Samuel 24:12 : বয়ং প্রভুই এর বিচার করবেন। তিনিই আমার ওপর অবিচার করার জন্য আপনাকে শাস্তি দেবেন। আমি নিজে আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করব না। |
9-1 Samuel 24:13 : একটা পুরানো প্রবাদ আছে:‘মন্দ লোকদের কাছ থেকেই মন্দ জিনিসগুলো আসে।’আমি আপনার ওপর কোনো মন্দ কাজ করি নি, আমি আপনার ক্ষতি করবো না। |
9-1 Samuel 24:14 : কার পেছনে আপনি ধাওযা করছেন? কার সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজা যুদ্ধ করতে চলেছেন? আপনাকে আঘাত করবে এমন কারোর পেছনে আপনি ছুটছেন না। মনে হচ্ছে আপনি যেন একটা মৃত কুকুর অথবা একটা নীল মাছির পেছনে তাড়া করছেন। |
9-1 Samuel 24:15 : প্রভু এর সুবিচার করুন। তিনিই ঠিক করুন আপনার এবং আমার মধ্যে কে ভাল, কে খারাপ। প্রভু আমাকে সমর্থন করবেন এবং প্রমাণ করবেন যে আমি ঠিক কাজটি করেছি। প্রভু আপনার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করবেন।” |
9-1 Samuel 24:16 : দায়ূদ থামলেন। শৌল জিজ্ঞেস করলেন, “দায়ূদ পুত্র আমার, এ কি তোমার স্বর? এ কার স্বর শুনছি?” এই বলে শৌল কাঁদতে শুরু করলেন। তিনি খুব কাঁদতে লাগলেন। |
9-1 Samuel 24:17 : শৌল বললেন, “তুমিই ঠিক, আমি ভুল করেছি। তুমি আমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করলেও আমি তোমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি। |
9-1 Samuel 24:18 : যা যা ভালো তুমি করেছ সবই আমাকে বলেছ। প্রভু আমাকে তোমার কাছে এনে দিয়েছিলেন, কিন্তু তুমি আমাকে হত্যা করো নি। |
9-1 Samuel 24:19 : এতেই প্রমাণ হয় যে আমি তোমার শত্রু নই। একবার শত্রুকে ধরলে কেউ আবার তাকে ছেড়ে দেয? শত্রুর জন্য সে কখনও ভালো কাজ করে না। আজ তুমি আমায় যে অনুগ্রহ করলে তার জন্য প্রভু তোমায় পুরস্কৃত করবেন। |
9-1 Samuel 24:20 : আমি জানি তুমি ইস্রায়েলের রাজা হবে। আমি জানি যে তুমি ইস্রাযেল রাজ্যের ওপর শাসন করবে। |
9-1 Samuel 24:21 : আমাকে তুমি কথা দাও, প্রভুর নামে এই শপথ করো, কথা দাও আমার উত্তরপুরুষদের কাউকে তুমি হত্যা করবে না। কথা দাও, আমার নাম আমাদের বংশ থেকে তুমি মুছে দেবে না।” |
9-1 Samuel 24:22 : দায়ূদ শৌলকে প্রতিশ্রুতি দিলেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি শৌলের পরিবারের কাউকে হত্যা করবেন না। তারপর শৌল ফিরে গেলেন। দায়ূদ এবে তাঁর সঙ্গীরা দুর্গে চলে গেলো। |
9-1 Samuel 25:1 : শমূয়েল মারা গেল। সমস্ত ইস্রাযেলবাসীরা একত্রিত হল এবং শমূযেলের মৃত্যুর জন্যে শোক প্রকাশ করল। তারা শমূয়েলকে রামায় তার বাড়িতে কবর দিল। তারপর দায়ূদ পারণ মরুভূমির দিকে চলে গেলেন। |
9-1 Samuel 25:2 : মাযোন শহরে এক মস্ত বড় ধনী বাস করত। তার তিন হাজার মেষ আর এক হাজার ছাগল ছিল। সে তার মেষেদের থেকে পশম ছাঁটবার জন্য কর্ম্মিলে গিয়েছিল। |
9-1 Samuel 25:3 : সেই ব্যক্তির নাম নাবল, সে কালেব পরিবারের লোক। নাবলের স্ত্রীর নাম অবীগল। সে যেমন জ্ঞানী তেমনি সুন্দরী। কিন্তু নাবল ছিল অত্যন্ত নীচ প্রকৃতির আর নিষ্ঠুর ধরণের ব্যক্তি। |
9-1 Samuel 25:4 : দায়ূদ মরুভূমিতে থাকতে থাকতেই শুনেছিলেন নাবল মেষের গা থেকে পশম ছাঁটছে। |
9-1 Samuel 25:5 : দায়ূদ দশজন যুবককে নাবলের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঠিয়েছিলেন। তিনি বললেন, “কর্ম্মিলে গিয়ে নাবলকে খুঁজে বের করো। তারপর তাকে আমার হয়ে অভিবাদন জানিও।” |
9-1 Samuel 25:6 : দায়ূদ নাবলের জন্য এই বার্তা দিলেন, “আশা করছি তুমি ও তোমার পরিবারের সকলে ভাল আছো। তোমাদের যা যা আছে সবই ভাল আছে। |
9-1 Samuel 25:7 : শুনলাম, তুমি নাকি মেষের গা থেকে পশম ছেঁটে নিচ্ছ। তোমার মেষপালকরা আমাদের কাছে কিছুদিন ছিল। আমরা তাদের কোন ক্ষতি করি নি। তারা যখন কর্ম্মিলে ছিল তখন তাদের কাছ থেকে আমরা কিছুই নিইনি। |
9-1 Samuel 25:8 : তোমার ভৃত্যদের জিজ্ঞেস করে দেখবে কথাটা কতখানি সত্য। অনুগ্রহ করে আমার পাঠানো যুবকদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবে। এই শুভ দিনে আমরা তোমার কাছে এসেছি। এদের যথাসাধ্য দান করো। আশা করি আমার জন্য এটুকু করবে। ইতি তোমার বন্ধুদায়ূদ।” |
9-1 Samuel 25:9 : দাযূদের লোকরা নাবলের কাছে গিয়ে বার্তাটা দিল। |
9-1 Samuel 25:10 : কিন্তু নাবল তাদের সঙ্গে জঘন্য ব্যবহার করল। সে বলল, “কে দায়ূদ? যিশয়ের পুত্র কে? কত ক্রীতদাস যে মনিবের কাছ থেকে আজকাল পালিয়ে যাচ্ছে। |
9-1 Samuel 25:11 : আমার কাছে রুটি আছে, জল আছে, মাংসও আছে। আমার ভৃত্যদের জন্য পশু বলি দিয়ে সেই মাংসের ব্যবস্থা করেছি। তারা আমার মেষগুলোর গা থেকে পশম কেটে নেয। কিন্তু যাদের আমি চিনি না, তাদের কিছুতেই তা দেব না।” |
9-1 Samuel 25:12 : দাযূদের লোকরা ফিরে এলো। যা যা হয়েছে সব তারা দায়ূদকে বলল। |
9-1 Samuel 25:13 : সব শুনে দায়ূদ বললেন, “এবার তরবারি নাও।” দায়ূদ ও তাঁর লোকরা কোমরে তরবারি এঁটে নিল। প্রায |
9-1 Samuel 25:40 : 0 জন দাযূদের সঙ্গে গেল। দ্রব্যসামগ্রী রক্ষার জন্যে |
9-1 Samuel 25:20 : 0 জন রইল। |
9-1 Samuel 25:14 : নাবলের একজন ভৃত্য নাবলের স্ত্রী অবীগলকে বলল, “দায়ূদ মরুভূমি থেকে দূত পাঠিয়েছিলেন আমাদের মনিবের (নাবলের) কাছে। কিন্তু নাবল তাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেনি। |
9-1 Samuel 25:15 : অথচ তারা আমাদের সঙ্গে য়থেষ্ট ভাল ব্যবহার করেছিল। আমরা যখন মাঠে মেষ চরাতে যেতাম তখন দাযূদের লোকরা সবসময় আমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকত। ওরা কখনও কোন অন্যায় করে নি। আমাদের কিছু চুরিও যায় নি। |
9-1 Samuel 25:16 : দাযূদের লোকরা আমাদের দিন রাত পাহারা দিত। আমাদের চারপাশে ওরা ছিল প্রাচীরের মতো। আমরা যখন মেষদের দেখাশুনা করতাম তখন ওরা আমাদের রক্ষা করত। |
9-1 Samuel 25:17 : এখন ভেবে দেখুন, আপনি কি করতে পারেন। নাবল এতো পাষণ্ড যে তার সঙ্গে কথা বলে তার মন পরিবর্তন করানো অসম্ভব। আমাদের মনিব আর তার সংসারে ঘোর দুর্য়োগ ঘনিয়ে আসছে।” |
9-1 Samuel 25:18 : অবীগল এই শুনে আর বিন্দুমাত্র দেরী না করে |
9-1 Samuel 25:20 : 0 রুটি, দুটো থলে ভর্তি দ্রাক্ষারস, পাঁচটা মেষের রান্নাকরা মাংস, প্রায এক বুশেল রান্না ডাল, |
9-1 Samuel 25:2 : কোযার্ট কিস্মিস, |
9-1 Samuel 25:20 : 0 টি ডুমুরের পিঠে এই সব জোগাড় করে গাধার পিঠে চাপিয়ে দিল। |
9-1 Samuel 25:19 : তারপর অবীগল ভৃত্যদের বলল, “তোমরা এগিয়ে যাও। আমি তোমাদের পেছন পেছন আসছি।” এ কথা সে তার স্বামীকে বলল না। |
9-1 Samuel 25:20 : অবীগল তার গাধার পিঠে চড়ল এবং পর্বতের অন্য দিকে নেমে চলে গেল। অন্যদিক থেকে দায়ূদ তাঁর লোকদের সঙ্গে নিয়ে আসছিলেন। |
9-1 Samuel 25:21 : অবীগলের সঙ্গে দেখা হবার আগে দায়ূদ বললেন, “মরুভূমিতে আমি নাবলের সম্পত্তি রক্ষা করেছিলাম। তার একটাও মেষ যাতে হারিয়ে না যায় সেই দিকে কড়া নজর রেখেছিলাম। কিন্তু এত উপকার কোন কাজেই লাগল না। আমি তার ভাল করলেও সে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করল। |
9-1 Samuel 25:22 : এবার নাবলের বাড়ির একজনকেও যদি কাল সকাল পর্য়ন্ত বাঁচিয়ে রাখি তাহলে ঈশ্বর যেন আমাকে শাস্তি দেন।” |
9-1 Samuel 25:23 : ঠিক তখনই অবীগল তার কাছে এসে গেল। দায়ূদকে দেখে মাথা নীচু করে দাযূদের পাযে পড়ল। |
9-1 Samuel 25:24 : দাযূদের পাযে পড়ে অবীগল বলল, “মহাশয়, দয়া করে আমাকে কিছু বলতে অনুমতি দিন। আমার কথা শুনুন। যা হয়েছে তার জন্য আপনি আমাকে দোষী করুন। |
9-1 Samuel 25:25 : আমি আপনার দূতদের দেখি নি। এ অপদার্থ লোকটাকে আপনি মোটেই গ্রাহ্য করবেন না। তার যেমন নাম, সে তেমনি লোক। তার নামের অর্থ ‘দুষ্ট’ আর সে সত্যিই মন্দ কাজ করে। |
9-1 Samuel 25:26 : প্রভু আপনাকে নিরীহ লোকদের হত্যা করতে দেন নি। জীবন্ত প্রভুর দিব্য এবং আপনার জীবিত প্রাণের দিব্য, যারা আপনার শত্রু, যারা আপনার ক্ষতি করতে চায তারা সকলেই নাবলের মতো হোক্। |
9-1 Samuel 25:27 : এখন আমি আপনার জন্য এই উপহার এনেছি। আপনি আপনার যুবকদের এসব দান করুন। |
9-1 Samuel 25:28 : আমি যে অন্যায় করেছি তার জন্য আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে ক্ষমা করুন। প্রভু আপনার পরিবারের সকলকে শক্তিশালী করবেন। আপনার পরিবার থেকেই আবির্ভাব হবে অনেক রাজার। প্রভু এটাই করবেন, কারণ আপনি তাঁর হয়ে যুদ্ধ করেন। যতদিন আপনি বেঁচে আছেন লোকে আপনার কোন দোষ খুঁজে পাবে না। |
9-1 Samuel 25:29 : যদি কেউ আপনাকে হত্যা করতে আসে, প্রভু আপনার ঈশ্বরই, আপনাকে রক্ষা করবেন। আপনার শত্রুদের তিনি গুলতির ঢিলের মতো ছুঁড়ে ফেলে দেবেন। |
9-1 Samuel 25:30 : প্রভু আপনার জন্য অনেক ভাল কিছু করবার প্রতিশ্রুতি করেছেন এবং তিনি অবশ্যই তাঁর সকল প্রতিশ্রুতি রাখবেন। তিনি আপনাকে ইস্রায়েলের নেতা করবেন। |
9-1 Samuel 25:31 : নিরীহ মানুষকে হত্যা করে পাপের ভাগী আপনি হবেন না। সেই ফাঁদে আপনি পা দেবেন না। প্রভু আপনাকে যখন জয়যুক্ত করবেন তখন আপনি দয়া করে আমায় স্মরণ করবেন।” |
9-1 Samuel 25:32 : দায়ূদ অবীগলকে বললেন, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা কর। তিনি তোমাকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন বলে তাঁর প্রশংসা কর। |
9-1 Samuel 25:33 : তোমার সুবিচারের জন্য ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করুন। আজ তুমি নিরীহ মানুষদের হত্যা করার পাপ থেকে আমাকে বাঁচালে। |
9-1 Samuel 25:34 : প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে আমি শপথ করছি, তুমি যদি আমার সঙ্গে তাড়াতাড়ি দেখা করতে না আসতে তাহলে নাবলের বাড়ির লোকরা কেউ কাল সকাল পর্য়ন্ত বেঁচে থাকত না।” |
9-1 Samuel 25:35 : দায়ূদ অবীগলের উপহার গ্রহণ করলেন। তিনি তাকে বললেন, “তুমি শান্তিতে বাড়ী যাও। আমি তোমার অনুরোধ শুনেছি। তুমি যা কিছু চেয়েছ আমি তা করব।” |
9-1 Samuel 25:36 : অবীগল নাবলের কাছে ফিরে এলো। নাবল তখন বাড়িতে রাজার মতো তার খাবার খাচ্ছিল। সে মাতাল ছিল এবং খুশী ছিল। তাই সকাল না হওয়া পর্য়ন্ত অবীগল তাকে কিছু বলল না। |
9-1 Samuel 25:37 : পরদিন সকালে নাবলের হুঁশ ফিরে এল। তখন অবীগল তাকে সব কথা খুলে বলল। তখন নাবল হৃদরোগে আক্রান্ত হল। দশ দিন ধরে সে পাথরের মতো অনড় হয়ে রইল। |
9-1 Samuel 25:38 : প্রায দশ দিন পর প্রভু নাবলের মৃত্যু ঘটালেন। |
9-1 Samuel 25:39 : নাবলের মৃত্যু সংবাদ শুনে দায়ূদ বললেন, “প্রভুর প্রশংসা করো। নাবল আমার সম্পর্কে খারাপ কথা বলেছিল, কিন্তু প্রভু আমাকে সমর্থন করলেন। তিনি আমায় কোন অন্যায় করতে দেন নি। নাবল অন্যায় করেছিল বলেই তিনি তার মৃত্যু ঘটালেন।”তারপর দায়ূদ অবীগলকে একটা চিঠি পাঠালেন। তাকে তাঁর স্ত্রী হিসাবে পাবার জন্য প্রস্তাব করলেন। |
9-1 Samuel 25:40 : দাযূদের অনুচররা কর্ম্মিলে গিয়ে অবীগলকে বলল, “আপনাকে নিয়ে যাবার জন্য দায়ূদ আমাদের পাঠিয়েছেন। তিনি আপনাকে বিবাহ করতে চান।” |
9-1 Samuel 25:41 : অবীগল মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করে বলল, “আমি তোমাদের দাসী। তোমাদের সেবা করতে আমি প্রস্তুত। আমার মনিবের (দাযূদের) সেবকদের পা ধুয়ে দিতে আমি প্রস্তুত।” |
9-1 Samuel 25:42 : অবীগল আর দেরী না করে দাযূদের অনুচরদের সঙ্গে একটা গাধার পিঠে চড়ে রওনা হল। তার সঙ্গে ছিল পাঁচ দাসী। অবীগল, দাযূদের স্ত্রী হলেন। |
9-1 Samuel 25:43 : দায়ূদ য়িষ্রিযেলীয অহীনোযমকেও বিবাহ করেছিলেন। অবীগল আর অহীনোযম দুজনেই দাযূদের স্ত্রী হল। |
9-1 Samuel 25:44 : দায়ূদ শৌলের কন্যা মীখলকেও বিবাহ করেছিলেন। কিন্তু শৌল দাযূদের কাছে থেকে তার কন্যাকে সরিয়ে এনে তার সঙ্গে পল্টির বিয়ে দিলেন। পল্টির পিতার নাম লাযিশ। পল্টির বাড়ি ছিল গল্লীম শহরে। |
9-1 Samuel 26:1 : সীফের লোকরা শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গিবিয়ায় গেল। তারা শৌলকে বলল, “দায়ূদ হখীলার পাহাড়ে লুকিয়ে রযেছে। যেশিমোনের ঠিক অপর দিকেই সেই পাহাড়। |
9-1 Samuel 26:2 : সীফের মরুভূমিতে শৌল নেমে এলেন। সমস্ত ইস্রাযেল থেকে শৌল তিন হাজার সৈন্য বেছে নিয়েছিলেন। এদের নিয়ে শৌল সীফের মরু অঞ্চলে দায়ূদকে খুঁজতে লাগলেন। |
9-1 Samuel 26:3 : হখীলা পাহাড়ে শৌল তাঁবু বসালেন। যেশিমোনের রাস্তার ধারেই ছিল সেই তাঁবু।দায়ূদ মরুভূমির মধ্যে বাস করতেন। তিনি জানতে পারলেন যে শৌল সেখানেও তার পিছু নিয়েছেন। |
9-1 Samuel 26:4 : তখন তিনি গুপ্তচর পাঠালেন। শৌল যে হখীলায় এসেছেন সে খবর তিনি জানতেন। |
9-1 Samuel 26:5 : দায়ূদ শৌলের শিবিরে উপস্থিত হলেন। তিনি দেখলেন কোথায় শৌল আর অব্নের ঘুমাচ্ছিলেন। (অব্নের, শৌলের সেনাপতি, নেরের পুত্র।) শৌল শিবিরের মাঝখানে ঘুমোচ্ছিলেন। সৈন্যরা তাঁর চারপাশে ছিল। |
9-1 Samuel 26:6 : দায়ূদ হিত্তীয় অহীমেলক আর সরূযার পুত্র অবীশযের সঙ্গে কথা বললেন। (অবীশয য়োয়াবের ভাই।) তিনি তাদের বললেন, “কে আমার সঙ্গে শৌলের শিবিরে যাবে?”অবীশয উত্তরে বলল, “আমি তোমার সঙ্গে যাব।” |
9-1 Samuel 26:7 : রাত হলে দায়ূদ ও অবীশয শৌলের শিবিরে গেলেন। শৌল শিবিরের মাঝখানে ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁর মাথার কাছে মাটিতে তাঁর বর্শা গাঁথা ছিল। অব্নের ও অন্যান্য সৈন্যরা শৌলের চারপাশে ঘুমাচ্ছিল। |
9-1 Samuel 26:8 : অবীশয দায়ূদকে বলল, “আজ ঈশ্বরের দয়ায় আপনি শত্রু জয় করবেন। শৌলের বর্শা দিয়ে শৌলকে মাটিতে গেঁথে দিতে চাই। শুধু একবার আপনি এই কাজটা আমায় করতে দিন।” |
9-1 Samuel 26:9 : দায়ূদ অবীশযকে বললেন, “শৌলকে হত্যা কোরো না। প্রভু যাকে রাজা বলে মনোনীত করেছেন তাকে কেউ যেন আঘাত না করে। আঘাত করলে সে অবশ্যই শাস্তি পাবে। |
9-1 Samuel 26:10 : প্রভু যখন আছেন তখন তিনি নিশ্চয়ই নিজেই শৌলকে শাস্তি দেবেন। তাছাড়া শৌলের স্বাভাবিক মৃত্যুও হতে পারে। কিংবা এও হতে পারে যুদ্ধেই শৌল মারা যাবেন। |
9-1 Samuel 26:11 : সে যাই হোক্ আমি চাই না যে প্রভু তাঁর নির্বাচিত রাজাকে আমার হাত দিয়ে হত হতে দেন। এখন শৌলের মাথার কাছে বর্শা আর জলের জায়গাটা তুলে নাও। তারপর আমরা চলে যাব।” |
9-1 Samuel 26:12 : সেই মত দায়ূদ বর্শা আর কুঁজো নেবার পর অবীশযকে সঙ্গে নিয়ে তাঁবু থেকে বের হলেন। কেউ কিছু জানতে পারল না। কেউ ঘুম থেকে জেগেও উঠল না। শৌল আর সৈন্যরা সকলেই গাঢ় ঘুমে ঢলে পড়েছিল কারণ প্রভু তাদের গাঢ় ঘুমে আক্রান্ত করেছিলেন। |
9-1 Samuel 26:13 : দায়ূদ উপত্যকা পেরিযে পাহাড়ের শিখরে গিয়ে দাঁড়ালেন। সেই জায়গা থেকে শৌলের শিবির অনেক দূরে ছিল। |
9-1 Samuel 26:14 : দায়ূদ সৈন্যসামন্ত আর নেরের পুত্র অব্নেরের দিকে চিত্কার করে বললেন, “অব্নের জবাব দাও।”অব্নের উত্তর দিলো, “কে তুমি? কেন তুমি রাজাকে ডাকছ?” |
9-1 Samuel 26:15 : দায়ূদ বললেন, “তুমি তো একজন মানুষ, তাই না? ইস্রায়েলের আর পাঁচটা মানুষের চেয়ে তুমি সেরা, ঠিক কি না? তাহলে কেন তুমি তোমার মনিবকে পাহারা দিলে না? একজন সাধারণ মানুষ তাঁবুতে ঢুকে তোমাদের মনিবকে খুন করতে এসেছিল। |
9-1 Samuel 26:16 : তুমি মস্ত বড় ভুল করেছ। আমি প্রভুর নামে শপথ করে বলছি, তোমাকে আর তোমার লোকদের অবশ্যই মরতে হবে। তুমি কি জানো কেন? কারণ তুমি প্রভুর নির্বাচিত রাজা অর্থাত্ তোমার মনিবকে রক্ষা কর নি। শৌলের মাথার কাছে কোথায় রাজার বর্শা আর জলের কুঁজো আছে? খুঁজে দেখো, কোথায়?” |
9-1 Samuel 26:17 : শৌল দাযূদের স্বর চিনতেন। সে বলল, “বত্স দায়ূদ, তুমিই কি কথা বলছ?”দায়ূদ উত্তর দিলেন, “হে প্রভু, হে রাজন, আপনি আমারই কন্ঠস্বর শুনছেন।” |
9-1 Samuel 26:18 : দায়ূদ আবার বললেন, “আপনি কেন আমার পিছু নিয়েছেন? আমি কি অন্যায় করেছি? কি আমার দোষ? |
9-1 Samuel 26:19 : হে আমার মনিব, হে রাজা, আমার কথা শুনুন। আপনি যদি আমার ওপর রাগ করে থাকেন এবং প্রভু যদি এর কারণ হয়ে থাকেন তাহলে তাঁকে তাঁর নৈবেদ্য গ্রহণ করতে দিন। কিন্তু যদি লোকদের কারণে আপনি আমার ওপর রাগ করে থাকেন, তাহলে প্রভু যেন তাদের মন্দ করেন। প্রভু আমায় যে দেশ দান করেছেন সেই দেশ আমি লোকদেরই চাপে ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি। তারা আমায় বলেছে, ‘যাও, ভিন্দেশীদের সঙ্গে বাস করো। সেখানে গিয়ে অন্য মূর্ত্তির পূজা করো।’ |
9-1 Samuel 26:20 : শুনুন, প্রভুর সান্নিধ্য থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে আমায় মরতে দেবেন না। ইস্রায়েলের রাজা একটা নীল মাছি খুঁজতে বেরিয়ে এসেছেন। যেমন কেউ পর্বতে উঠে সামান্য একটা তিতির পাখীকে তাড়া করে শিকার করে। |
9-1 Samuel 26:21 : তখন শৌল বললেন, “আমি পাপ করেছি। বত্স দায়ূদ, তুমি ফিরে এসো। আজ তুমি দেখালে, তোমার কাছে আমার জীবন কত প্রয়োজনীয়। আমি তোমাকে হত্যা করব না। আমি বোকার মত কাজ করেছি। কি ভুলই আমি করেছি!” |
9-1 Samuel 26:22 : দায়ূদ বললেন, “এই দেখুন রাজার বর্শা। আপনার একজন যুবককে এখানে পাঠিয়ে দিন। সে এটা নিয়ে যাক্। |
9-1 Samuel 26:23 : প্রভু প্রতিটি মানুষকে তার কর্মের জন্য প্রতিদান দিয়ে থাকেন। যদি সে উচিত্ কাজ করে তাহলে তিনি তাকে পুরস্কার দেন আর যদি সে অন্যায় করে তাহলে তিনি তাকে শাস্তি দেন। আজ তিনি আপনাকে হারানোর জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন। কিন্তু আমি তাঁর মনোনীত রাজাকে কিছুতেই আঘাত করতে পারি না। |
9-1 Samuel 26:24 : আজ আপনাকে আমি দেখালাম যে, আপনার জীবন আমার কাছে কত মূল্যবান। একইভাবে প্রভুও দেখাবেন, তাঁর কাছে আমার জীবনও কত মূল্যবান। প্রভু আমাকে সব রকম বিপদ থেকে রক্ষা করবেন।” |
9-1 Samuel 26:25 : শৌল দায়ূদকে বললেন, “বত্স দায়ূদ, ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন। তুমি অনেক মহত্ কর্ম করবে এবং তুমি সফল হবে।” দায়ূদ নিজের পথে চলে গেলেন, আর শৌল তাঁর জায়গায় ফিরে গেলেন। |
9-1 Samuel 27:1 : দায়ূদ মনে মনে বললেন, “একদিন না একদিন শৌল আমাকে নিশ্চয়ই ধরবেন। সবচেয়ে ভাল হয় যদি আমি পলেষ্টীয়দের দেশে চলে যাই। তাহলে শৌল আমাকে ইস্রায়েলে খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। এভাবে আমি শৌলের হাত থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো।” |
9-1 Samuel 27:2 : সুতরাং ছয়শত জন পুরুষ নিয়ে দায়ূদ ইস্রায়েল ছেড়ে চলে গেলেন। তারা মাযোকের পুত্র আখীশের কাছে গেলেন। আখীশ তখন গাতের রাজা। |
9-1 Samuel 27:3 : দায়ূদ সপরিবারে তাঁর যুবকদের সঙ্গে গাতের আখীশের সঙ্গে থেকে গেলেন। দাযূদের সঙ্গে ছিল তাঁর দুই স্ত্রী। য়িষ্রিযেলের অহীনোযম আর কর্ম্মিলীয অবীগল। অবীগল নাবলের বিধবা পত্নী। |
9-1 Samuel 27:4 : সবাই শৌলকে বলল, দায়ূদ গাত্ দেশে পালিয়ে গেছে। তাই শৌল আর দায়ূদকে খুঁজলেন না। |
9-1 Samuel 27:5 : দায়ূদ আখীশকে বললেন, “আপনি যদি আমার ওপর প্রসন্ন হন, তবে আপনার যে কোন একটা শহরে আমাকে থাকতে দিন। আমি আপনার একজন ভৃত্য মাত্র। সেখানেই আমার উপযুক্ত জায়গা। এই রাজধানীতে আপনার কাছে থাকা আমার মানায না।” |
9-1 Samuel 27:6 : সেদিন আখীশ দায়ূদকে সিক্লগ শহরে পাঠালেন। সেহেতু সিক্লগ আজ পর্য়ন্ত যিহূদা রাজাদের শহর হয়ে আছে। |
9-1 Samuel 27:7 : এক বছর চার মাস দায়ূদ পলেষ্টীয়দের সঙ্গে ছিলেন। |
9-1 Samuel 27:8 : দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা অমালেকীয়, গশূরীয, গির্ষীয অধিবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন, যারা সেই মিশর পর্য়ন্ত শূরের কাছে টেলেম অঞ্চলে বাস করত। দাযূদের কাছে তারা পরাজিত হল। তাদের সব ধনসম্পদ দাযূদের হাতে গেলো। |
9-1 Samuel 27:9 : ঐ অঞ্চলের সকলকে হারিয়ে দায়ূদ তাদের মেষ, গরু, গাধা, উট, বস্ত্র সবকিছু নিয়ে আখীশের কাছে তুলে দিলেন। কিন্তু দায়ূদ এই লোকদের মধ্যে একজনকেও জীবিত রাখলেন না। |
9-1 Samuel 27:10 : এরকম লড়াই দায়ূদ অনেকবার করেছিলেন। প্রত্যেকবারই আখীশ দায়ূদকে জিজ্ঞাসা করতেন কোথায় সে যুদ্ধ করে এত সব জিনিস এনেছে। দায়ূদ বলতেন, “আমি যুদ্ধ করেছি এবং যিহূদার দক্ষিণ অঞ্চল জিতেছি।” অথবা “আমি যুদ্ধ করে য়িরহমীলের দক্ষিণ দিক জিতেছি,” অথবা বলতেন, “আমি কেনীয়দের দক্ষিণে লড়াই করে জিতেছি।” |
9-1 Samuel 27:11 : দায়ূদ গাতে কাউকেই জীবিত আনতেন না। তিনি ভাবলেন, “যদি আমরা কাউকে জীবিত রাখি তাহলে সে আখীশকে বলে দেবে আমি কি করেছি।”পলেষ্টীয়দের দেশে থাকার সময় দায়ূদ সব সময় এই ধরণের কাজ করতেন। |
9-1 Samuel 27:12 : আখীশ দায়ূদকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন। আখীশ মনে মনে বলতেন, “নিজের লোকরাই এখন দায়ূদকে ঘৃণা করছে। ইস্রায়েলীয়রা তাকে একেবারেই দেখতে পারে না। এখন থেকে চিরদিন দায়ূদ আমার সেবা করবে।” |
9-1 Samuel 28:1 : পরে পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সংগ্রহ করতে লাগল। আখীশ দায়ূদকে বললেন, “লোকদের নিয়ে তুমি আমার সঙ্গে ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যাবে, বুঝতে পেরেছ?” |
9-1 Samuel 28:2 : দায়ূদ বললেন, “নিশ্চয়ই, দেখবেন আমি কি করি।” আখীশ বললেন, “বেশ! তুমি হবে আমার দেহরক্ষী। সবসময় তুমি আমাকে রক্ষা করবে।” |
9-1 Samuel 28:3 : শমূয়েল মারা গেল। তার মৃত্যুতে ইস্রায়েলীয়রা সকলেই শোক প্রকাশ করল। তারা তাকে তার নিজের দেশ রামায় কবর দিলযারা প্রেতাত্মা নামায আর ভবিষ্যত্ বলতে পারে তাদের সকলকে শৌল বলপূর্বক ইস্রাযেল থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। |
9-1 Samuel 28:4 : পলেষ্টীয়রা যুদ্ধের জন্য তৈরী হল। তারা শূনেমে তাঁবু খাটাল। ইস্রায়েলীয়দের নিয়ে শৌল গিলবোয তাঁবু খাটালেন। |
9-1 Samuel 28:5 : পলেষ্টীয় সৈন্যদের দেখে শৌল ভয় পেয়ে গেলেন। ভয়ে তাঁর বুক কাঁপতে লাগ। |
9-1 Samuel 28:6 : শৌল, প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। কিন্তু প্রভু সে প্রার্থনার কোন উত্তর দিলেন না। স্বপ্নের মধ্যেও ঈশ্বর শৌলকে কিছু বললেন না। ঊরীমের দ্বারাও ঈশ্বর উত্তর দিলেন না। কোনো ভাববাদীর মাধ্যমেও ঈশ্বর শৌলের উদ্দেশ্যে কোন বাণী শোনালেন না। |
9-1 Samuel 28:7 : অবশেষে, শৌল তাঁর আধিকারিকদের বললেন, “একজন স্ত্রীলোকের খোঁজ কর যে একজন প্রেতাত্মার মাধ্যম। তাকে জিজ্ঞেস করব যুদ্ধে কি হতে পারে।”তারা বলল, “ঐন্ - দোরে এরকম একজন আছে।” |
9-1 Samuel 28:8 : শৌল নানারকম পোশাকে সাজলেন যাতে কেউ তাঁকে চিনতে না পারে। সেই রাত্রে শৌল দুজন লোক নিয়ে সেই স্ত্রীলোকটিকে দেখতে গেলেন। তারপর তার দেখা পেয়ে শৌল বললেন, “আমি চাই তুমি একা আত্মাকে উঠিযে আন। সে আমায় ভবিষ্যতে কি হবে না হবে তা বলবে। আমি যার নাম বলব তুমি তাকে ডেকে আনবে।” |
9-1 Samuel 28:9 : সেই স্ত্রীলোকটি বলল, “শৌল যা করেছেন তার সবই আপনি জানেন। তিনি তো ইস্রায়েলের থেকে সব জ্যোতিষী আর ভূত নামানো মাধ্যমদের জোর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আপনি আমায় আসলে ফাঁদে ফেলে মেরে ফেলতে চাইছেন।” |
9-1 Samuel 28:10 : শৌল প্রভুর নামে শপথ করে সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, “প্রভুর দিব্য দিয়ে বলছি যে তুমি এর জন্যে শাস্তি ভোগ করবে না।” |
9-1 Samuel 28:11 : স্ত্রীলোকটি বলল, “আপনার জন্য কাকে এনে দিতে হবে?”শৌল বললেন, “শমূয়েলকে উঠিযে আন।” |
9-1 Samuel 28:12 : তাই হল। স্ত্রীলোকটি শমূয়েলকে দেখতে পেয়ে চিত্কার করে উঠল। সে শৌলকে বলল, “তুমি আমাকে প্রতারণা করেছ, তুমিই তো শৌল।” |
9-1 Samuel 28:13 : রাজা সেই স্ত্রীলোকটিকে বলল, “ভয় পেও না। তুমি কি দেখছ?”স্ত্রীলোকটি বলল, “আমি দেখছি একটা আত্মা ভূমি থেকে উঠে আসছে।” |
9-1 Samuel 28:14 : শৌল বলল, “তাকে কার মতো দেখতে?” স্ত্রীলোকটি বলল, “তাকে দেখতে বিশেষ পোশাক পরা একজন বৃদ্ধলোকের মতো।”শৌল বুঝতে পারলেন উনি হচ্ছেন শমূয়েল। শৌল মাথা নোযালেন। মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লেন। |
9-1 Samuel 28:15 : শমূয়েল শৌলকে বলল, “তুমি কেন আমাকে বিরক্ত করছ? কেন আমাকে তুলে আনলে?”শৌল বললেন, “আমি বিপদে পড়েছি। পলেষ্টীয়রা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছে, কিন্তু ঈশ্বর আমায় ত্যাগ করেছেন। তিনি আমার ডাকে আর সাড়া দিচ্ছেন না। কোনো ভাববাদী বা কোনো স্বপ্নের মধ্যে দিয়েও তিনি উত্তর দিচ্ছেন না। তাই আমি আপনাকে ডেকেছি। আপনি বলুন আমাকে কি করতে হবে?” |
9-1 Samuel 28:16 : শমূয়েল বললেন, “প্রভু তোমায় ত্যাগ করেছেন। তিনি এখন তোমার প্রতিবেশী (দাযূদের) কাছে। তবে কেন আমায় জ্বালাতন করছ? |
9-1 Samuel 28:17 : আমার মাধ্যমে প্রভু তোমাকে জানিয়েছেন তিনি কি করবেন। এখন তিনি তাঁর কথা অনুযায়ীকাজ করছেন। তিনি তোমার হাত থেকে রাজত্ব কেড়ে নিচ্ছেন। তিনি তোমার একজন প্রতিবেশীকে সেই রাজ্য সমর্পণ করছেন। সেই প্রতিবেশীর নাম দায়ূদ। |
9-1 Samuel 28:18 : তুমি প্রভুর কথা মান্য করো নি। তুমি অমালেকীয়দের ধ্বংস করো নি এবং তাদের দেখাও নি যে প্রভু তাদের ওপর কত ক্রুদ্ধ ছিলেন। তাই তিনি তোমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করছেন। |
9-1 Samuel 28:19 : তাঁর ইচ্ছাতেই পলেষ্টীয়রা তোমাকে আর ইস্রায়েলীয় য়োদ্ধাদের পরাজিত করবে। আগামীকাল তুমি আর তোমার পুত্রেরা এখানে আমার কাছে আসবে।” |
9-1 Samuel 28:20 : শৌল সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে গেলেন। তিনি শুয়ে রইলেন। শমূযেলের কথায় তিনি বেশ ভয় পেয়েছিলেন। তাছাড়া সারাদিন সারারাত কিছু না খেয়ে তিনি খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। |
9-1 Samuel 28:21 : স্ত্রীলোকটি শৌলের কাছে এসে দেখল শৌল সত্যিই বেশ ভয় পেয়ে গেছেন। সে তাকে বলল, “শুনুন আমি আপনার দাসী। আপনার আদেশ আমি পালন করেছি। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনার কথা আমি শুনেছি। |
9-1 Samuel 28:22 : এখন দয়া করে আমার কথা শুনুন। আমি আপনাকে কিছু খেতে দিচ্ছি। আপনি খেয়ে শক্তি সঞ্চয় করুন যাতে পথে চলতে ফিরতে পারেন।” |
9-1 Samuel 28:23 : কিন্তু শৌল কথা শুনলেন না। তিনি বললেন, “আমি খাব না।”এমনকি শৌলের আধিকারিকরাও স্ত্রীলোকটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে শৌলকে খাবার জন্যে মিনতি করতে লাগল। শেষ পর্য়ন্ত শৌল তাদের কথা শুনলেন। তিনি মাটি থেকে উঠে বিছানার ওপর বসলেন। |
9-1 Samuel 28:24 : স্ত্রীলোকটির বাড়িতে একটি মোটাসোটা বাছুর ছিল। সে চট্পট্ বাছুরটিকে জবাই করল। কিছু মযদা খামির না দিয়ে মেখে হাতে লেচি তৈরী করে সেঁকে ফেলল। |
9-1 Samuel 28:25 : শৌল ও কর্মচারীদের সে খেতে দিল। তারা খাওয়া দাওযা করে সেই রাত্রে উঠে বেরিয়ে পড়ল। |
9-1 Samuel 29:1 : পলেষ্টীয়রা অফেকে সৈন্য জড়ো করল। ইস্রায়েলীয়রা তাঁবু গাড়ল য়িষ্রিযেল ঝর্ণার পাশে। |
9-1 Samuel 29:2 : পলেষ্টীয় শাসকরা |
9-1 Samuel 29:10 : 0 জন সৈন্য এবং এক হাজার জন সৈন্যের এক এক দল নিয়ে কুচকাওযাজ করে অগ্রসর হলেন। পেছনে পেছনে আখীশের সঙ্গে রইল দায়ূদ ও তার লোকরা। |
9-1 Samuel 29:3 : পলেষ্টীয় সেনাপতিরা জিজ্ঞাসা করল, “এই ইব্রীযরা, এখানে কি করছে?”আখীশ বললেন, “এ হচ্ছে দায়ূদ, শৌলের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক। আমার সঙ্গে ও অনেকদিন রযেছে। শৌলকে ছেড়ে দেবার পর থেকে যতদিন দায়ূদ আমার কাছে রযেছে ততদিন ওর মধ্যে খারাপ কিছু দেখি নি।” |
9-1 Samuel 29:4 : তবুও পলেষ্টীয় সেনাপতিরা আখীশের ওপর রেগে গেল। তারা বলল, “দায়ূদকে ফেরত পাঠিয়ে দাও। ওকে যে শহরে তুমি থাকতে দিয়েছ, সেখানে ওকে ফিরে যেতেই হবে। আমাদের সঙ্গে সে যুদ্ধে যাবে না। ওকে রাখা মানে একজন শত্রুকেই রাখা। সে আমাদের সৈন্যদের মেরে তার রাজা শৌলকেই খুশী করবে। |
9-1 Samuel 29:5 : দায়ূদকে নিয়ে ইস্রায়েলীয়রা এই গান গেয়ে নাচানাচি করে:শৌল মেরেছে শত্রু হাজারে হাজারে। দায়ূদ মেরেছে অয়ুতে অয়ুতে! |
9-1 Samuel 29:6 : তাই দায়ূদকে ডেকে আখীশ বললেন, “প্রভুর অস্তিত্বের মতোই নিশ্চিত যে তুমি আমার অনুগত। তোমাকে আমার সৈন্যদের মধ্যে রাখলে আমি খুশি হতাম। যেদিন থেকে তুমি আমার কাছে, আমি তোমার কোন অন্যায় দেখি নি। কিন্তু পলেষ্টীয় শাসকরা তোমাকে সমর্থন করে নি। |
9-1 Samuel 29:7 : তুমি ফিরে যাও। পলেষ্টীয় রাজাদের বিরুদ্ধে তুমি কিছু করো না।” |
9-1 Samuel 29:8 : দায়ূদ বললেন, “আমি কি এমন অন্যায় করেছি? আজ পর্য়ন্ত যতদিন আপনার সামনে আছি, আপনি কি এই দাসের কোন দোষ পেয়েছন? তবে কেন আমার মনিব মহারাজের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে দেবেন না?” |
9-1 Samuel 29:9 : আখীশ উত্তর দিলেন, “আমি তোমায় একজন ভালো মানুষ হিসাবে গণ্য করি। তুমি একজন ঈশ্বরের দূতের মতো। কিন্তু কি করব, পলেষ্টীয় সেনাপতিরা বলছে, ‘দায়ূদ আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবে না।’ |
9-1 Samuel 29:10 : খুব সকালে তুমি লোকদের নিয়ে যে শহর আমি তোমাকে দিয়েছি সেই শহরে ফিরে যাও। সেনাপতিরা তোমার নামে যেসব নিন্দা করেছে সেসবে কান দিও না। তুমি ভাল লোক। তাই সূর্য় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তুমি চলে যাবে।” |
9-1 Samuel 29:11 : অবশেষে দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা খুব সকালে পলেষ্টীয়দের দেশে ফিরে গেল এবং পলেষ্টীয়রা য়িষ্রিযেল পর্য়ন্ত গেল। |
9-1 Samuel 30:1 : তৃতীয় দিনে দায়ূদ সিক্লগে উপস্থিত হল। সেখানে গিয়ে তারা দেখল অমালেকীয়রা সিক্লগ শহর আক্রমণ করেছে। তারা নেগেভ অঞ্চলে হানা দিয়েছিল। সিক্লগ শহর তারা পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিল। |
9-1 Samuel 30:2 : সিক্লগের স্ত্রীলোকদের তারা বন্দী হিসাবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। যুবক বৃদ্ধ সকলকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তাদের কাউকে হত্যা করে নি। |
9-1 Samuel 30:3 : দায়ূদ লোকদের সঙ্গে নিয়ে সিক্লগে এসে দেখলেন শহরটা দাউ দাউ করে জ্বলছে। তাদের স্ত্রীদের, ছেলেমেয়ে সকলকেই অমালেকীয়রা ধরে নিয়ে গেছে। |
9-1 Samuel 30:4 : দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা চিত্কার করে কাঁদতে কাঁদতে একেবারে কাহিল হয়ে পড়ল। শেষে দুর্বলতায আর চিত্কার করতে পারল না। |
9-1 Samuel 30:5 : অমালেকীয়রা দাযূদের দুই স্ত্রীকেই, য়িষ্রিযেলীয অহীনোযম আর নাবলের বিধবা অবীগলকে, ধরে নিয়ে গিয়েছিল। |
9-1 Samuel 30:6 : সব সৈন্যরা দুঃখে আর রাগে অধীর হয়ে পড়েছিল, কারণ তাদের ছেলে মেয়েদের যুদ্ধ বন্দী হিসাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাই তারা দাযুদকে আক্রমণ করবার ও পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবার সিদ্ধান্ত নিল। দায়ূদ এসব শুনে মুষড়ে পড়লেন। কিন্তু প্রভু ঈশ্বরেম্প দায়ূদ তাঁর শক্তি খুঁজে পেলেন। |
9-1 Samuel 30:7 : দায়ূদ যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “এফোদটি এনে দাও এবং অবিয়াথর দায়ূদকে সেটা এনে দিলেন।” |
9-1 Samuel 30:8 : তারপর দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, “যারা আমাদের ছেলেমেয়েদের ধরে নিয়ে গেছে, আমি কি তাদের পিছু নেব? আমি কি তাদের ধরতে পারব?”প্রভু বললেন, “যাও ওদের পিছু নাও। তুমি ওদের ধরতে পারবে। তুমি তোমার সকল পরিবারগুলিকে রক্ষা করতে পারবে।” |
9-1 Samuel 30:9 : দায়ূদ ছয়শত জন লোক নিয়ে বিষোর স্রোতের কাছে পৌঁছলেন। সেখানে তাঁর লোকদের প্রায দুইশত জন থাকল। তারা খুব দুর্বল আর ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। তারা আর চলতে পারছিল না। তাই চারশত জন পুরুষ নিয়ে দায়ূদ অমালেকীয়দের তাড়া করলেন। |
9-1 Samuel 30:10 : - |
9-1 Samuel 30:11 : দাযূদের লোকরা মাঠের মধ্যে একজন মিশরীয়কে দেখতে পেল। তারা তাকে দাযূদের কাছে নিয়ে এসে জল আর কিছু খাবার দিল। |
9-1 Samuel 30:12 : ডুমুরের পিঠে আর দুমুঠো কিস্মিস্ ওকে খেতে দিল। খাওয়া দাওযার পর সে একটু ভাল বোধ করল। তিনদিন তিনরাত সে কোন কিছু খেতে পায় নি বা পান করতে পায় নি। |
9-1 Samuel 30:13 : মিশরীয় লোকটাকে দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “কে তোমার মনিব? কোথা থেকে তুমি আসছ?”লোকটি বলল, “আমি একজন মিশরীয়। অমালেকের ক্রীতদাস। তিনদিন আগে আমি অসুস্থ হওয়ায আমার মনিব আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। |
9-1 Samuel 30:14 : আমরা নেগেভ আক্রমণ করেছিলাম। ওখানে করেথীযরা থাকে। আমরা যিহূদা আর নেগেভ অঞ্চল আক্রমণ করেছিলাম। নেগেভে কালেবের লোকরা থাকে। আমরা সিক্লগও পুড়িয়ে দিয়েছিলাম।” |
9-1 Samuel 30:15 : দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যারা আমাদের পরিবারগুলিকে নিয়ে নিয়েছে তুমি কি তাদের কাছে আমাদের নিয়ে যাবে?”মিশরীয় লোকটি বলল, “যদি ঈশ্বরের কাছে প্রতিশ্রুতি করো যে তুমি আমায় হত্যা করবে না বা আমাকে আমার মনিবের কাছে ফিরিযে দেবে না, তাহলে আমি তোমাকে সাহায্য করবো।” |
9-1 Samuel 30:16 : মিশরীয় লোকটি দায়ূদকে অমালেকীয়দের কাছে পৌঁছে দিল। সেই সময় তারা মাটিতে চারিদিকে ছড়িয়ে গড়াগড়ি দিচ্ছিল, খাওয়াদাওযা ও পান করছিল। পলেষ্টীয়দের দেশ আর যিহূদা থেকে যা লুঠপাট করে এনেছিল সে সব নিয়ে ওরা ফূর্তি করছিল। |
9-1 Samuel 30:17 : দায়ূদ তাদের আক্রমণ করে হত্যা করলেন। সূর্য়োদয থেকে পরদিন সন্ধ্য়ে পর্য়ন্ত তারা যুদ্ধ করলো। চারশত জন অমালেক যুবক ঝাঁপ দিয়ে, উটে চড়ে পালিয়ে গেল। বাকীরা সকলে নিহত হল। |
9-1 Samuel 30:18 : অমালেকীয়রা যা যা নিয়েছিল দায়ূদ তার সব ফিলে পেলেন। তিনি তাঁর দুই স্ত্রীও ফিরে গেলেন। |
9-1 Samuel 30:19 : কিছুই খোযা যায় নি। শিশু বৃদ্ধ সকলকেই ফিরে পাওয়া গেল। তারা তাদের সব ছেলে মেয়েদের এবং তাদের দামী জিনিসপত্র সব ফিরে পেল। দায়ূদ সব ফিরিযে নিয়ে এলেন। |
9-1 Samuel 30:20 : দায়ূদ সমস্ত মেষপাল ও গো - পাল নিলেন। দাযূদের লোকরা এইসব পশুকে আগে আগে চালাল। দাযূদের লোকরা বলল, “এইসব হচ্ছে দাযূদের পুরস্কার।” |
9-1 Samuel 30:21 : বিষোর স্রোতের ধারে যে দুইশত জন থেকে গিয়েছিল তাদের কাছে দায়ূদ এলেন। এরা খুব ক্লান্ত আর দুর্বল বলে দাযূদের সঙ্গে যেতে পারে নি। তারা দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে দেখা করতে এল। তারা কাছে আসতেই বিষোর স্রোতের ধারের লোকরা অভিবাদন জানাল। |
9-1 Samuel 30:22 : কিন্তু দাযূদের লোকদের মধ্যে দুষ্ট লোকও ছিল। তারা ঝামেলা বাধাত। তারা বলল, “এই দুইশত জন লোক আমাদের সঙ্গে আসে নি। তাই এদের আমরা যা এনেছি তার ভাগ দেব না। এরা শুধু নিজেদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের ফেরত পাবে।” |
9-1 Samuel 30:23 : দায়ূদ বললেন, “ভাইসব, এইরকম কাজ করা ঠিক নয়। প্রভু আমাদের কি দিয়েছেন একবার ভেবে দেখো। তিনি আমাদের বিরুদ্ধে আসা শত্রুদের হারিয়ে দিয়েছেন। |
9-1 Samuel 30:24 : তোমাদের কথা কেউ শুনবে না। যারা দ্রব্যসামগ্রী আগলেছিল আর যারা যুদ্ধে য়োগ দিয়েছিল সকলেই সমান দাবিদার। প্রত্যেকেই সমান ভাগ পাবে।” |
9-1 Samuel 30:25 : দায়ূদ ইস্রায়েলের জন্য এই বিধি ও শাসন স্থির করলেন। এই বিধান আজও চালু আছে। |
9-1 Samuel 30:26 : দায়ূদ সিক্লগে এসে পৌঁছালেন। অমালেকীয়দের কাছ থেকে পাওয়া কিছু জিনিসপত্র তাঁর বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। এরা সব যিহূদার দলপতি। দায়ূদ বললেন, “তোমাদের জন্য কিছু উপহার এনেছি। প্রভুর শত্রুদের কাছ থেকে এইসব আমরা পেয়েছি।” |
9-1 Samuel 30:27 : দায়ূদ অমালেকীয়দের কাছ থেকে নেওয়া জিনিসপত্র থেকে কিছু বৈথেল, নেগেভের রামোত্ এবং য়ত্তীরের নেতাদের কাছে পাঠালেন। |
9-1 Samuel 30:28 : অরোযের, শিফমোত্, ইষ্টিমোয, |
9-1 Samuel 30:29 : রাখল, য়িরহমেলীযদের নগরগুলিতে, কেনীয়দের নগরগুলিতে |
9-1 Samuel 30:30 : র্হম্মা, কোর - আশন, অথাক, |
9-1 Samuel 30:31 : এবং হিব্রোণ শহরের নেতাদের কাছে দায়ূদ উপহার পাঠালেন। তাছাড়া আর যে যে দেশে দায়ূদ ও তার লোকরা ছিল, সেইসব দেশের নেতাদের কাছেও তিনি উপহার পাঠালেন। |
9-1 Samuel 31:1 : ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পলেষ্টীয়রা জিতে গেল। ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের কাছ থেকে পালিয়ে গেল। গিল্বোয পর্বতের চূড়ায় অনেক ইস্রায়েলীয় মারা গেল। |
9-1 Samuel 31:2 : শৌল আর তাঁর পুত্রদের বিরুদ্ধে পলেষ্টীয়রা একটা দুর্দান্ত যুদ্ধ চালিযেছিল। শৌলের তিন পুত্র য়োনাথন, অবীনাদব আর মল্কী - শূযকে পলেষ্টীয়রা হত্যা করল। |
9-1 Samuel 31:3 : যুদ্ধের অবস্থা শৌলের পক্ষে খারাপ থেকে আরও খারাপ হতে লাগল। তীরন্দাজরা তীর ছুঁড়ে শৌলকে গুরুতরভাবে আহত করল। |
9-1 Samuel 31:4 : শৌল তাঁর বর্মবহনকারী ভৃত্যকে বললেন, “আমায় তোমার তরবারি দিয়ে মেরে ফেল। তাহলে বিদেশীরা আর আমায় মেরে মজা করতে পারবে না।” কিন্তু ভৃত্য সে কথা শুনলো না। সে বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তাই শৌল নিজের তরবারি দিয়ে নিজেকে হত্যা করলেন। |
9-1 Samuel 31:5 : ভৃত্যটি যখন দেখল শৌল মারা গেছে, তখন সেও নিজের তরবারি দিয়ে আত্মহত্যা করল। শৌলের সঙ্গে সেও সেখানে পড়ে রইল। |
9-1 Samuel 31:6 : এই ভাবে একই দিনে শৌল ও তাঁর তিন পুত্র আর বর্মধারী ভৃত্য একই সঙ্গে মারা গেল। |
9-1 Samuel 31:7 : উপত্যকার অন্যদিকে বসবাসকারী ইস্রায়েলীয়রা দেখলো ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা দৌড়ে পালাচ্ছে। তারা দেখল শৌল আর তার তিন পুত্র মারা গেছে। এবার তারাও শহর ছেড়ে পালাল। তারপর পলেষ্টীয়রা এলো এবং ঐ শহরগুলিতে বসবাস করল। |
9-1 Samuel 31:8 : পরদিন পলেষ্টীয়রা মৃতদের দেহ থেকে জিনিস লুঠ করতে চলে গেল। গিল্বোয পর্বত চূড়ায় সে তারা শৌল আর তাঁর তিন পুত্রের মৃতদেহ দেখতে পেল। |
9-1 Samuel 31:9 : তারা শৌলের মাথাটা কেটে নিল। শৌলের বর্ম নিয়ে নিল। তারা পলেষ্টীয়দের কাছে খবর দিয়ে দিল। তাদের মূর্ত্তিসমূহের মন্দিরেও তারা এই খবর নিয়ে গেল। |
9-1 Samuel 31:10 : অষ্টারোত্ মূর্ত্তির মন্দিরে তারা শৌলের বর্ম রেখে দিল। শৌলের দেহ তারা ঝুলিয়ে রাখল বেথ শানের দেওয়ালে। |
9-1 Samuel 31:11 : পলেষ্টীয়দের শৌলের প্রতি কৃতকর্মের কথা যাবেশ গিলিয়দের লোকরা জানতে পারলো। |
9-1 Samuel 31:12 : সেখানকার সৈন্যরা বৈত্ - শানে গেল। তারা সারা রাত ধরে দৃঢ় পদক্ষেপে অগ্রসর হল। সেখানকার দেওয়াল থেকে তারা শৌলের দেহ তুলে নিল। শৌলের পুত্রদের দেহও তারা নামিযে আনল। তারপর তারা দেহগুলো নিয়ে যাবেশে গেল। যাবেশের লোকরা এইসব দেহ দাহ করলো। |
9-1 Samuel 31:13 : এদের অস্থিগুলো যাবেশে একটা বিশাল গাছের তলায় তারা কবর দিল। যাবেশের মানুষ সাতদিন উপবাস করে শোক পালন করল। |